ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

কালোটাকা সাদা করতে অন্তত ৫০ শতাংশ কর ধার্য করুন: জি এম কাদের

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:০০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:০০ পিএম
কালোটাকা সাদা করতে অন্তত ৫০ শতাংশ কর ধার্য করুন: জি এম কাদের
জি এম কাদের

মাত্র ১৫ শতাংশ বাড়তি কর পরিশোধে কালোটাকা সাদা করার সুযোগের কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা জি এম কাদের। তিনি মনে করেন, এর প্রভাবে অর্থনীতিতে চলমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে। 

সংসদে তিনি বলেন, একই সঙ্গে দুর্নীতিবাজদের জন্য এ ধরনের সুযোগ যদি রাখতেই হয়, সে ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ কর ধার্য করার বিধান রাখা যেতে পারে। ঢালাওভাবে এ ধরনের অবৈধ কাজকে দায়মুক্তি দিয়ে আইনসিদ্ধ আগে কখনো করা হয়নি বলেও বিরোধী নেতা মন্তব্য করেন। গতকাল শনিবার সংসদের অধিবেশনে বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। 

আলোচনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রতিদিন নিম্নগামী হচ্ছে মন্তব্য করে তা রোধ করাকে সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রকোপ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি কারণে সারা বিশ্বে বড় ধরনের অর্থনেতিক মন্দার ধাক্কা লেগেছিল। ধীরে ধীরে প্রায় দেশই এর থেকে উত্তরণে সক্ষম হয়েছে। অনেক দেশ উত্তরণের পথে অগ্রসরমাণ। কিন্তু বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। আমাদের অর্থনীতি এখনো প্রতিদিন নিম্নগামী। উত্তরণ তো দূরের কথা, অধঃপতন ঠেকানোই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে হচ্ছে।

সামষ্টিক অর্থনীতিতে বিরাজমান অস্থিরতার বেশ কিছু কারণও সংসদে তুলে ধরেন জি এম কাদের। তার মধ্যে রয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঘাটতি, টাকার বিনিময় হারের পতন, সীমিত রপ্তানির প্রবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্রমবর্ধমান সুদের হার, উচ্চ নন-পারফরমিং ঋণ, সরকারের সংকুচিত আর্থিক ক্ষমতা, এডিপি ব্যয়ের হ্রাস, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্রমবর্ধমান চাপ, বাজেট ঘাটতি অর্থায়নের জন্য ব্যাংকঋণের ওপর অতি নির্ভরশীলতা, বিদেশি বিনিয়োগের পতন, বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতা ইত্যাদি। 

সংসদে বিরোধী দলের নেতা বলেন, চলতি বছর এপ্রিল শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১২.৮০ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে ২ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়। অথচ কোনো দেশের রিজার্ভকে নিরাপদ মাত্রায় রাখতে হলে কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ রাখতে হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের রিজার্ভ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নেমে এসেছে বলা যায়। বর্তমানে আমদানি ব্যয় যথেষ্ট পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ করার পরও রিজার্ভ ধরে রাখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে আমদানি ব্যয় একটা পর্যায়ের নিচে কখনোই নামানো সম্ভব হবে না। যেহেতু দেশে আমদানি চাহিদার একটি নিম্নতম স্তর আছে। তা ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হ্রাস এবং আমদানি হ্রাস পেলে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি হয়, টাকার অবমূল্যায়ন হয় এবং মূল্যস্ফীতি হয়। আমদানি ব্যয় সংকোচনের ফলে সর্বনিম্ন স্তরে নিয়ে আসার মাধ্যমে রিজার্ভের স্থিতিশীল অবস্থা ধরে রাখা না গেলে সার্বিক অর্থনীতিতে একটি বিশৃঙ্খল আবস্থা দেখা দেবে।

ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন ছাড়া ২০২৪-২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘গতানুগতিক’ বলে মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘এ বছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেক বেশি সংকটময় বলা যায়। সারা বিশ্বে কম-বেশি অর্থনৈতিক মন্দা রয়েছে, যা থেকে প্রায় দেশই উত্তরণের পথে। কিন্তু আমাদের ক্রমাবনতি চলমান। 

সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দেশের চরম অর্থনৈতিক দুর্দশা আমলে নিয়ে সে অনুযায়ী কোনো দিকনির্দেশনা বা উদ্যোগ এ বাজেটে লক্ষ করা যায় না। সব কটি না হলেও কিছু কিছু সমস্যা বাজেটে চিহ্নত করার প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু বাজেট প্রণয়নে বরাদ্দ, রাজস্ব আহরণে যে কর প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে চিহ্নিত সমস্যাগুলো এবং দেশের চরম অর্থনৈতিক দুর্দশা আমলে নিয়ে সে অনুযায়ী কোনো দিকনির্দেশনা বা উদ্যোগ এ বাজেটে লক্ষ্য করা যায় না।’ 

জি এম কাদের বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের প্রস্তাব করা হচ্ছে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ (১০.৮৩ বিলিয়ন ডলার) কোটি টাকা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ঘাড়ে এটি এক বড় বোঝা। সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে এটা বাধা সৃষ্টি করবে। ব্যাংক খাতের চলমান খারাপ অবস্থার প্রধান কারণ হিসেবে তিনি খেলাপি ঋণকে দায়ী করেন। 

রোহিঙ্গাদের জন্য ১৯ কোটি টাকা অনুদান ফ্রান্সের

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
রোহিঙ্গাদের জন্য ১৯ কোটি টাকা অনুদান ফ্রান্সের
ফাইল ছবি

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রায় ১৯ কোটি টাকা (১.৫ মিলিয়ন ইউরো) অনুদান দিয়েছে ফ্রান্স সরকার। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ তথ্য জানিয়েছে।

ফ্রান্স সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ইউএনএইচসিআর বলেছে, ফ্রান্সের এই সহায়তায় শরণার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের প্রত্যয় বজায় রাখা যাবে। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের রান্নার জন্য লাকড়ির বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবস্থা করা যাবে, যার মাধ্যমে বন উজাড় ও কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ প্রতিরোধ করে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি সুম্বুল রিজভী বলেন, ‘ফ্রান্স রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য চলমান মানবিক কর্মকাণ্ডের এক অবিচল সমর্থক। এই উদার অনুদান রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ মানবিক সাহায্য ও সুরক্ষা সহায়তা নিশ্চিত করবে। এটি কক্সবাজারের পরিবেশের সফল পুনর্বাসনের মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও শরণার্থী পরিস্থিতিতে থাকা স্থানীয় জনগণকেও সহায়তা করবে।’

প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে অভিবাদন জানিয়ে বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই বলেন, ‘আমরা শরণার্থীদের আরও ভালো সুযোগ তৈরির জন্য কাজ করে যাব। আর আশা করব, তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য।’

পরিশোধ-নিষ্পত্তি ব্যবস্থা ও ট্যারিফ কমিশন বিল পাস

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম
পরিশোধ-নিষ্পত্তি ব্যবস্থা ও ট্যারিফ কমিশন বিল পাস
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

পরিশোধ, নিকাশ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা সংহতকরণ, তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের ঝুঁকি হ্রাসকরণ ও গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিধান প্রণয়নকল্পে জাতীয় সংসদে পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বিল-২০২৪ সংসদে পাস হয়েছে। একই দিন ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস করা হয়।  

মঙ্গলবার (২ জুলাই) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সংসদে বিল দুটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটির ওপর দেয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন। 

বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ‘অগ্রিম পরিশোধ দলিল’ ইস্যু, ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জনসাধারণ থেকে যেকোনো প্রকার বিনিয়োগ গ্রহণ, ঋণ প্রদান, অর্থ সংরক্ষণ বা আর্থিক লেনদেন উদ্ভব হয়, এরূপ কোনো অনলাইন বা অফলাইন প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা যাবে না। এসব বিধান অমান্য করলে সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। 

এছাড়া কোনো ব্যাংক-কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো পরিশোধ ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ, পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা ইলেকট্রনিক মুদ্রায় পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। একইভাবে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স নেয়া ছাড়া কোনো পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। এই বিধান লঙ্ঘনের সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড। এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য, অজামিনযোগ্য এবং অ-আপসযোগ্য হবে। 

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিদ্যমান কোনো আইন নাই। বর্তমান ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার-১৯৭২’- এর আর্টিক্যাল ৭এ(ই) অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ‘বাংলাদেশ পেমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশনস্-২০১৪ এবং রেগুলেশনস্ অন ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, ২০১৪ এর আওতায় সকল পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। এই সংক্রান্ত পৃথক কোনো আইন না থাকায় ব্যাংকসমূহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক লেনদেন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের জন্য বর্ণিত রেগুলেশনস্ পরিপালনের লক্ষ্যে ‘দ্য কনট্রাক্ট এ্যাক্ট,-১৮৭২’-এর অধীনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া, অ-ব্যাংক (ব্যাংক বহির্ভূত) আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিশোধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণেও বর্তমানে কোনো আইন নাই। ফলে, গ্রাহক-স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যাংকের পাশাপাশি অ-ব্যাংক পরিশোধ সেবাদানকারীদের আইনি কাঠামোর আওতায় নেয়া জরুরি বিধায় ‘পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন-২০২৪’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

বিলটি পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ, এস এম ব্রাহানী সুলতান মামুদ ও হামিদুল হক খন্দকার। 

একই দিন সংসদে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন আইন-১৯৯২ এর অধিকতর সংশোধনকল্পে জাতীয় সংসদে আজ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস করা হয়। সংশোর্ধত এই বিলে, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনে ‘সচিব’ পদনাম পরিবর্তনের জন্য আইনে সংশোধনী আনয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন আইন, ১৯৯২ এর সংশোধন বিল আনা হয়েছে। এই বিলটি পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ ও হামিদুল হক খন্দকার।

এলিস/এমএ/

পেনশন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান, আন্দোলন চলবে

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৯ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৯ পিএম
পেনশন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান, আন্দোলন চলবে
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপত্তি জানানোর পর প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। তবে এটিতে গোঁজামিল রয়েছে উল্লেখ করে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে তিন দফা দাবি আদায়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন তারা। 

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তির ৫ ও ৬ নং পয়েন্টের জন্য ধন্যবাদ জানাই। ৮ নং পয়েন্টে যা সংখ্যা দেখিয়েছে সব ঠিক। কিন্তু এটার মধ্যে চরম জালিয়াতি রয়েছে। ২০২৪ সালে টাকা জমা করে ৩০ বছর পরে ২০৫৪ সালে পেনশন পাবেন। তাদের হিসাব অনুযায়ী ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা পাবেন প্রতি মাসে। এই ৩০ বছরে বেতন বৃদ্ধি, ইনক্রিমেন্ট, মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় তার পেনশন হওয়া উচিত ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এটা আমরা বুঝিয়ে দিতে পারব। প্রত্যয় স্কিমে শিক্ষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’ 

ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রজ্ঞাপনের ব্যাখ্যা এভাবে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে হয় না। আমাদের স্বায়ত্তশাসিত দেখিয়ে আলাদা স্কিম করবে, সেটা হবে না। সেবকের কী সুবিধা, প্রত্যয়ের কী সুবিধা, সেটা উল্লেখ করতে হবে। এগুলো আলোচনা করতে হবে। আমরা তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’ 

যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ড. আবদুর রহিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা এটা প্রত্যাখ্যান করছি। এই প্রেস রিলিজের বৈধতা নেই।’

হলি ফ্যামিলিতে আবারও বৈকালিক বহির্বিভাগ সেবা চালু

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
হলি ফ্যামিলিতে আবারও বৈকালিক বহির্বিভাগ সেবা চালু
ছবি : খবরের কাগজ

