অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেছেন, দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য বিপুল সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। ব্লু ফাইন্যান্স শুধু অর্থ মন্ত্রণলায়ের বিষয় নয়, এর সঙ্গে অনেক মন্ত্রণলায় ও বিভাগের অংশীদারিত্ব রয়েছে। ইন্টারনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন বিশ্বে বিভিন্ন দেশে ব্লু বন্ড ও ব্লু লোন ইস্যু করছে। বাংলদেশও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং আইএফসি দেশে ব্লু বন্ড চালু করার লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ও ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য ব্লু ইকোনমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে বিনিয়োগ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে বঙ্গোপসাগরের সামুদ্রিক সম্পদের ওপর বাংলাদেশের মানুষের সার্বভৌমত্ব ও সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সমুদ্র সম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণের নিমিত্ত টেরিটোরিয়াল ওয়াটার অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট ১৯৭৪ প্রণয়ন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক আদালতে মায়ানমার ও ভারতের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়ে বিশাল সামুদ্রিক অঞ্চল এবং সম্পদের ওপর দেশের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি গতকাল ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ব্লু ফাইন্যান্স ব্রেকআউট সেশনে চেয়ারপারসন হিসেবে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
এ অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে অর্থ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সুনীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য উদ্ভাবনী অর্থায়ন মডেল অপরিহার্য। সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ ও এর যথাযথ ব্যবহারের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার চলতি অর্থবছরে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। আমাদের ব্লু ইকোনমি সেল সামুদ্রিক খনিজ এবং অন্যান্য সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য ২০টি মন্ত্রণলায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।
ব্লু ফাইন্যান্স বিষয়ে ব্রেকআউট অধিবেশনে মূল প্রবন্ধকার ছিলেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের, প্রফেসর ড. লেইলা চৌকরুন, সিএমএসএফের সদস্য ড. মোহাম্মদ তারেক, বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান ইমাম এবং ইউএনডিপির প্রজেক্ট ম্যানেজার আমিনুল আরেফিন। অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন গবেষণা সংস্থা র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ মহাসাগরীয় অর্থনীতি দ্বিগুণ হয়ে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে ৪০ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থান হবে। তিনি মনে করেন, ব্লু ইকোনমি পানির সম্পদ বৃদ্ধির চাবিকাঠি। এর বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।