ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

আখাউড়ায় তরমুজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ক্রেতারা

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৪, ১০:২০ এএম
আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪, ১০:২০ এএম
আখাউড়ায় তরমুজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ক্রেতারা
খাবরের কাগজের ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের সড়কবাজারে চোখে পড়ে সারিবদ্ধ বেশ কয়েকটি ফলের দোকান। দোকানগুলোতে দেশি-বিদেশি ফলের সঙ্গে আছে মৌসুমি ফল তরমুজও। রমজানের শুরুতে ফলটির যে দাম ছিল, এখন তা অর্ধেক দামে নেমে এসেছে। যে তরমুজ বিক্রি হতো ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে, বর্তমানে বাজারে সেটা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। দাম কমার পেছনে বিক্রেতারা ঝড়-বৃষ্টিসহ আবহাওয়াকে দায়ী করলেও ক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। সাধারণ মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণেই নাকি তরমুজের দামে বিরাট প্রভাব পড়েছে।

হাবিবুর রহমান নামে এক যুবক বলেন, ‘বেশি দামের কারণে রমজানের শুরুতে তরমুজ কিনতে পারিনি। তবে এখন দাম কমলেও ইচ্ছা নেই।’
 
তাসনীম আহামেদ খাদেম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘এভাবে বয়কটের মাধ্যমে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। জনগণ না কিনলে বাজারে তরমুজ পচবে।’

স্থানীয়  সিনিয়র সাংবাদিক কাজী মফিকুল ইসলাম সুহিন বলেন, ‘জনগণের নীরব প্রতিবাদের কারণেই তরমুজের বাজারে প্রভাব পড়েছে। বাজারে বেশি তরমুজ থাকলেও এখন ক্রেতা নেই। মৌসুমের শুরুতে ব্যবসায়ীরা দাম বেশি চাওয়ায় এখন জনগণ তরমুজের কাছেই আসছেন না।’ 

ফল ব্যবসায়ী সুভাষ বণিক বলেন, ‘চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড থেকে আমরা পাইকারি দামে তরমুজ কিনে এখানে বিক্রি করি।  খরচসহ একটি তরমুজের দাম পড়ে প্রায় ২৩০ টাকা। শুরুতে সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি ছিল, এখন সরবরাহ বেশি হওয়ায় তরমুজের দাম কমেছে।’

আখাউড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘রমজানের শুরু থেকেই দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিয়মিত মনিটরিং করার পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।’

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০১:২২ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০১:২২ এএম
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
ছবি: খবরের কাগজ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বাস-মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সন্ধ্যা সাতটার দিকে মাঝকান্দী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাইখির মিলঘর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার নওপাড়া গ্রামের রমজান মিয়ার ছেলে হুসাইন মিয়া (২১) ও একই উপজেলার ধলারচর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রাজু শেখ (২২)। তারা সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই।

ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সহস্রাইল থেকে ছেড়ে আসা ফরিদপুরগামী পরিবহনের সঙ্গে ভাটিয়াপাড়াগামী মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী নিহত হয়। ঘটনার পর বাস চালক ও সহযোগী বাসটি ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে। বাসটি জব্দ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, নিহতরা দু'জন সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাই। তাদের লাশ আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

সঞ্জিব দাস/এমএ/

আবার বন্যা, পাহাড়ধস

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১১:০০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১১:০০ পিএম
আবার বন্যা, পাহাড়ধস
ছবি : খবরের কাগজ

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে সিলেট, রংপুর, ফেনী, সিরাজগঞ্জ ও খাগড়াছড়ি জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে সিলেটে তৃতীয় দফার বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৭ লাখ ১১ হাজার ২২৬ মানুষ। 

ফেনীর দুই উপজেলায় স্থগিত করা হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা। এ ছাড়া এই জেলায় মাছ ধরতে গিয়ে দেয়ালধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। খাগড়াছড়িতে ভারী বর্ষণের ফলে সদরের শালবনসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া রাঙামাটির সাজেকে আটকা পড়েছেন শত শত পর্যটক। 

অন্যদিকে রংপুর ও সিরাজগঞ্জে নদীপাড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায় নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে জনপদ।  

আমাদের ব্যুরো, নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিনিধিরা জানান-

সিলেট

সিলেটে তৃতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সোমবার (১ জুলাই) রাত থেকে সিলেট নগরী ও জেলার প্রায় ছয় উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে সোমবার বিকেল থেকেই সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে, কুশিয়ারার পানি আমলশিদ, শেওলা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সকালে সিলেট জেলা প্রশাসন জানায়, সিলেটে পৌরসভারসহ ৯৭টি ইউনিয়নের ১১৮৪টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত রয়েছে ৭ লাখ ১১ হাজার ২২৬ জন মানুষ। জেলা ৬৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৮ হাজার ৩০৮ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এরপর গত ১৭ জুন ঈদুল আজহার দিন থেকে আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। 

তলিয়ে গেছে খাগড়াছড়ির নিম্নাঞ্চল, সাজেকে আটকা শত শত পর্যটক

খাগড়াছড়ি সদর ও দীঘিনালা উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। এ ছাড়া মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি ও রামগড় উপজেলায় নদী তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তা ছাড়া পাহাড়ি ঢলে স্থানীয় ছড়া ও নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে গেছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বহু গ্রাম। 

এদিকে ভারী বর্ষণের ফলে সদরের শালবনসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। 

মঙ্গলবার ভোরে খাগড়াছড়ি-মাটিরাঙ্গা সড়কের সাপমারা এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ে। এতে খাগড়াছড়ির সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ৫ ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পাহাড়ধসে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এবং প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য খাগড়াছড়ি পৌর সদরে ৯টি এবং পুরো জেলায় শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে মালামাল চুরি যাওয়ার আশঙ্কায় অধিকাংশ পরিবারই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইছেন না।

অন্যদিকে টানা বর্ষণে পানিবন্দি হয়ে পড়ায় বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার্থীদের। বন্যার পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় দুর্গম এলাকার অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। যারা পরীক্ষা দিতে গেছে, তাদের ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কোমরসমান পানি পাড়ি দিতে হয়েছে।
 
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্গতদের জন্য খাবার ও বিশুদ্ধ পানির বন্দোবস্ত করেছে প্রশাসন।

ফেনীতে একজনের মৃত্যু, এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

ফেনীতে মুহুরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার এইচএসসি পরীক্ষা বাংলা দ্বিতীয় পত্র স্থগিত করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে সোমবার রাত ১২টার দিকে নদীর পাড়ে মাছ ধরতে গিয়ে দেয়ালধসে পড়ে মামুন নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। তিনি ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের কিসমত ঘনিয়া মোড়া গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুহুরী নদীর তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে ফুলগাজী ইউনিয়নের দৌলতপুরের একরামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের দুটি স্থানে ও বৈরাগপুর এলাকার একটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, বৈরাগপুরসহ চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ ছাড়া সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফুলগাজী বাজার ও ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক প্লাবিত হয়।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, নদীর পানি না কমানো পর্যন্ত ভাঙন মেরামত করা সম্ভব নয়।

রংপুরে ভাঙনের আতঙ্কে শত শত পরিবার

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর পানি হুহু করে বাড়ছে। এরই মধ্যে গঙ্গাচড়ায় ও কাউনিয়া চরাঞ্চলের প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ি উজানের পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া নদীপাড়ের ফসলি জমি ও রাস্তাঘাটে ভাঙন দেখা দিয়েছে। 

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পানি নদীতে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এই অবস্থায় তিস্তা নদীতে পানি বাড়া-কমায় ভাঙনের মুখে পড়েছে উপজেলার লক্ষ্মীটারি, কোলকোন্দ ও নোহালী এই তিন ইউনিয়নের চরাঞ্চলের শত শত পরিবার। ভাঙনকবলিত পরিবারের অনেকে নিরুপায় হয়ে বসতি সরিয়ে নিচ্ছেন। তার মধ্যে কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর চিলাখাল মধ্যপাড়া ঈদগাহ মাঠের একাংশ ভেঙে গেছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে চিলাখাল সূর্যমুখী ক্বারী মাদ্রাসা, চিলাখাল মধ্যপাড়া জামে মসজিদ, উত্তর চিলাখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সিরাজগঞ্জের দুই ইউনিয়নে তীব্র ভাঙন 

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি আবারও বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও। ফলে প্লাবিত হচ্ছে যমুনার অভ্যন্তরীণ চরাঞ্চলের ফসলি জমি। 

এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের পাঁচিল ও জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকায় তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের মুখে থাকা বসতবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। 

এদিকে যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার শাহজাদপুরসহ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোর ফসলি জমি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল। ফলে চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আরও কয়েক দিন যমুনা নদীর পানি বাড়বে। এতে বিপৎসীমা অতিক্রম করে ছোট থেকে মাঝারি বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। 

