![শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি ট্যাংক](uploads/2024/05/14/gaza-1715652431.jpg)
আন্তর্জাতিক মহলের আপত্তি সত্ত্বেও গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গতকাল সোমবার উপত্যকার উত্তরের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের আরও ভেতরে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি ট্যাংক। অন্যদিকে দক্ষিণের রাফায় ক্রমাগত বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের কেন্দ্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল ট্যাংক। গাজায় আটটি শরণার্থী শিবির রয়েছে। তার মধ্যে জাবালিয়া বৃহত্তম। গতকাল শরণার্থী শিবিরের কেন্দ্রে ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিমান হামলায় বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শরণার্থী শিবিরে থাকা শত শত ফিলিস্তিনিকে বের করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
মিসরের সীমান্তবর্তী রাফায় ইসরায়েল বিমান হামলা বাড়িয়েছে। পাশাপাশি শহরটির পূর্ব দিকে স্থলভাগ থেকেও চলছে গোলাবর্ষণ। সেখানে বোমাবর্ষণে নতুন করে মানুষ মারা যাওয়ার খবর এসেছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা রাফার পূর্ব দিকে অবস্থিত একটি রাস্তায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়েছে। এ ছাড়া জাবালিয়ার পূর্ব অংশেও যুদ্ধ হয়েছে দুই পক্ষের।
এদিকে, ইসরায়েলে গাজার কাছে সামরিক বাহিনী বেশ কয়েকবার সতর্ক সংকেত বাজিয়েছে।
ফিলিস্তিনি এলাকা থেকে ছোড়া রকেট ও মর্টারের জন্যই ওই সংকেত বাজানো হয়।
গত শনিবার শেষ ভাগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে হামাসকে সক্রিয় হওয়া থেকে বিরত রাখছে তাদের বাহিনী। তারা যাতে সামরিক সক্ষমতা তৈরি করতে না পারে সে লক্ষ্যে কাজ করছেন তারা।
জাবালিয়ার বাসিন্দা সাঈদ (৪৫) বলেন, ‘তারা সব জায়গায় বোমা হামলা চালাচ্ছিলেন। এমনিক স্কুলের কাছেও যেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। যুদ্ধ আবার শুরু হচ্ছে। আর জাবালিয়ার পরিস্থিতি এখন এরকম।’
এ ছাড়া গাজার জেইতুন, আল সাববার মতো এলাকাগুলোতেও ইসরায়েলি সামরিকে বাহিনী ট্যাংক পাঠিয়েছে। সেখানে বেশ কিছু বাড়িঘর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেসবের মধ্যে বহুতল বেশ কিছু ভবন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত রবিবার সতর্ক করেছেন যে কোনো যুদ্ধ পরবর্তী পরিকল্পনা না রেখে গাজায় বিদ্রোহের মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় প্রায় পুরো গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে এবং এর জেরে মানবিক সংকটও দেখা দিয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। সেবার প্রায় ১২০০ ইসরায়েলি মারা যান। এ ছাড়া হামাস জিম্মি করে নিয়ে যায় ২৫০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে। পরে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে নির্বিচারে গোলাবর্ষণ শুরু করে দেশটি। এতে বেসামরিক মানুষই প্রাণ হারান বেশি। মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধ।
ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজায় লড়াইয়ে এ পর্যন্ত তাদের ৬২০ জন সেনা মারা গেছে। সূত্র: রয়টার্স