ঢাকা ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

উপকূলজুড়ে ‘রেমাল’ আতঙ্ক, পায়রা-মোংলায় ৭ নম্বর বিপৎসংকেত

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ১০:৫৫ পিএম
আপডেট: ২৬ মে ২০২৪, ১২:৪৫ এএম
উপকূলজুড়ে ‘রেমাল’ আতঙ্ক, পায়রা-মোংলায় ৭ নম্বর বিপৎসংকেত
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া ছবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এ রূপ নিয়েছে। এর প্রভাবে উপকূলের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিসহ বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। আগামীকাল রবিবার (২৬ মে) সন্ধ্যার দিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড়রূপে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়া দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নৌপথ উত্তাল হওয়ায় যাত্রীসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে শনিবার রাত ১০টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নৌপথের সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের সব চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নৈমিত্তিক ছুটি বাতিল, কর্মস্থলে উপস্থিত, সব চিকিৎসাকেন্দ্রে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা রাখা, জরুরি চিকিৎসার প্রস্তুতি রাখাসহ ১১ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। 

অপরদিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ছয় জেলাকে বিশেষভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে বরগুনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সাতক্ষীরায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ। সম্ভাব্য ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে উপকূলের জেলাগুলোতে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। এ ছাড়া শুকনো খাবার, নগদ অর্থসহ ত্রাণসামগ্রী মজুত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। জনগণকে সচেতন করতে কোস্টগার্ড মাইকিংসহ প্রশাসন নানা উদ্যোগ নিয়েছে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকার জনসাধারণকে সতর্ক করছে ফায়ার স্টেশনসমূহ। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক খবরের কাগজকে বলেন, রবিবার সন্ধ্যা থেকে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া বা যেকোনো সাগরদ্বীপে এটি আঘাত হানতে পারে। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘এটার ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ১২০ বা ১৩০ কিলোমিটার উঠতে পারে। ৮৮ থেকে ১১৮-এর মধ্যে থাকলে আমরা প্রবল ঘূর্ণিঝড় বলি। প্রবলে সে রকম শক্তি হয় না। জলোচ্ছ্বাস হলে সে ক্ষেত্রে যদি উপকূলীয় এলাকায় বাঁধগুলো ঠিক থাকলে ক্ষয়ক্ষতি কম হতে পারে।’ 

তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী দু'দিন দেশের আট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি (ক্রমিক নম্বর-০৮) অনুযায়ী, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৮.৮° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৫° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এ পরিণত হয়েছে। এটি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী বর্ষণ হতে পারে। 
ছয় জেলায় বিশেষ প্রস্তুতির নির্দেশনা প্রতিমন্ত্রীর

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য উপকূলবর্তী ছয় জেলাকে বিশেষভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মুহিববুর রহমান। গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। উপকূলবর্তী সব জেলাকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত পূর্বাভাস ও সম্ভাব্য ভূমি অতিক্রম এলাকার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলাসমূহকে অধিকতর প্রস্তুত থাকার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। দেশে ৭৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কয়েক দিন ধরে মাঠে আগাম সতর্কবার্তা প্রচারসহ আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন ও প্রস্তুতের কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে ঘূর্ণিঝড়সহ সব দুর্যোগে তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আমরা যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের দুর্দশা লাঘব এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। এই ঘূর্ণিঝড়টিও যাতে একই ধারাবাহিকতায় সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারি, তার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো এ-সংক্রান্ত আরও খবর:

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য ওঠানামা বন্ধ

চট্টগ্রাম: নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। ফলে পণ্য পরিবহনের জন্য লাইটার জাহাজ সিরিয়াল নেয়নি। তবে বন্দরের জেটিতে কাজ চলছে। বিকেলে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করায় বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-১ জারি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক খবরের কাগজকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে লাইটার জাহাজ যাচ্ছে না। পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। রেমালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত লাইটার জাহাজ বহির্নোঙরে যাবে না। নিম্নচাপের প্রভাবে গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় চট্টগ্রামে ৭৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ত্রাণ কার্যক্রমে নগদ অর্থ বরাদ্দ, চাল, গো-খাদ্য, শিশুখাদ্য ও শুকনো খাবার, কম্বল এবং ওরস্যালাইন মজুত রাখা হয়েছে। 

