ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কাঠুরে ক্রিকেটার

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
আপডেট: ২৪ মে ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
কাঠুরে ক্রিকেটার
শামার জোসেফ

গায়ানার কানজি নদী ধরে নৌকায় ২২৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে যেতে হয় খুবই দুর্গম এক ক্যারিবিয়ান গ্রামে। দুই দিনের দুর্গম পথ পেরিয়ে যাওয়া সেই গ্রামের নাম বারাকারা। প্রশ্ন আসতে পারে, কেন সে গ্রামে যেতে হবে? সে গ্রামে যেতে হবে, কারণ বারাকারা থেকে এবার টিটুয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে সুযোগ পেয়েছেন এক তরুণ। নাম তার শামার জোসেফ। এই শামার জোসেফকে নিয়ে নিশ্চয়ই আরও অনেক কাহিনি লিখতে হতে পারে! অথচ বারাকারার কেউ কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবেনি তাদের গ্রামেরই কেউ কখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের হয়ে খেলবে। আরও অবাক করা কথা, ২০১৮ সালের আগে বারাকারায় ছিল না কোনো টেলিফোন কিংবা ইন্টারনেট সংযোগ।

বারাকারা গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩০০। তবে জোসেফরা পাঁচ ভাই আর তিন বোন। একবার কার্টলি অ্যাম্ব্রোস আর কার্টেনি ওয়ালশ-এর ফাস্ট বোলিং সে দেখেছিল ভিডিও ক্লিপসে। আর সেই দেখাই তার মধ্যে জাগিয়ে তুলল ফাস্ট বোলার হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা। আর সেই আকঙ্ক্ষা থেকেই দুর্গম বারাকারার শামার জোসেফ আজ ওয়েস্টইন্ডিজের জাতীয় দলের খেলোয়াড়। শুধু তাই নয়, এ বছরের জানুয়ারিতে শামার জোসেফের একক কৃতিত্বে ভর দিয়ে সুদীর্ঘ ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে টেস্টে হারিয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি জীবনের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচটি উইকেট নেন শামার। আর দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১১.৫ ওভারে ৬৮ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন সাত উইকেট। চতুর্থ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান খেলোয়াড় হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক ইনিংসে সাত উইকেট নেওয়া খেলোয়াড় তিনি। কিন্তু শামারের জীবনের শুরুটা ছিল অন্যরকম। তিনি ছিলেন কাঠুরে। বাবা ও ভাইদের সঙ্গে জঙ্গলে গিয়ে গাছ কেটে কাঠ জোগাড় করতেন। বিশাল বিশাল গাছের গুঁড়িও ঘাড়ে করে নৌকায় তুলতেন আবার নৌকা থেকে নামাতেন। জঙ্গল থেকে কাঠ আনতেন কাঞ্জের নদীর তীরে নিউ আমস্টারডামে। যে কারণে অসম্ভব শারীরিক শক্তি অর্জন করতে পেরেছিলেন। আর সেই গায়ের জোরটা এখন টের পাওয়া যায় মাঠে। ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করেন শামার। কিন্তু এক সময় পেয়ারা, লেবু ও মাল্টা দিয়ে বোলিং চর্চা করতেন। এরপর চর্চা করতেন টেপটেনিস বলে।

এই জঙ্গলে কাঠ কাটতে গিয়ে একবার ভয়ংকর এক বিপদের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন শামার। একটি বিশাল গাছ তার মাথার ওপর পড়েই গিয়েছিল প্রায়। দ্রুত সরে না গেলে সেদিন গাছচাপায় মারাই পড়তেন হয়তো। ওই দুর্ঘটনার পর বারাকারা ছেড়ে কাজের খোঁজে নিউ আমস্টারডামে চলে আসেন শামার। পরিবারকে সহায়তা করার জন্য একটা কাজ তার খুবই দরকার ছিল।

নিউ আমস্টারডামে কাজ পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি কিশোর শামারকে। একটি নির্মাণাধীন ভবনে শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর নিউ আমস্টারডামের স্কটিয়াব্যাংকের নিরাপত্তা শাখায় নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে চাকরি শুরু করলেন। টানা ১২ ঘণ্টা পাহারা দেওয়ার কাজ করার পর ক্রিকেট খেলার শারীরিক শক্তি খুব একটা থাকত না। তখনই তার ভালোবাসার মানুষের অনুপ্রেরণা ও সাহস পেয়ে নিরাপত্তাকর্মীর কাজে ইস্তফা দিয়ে ক্রিকেটে মনোযোগ দিলেন। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন ক্রিকেটেই নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবেন।

