![বাবার নামে কোরবানি করা যাবে?](uploads/2024/06/08/qurbani-10-01-1717838780.jpg)
কোরবানি করা ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানি আবশ্যক করে দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘(হে নবি,) আপনি আপনার প্রভুর উদ্দেশে নামাজ আদায় করুন এবং কোরবানি করুন।’ (সুরা কাওসার, আয়াত: ২)
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার ১০ বছর জীবনের প্রতিবছরই কোরবানি করেছেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৫০৭)
হাদিসে আছে, ‘একবার সাহাবিরা (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, কোরবানির তাৎপর্য কী? তিনি বললেন, কোরবানি করা এটা তোমাদের ধর্মীয় পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত। সাহাবিরা আবার জিজ্ঞাসা করলেন, এতে আমাদের জন্য কী সওয়াব রয়েছে? তিনি বললেন, প্রত্যেকটি পশমের বিনিময়ে একটি করে সওয়াব হবে এবং কোরবানির দিন আল্লাহতায়ালার কাছে পশু জবাই অপেক্ষা অন্য কোনো আমল বেশি পছন্দনীয় নয়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৬০)
যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন ওই মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে। নিসাব হলো, সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর সমমূল্যের নগদ টাকা ও ব্যবসার পণ্য বা সম্পদ।
আমাদের দেশে অনেক নারীর ওপরই কোরবানি ওয়াজিব, যেহেতু তাদের সবার কাছে কম-বেশি গহনা থাকে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া হয় না। আবার অনেক পুরুষের ওপর মূলত কোরবানি ওয়াজিব নয় (ওয়াজিব তার স্ত্রী/কন্যার ওপর), কিন্তু তার পক্ষ থেকেই কোরবানি দেওয়া হয়। সুতরাং যার কাছে প্রয়োজন-অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকবে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। ছেলে কোরবানির পশু ক্রয় করে পিতার (নামে) পক্ষ থেকে কোরবানি দিলে পিতার ওয়াজিব কোরবানি আদায় হবে না; বরং পিতার জন্য পৃথকভাবে পশু ক্রয় করে বা ওই পশুতে নিজের মালিকানার অর্থ দিয়ে কোরবানি আদায় করতে হবে। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, ৫/৩০২)
ব্যাপারটি হলো, ছেলে নিসাবের মালিক হলে, সে কোরবানি দেবে। বাবা নিসাবের মালিক হলে, বাবা দেবে। সন্তান যদি নিজের ওয়াজিব কোরবানি আদায়পূর্বক বাবার নামে নফল কোরবানি দিতে চায়, তা হলে কোনো অসুবিধা নেই।
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক