![সোনারগাঁয়ে সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের](uploads/2024/07/04/Sonargaon-vagetable-1720080674.jpg)
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বেড়েছে সবজি চাষ। গত বছরের চেয়ে এবার ৭ হাজার ৪২৭ টন বেশি সবজি উৎপাদিত হয়েছে এ উপজেলায়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কৃষিজমি বাদেও শিল্পকারখানার আঙিনায়, বাড়ির আঙিনায়, ভবনের ছাদেও চাষ হচ্ছে লাউ, জালি কুমড়া, ফুলকপি, পাতাকপি, পুঁইশাক, লালশাক, ঝিঙে, বেগুন, টমেটো, মরিচ, শিম, কলাসহ নানা প্রকারের সবজি। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় চাষিরা ঝুঁকছেন সবজি চাষে, হচ্ছেন স্বাবলম্বী।
কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাত শতাংশ জমিতে ১ হাজার টাকা খরচ করে পুঁইশাক লাগিয়েছি। পরে সেগুলো ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এরপর লালশাক, ঢ্যাঁড়স, ফুলকপি, বাঁধাকপি চাষ করব। জমির আইলে পেঁপেগাছ ও কলাগাছ লাগিয়েছি। ১ হাজার টাকা খরচ করে ১০টি কলাগাছ লাগিয়েছি। এখন আর খরচ নেই, এখন প্রতিবছর ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আসে।’
হামসাদি এলাকার কৃষক আব্দুল সালাম বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে সবজি চাষ করতে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি করেছি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। পুঁইশাক লাগিয়েছি আড়াই বিঘায়। এতে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত বিক্রি করেছি ১ লাখ টাকারও বেশি। যদি জমিতে এক-দুই মাস দেরিতে পানি আসে, তবে আরও ৪০-৫০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব। এর পরে আমন ধান চাষ করব।’
সনমান্দি এলাকার কৃষক জামান মিয়া বলেন, ‘সাড়ে চার বিঘা জমিতে পুঁইশাক চাষ করে এখন শাক কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছি। যাত্রাবাড়ী পাইকারি কাঁচাবাজার আড়তে পুঁইশাক বিক্রি করতে নিয়ে যাব। সবজি চাষে প্রতি বিঘা জমিতে সিজনে ৪০-৫০ হাজার টাকা আসে। সবজির বাজার ভালো হলেও সবজির বীজ ও সারের দামে নিয়ন্ত্রণ নেই।’
বাড়িমজলিশ এলাকায় ছাদে কৃষিবাগান করেছেন জবরুল ইসলাম মন্টু। তিনি বলেন, ‘শখের বশে ড্রাগন ফলসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করেছি। এখন বাসায় সবজি কেনা লাগে না। আশপাশের ফ্ল্যাটগুলোতেও বিক্রি করতে পারি।’
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা জানান, উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজারে ৫৩৯ হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদন হয়েছিল ৭৭ হাজার ১৭৩ মেট্রিক টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সবজি উৎপাদন হয়েছে ৮৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। লাউ, ঝিঙে, জালি কুমড়া, টমেটো, বেগুন, করলা, পুঁইশাকসহ অন্য সবজিজাতীয় ফসল অল্প খরচেই চাষ করা যায়। তাই পারিবারিক চাহিদা মিটিয়েও ব্যবসায়িকভাবে সফল হন কৃষক। আর এ জন্যই সোনারগাঁয়ে বেড়েছে সবজি চাষ।
তিনি বলেন, ‘আমরা পারিবারিক পুষ্টিবাগান প্রকল্প থেকে সবজি চাষিদের সহযোগিতা করে থাকি। সরকার সারের বিক্রি মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। যদি কোনো দোকানদার বেশি দামে সার বিক্রি করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা কৃষকদের নতুন নতুন জাতের সবজির উন্নত জাতের বীজ এনে দিই ও চাষের পরামর্শ দিয়ে থাকি।’