![গাজায় এক দিনে আরও ১০৪ মৃত্যু, নিহত ছাড়াল ৩০ হাজার](uploads/2024/02/29/1709224716.gazakk.jpg)
গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজারের ঘর ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার অবরুদ্ধ উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে এ তথ্য।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণ-পশ্চিম গাজায় খাদ্য-সহায়তা সংগ্রহে দাঁড়িয়ে থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে। ওই ঘটনায় ১০৪ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৭৫০ জনের মতো। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একে ঠাণ্ডা মাথার ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলছে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যানুসারে, ইসরায়েলি হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে এ পর্যন্ত অন্তত ৩০ হাজার ৩৫ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৭০ হাজার ৪৫৭ জন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও হামলা নিয়ে একাধিকবার আপত্তি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। এমনকি ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও সতর্ক করেছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু তাতে কান দেয়নি ইসরায়েল। সব মিলিয়ে গাজা পৌঁছে গেছে মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে।
সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, সংঘাত থামিয়ে দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের ওপর বৈশ্বিক চাপ বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘে ‘সাময়িক যুদ্ধবিরতির’ প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধ থামানোর আরেক প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে তারা।
ইসরায়েল এখন রাফায় অভিযান শুরু করতে চাইছে। এত দিন ওই স্থানটিকে নিরাপদ বলে প্রচার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজাবাসীকে বাধ্য করেছে সেখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য। এতে করে সেখানে এখন আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ, যা গাজার মোট ২৩ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মৃতের সংখ্যা জানানোর ক্ষেত্রে হামাস যোদ্ধা ও বেসামরিকদের আলাদাভাবে হিসাব করে না। তবে তারা সম্প্রতি জানিয়েছে, নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের অনুমান, ৭ অক্টোবর থেকে তাদের চালানো হামলায় ১০ হাজার হামাস যোদ্ধা মারা গেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা, মৃত্যু বদলে দিয়েছে গাজাবাসীর পেশাও। আগে বাড়িঘর নির্মাণের কাজে নিয়োজিত ইব্রাহিম আহমেদ এখন কবর তৈরির কাজে ব্যস্ত। তিনি বলেন, ‘অনুভূতি আছে এমন মানুষ হিসেবে আমাকে ভিলা ও অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ থেকে কবর তৈরির দিকে যাওয়াটা কষ্ট দেয়। আমার পেশা কঠিন ছিল। কিন্তু দিন শেষে আমি বাড়িতে এক ধরনের অর্জনের স্বাদ নিয়ে ফিরতাম। ভালো একটা মানসিকতা কাজ করত। এখন প্রতিদিন লাশ ও তাদের স্বজনদের মিছিল আসে। আমি ভিন্ন ভিন্ন মানুষকে দেখি, কিন্তু তাদের মুখ একই, তাদের যন্ত্রণা একই। এটি কষ্টকর।’
এদিকে পবিত্র মাস রমজানে যাতে গাজায় গোলাবর্ষণ বন্ধ থাকে, সে লক্ষ্যে আলোচনা চলছে। তবে রয়টার্সের খবর বলছে, আলোচনার মধ্যেই হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স
এমএ/