![আপনার ঘরে কি মসজিদ আছে?](uploads/2024/05/13/kul;-1715590801.jpg)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৫০)
ঘরোয়া মসজিদ সম্পূর্ণ ঘর থেকে আলাদা হতে হবে অথবা সম্পূর্ণ পৃথক একটি কক্ষ তার জন্য নির্দিষ্ট করতে হবে এমনটি জরুরি নয়; বরং উদ্দেশ্য হলো ঘরের একটি জায়গা নামাজের জন্য নির্দিষ্ট রাখা। নানা আয়োজনে সেই জায়গা মসজিদের রূপ দেওয়া। এই সুন্নতের কথা একাধিক হাদিসে এসেছে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘরে ঘরে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তা সুগন্ধিযুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বলেছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৫৫)
সামুরা (রা.) নিজের ছেলেকে লেখেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের ঘরে ঘরে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তা ঠিকভাবে তৈরি করে পরিষ্কার রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৫৬)
হাদিসের ব্যাখ্যায় কিছু আলেম বলেছেন, বসতবাড়িতে নয়; বরং এখানে প্রতিটি গোত্র বা এলাকায় মসজিদ নির্মাণ করা উদ্দেশ্য। তবে অন্য আলেমরা বলেন, এখানে ব্যক্তিগত ঘরে মসজিদ তৈরি উদ্দেশ্য। যেখানে পরিবারের সদস্যরা নফল এবং তাহাজ্জুদ নামাজ পড়বে। বিশেষভাবে নারীরা সেখানে নিয়মিত নামাজ আদায় করবে। এমনকি পুরুষরা কখনো মসজিদে যেতে অপারগ হলে, তারাও সেখানে নামাজ আদায় করবে।
ইতবান ইবনে মালেক আনসারি (রা.) বলেন, “আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গিয়ে বললাম, আমার দৃষ্টিশক্তি কমে গেছে এবং আমার বাড়ি থেকে স্বগোত্রেীয় মসজিদ পর্যন্ত যেতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলাবদ্ধতা। আমার একান্ত ইচ্ছা আপনি আমার বাড়িতে এসে এক জায়গায় নামাজ আদায় করবেন, যেন আমি সে জায়গাটুকু নামাজ আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট করে নিতে পারি।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমি তা করব।’ পরদিন রোদের প্রখরতা বাড়ার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং আবু বকর (রা.) আমার বাড়িতে এলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রবেশের অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে অনুমতি দিলাম। তিনি না বসেই বললেন, ‘আমার নামাজ আদায়ের জন্য তুমি তোমার ঘরের কোন স্থানটি পছন্দ করো?’ তিনি পছন্দমতো একটি জায়গা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নামাজ আদায়ের জন্য ইশারা করে দেখালেন। তারপর তিনি দাঁড়ালেন। আমরাও তাঁর পেছনে কাতারবন্দি হলাম। অবশেষে তিনি সালাম ফেরালেন, আমরাও তাঁর সালামের সময় সালাম ফেরালাম।” (বুখারি, হাদিস: ৮০৪)
ঘরে নামাজের জায়গা থাকা মুসলমানদের জন্য আবশ্যকীয় একটি কাজ। এতে মুসল্লির হৃদয়ে প্রশান্তি অনুভব হয়। বাচ্চারা নামাজ শেখে। তারা সেখানে নামাজ পড়ে। কোরআন তেলাওয়াত করে। পরিবারের সবাই নামাজের প্রতি আগ্রহী হয়। বেনামাজিদের ওপর প্রভাব পড়ে।
লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক