![মেঘের অনেক রং](uploads/2024/01/25/1706160857.Megh-Partha=ok.jpg)
২০১২ সালে নিজ বাসায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী। এক যুগ ধরে বারবার পেছানো হয়েছে এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়। ফলে সারা বছর আলোচনায় থাকে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীর নাম। তবে এবার ভিন্ন কারণে আলোচনায় এসেছে সাংবাদিক দম্পতি নাম। বিপিএলের ১০ম আসরের নবাগত দুর্দান্ত ঢাকার জার্সি ডিজাইন করেছেন তাদেরই ছেলে মাহির সারোয়ার মেঘ। ভবিষ্যৎ জীবনে পেশাদার জার্সি ডিজাইনারও হতে চান তিনি।
ছোটবেলায় বাবা-মা হারানো মেঘ বড় হচ্ছেন মামা নওশের রোমানের কাছে। খেলাধুলার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। পছন্দ বেশি ক্রিকেটে। এজন্য রাজধানীর একটি একাডেমিতে ক্রিকেট অনুশীলনও করেন তিনি। ও লেভেল পরীক্ষার কারণে প্রায় ৭-৮ মাস ধরে ক্রিকেট থেকে খানিকটা দূরে আছেন মেঘ। আশার কথা হলো আবারও ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছেন তিনি। দিন কয়েকের মধ্যে শুরু করবেন অনুশীলন। কোথায় অনুশীলন করবেন সেটা এখনো নিশ্চিত হয়নি। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে অনুশীলন করে মেঘ। ২০২২ সালে পঞ্চগড় অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে খেলেছেন বয়সভিত্তিক ক্রিকেটও।
ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি জার্সি ডিজাইনে আগ্রহ মেঘের। খেলাধুলায় থাকা ভালোবাসার কারণে জার্সি ডিজাইনে বাড়তি আগ্রহ জন্মেছে। সেই ভালোবাসার জায়গা থেকে ছোটবেলাই জার্সি ডিজাইন শুরু মেঘের। খাতায় ডিজাইনে হাতেখড়ি হওয়া মেঘ চান ভবিষ্যতে পেশাদার জার্সি ডিজাইনার হতে। জার্সি ডিজাইন যে তার পছন্দের সেটা খানিকটা আন্দাজ করা যায় মেঘের ফেসবুক পেজ থেকে। মাহির দ্য এডিটর নামে একটি ফেসবুক পেজ চালান মেঘ। সেখানে আপলোড করেন নিজের করা বিভিন্ন জার্সির ডিজাইন।
খবরের কাগজকে মাহির সারোয়ার মেঘ বলেন, ‘ছোটবেলায় খাতায় জার্সি ডিজাইন করতাম। ছোটবেলা থেকেই জার্সির প্রতি আলাদা আগ্রহ থাকায় ডিজাইন করতাম। এখন কম্পিউটারে ফটোশপ ব্যবহার করে ডিজাইন করি। জার্সি ডিজাইন আমার ভালো লাগে সেই জন্য করা।’ আগ্রহের জায়গা থেকে জার্সি ডিজাইন করা মেঘ কেন ঢাকাকে বেছে নিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমি ছোট থেকে ঢাকায় থাকি। এই জন্য ঢাকাকে সমর্থন করি। মূলত এই কারণে যখন ঢাকা নতুন দল হিসেবে আসে, তখন জার্সি ডিজাইন করে ওদেরকে পাঠাই। ডিজাইন ভালো হয়েছে বলে ওরা পছন্দ করেছে। তবে জার্সিতে দুটো পরিবর্তন এনেছে। সেটাও আমি করে দিয়েছি।’
পেশাদার দলের জার্সি ডিজাইন করার অভিজ্ঞতা এই প্রথম নয় মেঘের জন্য। এর আগে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ফুটবল দলের জার্সি ডিজাইন করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি অপেশাদার বিভিন্ন দলের জন্য নিয়মিত জার্সি ডিজাইনের কাজ করে যাচ্ছেন মেঘ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দলের জার্সি ডিজাইন করতে চান। তবে বাংলাদেশ দলের জার্সি ডিজাইন করে থেমে থাকতে চান না। ভবিষ্যতে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান পেশাদার জার্সি ডিজাইনার হিসেবে। এই নিয়ে মেঘের ভাষ্য, ‘সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই জন্য বাংলাদেশ দলের জন্য জার্সি ডিজাইন করতে চাই। আর নিজেকে পেশাদার জার্সি ডিজাইনার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
জার্সি ডিজাইন করে আলোচনায় আসা মেঘ ২০১২ সালে ছিলেন ছোট্ট শিশু। বাবা-মায়ের সঙ্গে কাটানো সময়গুলো ঠিকঠাক স্মৃতিচারণ করতে পারেন না। মেঘের মামা নওশের রোমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘মেঘের ছোটবেলার খুব বেশি স্মৃতি মনে নেই। অল্প কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো সে মনে করতে পারে।’ তিনি আরও জানান, বাবা-মায়ের স্মৃতি নিয়ে বাইরে আলোচনা করতে পছন্দ করেন না মেঘ। পরিবারের সঙ্গেই আলোচনা করেন সেগুলো নিয়ে। রোমান বলেন, ‘বাবা-মায়ের কথা উঠলে খানিকটা হতাশ হয়ে পড়ে মেঘ। এই কারণে বাইরে বাবা-মা নিয়ে আমরা কথা বলতে দেই না। তবে সে বাবা-মায়ের সঙ্গে কাটানো কিছু স্মৃতি মনে রাখতে পেরেছে। এইগুলো নিয়ে বারবার কথা হয় বাসায়।’
মেঘের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন নওশের রোমান, ‘আপাতত এ লেভেলে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বাইরে স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করেছে মেঘ। এই জন্য এ লেভেলে জার্মান ভাষা শিক্ষার কোর্স নিয়েছে। ভবিষ্যতে জার্মানিতে পড়াশোনা করতে যাওয়ার ইচ্ছা তার।’