শামারের বয়স তখন ছিল ১৪ বছর। এই সময় একদিন প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং পরবর্তীতে ব্যবসায়ী ড্যামিয়ন ভ্যানটাল বারাকারায় এলেন। তার সঙ্গে ছিলেন আরেক প্রাক্তন ক্রিকেটার রয়স্টন ক্র্যান্ডন। বারাকারায় তারা একটা প্রীতি ম্যাচ খেলবেন। ওই প্রীতি ম্যাচ খেলতে এসেই শামারের প্রতি নজর পড়ে গেল তাদের। তাদের দুই জোড়া অভিজ্ঞ চোখ ঠিকই শামারের মেধা দেখতে পেয়েছে। শামারের সঙ্গে কথা বললেন ড্যামিয়ন ভ্যানটাল। তাকে আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে তুলে নিয়ে এলেন। মুসলিম ইয়থ অর্গানাইজেশন স্পোর্টস ক্লাবের নেটে অনুশীলন করার সুযোগ করে দিলেন।

এরপর তিনি জর্জটাউনে ক্লাব ক্রিকেট খেলতে শুরু করলেন মুসলিম ইয়থ অর্গানাজাইশনের পক্ষে। এই ক্লাব ক্রিকেট খেলতে খেলতেই গায়ানার জাতীয় দলে জায়গা করে নিলেন শামার। এই সময় তিনি ওয়েস্টইন্ডিজের কিংবদন্তি অ্যাম্ব্রোসের ফাস্ট-বোলিং ক্লিনিকে যুক্ত হন এবং অ্যাম্ব্রোসের নজর কাড়েন। এরপর একটি অনুশীলন ম্যাচে আট উইকেট নেন শামার। তারপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

এরমধ্যেই ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের জন্য আইসিসি ম্যানস প্লেয়ার অব দ্য মান্থ পুরস্কার পেয়ে যান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি থেকে। শুধু তাই নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে আইসিসির ওই পুরস্কার জেতেন শামার জোসেফ।

কে জানে, শামার জোসেফের হাত ধরেই হয়তো ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ উঁকিঝুঁকি মারতে শুরু করেছে!

জাহ্নবী

 

সফল টিনএজার হতে  সাত পরামর্শ

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০১:০৪ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০১:০৪ পিএম
সফল টিনএজার হতে  সাত পরামর্শ

লেখাপড়া শেষে কর্মজীবনে প্রবেশ করেই সফল মানুষ হয়ে ওঠার প্রসঙ্গ আসে। এসব সফল মানুষের পেছনে পড়ে থাকে স্মৃতিময় টিনএজ বয়সের রঙিন দিনগুলো। কিন্তু অনেক টিনএজারের কাছে তার সময়টি খেলাধুলার মাঠ নয়, টিনএজ বয়স থেকেই তাদের জীবনে সফলতা অর্জনের পথ খুঁজতে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, চাইলে একজন সফল টিনএজার হয়ে ওঠাও অসম্ভব কিছু নয়। যদিও এ বয়সে সফল হওয়াটা সহজ কথা নয়, কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই তা সম্ভাবনাময়। এখানে টিনএজ বয়সেই সফলতা লাভের সাতটি পরামর্শ।

স্কুলে ভালো করো: ভবিষ্যৎ কেমন হবে- টিনএজাররা এর পরিচয় রাখে স্কুলজীবনে। তাই লেখাপড়ার কাজটি বেশ মনোযোগের সঙ্গে করা জরুরি। হতে পারে অনেক বিষয়ই ভালো ঠেকছে না; কিন্তু এরপরও সফল হয়ে ওঠার বিষয়টি মাথায় রেখে দারুণ একটা ফল বাগিয়ে নিতে ঝাঁপ দাও।

নিজস্বতা তৈরি করো: তুমি যেমন, সবসময় তেমনই থাকো। বড়রা এ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করলেও তুমি নিজের মতো থাকার চেষ্টা করবে। এর সঙ্গে যোগ করবে আত্মবিশ্বাস। নিজের সামর্থ্যের ওপর ভরসা করবে। এই গুণগুলোর পরিচর্যা করো। যা নিজের জন্য ভালো বলে মনে হয়, নিজস্বতা নিয়ে তা করতে কোনো দোষ নেই।

মাদক থেকে দূরে থাকো: কখনোই মাদকের প্রতি আকৃষ্ট হবে না। আগ্রহের বশে একটু চেখে দেখার ইচ্ছাও মনে আনবে না। তোমার সব ভালো এবং সম্ভাবনাময় বিষয়ের ইতি ঘটাতে এই একটি বিষয়ই যথেষ্ট। বিন্দুমাত্র মাদকে আগ্রহ না রাখলে তোমার কিছুই যাবে-আসবে না। কাজেই টিনএজারদের মাদককে ঘৃণা করতে হবে।

নিজের গণ্ডিতে ভালো কিছু করো: তুমি যেখানে থাকো তার চারপাশের মানুষ এবং পরিবারের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা চালিয়ে যাও। নিজের লেখাপড়ার ক্ষতি না করেও ছোট ছোট অথচ সমাজের জন্য ভালো অনেক কিছুই করা যায়। এতে করে তুমি সুখী হবে এবং বড় কিছু করার আশা জন্ম নেবে। এর ফলে সম্ভাবনার জানালাগুলো খুলে যাবে, যা তুমি আগে কখনো দেখনি।

জীবনের লক্ষ্য স্থির করো: টিনএজ বয়সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলো, জীবনের লক্ষ্য স্থির করা। একবার লক্ষ্য সম্পর্কে পরিষ্কার হয়ে গেলে নির্দিষ্ট দিকে এগিয়ে যেতে সুবিধা হবে তোমার। লক্ষ্যকে ক্যারিয়ারের সঙ্গে যুক্ত করো। এতে চলার পথের সন্ধান পাবে। এই বয়স থেকেই পথের দিশা পেলে তোমাকে ঠেকায় কে?

ব্যবহার ভালো করো: পরিচিত বা অপরিচিত সবার সঙ্গেই ভালো ব্যবহার করো। এটি তোমার দারুণ এক ব্যক্তিত্ব তৈরি করে দেবে। বন্ধুমহল, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বড়দের পরামর্শ শুনবে। সেখান থেকে নিজের জন্য ভালো মনে হয় এমন পরামর্শগুলো গ্রহণ করো। আচরণ ভালো থাকলে সবাই তোমাকে সুপরামর্শই দেবে।

ভালো বন্ধুমহল তৈরি করো: বন্ধুরা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে যদি ভালোদের সমাগম ঘটে, তবে তোমার জীবনে ভালো কিছু না কিছু ঘটতেই থাকবে। তাই তোমার মতো সফল টিনএজারদেরই বন্ধু হিসেবে পাওয়ার চেষ্টা করো। সুবিধার নয়, এমন বন্ধুদের সঙ্গ ত্যাগ করো। এসব বন্ধু জীবনটাকে বিষাক্ত করে দেবে।

জাহ্নবী

ভ্রমণকন্যা আসমা আজমেরী

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০১:০২ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০১:০২ পিএম
ভ্রমণকন্যা আসমা আজমেরী
বাংলাদেশের পতাকা হাতে আসমা আজমেরী

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ট্রাভেলার্সদের মধ্য অন্যতম এক নাম কাজী আসমা আজমেরী। ঘুরে বেড়াচ্ছেন দেশ থেকে দেশান্তরে। ইতোমধ্যে ১৪৫টি দেশ ভ্রমণ করছেন। বর্তমানে তিনি গাম্বিয়ায় রয়েছেন। বাংলাদেশের পাসপোর্ট হওয়ার কারণে তার ভিসা পেতে সমস্যা হয়। তবু বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকার বাহক হিসেবেই ঘুরবেন বিশ্বময়।

আসমা খুলনা শহরে বড় হয়েছেন। কাজী গোলাম কিবরিয়া ও কাজী সাহিদা আহমেদ দম্পতির একমাত্র মেয়ে তিনি। ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে স্কুলে আসা-যাওয়া করতেন। এক দিন স্কুল ছুটির পর তার মা নিতে এলেন না। অবশেষে তিনি একাই সাহস করে বাসার উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেন। হাঁটছেন আর তাকিয়ে দেখছেন আকাশটাকে। আকাশ দেখে তার মনে হলো, সে আকাশের শেষ সীমানা দেখবেন। কিন্তু আকাশের শেষ সীমানা আর দেখতে পাওয়া যায় না। সে দিন তিনি বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হেঁটেছিলেন। পরে এলাকাবাসী তাকে ধরে নিয়ে বাসায় পৌঁছে দেন।

আসমা বড় ইকবালনগর গার্লস হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং খুলনা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে স্নাতক এবং ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেন। আসমা থাকেন অস্ট্রেলিয়ার পার্থে। সেখান থেকে সারা দুনিয়া ঘুরে লাটাই-সুতার টানে ফিরে আসেন বাংলাদেশে। আবার পাখির মতো উড়াল দেন পরবর্তী না দেখা দেশে।

শুধু জনপ্রিয়তার জন্য নয়, আসমা দেশ ভ্রমণ করেন নিজের শখে। শখের বশে ভ্রমণ শুরু করলেও এখন অনুভব করেন, তিনি ভ্রমণের মাধ্যমে নিজ দেশকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে পারছেন। সেটা তাকে বেশ আনন্দ দেয়। তার ইচ্ছে ২০২৭ সালের মধ্যে পৃথিবীর সব দেশ ভ্রমণ পূর্ণ করবেন। ভ্রমণ বিশ্বে বাংলাদেশি হিসেবে ইতিহাস গড়তে চান তিনি। আসমা বলেন, আমার বিশ্ব ভ্রমণের শুরুটা খুব একটা সুখকর ছিল না। ব্যাপারটা হলো, (আমাদের দেশে এমন একটা ধারণা প্রচলিত) বাংলাদেশের মেয়েরা ভ্রমণ করতে পারে না, কিন্তু ছেলেরা পারলে মেয়েরা কেন পারবে না! 
২০০৯ সালে নেপাল ভ্রমণ দিয়েই আমার বিশ্ব ভ্রমণের যাত্রা শুরু, বলেন তিনি। তবে শুরুতে ইচ্ছা ছিল ৫০টি দেশ ঘোরার, কিন্তু ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তার ছয় মহাদেশে ভ্রমণ করা দেশের সংখ্যা ১৪২টি।

আজমেরি বলেন, প্রথমে আমার পরিবার ভ্রমণের বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। আমার আব্বু ভ্রমণ খরচ দিতে না চাইলেও আমার মা তার গহনা বিক্রির টাকায় আমাকে খরচ জোগাতে সাহায্য করেন। তবে এটাই শুধু বাধা ছিল না, আমার পরিবারের ঘনিষ্ঠ লোকেরা আমার একা ঘোরার বিষয়টি নেতিবাচক হিসেবে নেয় এবং আমার বাবাকে তারা অভিযোগ করে যার উত্তরে বাবা আমাকে আমার একা ঘোরার বিষয়টি কাউকে না জানাতে বলেছিলেন। তবে যখন আমি ২০১৮ সালে ১০০টি দেশ ভ্রমণ সম্পন্ন করি, তখন আমার পরিবারের লোকেরা বিষয়টি ইতিবাচক ভাবে নেয়, বিশেষ করে যারা প্রগতিশীল মনোভাবাপন্ন।

