ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

রাজস্ব আয় নিয়ে আইএমএফের অসন্তোষ

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩০ এএম
আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩০ এএম
রাজস্ব আয় নিয়ে আইএমএফের অসন্তোষ
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় না বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার স্বার্থে রাজস্ব আয় আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণদানকারী সংস্থাটি। 

বুধবার (২৪ এপ্রিল) আইএমএফের ডেভেলপমেন্ট মাইক্রোইকোমিক্স ডিভিশনের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ তাগাদা দেওয়া হয়। বৈঠকে অর্থনীতির  চলমান পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি ঋণ পাওয়ার শর্তগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে ভর্তুকি কমিয়ে বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় হার আরও বাজারভিত্তিক করার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়ানো এবং আর্থিক হিসাবে ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার ওপরও তাগিদ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের শর্ত পূরণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে আইএমএফের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি দল গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় এসেছে। 

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে সাড়ে তিন বছরের মেয়াদে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কার্যক্রমের বিপরীতে আইএমএফ অনেক শর্ত দেয়। রিজার্ভ ছাড়া প্রায় সব শর্ত পূরণ করে দুই দফায় দুই কিস্তির অর্থ পেয়েছেও বাংলাদেশ। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের শর্ত কতখানি কী পূরণ হলো, তার মূল্যায়ন করতে আইএমএফ মিশনের ঢাকায় আসা। 
প্রথম দিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে তারা। আগামী ৮ মে পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিদ্যুৎ বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করবে আইএমএফ মিশন। এসব বৈঠক শেষে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করবে মিশন এবং তা ওয়াশিংটনে আইএমএফের পর্ষদে উপস্থাপন করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুনে তৃতীয় কিস্তির টাকা ছাড় পাওয়ার কথা। 

সূত্র জানায়, গতকাল অর্থ বিভাগের বাজেট এবং ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের সঙ্গে বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে মূলত চলতি সংশোধিত ও আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় শর্তের বাস্তবায়ন এবং সার্বিক অর্থনীতির অন্যান্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।
ঋণ কর্মসূচির অন্যতম শর্ত হচ্ছে চলতি অর্থবছরের পাশাপাশি আগামী অর্থবছরেও কর জিডিপির অনুপাত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়াতে হবে। তবে সার্বিক বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং জাতীয় নির্বাচন থাকায় বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় কিস্তির জন্য গত ডিসেম্বরভিত্তিক রিজার্ভ ও কর রাজস্ব আহরণসহ বেশ কিছু লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েছিল আইএমএফ। 

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সংশোধিত কর রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০ কোটি টাকার বিপরীতে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা আদায় করেছে সরকার। তবে অর্থবছর শেষে আগামী জুন পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কর রাজস্ব আহরণ করতে হবে। এর প্রায় পুরোটায় আহরণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 
চলতি অর্থবছরের ৯ মাসের রাজস্ব আহরণ প্রবৃদ্ধি বিশ্লেষণ করে এনবিআর নিজেই জানিয়েছে জুন শেষে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৮ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। 

জানা গেছে, সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ না হওয়ার শঙ্কা এবং আগামী অর্থবছরে কর জিডিপির অনুপাত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর পর্যাপ্ত কর্মপরিকল্পনা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। একই সঙ্গে তারা রাজস্ব বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। 

বৈঠকে উপস্থিত অর্থ বিভাগের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, শুধু আইএমএফের শর্ত পূরণই নয়, দেশের সার্বিক উন্নয়নে রাজস্ব বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। বিষয়টি নিয়ে অনেক বছর থেকে আলোচনা হলেও তেমন সফলতা আসেনি, বরং ২০১৫ সালের তুলনায় কিছুটা কমে গত কয়েক বছর কর জিডিপির অনুপাত ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এ জন্য করনীতি প্রশাসন এবং কর আহরণ কর্তৃপক্ষকে আলাদা করার পুরোনো আলোচনাটিও পুনরায় উঠে এসেছে। এটি বাস্তবায়ন ছাড়া রাজস্ব বাড়ার তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তবে আলাদা করাসহ রাজস্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। কারণ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের কারণে আগামীতে বৈদেশিক সহায়তা কমে যাবে। তা ছাড়া ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার ঋণে সুদহার বেড়েছে। আগামীতে আরও বাড়বে। তাই ঋণ নেওয়া কঠিন হবে। বাজেট সহায়তা নিলে বিভিন্ন ধরনের শর্তের বিষয় আসে। সব থেকে বড় কথা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বাড়ানো গেলে বাজেট সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। 

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সংস্থাটির রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৮১ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ নিজের লক্ষ্যমাত্রা থেকেই সংস্থাটি পিছিয়ে রয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। সরকারের দেওয়া সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পুরো অর্থবছরে এনবিআরকে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে। 

