ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

মা দিবসের ছড়া

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
আপডেট: ১০ মে ২০২৪, ০২:৪৬ পিএম
মা দিবসের ছড়া

মাকে মনে পড়ে
আহসান মালেক

জষ্ঠি মাসে একটি ছেলে
আমের শাখায় শাখায়,
পাকা আমের গন্ধ শুঁকে
স্বপ্ন চোখে মাখায়।

এমন সময় আকাশ ভেঙে
বৃষ্টি যখন ঝরে,
সেই ছেলেটার মায়ের কথা
অমনি মনে পড়ে।

সেই যে কবে মামণি তার
ফেলে তাকে একা,
কোথায় যেন হারিয়ে গেল
আর পেল না দেখা।

সাঁঝের বেলা দূর আকাশে
জ্বললে তারার বাতি,
উদাস চোখে খুঁজে ফিরে
মাকে আঁতিপাঁতি।

এমনি করে দিন কেটে যায়
এমনি করেই ক্ষণ,
মায়ের স্নেহের মায়া ডোরে
বাঁধা এ জীবন।

 

মা অমূল্য ধন
নীহার মোশারফ

কত স্বপ্ন, বাঁচার আশা
দেশের প্রতি ভালোবাসা
বাঁশের বাঁশি, পুবাল হাওয়া
ঝরনাধারা, পক্ষী নানান
তার ভেতরে মাকে খুঁজি-
স্বদেশ আমার, বসুন্ধরা
গভীর মায়ায় যত্নে গড়া
নিরবধি নদীর ঢেউয়ে
হাজার খুশির পিদিম নাচে
তার ভেতরে স্নেহের পুঁজি।
সকাল হলে মাকে বলি
সূর্যরাঙা মাঠে চলি
তুমি আমার কপালজুড়ে
যখন দিলে আলতো চুমু
দেখে বাবা দিল হেসে-
কীসের দুঃখ, ব্যথা শত
কষ্ট যত হলো গত
মুক্ত মনের ডানাগুলো
ঘুড়ির মতো উড়ে উড়ে
অনেক দূরে গেল ভেসে।
মা তো আমার মা’ই আছে
থাকে আমার কাছে কাছে
মাকে ছাড়া ভাল্লাগে না
খোলা আকাশ, পাহাড়, সাগর
হীরা, চুনি, পান্না, মণি-
মায়ের আদর শীতল শীতল
অমূল্য ধন সোনার খনি।

মা ও খোকা
আবেদীন জনী

মা বলে, এই দুষ্টু খোকা
তুই যে দেখি বড্ড বোকা!
খাস না আঙুর, আপেল কলা
তবুও কিছু যায় না বলা
বলতে গেলেই গাল বালিশ,
অফিস থেকে ফিরলে বাপে
করবি দুশো চার নালিশ।

দুধেভাতেও মন বসে না
মারব ক’টা চড় কষে না!
মায়ের মেজাজ ভীষণ চড়া-
খোকা বলে, মারো মারো
কভু তুমি মারতে পার?
মিছেমিছি মেজাজ দেখাও
মনটা তোমার মায়ায় ভরা।

খোকা আরও হাসে-
একটি বারও মেরেছ কি
গত বারো মাসে?

বকলে খোকা হাসতে থাকে
হাসির বানে ভাসতে থাকে
সেই হাসি তার ঠোঁটে ফোটে
ঠিক যেন টুসটুস,
মাকে বলে নানান ছলে
মুখ লুকিয়ে আঁচলতলে
দাও না লেমন চুস।


মায়ের চোখে আকাশ দেখি
রাফিয়া নাওয়ার


মা যে আমার এই দুনিয়ায়
জান্নাতেরই ঘ্রাণ
মা যে আমার নয়নমণি
মা যে আমার প্রাণ।

মা যে আমার বসুন্ধরা
যত্নে রাখে খুব
মা যে আমার আধার রাতে
জলন্ত এক ধূপ।

মা যে আমার আকাশ সমান
বিশাল যে তার হাত
ওই হাতখানা রাখলে মাথায়
যায় কেটে যায় রাত।

মা যে আমার অপেক্ষা খুব
ব্যাকুলতা যে কী!
মায়ের চোখের তারা দিয়ে
ওই আকাশটা দেখি।


আমার মা
সুশান্ত কুমার দে

আমার মা মহতী, লক্ষ্মী বলি তারে
তাঁর কীর্তি অভূতপূর্ব এই সংসারে,
মায়ের দু’চোখ যেন দুটো ধ্রুবতারা
ধ্রুবতারার আলোয় হই আত্মহারা।
মায়ের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সদা শিশুর প্রতি
কখনো সন্তানের হয় না যেন ক্ষতি,
পৃথিবীর সব সুখ মা’র আঁচল ভরি
সন্তানের সুখের তরে আমৃত্যু লড়ি।

সন্তানের অসুখে মায়ের মুখ ভারি
উপাসনালয়ে বসেই মানত তারি।
মায়ের সব সুখ সব অহংকারে
সন্তানের সুখে বিলিয়ে দেয় তারে।
মায়ের কাছ শিশু যেন সব সুখ
শিশুর হাসি মুখে কেটে যায় দুঃখ,
মায়ের মিষ্টি হাসি কি জাদুর পরশ
শিশুর ভালো-মন্দ মা রাখে খোঁজ?