দীর্ঘ বিরতির পর আবারও বৈকালিক বহির্বিভাগ সেবা চালু করেছে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল। সেবার মান বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বনামধন্য হাসপাতালটির পুরোনো গৌরব ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম ইউ কবীর চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল ৩টায় হাসপাতালের শায়লা-হাফিজ মিলনায়তনে বহির্বিভাগ সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি। দায়িত্বরত চিকিৎসকদের উৎসাহিত করতে তিনি নিজেই বহির্বিভাগে প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী দেখেন।

অধ্যাপক ডা. কবীর চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবায় একসময় মানুষের আস্থা ও ভরসার জায়গা করে নিয়েছিল এ প্রতিষ্ঠান। তবে বিগত দিনের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় হাসপাতালটির স্বাস্থ্যসেবায় কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। হাসপাতালের পুরোনো গৌরব ফিরিয়ে আনার ধারাবাহিকতায় আজকের এই বৈকালিক বহির্বিভাগ সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ 

ভবিষ্যতে হাসপাতালে বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য আলাদা বহির্বিভাগ চালু করা হবে। এ ছাড়াও হাসপাতালে একটি ডায়বেটিক সেন্টার চালু করার কথাও জানান তিনি। এ সময় দায়িত্বরত চিকিৎসকদের উৎসাহিত করতে তিনি নিজেই বহির্বিভাগে প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী দেখেন।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এস এম খোরশেদ আলম জানান, সপ্তাহে ৬দিন (শনি-বৃহস্পতি) বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে বৈকালিক স্পেশালাইজড কনসাল্টেশন সার্ভিস চলবে। এ সময় হাসপাতালের ১৬টি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন। মেডিসিন, গাইনি, নাক-কান-গলা, চক্ষু, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিক্স, নেফ্রোলজি, ইউরোলজি, চর্মরোগ, শিশু বিভাগ, সার্জারি ইত্যাদি বিভাগগুলো বৈকালিক বহির্বিভাগ সেবা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। টিকিট কেটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছ থেকে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারবেন রোগীরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান চৌধুরী হেলাল, অবসরপ্রাপ্ত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. কানিজ মওলা, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ দৌলতুজ্জামানসহ অন্যরা। 

২০৫০ সালের মধ্যে দেশের তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি ছাড়াতে পারে: এসডো

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৭ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৭ পিএম
২০৫০ সালের মধ্যে দেশের তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রি ছাড়াতে পারে: এসডো
ছবি : সংগৃহীত

এ বছর এপ্রিলে দেশের ইতিহাসে গত ৫২ বছরে যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, যদি তাপমাত্রা বৃদ্ধির এ হার অব্যাহত থাকে, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে। আর ২০৫০ সালের মধ্যে তা ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) এর গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত উইমেনস ভলান্টারি অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউভিএ) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এর ফলাফলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবগুলোকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফলের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন এসডোর রিসার্চ অ্যান্ড ক্যাম্পেইন অ্যাসোসিয়েট সাদমীন সাদাফ জাহান। 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে যে চারটি প্রধান কারণ দায়ী তা হলো, ১. বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, ২. জলবায়ুর পরিবর্তন, ৩. জীবাশ্ম জ্বালানি এবং শিল্পকারখানা থেকে কার্বন নির্গমন বৃদ্ধি, যা গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ৪. এল নিনো ইভেন্টের মতো মহাসাগরীয় প্রভাব। এই কারণগুলো সম্মিলিতভাবে সাম্প্রতিক তাপপ্রবাহকে আরও তীব্র করে তুলেছে।’

গবেষণায় বলা হয়, ১৯৭২ সাল থেকে তাপপ্রবাহের রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়েছে, যা সেই সময় প্রায় ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০৩০ সালে এই তাপপ্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে এবং বয়স্কদের মধ্যে তাপজনিত কারণে ২০৮০ সালের মধ্যে প্রতি ১ লাখে ৩০ জনের মৃত্যু হতে পারে।