সব ক্ষেত্রে সততা-জবাবদিহি-স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে: ড. মিজানুর রহমান

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ পিএম
সব ক্ষেত্রে সততা-জবাবদিহি-স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে: ড. মিজানুর রহমান
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান

আমাদের অবশ্যই রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে সততা, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। 

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংসদে বলেছেন, তিনি ও তার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করেছেন। আমাদের উচিত, ওই নীতি বাস্তবায়নে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। প্রধানমন্ত্রীর আশপাশে এখন অনেক চাটার দল। তাদের হাত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা ও মানবাধিকার সংস্থা এম্পাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপল (এলকপ) আয়োজনে ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনাসমূহ’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

মিজানুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের সমাজের মূলভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়। রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ন্যায়বিচারের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করে দেয়। এই মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে একত্রিত হয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের রুখতে সরকারকে দুষ্টচক্রকে (সিন্ডিকেট) চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ দিতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন,  ‘নাগরিকদের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও দেশের ন্যায়সঙ্গত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই শক্তিশালী অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে।’ 

সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাসুদ আখতার অভিযোগ করেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে নেন। গ্রামীণ ব্যাংকের অবকাঠামো, লোকবল ও সুনাম ব্যবহার করে। তিনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনুমোদন ছাড়া একান্ত অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। প্রতিষ্ঠানগুলোতে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন।’

ইউরেশিয়ান টাইমসের প্রতিবেদন ভারসাম্য রক্ষার জন্যই শেখ হাসিনার বেইজিং সফর

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
ভারসাম্য রক্ষার জন্যই শেখ হাসিনার বেইজিং সফর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ফাইল ছবি

এশিয়ার দুই ‘জায়ান্ট’ চীন ও ভারতের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রয়াসে ৮ থেকে ১১ জুলাই চীন সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ইউরেশিয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের আলিঙ্গন থেকে বাংলাদেশকে টেনে আনতে ভারত চমকপ্রদ আক্রমণ চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক মাসের মধ্যে দুবার অতিথি করার পর নতুন ভারতীয় নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি তার প্রথম সরকারি সফরের জন্য ঢাকাকে বেছে নিয়েছেন।

এদিকে চীন বাংলাদেশে একটি সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরি করছে। যদি চীনা নৌবাহিনী কৌশলগত ঘাঁটিতে প্রবেশ করে, তবে ভারতের পূর্ব নৌ-কমান্ডের নৈকট্য বিবেচনা করে এটি ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় হবে। ভারতে নতুন সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী মোদির আমন্ত্রিত প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান। ভারত সরকার তিস্তা নদীর ব্যাপক ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে।

বিশ্বের অর্ধেক বাণিজ্য হয় বঙ্গোপসাগর রুট দিয়ে। ‘মুক্ত, উন্মুক্ত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক’-এর মার্কিন নীতির জন্য এই অঞ্চলটি অপরিহার্য। চীন দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশাধিকার চেয়েছে এবং মায়ানমার ও বাংলাদেশ এই অঞ্চলে প্রবেশের সুবিধা দিয়েছে। বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে তার অবস্থানের তালিকায় বাংলাদেশ এবং মায়ানমারকে অন্তর্ভুক্ত করতে প্ররোচিত করেছে, যেখানে বেইজিং সম্ভবত বিদেশি সামরিক স্থাপনা স্থাপনের চেষ্টা করছে।

 

রোহিঙ্গাদের জন্য ১৯ কোটি টাকা অনুদান ফ্রান্সের

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
রোহিঙ্গাদের জন্য ১৯ কোটি টাকা অনুদান ফ্রান্সের
ফাইল ছবি

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রায় ১৯ কোটি টাকা (১.৫ মিলিয়ন ইউরো) অনুদান দিয়েছে ফ্রান্স সরকার। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ তথ্য জানিয়েছে।

ফ্রান্স সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ইউএনএইচসিআর বলেছে, ফ্রান্সের এই সহায়তায় শরণার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের প্রত্যয় বজায় রাখা যাবে। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের রান্নার জন্য লাকড়ির বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবস্থা করা যাবে, যার মাধ্যমে বন উজাড় ও কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ প্রতিরোধ করে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি সুম্বুল রিজভী বলেন, ‘ফ্রান্স রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য চলমান মানবিক কর্মকাণ্ডের এক অবিচল সমর্থক। এই উদার অনুদান রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ মানবিক সাহায্য ও সুরক্ষা সহায়তা নিশ্চিত করবে। এটি কক্সবাজারের পরিবেশের সফল পুনর্বাসনের মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও শরণার্থী পরিস্থিতিতে থাকা স্থানীয় জনগণকেও সহায়তা করবে।’

প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে অভিবাদন জানিয়ে বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই বলেন, ‘আমরা শরণার্থীদের আরও ভালো সুযোগ তৈরির জন্য কাজ করে যাব। আর আশা করব, তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য।’

