ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

পোশাকশিল্প খাত নগদ প্রণোদনা ২০২৯ সাল পর্যন্ত রাখার দাবি

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৪, ১১:৩২ এএম
আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪, ১১:৩২ এএম
নগদ প্রণোদনা ২০২৯ সাল পর্যন্ত রাখার দাবি
ছবি : খবরের কাগজ

দেশের পোশাকশিল্প খাতের নেতারা চলমান সব ইনসেনটিভ আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বিকল্প ইনসেনটিভ প্রবর্তন না করা পর্যন্ত চলমান ইনসেনটিভগুলো না কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এ খাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে আরও সহায়তার দাবি জানানো হয়েছে। এতে উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়বে বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে শনিবার (৮ জুন) উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী নেতারা এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘এবারের বাজেটের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে একাধিকবার মূল্যস্ফীতিকে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসায় নতুন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের এই প্রধান খাতটির জন্য কিছু নীতি সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমাদের মূল প্রস্তাবগুলো বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল বাজেটে পোশাকশিল্পের জন্য সহায়ক কিছু নীতি সহায়তা থাকবে। বিশেষ করে উৎসে কর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং এটিকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে গণ্য করার বিষয়ে প্রত্যাশা ছিল। পাশাপাশি আরও প্রত্যাশা ছিল, বাজেটে ইনসেনটিভের ওপর আয়কর অব্যাহতি, শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য ও সেবা ভ্যাটমুক্ত রাখা, এইচএস কোড ও ওজনসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা, ইআরকিউর ওপর আয়কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, অগ্নি ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম পুনঃস্থাপনের ক্ষেত্রে আমদানির ওপর কর রেয়াত, পোশাকশিল্পের ঝুটের ওপর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট ও রিসাইকেল ফাইবার সরবরাহের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি ছিল। এসব বিষয়ে বাজেটে কোনো ঘোষণা নেই। এটি এ খাতের ব্যবসায়ীদের হতাশ করেছে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘বিটিএমএ প্রাইমারি টেক্সটাইল সেক্টরের সংগঠন। আমরা তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাণিজ্য সুসংহত করা, পণ্যের বহুমুখীকরণ, নতুন নতুন বাজার তৈরি ও একই সঙ্গে টেক্সটাইল ও ক্লোদিং খাতের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছি। বিটিএমএর সদস্য স্পিনিং, উইভিং ও ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিলগুলোও দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের প্রয়োজনীয় সুতা ও কাপড় সরবরাহের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা টেক্সটাইল ও ক্লোদিং খাতের তিনটি অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের নিয়ে একসঙ্গে বসেছি। সামনে দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে হলে টেক্সটাইল ও ক্লোদিং খাতে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে তৈরি পোশাকশিল্পের ঝুট বা বর্জ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট ও তা থেকে উৎপাদিত ফাইবার সরবরাহের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ম্যান মেইড ফাইবারের ওপর ধার্য করা ৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার, ফ্লাক্স ফাইবারের ওপর থেকে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর ও ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর থেকে অব্যাহতি, আগের মতো চিলার মেশিনকে ক্যাপিটাল মেশিনারি হিসেবে গণ্য করে ১ শতাংশ হারে আমদানির সুবিধা দেওয়া, টেক্সটাইল শিল্প-কারখানায় স্থাপিত ইটিপিতে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ শূন্য শুল্ক হারে আমদানির সুবিধা দেওয়া এবং আমদানি করা পণ্যের এইচএস কোড ভুল হলে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানা করার বিধান প্রত্যাহার করতে হবে।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, কঠিন বাস্তবতায় নানামুখী চ্যালেঞ্জ নিয়ে এবার সংকোচনমূলক বাজেট প্রস্তাবনা করা হয়েছে। উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের চেয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ ধরা হয়েছে এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে ধরে রাখার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। বাজেটে শিক্ষা ও দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাজেটের ইতিবাচক দিক।
এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতিকে একাধিকবার অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আসায় আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের এই প্রধান খাতটির জন্য কিছু নীতি সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হলেও বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমাদের মূল প্রস্তাবগুলো বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। তবে বস্ত্র ও পোশাকশিল্পের জন্য সহায়ক প্রস্তাবনাগুলোকে আমরা সাধুবাদ জানাই, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ভ্যাট আপিলের ক্ষেত্রে দাবীকৃত অর্থের ২০ শতাংশ জমা দিতে হতো। সেটা কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। ১৭টি টেক্সটাইল পণ্যে রেয়াতি হারে আমদানির সুবিধা দেওয়া হয়েছে। শিল্প-কারখানায় ৫০ টন বা অধিক ক্ষমতার চিলার আমদানির ক্ষেত্রে সর্বমোট কর ১০৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। আগে এটি ১ শতাংশ রেয়াতি হারে আমদানির বিধান ছিল। আমরা আবার এটি ১ শতাংশ রেয়াতি হারে আমদানির অনুমোদন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘কোভিড মহামারি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভূ-রাজনৈতিক কারণে সৃষ্ট বিশ্বমন্দা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশে সুদের হার বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। একই সঙ্গে পণ্যের দরপতন হয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ব্যয় পাঁচ বছরে দফায় দফায় বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ফলে শিল্প একটি সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে আমাদের পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আশঙ্কাজনকভাবে কমে এসেছে। শুধু মে মাসেই কমেছে ১৭ শতাংশ। আমরা মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়িয়েছি, কিন্তু আমাদের পণ্যমূল্য বাড়েনি। বরং গত ৯ মাসে আমাদের প্রধান পণ্যগুলোর দরপতন হয়েছে ৮ থেকে ১৮ শতাংশ। শিল্প যখন এ রকম একটি সংকটময় পরিস্থিতিতে রয়েছে, তখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল সিংহভাগ রপ্তানি আয় অর্জনকারী পোশাকশিল্পকে সহায়তা দেওয়া এবং এর মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা।’

লিখিত বক্তব্যে বিজিএমই সভাপতি বলেন, ‘তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এক্সিট পলিসি প্রবর্তন করা। কারণ নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ব্যবসায় টিকতে না পেরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে এবং নিকট ভবিষ্যতে আরও অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গত ১০ বছরের ব্যবধানে সচল কারখানার সংখ্যা ৫ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০-তে নেমে এসেছে। কোভিডকালে অনেক ক্রেতা মূল্য পরিশোধ করেনি। অনেক অসাধু ক্রেতা পণ্য নিয়ে দাম দেয় না। অথচ সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলো যে কাঁচামাল আমদানি করে, হোক সেটি ত্রুটিপূর্ণ, তার জন্যও মূল্য পরিশোধ করতে হয়। কারখানার অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যাংক টাকা কেটে নেয়। এতে অনেক কারখানা পথে বসেছে। এ জন্য আমরা একটি এক্সিট পলিসি প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছি। পাশাপাশি কারখানাগুলোর সুরক্ষার জন্য এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রবর্তন করার দাবিও পুনরায় ব্যক্ত করছি।

সব ক্ষেত্রে সততা-জবাবদিহি-স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে: ড. মিজানুর রহমান

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:০২ পিএম
সব ক্ষেত্রে সততা-জবাবদিহি-স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে: ড. মিজানুর রহমান
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান

আমাদের অবশ্যই রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে সততা, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। 

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংসদে বলেছেন, তিনি ও তার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করেছেন। আমাদের উচিত, ওই নীতি বাস্তবায়নে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। প্রধানমন্ত্রীর আশপাশে এখন অনেক চাটার দল। তাদের হাত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা ও মানবাধিকার সংস্থা এম্পাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপল (এলকপ) আয়োজনে ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনাসমূহ’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

মিজানুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের সমাজের মূলভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়। রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ন্যায়বিচারের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করে দেয়। এই মহামারি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে একত্রিত হয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের রুখতে সরকারকে দুষ্টচক্রকে (সিন্ডিকেট) চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ দিতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন,  ‘নাগরিকদের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও দেশের ন্যায়সঙ্গত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই শক্তিশালী অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে।’ 

সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাসুদ আখতার অভিযোগ করেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে নেন। গ্রামীণ ব্যাংকের অবকাঠামো, লোকবল ও সুনাম ব্যবহার করে। তিনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনুমোদন ছাড়া একান্ত অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। প্রতিষ্ঠানগুলোতে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন।’

শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রীর অফিস কক্ষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াংমিং ইয়ংয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এ কথা বলেন মন্ত্রী। 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আন্দোলনে নেমেছেন সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বা কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে। গত সোমবার থেকে দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয়। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, প্রত্যয় স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। 

প্রত্যয় কর্মসূচি গত পয়লা জুলাই থেকে চালু হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৪০৩টির মতো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যয় স্কিমের আওতায় পেনশন দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এই স্কিম প্রযোজ্য হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বেশি সহায়তা করছে। আগামীতে তারা সহায়তা অব্যাহত রাখবে। 

পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা: এদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এটি প্রত্যাহারের দাবিতে যখন আন্দোলন করছেন, তখন অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১ জুলাই ‘প্রত্যয়’ যাত্রা শুরু করেছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একটি টেকসই পেনশনব্যবস্থায় আনার জন্যই এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। প্রত্যয় স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য। বর্তমানে ৪০৩টি স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে ৯০টির মতো প্রতিষ্ঠানে পেনশনব্যবস্থা চালু আছে। বাকি ৩১৩টি প্রতিষ্ঠানে চালু রয়েছে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড (সিপিএফ)। সিপিএফ সুবিধার আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এককালীন আনুতোষিক পেয়ে থাকেন, পেনশন পান না।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে সরকারি পেনশনে ‘আনফান্ডেড ডিফাইন্ড বেনিফিট’ পদ্ধতির পেনশনব্যবস্থা চালু আছে। পেনশনের যাবতীয় ব্যয় বাজেট থেকে মেটানো হয়। এখন ‘ফান্ডেড ডিফাইন্ড বেনিফিট’ পদ্ধতির পেনশনব্যবস্থা চালু হওয়ায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বেতন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে মাসিক জমার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর প্রাপ্ত মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকার মধ্যে যেটা কম, সেটা কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বেতন হতে কর্তন করা হবে। যতটুকু কর্তন করা হবে, সেই পরিমাণ অর্থ দেবে প্রতিষ্ঠান। উভয় অর্থ সরকারি হিসাবে জমা হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আনফান্ডেড ডিফাইন্ড বেনিফিট পদ্ধতির পেনশনব্যবস্থায় সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ ক্রমাগত বাড়ছে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই ব্যবস্থা নয়। অন্যদিকে ফান্ডেড কন্ট্রিবিউটরি পেনশনব্যবস্থায় কর্মীদের চাঁদা এবং বিনিয়োগের মুনাফার ভিত্তিতে একটি তহবিল গঠিত হবে। ফলে এটি দীর্ঘ মেয়াদে একটি টেকসই পেনশনব্যবস্থা। নতুন ব্যবস্থায় ধীরে ধীরে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর মধ্যে আনা সম্ভব হবে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও ২০০৪ সাল থেকে এ পেনশনব্যবস্থা চালু আছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিরত, তারা আগের মতোই পেনশন সুবিধা পাবেন। কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একই পদে বা উচ্চতর কোনো পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলে তিনি সার্ভিস প্রোটেকশন ও পে-প্রোটেকশন প্রাপ্ত হন বলে এটিকে নতুন নিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয় না। সে ক্ষেত্রে তাদের বিদ্যমান পেনশন সুবিধার আওতায় থাকার সুযোগ থাকবে। তাদের অর্জিত ছুটি প্রাপ্যতার ভিত্তিতে দেওয়া হয় বলে ছুটি জমা থাকা সাপেক্ষে তা বহাল থাকবে।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বলেছে, কন্ট্রিবিউটরি পেনশন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এককালীন নয় বরং মাসিক পেনশনের যুক্তিসংগত পরিমাণ নির্ধারণ করাই অগ্রগণ্য। এ ক্ষেত্রে আনুতোষিকের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বরং বিদ্যমান মাসিক পেনশনের কয়েক গুণ বেশি মাসিক পেনশন দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রত্যয় কর্মসূচিতে মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতন থেকে কর্তন করা হলে এবং একই পরিমাণ অর্থ প্রতিষ্ঠান জমা করলে ৩০ বছর পর একজন পেনশনার প্রতি মাসে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা হারে আজীবন পেনশন পাবেন। তার নিজ আয়ের মোট জমা করা অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ টাকা এবং তিনি যদি ১৫ বছর ধরে পেনশন পান, সে ক্ষেত্রে তার মোট প্রাপ্তি হবে ২ কোটি ২৪ লাখ ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা। এ প্রাপ্তি তার জমার প্রায় সাড়ে ১২ গুণ। পেনশনে যাওয়ার পর ৩০ বছর জীবিত থাকলে পেনশনার পাবেন তার জমার প্রায় ২৫ গুণ অর্থ।

বিদ্যমান ব্যবস্থায় পেনশনার আজীবন পেনশন পান। তার অবর্তমানে পেনশনারের স্বামী বা স্ত্রী এবং প্রতিবন্ধী সন্তান আজীবন পেনশন পান। নতুন পেনশনব্যবস্থায়ও পেনশনার আজীবন পেনশন পাবেন। তবে পেনশনারের অবর্তমানে তার স্বামী বা স্ত্রী অথবা নমিনি পেনশন শুরুর তারিখ থেকে ১৫ বছর হিসাবে যে সময় বাকি থাকবে, সে পর্যন্ত পেনশন পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন পেনশনার অবসরে যাওয়ার পর ৫ বছর পেনশন পেয়ে এরপর মারা গেলেন। এ ক্ষেত্রে তার স্বামী বা স্ত্রী অথবা নমিনি আরও ১০ বছর পেনশন পাবেন। বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথাও তুলে ধরা হয়।

ইউরেশিয়ান টাইমসের প্রতিবেদন ভারসাম্য রক্ষার জন্যই শেখ হাসিনার বেইজিং সফর

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
ভারসাম্য রক্ষার জন্যই শেখ হাসিনার বেইজিং সফর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ফাইল ছবি

এশিয়ার দুই ‘জায়ান্ট’ চীন ও ভারতের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রয়াসে ৮ থেকে ১১ জুলাই চীন সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ইউরেশিয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের আলিঙ্গন থেকে বাংলাদেশকে টেনে আনতে ভারত চমকপ্রদ আক্রমণ চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক মাসের মধ্যে দুবার অতিথি করার পর নতুন ভারতীয় নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি তার প্রথম সরকারি সফরের জন্য ঢাকাকে বেছে নিয়েছেন।

এদিকে চীন বাংলাদেশে একটি সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরি করছে। যদি চীনা নৌবাহিনী কৌশলগত ঘাঁটিতে প্রবেশ করে, তবে ভারতের পূর্ব নৌ-কমান্ডের নৈকট্য বিবেচনা করে এটি ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয় হবে। ভারতে নতুন সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী মোদির আমন্ত্রিত প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান। ভারত সরকার তিস্তা নদীর ব্যাপক ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে।

বিশ্বের অর্ধেক বাণিজ্য হয় বঙ্গোপসাগর রুট দিয়ে। ‘মুক্ত, উন্মুক্ত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক’-এর মার্কিন নীতির জন্য এই অঞ্চলটি অপরিহার্য। চীন দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশাধিকার চেয়েছে এবং মায়ানমার ও বাংলাদেশ এই অঞ্চলে প্রবেশের সুবিধা দিয়েছে। বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে তার অবস্থানের তালিকায় বাংলাদেশ এবং মায়ানমারকে অন্তর্ভুক্ত করতে প্ররোচিত করেছে, যেখানে বেইজিং সম্ভবত বিদেশি সামরিক স্থাপনা স্থাপনের চেষ্টা করছে।

 

রোহিঙ্গাদের জন্য ১৯ কোটি টাকা অনুদান ফ্রান্সের

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
রোহিঙ্গাদের জন্য ১৯ কোটি টাকা অনুদান ফ্রান্সের
ফাইল ছবি

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রায় ১৯ কোটি টাকা (১.৫ মিলিয়ন ইউরো) অনুদান দিয়েছে ফ্রান্স সরকার। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ তথ্য জানিয়েছে।

ফ্রান্স সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ইউএনএইচসিআর বলেছে, ফ্রান্সের এই সহায়তায় শরণার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের প্রত্যয় বজায় রাখা যাবে। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের রান্নার জন্য লাকড়ির বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবস্থা করা যাবে, যার মাধ্যমে বন উজাড় ও কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ প্রতিরোধ করে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি সুম্বুল রিজভী বলেন, ‘ফ্রান্স রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য চলমান মানবিক কর্মকাণ্ডের এক অবিচল সমর্থক। এই উদার অনুদান রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ মানবিক সাহায্য ও সুরক্ষা সহায়তা নিশ্চিত করবে। এটি কক্সবাজারের পরিবেশের সফল পুনর্বাসনের মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও শরণার্থী পরিস্থিতিতে থাকা স্থানীয় জনগণকেও সহায়তা করবে।’

প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে অভিবাদন জানিয়ে বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই বলেন, ‘আমরা শরণার্থীদের আরও ভালো সুযোগ তৈরির জন্য কাজ করে যাব। আর আশা করব, তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য।’

পরিশোধ-নিষ্পত্তি ব্যবস্থা ও ট্যারিফ কমিশন বিল পাস

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম
পরিশোধ-নিষ্পত্তি ব্যবস্থা ও ট্যারিফ কমিশন বিল পাস
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

পরিশোধ, নিকাশ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা সংহতকরণ, তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের ঝুঁকি হ্রাসকরণ ও গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিধান প্রণয়নকল্পে জাতীয় সংসদে পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বিল-২০২৪ সংসদে পাস হয়েছে। একই দিন ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস করা হয়।  

মঙ্গলবার (২ জুলাই) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সংসদে বিল দুটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটির ওপর দেয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন। 

বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ‘অগ্রিম পরিশোধ দলিল’ ইস্যু, ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জনসাধারণ থেকে যেকোনো প্রকার বিনিয়োগ গ্রহণ, ঋণ প্রদান, অর্থ সংরক্ষণ বা আর্থিক লেনদেন উদ্ভব হয়, এরূপ কোনো অনলাইন বা অফলাইন প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা যাবে না। এসব বিধান অমান্য করলে সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। 

এছাড়া কোনো ব্যাংক-কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো পরিশোধ ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ, পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা ইলেকট্রনিক মুদ্রায় পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। একইভাবে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স নেয়া ছাড়া কোনো পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। এই বিধান লঙ্ঘনের সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড। এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য, অজামিনযোগ্য এবং অ-আপসযোগ্য হবে। 

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিদ্যমান কোনো আইন নাই। বর্তমান ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার-১৯৭২’- এর আর্টিক্যাল ৭এ(ই) অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ‘বাংলাদেশ পেমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশনস্-২০১৪ এবং রেগুলেশনস্ অন ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, ২০১৪ এর আওতায় সকল পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। এই সংক্রান্ত পৃথক কোনো আইন না থাকায় ব্যাংকসমূহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক লেনদেন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের জন্য বর্ণিত রেগুলেশনস্ পরিপালনের লক্ষ্যে ‘দ্য কনট্রাক্ট এ্যাক্ট,-১৮৭২’-এর অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া, অ-ব্যাংক (ব্যাংক বহির্ভূত) আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিশোধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণেও বর্তমানে কোনো আইন নাই। ফলে, গ্রাহক-স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যাংকের পাশাপাশি অ-ব্যাংক পরিশোধ সেবাদানকারীদের আইনি কাঠামোর আওতায় নেয়া জরুরি বিধায় ‘পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন-২০২৪’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

বিলটি পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ, এস এম ব্রাহানী সুলতান মামুদ ও হামিদুল হক খন্দকার। 

একই দিন সংসদে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন আইন-১৯৯২ এর অধিকতর সংশোধনকল্পে জাতীয় সংসদে আজ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস করা হয়। সংশোর্ধত এই বিলে, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনে ‘সচিব’ পদনাম পরিবর্তনের জন্য আইনে সংশোধনী আনয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন আইন, ১৯৯২ এর সংশোধন বিল আনা হয়েছে। এই বিলটি পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ ও হামিদুল হক খন্দকার।

এলিস/এমএ/