মা কত কষ্ট করে গর্ভে সন্তান ধরে
নয় মাস দশ দিন জীবন যুদ্ধ লড়ে,
এমন মাকে দুঃখ দিয়ে চাই না সুখ
মাকে সবাই ভালোবাস, দিও না দুখ?
বড় হয়ে মাকে করিব না অবহেলা
মা ছাড়া পৃথিবীটাই দুঃখের ভেলা,
এমন মা যার ঘরে আছে একজন
সেই ঘরে দুঃখটা পালায় সারাক্ষণ


মায়ের খোকন
শাকিব হুসাইন

মায়ের খোকন
ব্যস্ত বেজায়
সারা দিনই কাজে...
কাজের শেষে
ক্লান্তি নিয়ে
ফেরে রাতের মাঝে।

মা-টা যে তার
অসুস্থ খুব
পড়ে থাকে ঘরে...
মায়ের খুশি
আনতে খোকন
এত্ত কিছু করে...
রাতটা হলে
খোকন ঘুমোয়
মায়ের গলা ধরে।

উদার আকাশ
উদার মুখে
মাকে বলে ডেকে—
এমন খোকন
ও মা তুমি
পেলে কোথায় থেকে?

আমার খোকন
আমার পেটের
সাতরাজ্যির ধন...
প্রতি ঘরে
জন্ম হউক
আমার খোকার মন।


মায়ের দোয়া
কবির কাঞ্চন
মায়ের দোয়া সবার আগে
পৌঁছে
বিপদআপদ এক নিমিষে
ঘোচে।

মাকে আমি ভালোবাসি
বেশি
তাই তো আমি মায়ের কাছে
ঘেঁষি।

সবচেয়ে দামি আমার মায়ের
হাসি
তাই তো আমি সেই হাসিতে
ফাঁসি।

মায়ের গায়ের গন্ধ সবার
সেরা
তাই তো আমার মায়ের কাছে
ফেরা।

মায়ের মতো নেই তো এমন
কেহ
শোধ হবে না কেটে দিলে
দেহ।

 

জাহ্নবী

আমরা আঁকি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
আমরা আঁকি

দেবনীল চেীধুরী
কেজি ওয়ানৎ স্কলার্সহোম প্রিপারেটরি
পাঠানটুলা, সিলেট।
/আবরার জাহিন

 

আমরা আঁকি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
আমরা আঁকি

নাজিবাহ ইবনাত প্রান্তি
নবম শ্রেণি 
আটি পাঁচদোনা উচ্চ বিদ্যালয়
কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

/আবরার জাহিন

নীল সাগরের তিমি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
নীল সাগরের তিমি

ইউরোপের একটি ছবির মতো সুন্দর দেশ নরওয়ে। মানুষগুলো ছিমছাম, নির্ভেজাল ও হাসিখুশি। নরওয়ের রয়েছে বিশাল সমুদ্র উপকূল। এ দেশের অনেক মানুষ তাই মাছ ধরে। এজন্য নরওয়েকে জেলেদের দেশ বলা হয়।

নরওয়ের খোলা সাগরে ভেসে বেড়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে তিমির দল। মাঝে মাঝে উপকূলে ঢু দিয়ে যায়। তারা সমুদ্রে খেলা করে। অবাক করার মতো হলেও এটা সত্যি যে, তারা গানও গায়। সে গান অন্য তিমিরাও শুনতে পায় বহু বহু  দূর থেকে। বিজ্ঞানীরা তো এ-কথাও বলেন যে, তিমিদের নিজস্ব ভাষাও আছে। তারা সে ভাষায় নিজেদের মধ্যে কথাও বলে। আর যখন তখন সমুদ্রের বুকে ডিগবাজি খায়। 9তিমিরা দল বেঁধে চলে। অবাক করার মতো কথা হলো, তাদের পরিবারও আছে। মা তিমি তার সন্তানকে পনেরো বছর পর্যন্ত নিজের কাছে রাখে। তার পর ছেড়ে দেয় স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার জন্য।