 

চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৯ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৯ পিএম
চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ছবি : খবরের কাগজ

গত শনিবার থেকে ভারী বর্ষণে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

চট্টগ্রামের অনেক এলাকায় দেখা গেছে জলজটের। বজ্রসহ বৃষ্টিপাত ও জলজটের কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষসহ এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) পরীক্ষা থাকায় চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, দেওয়ানহাট, মাদারবাড়ী, ইপিজেড, জিইসি মোড়, হালিশহর, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, পাঁচলাইশ, দুই নং গেট, বাকলিয়া, পূর্ব ষোলশহর, চকবাজার, চাঁদগাওসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে পরীক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়ে।

নগরের রহমান নগর এলাকায় গৃহিনী বিবি আয়শা বলেন, ‘বাচ্চাদের কাপড় শুকাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। বাড়ির ছাদে কাপড় শুকানো যাচ্ছে সূর্যের আলো নেই বলে। ঘরের মধ্যে ফ্যান ছেড়ে দিয়েও শুকানো যাচ্ছে না। ফলে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘নগরের অলিগলিতে উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে সড়ক উঁচু করায় সমতল ভূমি নিচু হয়ে গেছে। ফলে অনেকের ঘরবাড়িতে পানি জমে যাচ্ছে। তবে কিছু এলাকায় পানি জমলেও বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি চলে যাচ্ছে।’

চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আলী আকবর খবরের কাগজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শনিবার থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫১ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত বুধ ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরকে ৩ নং সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাকে তীরবর্তী এলাকায় থাকতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রামের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। আরও কয়েকদিন সূর্যের দেখা নাও যেতে পারে।’

রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা থেকে ৩ বোমা উদ্ধার, পালিয়েছে জঙ্গিরা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৮ পিএম
রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা থেকে ৩ বোমা উদ্ধার, পালিয়েছে জঙ্গিরা
নারায়গঞ্জের রূপগঞ্জের বরপা এলকায় জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করা হয়। ছবি: খবরের কাগজ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরপা এলাকায় একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে শক্তিশালী তিনটি বোমা উদ্ধার করেছে ডিএমপির অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)৷ এ জঙ্গি আস্তানাটি আনসার আল ইসলামের সদস্যের বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

এটিইউ জানিয়েছে, অভিযানে কাউকে আটক করা না গেলেও তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে হামলার পরিকল্পনায় কারা ছিলেন চারতলা সে বাড়িতে। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে দশটা থেকে উপজেলার বরপা এলাকার প্রবাসী জাকির হোসেনের চারতলা ভবনটি ঘিরে রাখে ডিএমপির অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট। এরপরই পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা এসে স্থানীয়দের সরিয়ে নেয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর দেড়টার দিকে অভিযান শুরু হয়ে চলে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত। এসময় ভবনের তিন তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় শক্তিশালী তিনটি বোমা। সাড়ে তিন ঘন্টাব্যাপী চলা এ অভিযানে একে একে  বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করা হয় বোমাগুলো।

অভিযান শেষে ডিএমপির অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) এর পুলিশ সুপার সানোয়ার হোসেন জানায়, বিস্ফারিত বোমাগুলো আইইডি বা আইডি বোমা। আর এই বাড়িতে বোমা তৈরি করা হতো। এগুলো অন্য কোথাও বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করে বাড়িতে রাখা হয়েছিলো। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পরিকল্পনা করেছিলেন হামলার। এছাড়া দেশীয় অস্ত্রও উদ্ধার করা হয় বলে জানান এটিইউ পুলিশ সুপার।

ঘটনার বর্ণনায় পুলিশের এটিইউ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বলেন, গত ৫ জুন নরসিংদীতে এক অভিযানে একটি রাইফেলসহ একজন জঙ্গি গ্রেপ্তার হন৷ পরে ৯ জুন নেত্রকোনায় একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়৷ এটি আনসার আল ইসলামের একটি প্রশিক্ষণ শিবির ছিল৷ সেখানে নতুন জঙ্গি সদস্যদের বিস্ফোরক তৈরি ও তথ্য-প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো৷ এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলে৷ গত সোমবার কক্সবাজার থেকে এক নারী জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার হন৷ তিনি নেত্রকোনার ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন৷ তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপগঞ্জের বরপা এলাকায় আরেকটি জঙ্গি আস্তানা চিহ্নিত হয়৷

