![দেশের ৪৭ স্টেশনে বেড়েছে নদ-নদীর পানি](uploads/2024/06/15/river-1718430151.jpg)
ভারী বর্ষণের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা দুধকুমার এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। একই সঙ্গে দেশের নদ-নদীর পানি পর্যবেক্ষণকারী ১১০ স্টেশনের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ৪৭টির পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র নিয়মিত বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়।
শুক্রবার সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানির স্তর স্থিতিশীল রয়েছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান স্বাক্ষরিত পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আগামী ২৪ হতে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা দুধকুমার এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
বন্যাকেন্দ্রের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বেশি বৃষ্টি হয়েছে শেরপুর-সিলেট (মৌলভীবাজার) স্টেশনে ১১০ মিলিমিটার। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সিকিম, অরুণাচল, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা অঞ্চলের মধ্যে আগরতলা (ত্রিপুরা) ৬৩ মিলিমিটার, কোচবিহার (পশ্চিমবঙ্গ) ৬১ মিলিমিটার, শিলিগুড়ি (পশ্চিমবঙ্গ) ৫১ মিলিমিটার এবং ধুব্রি (আসাম) ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে সিলেট ব্যুরো জানান, সিলেটে শুক্রবার সকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কম হয়। পাশাপাশি ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। তাই সিলেটের নদ-নদীর পানি কিছুটা কমে যায়। তবে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে আবার বৃষ্টিপাত বাড়তে শুরু করে। তাই সিলেটে বন্যার শঙ্কা রয়ে গেছে।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জেলায় ৭.০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট ছাড়া অন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা গত বৃহস্পতিবার ছিল বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০২.২ মিলিমিটার। এই ২০২.২ মিলিমিটারের মধ্যে ২০২ মিলিমিটার বৃহস্পতিবার দিনের বৃষ্টি। এ ছাড়া ০.২ মিলি মিটার রাতের বৃষ্টি।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, ‘সিলেটে আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে বৃষ্টিপাত অনেক কম ছিল। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টার ভেতরে বজ্রসহ ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সিলেটের এই দুর্যোগ পরিস্থিতি বিবেচনা করে যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস খবরের কাগজকে বলেন, ‘যেহেতু বর্ষা মৌসুম তাই বন্যার আশঙ্কা থাকবেই। এ জন্য আমাদের বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে।’