কক্সবাজারে উত্তাল সাগর, প্রস্তুত ৬৩৮ আশ্রয়কেন্দ্র

কক্সবাজার: বৈরী আবহাওয়ার কারণে উত্তাল রয়েছে সাগর। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক উচ্চতায় প্রভাহিত হচ্ছে জোয়ারের পানি। উত্তাল সমুদ্রে গোসল করতে দেখা গেছে হাজারো পর্যটককে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, সৈকত কর্মীরা সার্বক্ষণিক নজরদারি করছেন। তা ছাড়া লাইফগার্ড কর্মীরাও সাগরে অবস্থান করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সার্বক্ষণিক সতর্ক রয়েছি। এদিকে দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কক্সবাজার জেলায় ৬৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৭ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোলা হয়েছে ৯টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে শতাধিক মেডিকেল টিম। এছাড়া মজুদ আছে ৪৮৬ মেট্রিক টন চাল, ২১ লাখের বেশি নগদ টাকা, ঢেউটিন ২৩ বান্ডিল। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ঝড়ের আগেই মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

পিরোজপুরে ৫৬১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

পিরোজপুর: ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় পিরোজপুরে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, জেলায় ২৯৫ সাইক্লোন শেল্টার ও ২৬৬ স্কুল কাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ ৫৬১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৬ লাখ ১০ হাজার নগদ টাকা, ৬১১ মেট্রিক টন চাল, ৬৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে খোলা হয়েছে কন্টোল রুম।

বরগুনায় জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বরগুনা: বরগুনায় নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীতীরের বাসিন্দারা। গতকাল জেলার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত তিন ফুট বেড়েছে বলে জানান নদীতীরের বাসিন্দারা। বরগুনা সদর উপজেলার বড়ইতলা এলাকায় গেলে দেখা যায়, পানিতে এখানকার বেড়িবাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এখানে আশ্রয়কেন্দ্রের স্বল্পতা রয়েছে। বরগুনার জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। জেলার ৩টি মুজিব কেল্লা, ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৪২২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য, ৩৭ লাখ নগদ অর্থ প্রস্তুত, ১০টি কন্ট্রোল রুম ও ৪২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

বাগেরহাটে প্রস্তুত ৩৫৯ আশ্রয়কেন্দ্র

বাগেরহাট: ঘূর্ণিঝড় রেমাল ধেয়ে আসার খবরে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নদীতীরবর্তী এলাকায় বসবাস করা মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার দু-এক জায়গায় শুরু হয়েছে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। তবে সকাল থেকে আকাশ কখনো রোদ আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন হচ্ছে। নদীতে থাকা মাছ ধরার ট্রলারগুলো উপকূলের ছোট ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক খালিদ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় বাগেরহাটে ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৩ হাজার ৫০৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৬৪৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

সাতক্ষীরায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কা

সাতক্ষীরা: ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সাতক্ষীরায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৮৭টি সাইক্লোন শেল্টার। এসব সাইক্লোন শেল্টারে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এ ছাড়া জরুরি ত্রাণকাজে ব্যবহারের জন্য ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে শুকনো খাবার, ওষুধ ও পানি। প্রস্তুত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালকে ঘিরে আতঙ্কে আছেন সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। তাদের আশঙ্কা, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে বাঁধ ভেঙে আবারও এলাকা প্লাবিত হবে। এ জন্য জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চিন্তিত তারা। সাতক্ষীরা উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৩০টিরও অধিক পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। 

বরিশালে ৫৪১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

বরিশাল: ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় বরিশাল জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নগদ ৫ লাখ টাকা ও ৯৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বরিশাল জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক জানান, ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ জেলার সব  প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।  রেমালে আহত মানুষের জরুরি সেবাদানের জন্য সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে ৯৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য, সিপিপি, স্কাউট সদস্য ও এনজিও কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক জানান, কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফসলের ক্ষতি কম হবে। কারণ ইতোমধ্যে ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ জমির ধান কর্তন করেছেন কৃষকরা। বরিশাল জেলায় ৬৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। 

ঝালকাঠিতে প্রস্তুত ৮৮৫ আশ্রয়কেন্দ্র

ঝালকাঠি: সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলায় ৮২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৬২টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৩৭টি মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিসের ৮টি উদ্ধারকারী দল। এ ছাড়া নগদ ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং জরুরি মুহূর্তে বিতরণের জন্য ৪০০ মেট্রিক টন চাল মজুত আছে। পাশাপাশি শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ৪২৪ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত আছে। সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ৬টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

পটুয়াখালীতে ৭০৩ সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত 

পটুয়াখালী: পটুয়াখালী জেলায় ৭০৩টি সাইক্লোন শেল্টার ও ৩৫টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া ৭৩০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকার শিশুখাদ্য, ১০ লাখ টাকার গো-খাদ্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার রয়েছে ১ হাজার ৫০০ প্যাকেট। নগদ রয়েছে ২৪ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা। জেলায় ৮ হাজার ৭৬০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। ৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন, ওষুধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রয়েছে।

হাতিরপুলে অফিস কক্ষ থেকে যুবকের অর্ধগলিত ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:৪০ এএম
আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:৪০ এএম
হাতিরপুলে অফিস কক্ষ থেকে যুবকের অর্ধগলিত ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর হাতিরপুলের নাহার প্লাজার ৯ তলার একটি অফিস কক্ষ থেকে সেজানুর রহমান আনাস (২৩) নামে এক নিখোঁজ যুবকের অর্ধগলিত ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেল ৫টার দিকে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

আনাস শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার জালাল মুন্সির ছেলে। বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল পশ্চিমপাড়া দরবার শরিফ রোডে থাকতেন। ওই যুবক পেশায় একটি লিফট ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেলস এক্সিকিউটিভ ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মোনায়েম। তিনি জানান, খবর পেয়ে নাহার প্লাজার ৯ তলা থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই যুবক ফ্যানের হুকের সঙ্গে স্টিলের তার দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিলেন। এতে তার লাশ কিছুটা পচন ধরে গেছে।

তিনি আরও জানান, নাহার প্লাজার ৯ তলায় ঢাকা লিফট ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির অফিস। ওই যুবক সেই অফিসের সেলস এক্সিকিউটিভ ছিলেন। ঈদ উপলক্ষে ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে বন্ধ ছিল অফিসটি। আর ২৫ জুন থেকে তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার দুপুরে কোম্পানির মালিক পারভেজ বাবু অফিসে গিয়ে ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। অনেক ধাক্কাধাক্কির পর দরজা খুলে যায়। তখন ওই যুবককে অফিসের ভেতরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, চার দিন আগে আনাস অফিসে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। 

মৃত আনাসের মামা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সাত মাস আগে বিয়ে করে আনাস। কিন্তু বাসা ছোট হওয়ায় স্ত্রীকে বাসায় তুলতে পারছিল না। এসব বিষয় নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমান করে গত ২৫ জুন রাত ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে আসে সে। এরপর থেকে মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। শুক্রবার তার অফিস থেকে ফোন এলে তারা জানতে পারেন, আনাস গলায় ফাঁস দিয়েছে।

খাজা/এমএ/

নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:৩০ এএম
আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:৩০ এএম
নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ছবি : সংগৃহীত

নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। শুক্রবার (২৮ জুন) জাতীয় জাদুঘরে ‘বজলুর রহমান স্মৃতিপদক ২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান বিচারপতি  বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অবিনশ্বর চেতনার মাপকাঠিতে সমকালীন ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ঈর্ষণীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠের যে অসীম তৃষ্ণা ছড়িয়ে দিতে পেরেছে, তাতে আমরা আশাবাদী হই। সাহস পাই পরাজিত শক্তিরা যতই ষড়যন্ত্র করুক, এ মাটির বুক থেকে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, শহিদের রক্তবিন্দুকে মুছে ফেলা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো অনন্তকাল আমাদের হাত ধরে থাকবে, পথ দেখিয়ে যাবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংবাদিকতায় বজলুর রহমান স্মৃতিপদক-২০২৩ (ইলেকট্রনিক মিডিয়া) পেয়েছেন চ্যানেল আইয়ের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট লায়লা নওশীন। প্রিন্ট মিডিয়া ক্যাটাগরিতে যুগ্মভাবে পুরস্কার পেয়েছেন ভোরের কাগজের ঝর্ণা মনি ও ডেইলি স্টারের আহমাদ ইসতিয়াক।

সুস্থ আছেন ডেপুটি স্পিকার

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:২৩ এএম
আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:২৩ এএম
সুস্থ আছেন ডেপুটি স্পিকার
ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। ফাইল ছবি

নিজ সংসদীয় এলাকায় গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। তবে এখন তিনি সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আব্দুল মালেক।

শুক্রবার (২৮ জুন) পাবনার বেড়া উপজেলার আব্দুল খালেক স্টেডিয়ামে আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেখানেই তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে হেলিকপ্টারযোগে দ্রুত ঢাকায় আনা হয়। ঢাকার সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে পিএস আব্দুল মালেক খবরের কাগজকে জানিয়েছেন, ডেপুটি স্পিকার এখন সুস্থ আছেন। তিনি সিএমএইচে রয়েছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তিনি কেবিনে বিশ্রাম নিচ্ছেন। এখনো রিপোর্ট আসেনি।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় বেড়া আব্দুল খালেক স্টেডিয়াম থেকে নৌবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় আনা হয়। এর আগে বেলা ১১টার দিকে বেড়া বিপিন বিহারী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধন শেষে নিজ বাড়িসংলগ্ন নৌকা চত্বরে বৃক্ষরোপণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ তিনি অসুস্থতা বোধ করেন‌ এবং হেলে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাকে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কিছুটা সুস্থতাবোধ করায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় আনা হয়।

 

জনসম্পৃক্ততা বিঘ্নিত না করে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:০১ এএম
আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম
জনসম্পৃক্ততা বিঘ্নিত না করে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: বাসস

জনসম্পৃক্ততা বিঘ্নিত না করে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি ভিভিআইপিদের জন্য নিরাপত্তাবলয় তৈরিতে সব সহযোগী এজেন্সির সঙ্গে সুসম্পর্ক, নিবিড় যোগাযোগ ও সমন্বয় বজায় রাখার পাশাপশি ভিভিআইপিদের জনসংযোগের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখার তাগিদ দেন। খবর বাসসের। 

শুক্রবার (২৮ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)-এর ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আগে এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

তিনি এসএসএফকে বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ। আপনাদের কোনো আচরণে জনগণ যেন কষ্ট না পায় সেদিকে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’ রাষ্ট্রপতি সদা পরিবর্তনশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় এসএসএফ সদস্যদের সর্বদা বলিষ্ঠ মনোবল, প্রশ্নাতীত আনুগত্য ও পেশাদারত্বের সর্বোত্তম প্রয়োগ ঘটানোর উপদেশ দেন। এসএসএফের দায়িত্ব পালনের প্রতিটি ক্ষেত্র ‘অত্যন্ত স্পর্শকাতর’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির চক্রান্ত ও সর্বোপরি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের কারণে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার বিষয়টি সব সময়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং। 

অতি কঠোরতা ও বাড়াবাড়ির কারণে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা ও জনগণের মধ্যে যেন কোনো দূরত্ব বা ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয় সেদিকটিও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করারও নির্দেশনা প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, নিরাপত্তা আর জনসম্পৃক্ততা দুটিকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। জনগণ থেকে দূরত্ব সৃষ্টি করে নয়, বরং জনসম্পৃক্ততা স্বাভাবিক রেখেই পেশাদারত্বের সঙ্গে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এসএসএফের সদস্যদের চারিত্রিক দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং মানবিক গুণাবলি অর্জনের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর পেশাদার, দক্ষ ও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি চৌকস বাহিনী হিসেবে এসএসএফ গড়ে তোলা হয়েছে। ১৯৮৬-এর ১৫ জুন, রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী (পিএসএফ) গঠিত হয়, পরবর্তী সময় দেশে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পর একে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) নামে নামকরণ করা হয়। এসএসএফ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু পরিবার এবং রাষ্ট্রীয় প্রটোকল অনুযায়ী ভিভিআইপি ও বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সুরক্ষা প্রদান করে এবং ভিভিআইপিদের ওপর সম্ভাব্য হুমকি প্রতিরোধ এবং সক্রিয় হুমকি থেকে ভিভিআইপিদের সুরক্ষায় বেসামরিক প্রশাসন এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ভিভিআইপিদের অফিস ও বাসস্থানের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করে এসএসএফ।

এ সময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

 

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে আ.লীগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান তথ্য প্রতিমন্ত্রীর

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে আ.লীগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান তথ্য প্রতিমন্ত্রীর
ছবি: বাসস

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘স্মার্ট ওয়ার্ল্ডের সামনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আমরা স্মার্ট আওয়ামী লীগ গড়তে চাই। সে জন্য আমি নতুন প্রজন্মকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

শুক্রবার (২৮ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘ইতিহাসের গতিধারায় বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সংবাদচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন প্রজন্ম কেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবে, সে বিষয়ে তিনি একটি ছোট লেখা লিখেছেন।

তিনি বিরোধী দলগুলোকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘কিছু দল আছে যারা ক্যান্টনমেন্টে বিভিন্ন সামরিক শাসকের পকেট থেকে জন্ম নিয়েছে অথবা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দল। আরও কিছু দল আছে যারা খুবই দুর্বল এবং কিছু দাবিদাওয়া করা ছাড়া তাদের আর কোনো সক্ষমতা নেই।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যাদের বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হয়। এ দেশের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা আওয়ামী লীগ পূরণ করেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট নাগরিক দরকার। এটি করার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাদের অভিন্ন মূলমন্ত্রের আওতায় আনতে কাজ করছি।’

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ, সহসভাপতি কাজী শওকত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমা আক্তার লাবণ্য ও শাকুর হোসেন শাকু, দপ্তর সম্পাদক আরমান হোসেন অপু প্রমুখ।