দামে সস্তা হওয়ায় আগামী কোরবানি ঈদে ব্রাজিল থেকে গরু আনা যায় কি না সে বিষয়ে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরাকে অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
রবিবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, সাক্ষাতে ব্রাজিলের পক্ষ থেকে অ্যানিমেল প্রোটিনটা ফোকাসে ছিল। বিশেষ করে ব্রাজিল অত্যন্ত কম দামে মাংস রপ্তানি করে। এ বিষয়ে তারা কথা বলেছে। আমরা আগামী কোরবানি ঈদ সামনে নিয়ে তাদের ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছি। যদি সস্তাই হয় তাহলে কোরবানির সময় গরু পাঠানোর ব্যবস্থা করা যায় কি না। আমরা পসিবিলিটিগুলো দেখবো। বেসিক্যালি ইনিশিয়াল ডায়ালগ। মাত্র শুরু।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, আমাদের এ জয়েন্ট ডায়ালগটা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। তাদের বাণিজ্যসচিবও সাক্ষাতে ছিলেন। জুলাইয়ে তারা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আশা করছি এরমধ্যে আমরা কিছু ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে পারব।
গরুর মাংসের দাম প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে আমদানি অ্যালাউ করি, তখন দাম ও হেলথ সার্টিফিকেশন নিয়ে আলাপ হবে। আমাদের এখনো অ্যানিমেল প্রোটিন আমদানি নিষিদ্ধ। আমরা পোলট্রি এবং মাংস ইম্পোর্ট করি না। আমরা আগে স্টাডি করে নিই, তারপর দেখা যাবে কোন দামে এটি আসতে পারে। আমরা বলছি, শুধু বাংলাদেশের মার্কেট না। বাংলাদেশে এটিকে প্রসেস করে এশিয়ান মার্কেটে এন্টার করার বিষয়টি তাদের বলেছি। আমরা সাউথ এশিয়ান হাব মনে করে যেন কাজে লাগাতে পারে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানিতে সহায়তা করবে ব্রাজিল।
আমরা ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আমেরিকার মার্কেটে ঢুকি।
শুল্ক কমানোর ক্ষেত্রে কী করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্রাজিলও একটি গ্রোয়িং ইকোনমি (উদীয়মান অর্থনীতির দেশ)। তারাও নিজেদের শিল্পকে সুরক্ষা দিতে পোশাক খাতে কিছু বিধিনিষেধ রেখেছে। শুধুমাত্র তারা বাংলাদেশ ও চীন থেকে তৈরি পোশাক নেয়। বাকিটা তারা নিজেরা তৈরির চেষ্টা করে। তারা যে কথা দিয়েছে সেটি হলো শুধু ব্রাজিল নয়, আমাদের গার্মেন্টসের এক্সপোর্টটা পুরো রিজনের জন্য যেন হয়। আমাদের টার্গেট শুধু ব্রাজিল নয়, দক্ষিণ আমেরিকার অন্য দেশগুলোও ব্রাজিলকে কেন্দ্র করে এক্সপোর্টের ক্ষেত্রে আমাদের সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, এটা ব্রাজিল থেকে ফরেন মিনিস্ট্রি লেভেলে প্রথম ভিজিট। আমাদের স্বাধীনতার ৫২ বছরে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে এলেন। তারা ট্রেড এবং কমার্সকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি ইনিশিয়াল ডিসকাশন হলো। তারা একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল নিয়ে এসেছে। ওই টিমের সঙ্গে আমাদের এফবিসিসিআইয়ের টিমের সোমবার (আজ) মতবিনিময় হবে। সেখানে আরও দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনা হবে। মূলত আলোচনা করেছি যে আমাদের দেশ থেকে গার্মেন্টসের ডিউটি ফ্রি অ্যাকসেসটা চাই। ওদের থেকে যে কটনটা আমরা নিয়ে আসছি সেই কটনের তৈরি পোশাক যেন আমরা ডিউটি ফ্রি বা কোটা ফ্রি অ্যাকসেস পাই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের ফার্মাসিউটিক্যাল মার্কেট যেন সহজেই ওই দেশে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে সেখানে এক্সপোর্ট করতে পারে। সেই সঙ্গে জুট, লেদার গুডস কীভাবে মার্কেট অ্যাকসেস হয় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।
আমাদের ওষুধশিল্প নিয়ে ব্রাজিলের আগ্রহ আছে কি না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা ওষুধ নিয়ে কথা বলেছি। তারা আমাদের বলেছে তাদের পক্ষ থেকে কোনো অসুবিধা নেই, তাদের কিছু লাইসেন্সিং প্রসেস আছে। আন্তর্জাতিক রেজিস্ট্রেশন আছে।