পরিশোধ-নিষ্পত্তি ব্যবস্থা ও ট্যারিফ কমিশন বিল পাস

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম
পরিশোধ-নিষ্পত্তি ব্যবস্থা ও ট্যারিফ কমিশন বিল পাস
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

পরিশোধ, নিকাশ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা সংহতকরণ, তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের ঝুঁকি হ্রাসকরণ ও গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিধান প্রণয়নকল্পে জাতীয় সংসদে পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বিল-২০২৪ সংসদে পাস হয়েছে। একই দিন ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস করা হয়।  

মঙ্গলবার (২ জুলাই) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সংসদে বিল দুটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটির ওপর দেয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন। 

বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ‘অগ্রিম পরিশোধ দলিল’ ইস্যু, ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জনসাধারণ থেকে যেকোনো প্রকার বিনিয়োগ গ্রহণ, ঋণ প্রদান, অর্থ সংরক্ষণ বা আর্থিক লেনদেন উদ্ভব হয়, এরূপ কোনো অনলাইন বা অফলাইন প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা যাবে না। এসব বিধান অমান্য করলে সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। 

এছাড়া কোনো ব্যাংক-কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো পরিশোধ ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ, পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা ইলেকট্রনিক মুদ্রায় পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। একইভাবে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স নেয়া ছাড়া কোনো পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। এই বিধান লঙ্ঘনের সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড। এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য, অজামিনযোগ্য এবং অ-আপসযোগ্য হবে। 

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিদ্যমান কোনো আইন নাই। বর্তমান ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার-১৯৭২’- এর আর্টিক্যাল ৭এ(ই) অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ‘বাংলাদেশ পেমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশনস্-২০১৪ এবং রেগুলেশনস্ অন ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, ২০১৪ এর আওতায় সকল পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। এই সংক্রান্ত পৃথক কোনো আইন না থাকায় ব্যাংকসমূহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক লেনদেন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের জন্য বর্ণিত রেগুলেশনস্ পরিপালনের লক্ষ্যে ‘দ্য কনট্রাক্ট এ্যাক্ট,-১৮৭২’-এর অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া, অ-ব্যাংক (ব্যাংক বহির্ভূত) আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিশোধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণেও বর্তমানে কোনো আইন নাই। ফলে, গ্রাহক-স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যাংকের পাশাপাশি অ-ব্যাংক পরিশোধ সেবাদানকারীদের আইনি কাঠামোর আওতায় নেয়া জরুরি বিধায় ‘পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন-২০২৪’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

বিলটি পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ, এস এম ব্রাহানী সুলতান মামুদ ও হামিদুল হক খন্দকার। 

একই দিন সংসদে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন আইন-১৯৯২ এর অধিকতর সংশোধনকল্পে জাতীয় সংসদে আজ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস করা হয়। সংশোর্ধত এই বিলে, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনে ‘সচিব’ পদনাম পরিবর্তনের জন্য আইনে সংশোধনী আনয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন আইন, ১৯৯২ এর সংশোধন বিল আনা হয়েছে। এই বিলটি পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ ও হামিদুল হক খন্দকার।

এলিস/এমএ/

পেনশন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান, আন্দোলন চলবে

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৯ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৯ পিএম
পেনশন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান, আন্দোলন চলবে
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপত্তি জানানোর পর প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। তবে এটিতে গোঁজামিল রয়েছে উল্লেখ করে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে তিন দফা দাবি আদায়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন তারা। 

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তির ৫ ও ৬ নং পয়েন্টের জন্য ধন্যবাদ জানাই। ৮ নং পয়েন্টে যা সংখ্যা দেখিয়েছে সব ঠিক। কিন্তু এটার মধ্যে চরম জালিয়াতি রয়েছে। ২০২৪ সালে টাকা জমা করে ৩০ বছর পরে ২০৫৪ সালে পেনশন পাবেন। তাদের হিসাব অনুযায়ী ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা পাবেন প্রতি মাসে। এই ৩০ বছরে বেতন বৃদ্ধি, ইনক্রিমেন্ট, মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় তার পেনশন হওয়া উচিত ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এটা আমরা বুঝিয়ে দিতে পারব। প্রত্যয় স্কিমে শিক্ষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’ 

ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রজ্ঞাপনের ব্যাখ্যা এভাবে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে হয় না। আমাদের স্বায়ত্তশাসিত দেখিয়ে আলাদা স্কিম করবে, সেটা হবে না। সেবকের কী সুবিধা, প্রত্যয়ের কী সুবিধা, সেটা উল্লেখ করতে হবে। এগুলো আলোচনা করতে হবে। আমরা তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’ 

যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ড. আবদুর রহিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা এটা প্রত্যাখ্যান করছি। এই প্রেস রিলিজের বৈধতা নেই।’