![ঘূর্ণিঝড় রিমাল : দ্বিতীয় দিনেও দুর্ভোগ ছিল রাজধানীতে](uploads/2024/05/28/Dhaka-1716910102.jpg)
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে গতকাল সোমবার (২৭ মে) দিনভর বৃষ্টির পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ মে) ভোরে বৃষ্টি থেমে গেলেও বিকেল পর্যন্ত রাজধানীবাসী অনেকে পানিবন্দি হয়ে থাকার খবর জানান। সোমবার ঝোড়ো হাওয়ায় ঢাকার সড়কে যেসব গাছপালা ভেঙে পড়েছিল, বিকেল পর্যন্ত তা সরাতে তৎপর ছিলেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা।
আজ দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর নানা সড়কে ডালপালা ভাঙা, উপড়ানো গাছপালা দেখা গেছে। খবরের কাগজের প্রতিবেদকরা বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে দেখতে গেলে রাজধানীবাসী তাদের দুর্ভোগের কথা জানান।
রাজধানীর উত্তরার ধরেঙ্গার টেক, রানাভোলা, দক্ষিণখানের পাশাপাশি ডেমরার কোনাপাড়া, মেরুল বাড্ডার টেকপাড়া, আনন্দনগর, পুরান ঢাকার বংশাল, নাজিরাবাজার; রায়েরবাজার, রামপুরার মিরবাগ, মুগদা, শান্তিনগরের কিছু সড়কে গতকাল দুপুর পর্যন্ত পানি জমে থাকার কথা জানান এলাকাবাসী। জলাবদ্ধ এলাকার বাসিন্দারা দুই থেকে তিন গুণ ভাড়া দিয়ে রিকশা বা রিকশাভ্যানে মূল সড়কে এসেছেন। অনেক এলাকায় রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলায় বিপাকে পড়েছেন নাগরিকরা। জলাবদ্ধ সড়কে রিকশা উল্টে যাত্রী আহত হওয়ার কিছু ভিডিওচিত্র এসেছে খবরের কাগজের কাছে। অনেকে বাধ্য হয়ে দূষিত পানি ভেঙেই যাতায়াত করতে বাধ্য হয়েছেন।
উত্তরার রানাভোলা এলাকার বাসিন্দা হিল্লোল জাহান বলেন, ‘উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের পরেই ধরেঙ্গার টেক। এখানে কোনো ড্রেনেজ সিস্টেম নেই, সঠিক রাস্তাঘাটও নেই। সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকা এটি। ২০২২ সালে রাস্তা কাটা শুরু হয়, যা এখনো প্রাথমিক পর্যায়েই আছে। রাস্তা চারদিক থেকে এমনভাবে কাটা হয়েছে যে, এলাকার ভেতর থেকে বাইরে এবং বাইরে থেকে ভেতরে যাওয়ার পথ নেই। এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। টানা বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমে গেছে। ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত পানি ডিঙিয়ে মানুষ যাতায়াত করছে।’
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নিউ মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট আর ঢাকা কলেজসংলগ্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার কথা জানান এসব এলাকার বাসিন্দারা। সোমবারের টানা বৃষ্টিতে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, নূরজাহান মার্কেট পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। আজ দুপুরেও ব্যবসায়ীদের পানি সরাতে দেখা গেছে। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) পার্শ্ববর্তী আবাসিক এলাকার কজন বাসিন্দা জানান, দুপুরেও সেখানে হাঁটুসমান পানি জমেছিল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন নায়েমে প্রশিক্ষণ নিতে আসা বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের সহসভাপতি মাখন সরকার জানান, ‘মেরুল বাড্ডা এলাকার সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতি তৈরি হয় ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের টেকপাড়া এলাকায়। টিনশেড ঘরগুলোতে পানি উঠে গেছে। টেকপাড়া মন্দির থেকে হাজি আকবর আলী রোড পর্যন্ত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এই সড়কে পানি জমে থাকায় রিকশা চলাচলের উপায়ও ছিল না। সেই পানি নেমেছে বিকেলে।’
দক্ষিণখানের বাসিন্দা হাসিব-ই-নূর বলেন, ‘উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের রেললাইনের পরে দক্ষিণখান রোডে ৫-৬ কিলোমিটার রাস্তা দুই বছর ধরে শুধু কাটাকাটি চলছে। কবে যে ভরাট হবে, কবে যে রাস্তা হবে, আমরা কিছুই জানি না।’