বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব এবং জলোচ্ছ্বাসে জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীপাড়ের বাঁধ ভেঙে গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, ঝড়ের তাণ্ডবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে গেছে এবং উপড়ে পড়েছে। জেলায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে এবং গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে প্রায় ৫ লাখ গ্রাহক গত রবিবার রাত থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।
জেলা সদরের দড়াটানা নদীর বেমরতা এলাকায় ছয় মিটার, মোড়েলগঞ্জে পানগুছি নদীর শ্রেণিখালী এলাকায় ১০ মিটার ও দেবরাজ কুমারীজোলা এলাকায় ৪০০ মিটার বেড়িবাঁধ পানির তোড়ে ভেঙে যায়।
এদিকে জেলার ওপর দিয়ে এখনো ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে এবং সেই সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। জলোচ্ছ্বাস ও বৃষ্টিতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া শরণখোলায় একটি রিংবাঁধ ভেঙে গেছে।
জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী জেলায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ৪ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা দুর্গত মানুষকে খাবারসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
বাগেরহাট পল্লীবিদ্যুতের জিএম সুশান্ত রায় বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় বেশকিছু বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে।
গাছ পড়ে অসংখ্য জায়গায় বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে। জেলায় তাদের ৪ লাখ ৮৫ হাজার গ্রাহক রবিবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ বিছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।’
শহরের ২০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে এখনো অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে ওয়েস্ট পাওয়ার জোন ডিস্ট্রিবিউশনের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হক জানান।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বলেন, ‘বাগেরহাট সদর ও মোড়েলগঞ্জ এলাকায় নদীপাড়ে তিনটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে এবং বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ উপচে জোয়ারের পানিতে গ্রাম প্লাবিত হয়। এ ছাড়া শরণখোলায় রিংবাঁধ ভেঙে গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে।’
জেলা মৎস্য কর্মকতা এস এম রাসেল বলেন, ‘জোয়ারের পানি আর বৃষ্টিতে জেলা সদর, রামপাল, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার মাছের ঘের ডুবে মাছ ভেসে গেছে। ঘেরের অবকাঠামোগত অনেক ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা।’