তিনি বলেন, চারতলা ভবনে মোট ২০টি কক্ষ রয়েছে৷ একটি ফ্ল্যাট তালাবদ্ধ ছিল৷ এটি গত দুদিন যাবৎ তালাবদ্ধ৷ আনসার আল ইসলামের দুজন পুরুষ সদস্য সার্বক্ষণিক এ ফ্ল্যাটে থাকতেন৷ তাদের মধ্যে একজন নেত্রকোনার জঙ্গি আস্তানাটিতে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন৷ কয়েকদিন আগে ওই পুরুষদের একজনের স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীও ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেন৷ নারীর সঙ্গে দুইজন শিশু সন্তানও ছিল৷ তবে তাদের কাউকে ফ্ল্যাটে পাওয়া যায়নি৷ তারা আগেই পালিয়ে গেছেন৷

বাড়িটিতে বোমা তৈরি হতো জিানিয়ে তিনি বলেন, ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে তথ্য ও প্রযুক্তিগত কাজ হতো, অন্য কক্ষে আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরির কাজ হতো৷ ফ্ল্যাটে তিনটি আইইডিসহ এসব তৈরির সরঞ্জামাদি পাওয়া গেছে৷ এখান থেকে তিনটি আইইডির একটি ফ্ল্যাটের ভেতর এবং বাকি দু’টি উচ্চমাত্রা ও বহনে ঝুঁকিমুক্ত হওয়ায় বাইরে এনে খালি জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়৷ এছাড়া মোড়কে মোড়ানো দু’টি চাপাতি ও কিছু ছুরি পাওয়া গেছে৷

এটিইউ এর পুলিশ সুপার আরো জানায়, বিগত সময় নেত্রকোনা ও  কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গি সদস্যের দেয়া তথ্য মতে রূপগঞ্জের এই বাড়িটিকে শনাক্ত করা হয়। তবে। বাড়িতে থাকা আনসার আল ইসলামের সদস্যরা আগে পালিয়েছে। তদন্তে তাদের নাম বেড়িয়ে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নিতে মামলা হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

দিনভর অভিযানে থাকা রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি দিপক চন্দ্র সাহা বলেন, অভিযান ঢাকার করা হলেও থানা পুলিশের একটি দল তদন্ত থাকবে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর এটিইউ সহযোগিতায় যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

বিল্লাল হোসাইন/এমএ/

হালদায় আবারও ভেসে উঠল মরা ডলফিন ও মা-মাছ

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম
হালদায় আবারও ভেসে উঠল মরা ডলফিন ও মা-মাছ
ছবি : খবরের কাগজ

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদীতে এবার মৃত মা-মাছ ও ডলফিন ভেসে উঠেছে। গতকাল সোমবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টার দিকে নদীর রাউজান অংশের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকার স্থানীয়রা মাছ দুটি পানিতে ভাসতে দেখেন। এর মধ্য দিয়ে গত কয়েক দিনে হালদায় ছয়টি মা-মাছ ও দুটি ডলফিন মরে ভেসে উঠল। 

আজিমের ঘাটে ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, রাতে ৭০ থেকে ৮০ কেজি ওজনের একটি ডলফিন ও ৭ থেকে ৮ কেজি ওজনের একটি মা-মাছ ভাসতে দেখা যায়। কিন্তু মাছগুলো কেউ উদ্ধার করেননি।

হালদা ডিম সংগ্রহকারী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রোশাঙ্গীর আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘একটি চক্র হালদার শাখা খাল হালদা কূপে বিষ প্রয়োগ করছে। যার কারণে হালদায় মা-মাছ ও ডলফিন মারা যাচ্ছে। আগে চিংড়ির জন্য বিষ প্রয়োগ করত। এখন বড় মাছের জন্য বিষ দিচ্ছে। চক্রটিকে ধরার জন্য আমরাও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রাত গভীর হলে এই কাজ করে- তাই ধরা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া গত কোরবানি ঈদে ট্যানারির বর্জ্য ও বিষ হালদায় এসে পড়েছে। সেখান থেকেও মা-মাছ এবং ডলফিন মৃত্যুর কারণ হতে পারে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম মশিউজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা হালদার দূষণের উৎসের খোঁজে কাজ করে যাচ্ছি। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে হালদায় ডলফিন ও মা-মাছের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী কারণ মারা যাচ্ছে সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বের হবে।’ 

এদিকে হালদার দূষণ কী কারণে হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার জন্য পরিবেশ ও মৎস্য বিভাগ পাঁচ সদস্যের আলদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।