তো আমাদের এ গল্পের তিমি শিশুটির নাম অ্যাবে। তার মা সিলোনি তাকে খুব আদর করত। খুব ভালোবাসত। কিন্তু যখন অ্যাবের বয়স পনেরো হয়ে গেল, তখন তার মা সিলোনি তাকে স্বাধীন করে দিল। সত্যি সত্যিই, সিলোনি এটা চায়নি। কিন্তু সমাজের নিয়ম বলে কথা! তাই ছেলেকে না ছেড়ে তার উপায় ছিল না। অ্যাবে কয়েকদিন কান্না করতে করতে সমুদ্রে ভেসে বেড়াল। ধীরে ধীরে সমুদ্রের নানা রকম মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণীর সঙ্গে তার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়ে গেল। তাদের সঙ্গে ভেসে বেড়িয়ে, গল্প করে তার সময় ভালোই কাটতে লাগল। ভালো লাগল সমুদ্রের প্রাণীদের সঙ্গে খেলা করতে। এমনি করতে করতে একদিন একটা রে-ফিসের সঙ্গে সাঁতরাতে সাঁতরাতে সে চলে এল নরওয়ের সমুদ্র উপকূলের খুব কাছে। সেখানে নরওয়ের রাজা হ্যানসনের রাজকীয় জাহাজ এমভি মার্টিনা নোঙর করা ছিল। রাজা এই জাহাজে চড়ে তার ভীষণ অসুস্থ ছেলে হ্যানসনকে নিয়ে ইংল্যান্ডে যাবেন উন্নত চিকিৎসা করাতে।

জাহাজটি এক সপ্তাহের মধ্যেই রওনা হবে। ছোট্ট তিমি অ্যাবে আগে কখনো জাহাজ দেখেনি। সে বিস্মিত হলো। আনন্দে সে বড় করে দম নিয়ে সমুদ্রে ডুব দিল, একটু পরেই ভুস করে ভেসে উঠে আকাশের দিকে লাফ দিল পানি ছিটাতে ছিটাতে। তখন অ্যাবেকে মনে হচ্ছিল একটা উড়ন্ত পানির ফোয়ারা। রাজপুত্র হ্যানসন তখন জাহাজের খোলা ডেকে দাঁড়িয়ে ছিল। খালাসিরা ছোটাছুটি করে জাহাজে প্রয়োজনীয় মালপত্র ওঠাচ্ছিল। হ্যানসন তিমিটাকে দেখে ফেলল আর ওকে খুব ভালোবেসে ফেলল। সে তিমিটার উদ্দেশে গান গেয়ে উঠল। গানটা কিন্তু ছোট্ট তিমি অ্যাবের খুব ভালো লাগল। সে প্রতিদিন রাজপুত্র হ্যানসনের সঙ্গে দেখা করতে আসতে লাগল।

একদিন রাজার সেনাপতি রবরয় তিমিটিকে দেখে ফেলল। সে হারপুন গান দিয়ে তিমিটির দিকে গুলি ছুড়ল। ছোট্ট তিমির চারপাশে রক্তে লাল হয়ে গেল পানি। ধীরে ধীরে সে সমুদ্রে তলিয়ে গেল। রাজপুত্র হ্যানসন ডেক থেকে সবকিছু দেখে চিৎকার করে সমুদ্রে দিল ঝাঁপ। সে সাঁতার জানত না, তাই সেও সমুদ্রে তলিয়ে গেল।

সমুদ্রে স্কুবা ডাইভার পাঠিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রাজপুত্রকে আর পাওয়া গেল না। শোনা যায় আজও নরওয়ের জেলেরা যখন সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়, তখন তারা কখনো কখনো রাজপুত্রের করুন কণ্ঠের গান শোনে। জেলেদের মন তখন রাজপুত্রের কথা ভেবে বিষণ্ন হয়ে ওঠে।

/আবরার জাহিন

বৃষ্টিঝরা দিনে

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১১ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১১ পিএম
বৃষ্টিঝরা দিনে
ছবি: সংগৃহীত

মেঘ গুরগুর ডাকছে দেয়া
আকাশ কালো করে,
ঠাণ্ডা হাওয়ার ডানায় চড়ে
নামল বৃষ্টি জোরে।
তা-ধিন তা-ধিন সোনাব্যাঙে
নাচছে খালে বিলে,
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ভাঙা সুরেই
ডাকছে সবাই মিলে।
শিশু-কিশোর উঠোনজুড়ে
করছে লুটোপুটি,
কেউবা বিলে বড়শি পেতে
ধরছে ট্যাংরা পুঁটি।
কদম ফুলের পাপড়ি মেলে
বর্ষা ওঠে হেসে,
নদী-নালা পায় ফিরে প্রাণ
রূপসী বাংলাদেশে।

বাদলা দিনে

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৯ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৯ পিএম
বাদলা দিনে
ছবি: সংগৃহীত

ঝুপঝুপাঝুপ বৃষ্টি ঝরে 
ভরেছে ওই ঝিল,
শব্দ ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ 
নদী ও খালবিল!

জলের নাচন দেখবে খোকন 
ভাল্লাগে না ঘরে,
টইটম্বুর ডোবা পুকুর
জল থইথই করে!

বাদলা দিনে করতে মানা
এমন ছোটাছুটি,
ওই দেখো মা জলে ভাসে 
টেংরা, বেলে, পুঁটি!

শুনব না আজ কোনো বাধা 
ধরব মাগুর কই,
ধুম পড়েছে বিলের মাঝে
মাছ ধরার হইচই!