![রাজধানীসহ পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টি, জনজীবনে প্রশান্তি](uploads/2024/05/03/dhaka rainkk-1714677381.jpg)
তীব্র তাপপ্রবাহের পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে রাজধানীতে। ফলে জনজীবনে প্রশান্তি ফিরে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৯টার দিকে ঢাকায় বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন রাত ১২টা ৩ মিনিটে খবরের কাগজকে বলেন, ঢাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। এটা বজ্রসহ বৃষ্টি। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পরে হিসাব করে জানানো হবে। রাত সোয়া একটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাজধানীজুড়ে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে টানা তাপপ্রবাহে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলজুড়েই বিরাজ করছিল অস্বস্তি। তবে দেশের পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম বিভাগের বেশ কয়েকটি স্থানে বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে। অন্যদিকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। তাই হিট অ্যালার্ট আরও ৪৮ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে চলতি মাসে কালবৈশাখী আর তাপপ্রবাহের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল যশোর, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা হওয়ায় রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের কুতুবদিয়ায়, ২৭ মিলিমিটার। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ, রাঙামাটি, কুমিল্লা, সীতাকুণ্ড, মাইজদী কোর্ট, ফেনী, কক্সবাজার, বান্দরবানে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের বাইরে রংপুর ও নেত্রকোনায় সামান্য পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। তাপপ্রবাহ দেশের কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।
শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
তাপপ্রবাহ
বিরাজমান তাপপ্রবাহ পূর্ববর্তী এলাকায় অব্যাহত থাকতে পারে। বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, সারা দেশে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বিস্তার লাভ করতে পারে। তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে এবং তাপপ্রবাহের এলাকা কমে যেতে পারে।
হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ চলমান তাপপ্রবাহ রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
মে মাসে কালবৈশাখী, তাপপ্রবাহের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস
চলতি মে মাসে ৮ দিন কালবৈশাখী, দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ ও একটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক মাস মেয়াদি পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
দেশে ৩-৫ দিন বজ্র, শিলাবৃষ্টিসহ হালকা ধরনের কালবৈশাখী এবং ২-৩ দিন বজ্র, শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি/তীব্র কালবৈশাখী হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও ১-৩টি মৃদু-মাঝারি এবং ১-২টি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ১-২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে ১টি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।