পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পঞ্চগড় দুই আসনের সাংসদ রেলপথমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পঞ্চগড়-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার সাদাত সম্রাট।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। অথচ আমাকে না জানিয়ে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক পথসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন আমাকে অব্যাহতি দিয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সারোয়ার বকুলকে (নির্বাচনকালীন) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন। রেলপথমন্ত্রী অন্য কারও কাছে সাধারণ সম্পাদকের পথ হস্তান্তর করতে পারেন না। তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে অগঠনতান্ত্রিক এবং স্বেচ্ছাচারী একটি সিদ্ধান্তের ফলে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। তিনি একজন রেলপথমন্ত্রী হয়ে এ ধরনের বক্তব্য পাবলিক মিটিংয়ে দিতে পারেন না। তার এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘তিনি পঞ্চগড়-২ আসনে নির্বাচন করছেন। তিনি ঢাকায় থাকেন। জেলা সবরকম সাংগঠনিক কার্যক্রম আমি পালন করি। এমন কোনো দিন যায়নি দলীয় অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম না। তিনি পঞ্চগড়-২ আসনের সাংসদ অথচ পঞ্চগড়-১ আসনে এসে একটি অনির্ধারিত সভায় তিনি এ সিদ্ধান্ত কীভাবে নিলেন? এ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি গঠনতন্ত্র পড়েছি, গঠনতন্ত্রের কথাও এমন কথা লেখা নেই যে জেলার সভাপতি তার সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে অন্য জনকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিতে পারেন। তিনি পঞ্চগড়-১ আসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্যে এমন একটি সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছেন। এখানে কোনো আর্থিক বিষয় থাকতে পারে।’
এ সময় সংবাদ সম্মেলনের জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী, দপ্তর সম্পাদক মাসুদ পারভেজ হিটলার, প্রচার সম্পাদক রবিউল ইসলাম চানু, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক সপিয়ার রহমান, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমানসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।
গত বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে পঞ্চগড়-টুনিরহাট সড়কের পাশে এক পথসভায় নূরুল ইসলাম সুজন ঘোষণা দেন যে, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ জন্য তিনি দলীয় দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। এমন অভিযোগে সাংগঠনিকভাবে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সারোয়ার বকুলকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হলো।’
রনি মিয়াজী/জোবাইদা/অমিয়/