বাংলাদেশি পাসপোর্ট হিসেবে অনেক দেশের ভিসা পেতে নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হয়, দীর্ঘদিন লেগে যায়। অনেক দেশের ভিসা পেতে খুব সমস্যা হয়ে যায়। সাউথ আফ্রিকার ভিসা পেতে বলতে গেলে আমার দশ বছর লেগে গেছে। প্রথম ২০১০ সালে যেতে চেয়েছি সাউথ আফ্রিকায়, তখন বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার জন্য যেতে চেয়েছিলাম। তখন বলা হয়েছিল শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে নিতে হবে ভিসা। ২০১১ সালে কলম্বোতে যাই তখন আমাকে বলা হয় ইনভাইটেশন ছাড়া তারা আমাকে ভিসা দেবে না। আমি তাদের বললাম সেখানে তো আমি কাউকে চিনি না, আমি একজন বিশ্ব পর্যটক। তখন তারা আমাকে আমাদের হোম মিনিস্ট্রি থেকে লেটার নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু সে সময় আর হয়ে ওঠেনি। আমি যখন নিউজিল্যান্ডে থাকি তখনো চেষ্টা করেছি, ভিসা পাইনি। সর্বশেষ দিল্লি থেকে ভিসা পেয়েছি। এমন নানান ঘটনা আছে, অনেক দেশ আছে যেগুলো ভিসা পেতে আমার খুব বিড়ম্বনা হয়েছে। সেনেগালের ভিসা পেতে ১৬ মাস সময় লেগেছে, আরও অনেক দেশ আছে যেখানে ভিসা পাওয়া অনেক সমস্যা হয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশিদের জন্য অনেক দেশের ভিসা পাওয়া খুবই কষ্টকর-দুর্লভ, বলতে গেলে পাওয়াই যায় না। সুইডিশ বা অন্য ভালো দেশের পাসপোর্ট হোল্ডার টিকিট কাটছে আর চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের এই বাংলাদেশি পাসপোর্টে আমরা অনেক দেশেই যেতে পারি না, ভিসা পাই না।

তিনি আরও বলেন, আমি জর্জিয়া থেকে আজারবাইজানের ভিসা করেছি, সেটা ছিল আমার ৯৬তম দেশ ভ্রমণ। প্রথমে তো তারা ভিসা দেবেই না, তারা বলেছে দিল্লিতে যেতে হবে। আমি প্রতিদিন জর্ডানের অফিসে যেতাম, অনুরোধ করতাম ভিসা দেওয়ার জন্য। অনেক অনুরোধের পর তারা দিয়েছিল ৩ দিনের ভিসা। তারা দেখেছে আমি অনেক দেশ ঘুরেছি।

এরপর টানা দুই বছর অস্ট্রেলিয়ায় চাকরি করার পর আবারো জুন মাসে তিনি ভ্রমণে বের হন। ১৭ জুন সেনেগালে ১৪৪তম দেশ হিসেবে ভ্রমণ করেন। সেখান থেকে জাহাজে তিনি জিংসুয়াং শহরে যান। ২৭ জুন তিনি গাম্বিয়ায় ফিরে আসেন।

জাহ্নবী

 

টিনএজারদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ চাই

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ পিএম
টিনএজারদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ চাই

পৃথিবীর এখন সবচেয়ে আলোচিত দুটি বিষয়ের একটি হলো রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধ, অপরটি ফিলিস্তিন বনাম ইসরায়েল যুদ্ধ। গত বছরের অক্টোবরে নতুন করে শুরু হওয়া ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের যুদ্ধ এখনো চলমান। জাতিসংঘের মতে, এই যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছে শিশু। অতীত ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের যুদ্ধ-বিগ্রহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছে নারী ও শিশু।

সহিংসতা-সংঘাতের মধ্যে পক্ষ বা বিপক্ষ শক্তির কাছে নারী ও শিশুরা সহজ শিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে।  সদ্য গত হওয়া বছরে গাজায় নিহত হওয়া মানুষের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি শিশু আর নারী। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গাজায় প্রতি দশ মিনিটে নিহত হচ্ছে একটি শিশু। জাতিসংঘ গাজাকে শিশুদের সমাধি হিসেবে ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ গাজাকে পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যে শিশুদের হাতে নিহিত রয়েছে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, সেই শিশুরাই এখন হুমকির মুখে।  আজকে জন্ম নেওয়া শিশুটি এক সময় বেড়ে উঠবে। শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে সেই শিশুটি একদিন প্রবেশ করবে তারুণ্যে। একদিন তারুণ্যের দুর্বার শক্তি দিয়ে সব বাধা-বিপত্তি পেছনে ফেলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নেবে বিশ্বকে। শিশুরা স্রষ্টার এক অপরূপ সৃষ্টি। তাদের মধ্যে থাকে না অপরের ক্ষতি করার কোনো মনোবাসনা। বিশ্বের কয়েক কোটি শিশুর মধ্যে মুষ্টিমেয় কিছু শিশু তাদের সুন্দর শৈশবটা উপভোগ করতে পারছে। আবার অনেক শিশু বেঁচে থেকেও ধুঁকে ধুঁকে মরছে। আমরা অনাগত কিংবা সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্য এখনো নিরাপদ একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারিনি। পারিনি ছোট্ট মানুষগুলোর জন্য নিরাপদ জায়গা করে দিতে। হয়তো কখনো এটা সম্ভব হবে কি-না জানি না। এই বিশ্ব আজ বড় ব্যর্থ। ব্যর্থতার দায় যতটা না পরিবার বা সমাজের ওপর বর্তায়, বর্তমান সময়ে তার চেয়ে বেশি বর্তায় বিশ্বের ওপর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ-সংঘাত এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের ঝনঝনানি আর হিংস্রতার মধ্যে করুণ দিনাতিপাত করছে অনেক শিশু। রাতটা কোনোভাবে পার করলেও, ভোরটা শুরু করছে বোমার শব্দ শুনে। কিংবা নিশ্চিন্তে রাত পার করে যে ভোরের নতুন সূর্য দেখবে, এতটুকু নিশ্চিয়তাও শিশুদের দিতে পারছে না অনেক দেশ। এক দেশ অন্য দেশের প্রতিহিংসার কবলে পড়ে প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছে শিশুরা। 

বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী শিশুদের নানাভাবে অপব্যবহার করছে। বৃহৎ স্বার্থের কথা ভুলে গিয়ে তাদের ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মাধ্যম হিসেবে বেছে নিচ্ছে এসব নিষ্পাপ শিশুকে। কোমল মনে ছড়িয়ে দিচ্ছে হিংস্রতার বিষবাষ্প। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও ঠেলে দিচ্ছে অপরাধজগতের দিকে। ফিলিস্তিন কিংবা ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান সংঘাত পৃথিবীর জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। বিশেষজ্ঞরা সব সময় সতর্ক করছেন- এসব চলমান ভয়াবহ সংঘাত প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলছে। গাজার চলমান যুদ্ধে নিরপরাধ শিশুরা নিহত হলেও অদ্ভুত হলেও সত্যি যে, এ ব্যাপারে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর কোনো উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমনকি জাতিসংঘও এটা বন্ধ করতে ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টা ছোট হলেও গভীর উদ্বেগ আর ভাবার বিষয়। জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশন সনদ বা সিআরসিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে আমেরিকার মতো উন্নত রাষ্ট্রগুলো যদি শিশুদের অধিকারের বিষয়ে এভাবে চুপ থাকে, তা হলে আগামী প্রজন্মের জন্য অন্ধকার এক পৃথিবী অপেক্ষা করে আছে। আজ এ দেশ তো কাল ওই দেশ, এভাবে কি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে সংঘাত-সহিংসতার রেশ! যেকোনো সংঘাতে শিশুরা আর কত বলির পাঁঠা হবে? এই প্রশ্ন কি তাদের মনে জাগেনি কখনো। এসব থেকে উত্তরণের জন্য বিশ্বের ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রগুলো একটু সচেতন হলেই পারে শিশুদের নির্মম মৃত্যু রোধ করতে। অন্তরে শিশুদের প্রতি এতটুকু ভালোবাসা থাকলে, বিভিন্ন দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অনায়াসে একটি শিশুবান্ধব পৃথিবী সহজে গড়ে তোলা যায়। অন্তত শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো চেষ্টা করলে শিশুদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসেবে আগামী পৃথিবীর কল্যাণের জন্য এতটুকু করতে পারে। শিশুদের জন্য নিরাপদ পৃথিবী এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। পরিশেষে বলতে ইচ্ছে করে, সংঘাত-সহিংসতা নিপাত যাক- শিশুরা পরিত্রাণ পাক।

জাহ্নবী

রোবট বানান সানি জুবায়ের

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
রোবট বানান সানি জুবায়ের
সানি জুবায়ের ও তার দল

সানি জুবায়ের। দেশকে তাক লাগিয়ে বিজ্ঞানে প্রতিনিয়তই নতুন ইতিহাস গড়ে চলেছেন বাংলাদেশি এই তরুণ উদ্ভাবক। নতুন নতুন আবিষ্কারে যেন বাধাহীন তার পথচলা।

জুবায়েরের স্কুলজীবন কাটে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। ২০২০ সালে এইচএসসি শেষ করেছেন ঢাকা কলেজ থেকে। বর্তমানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করছেন। হাতের স্পর্শ ছাড়াই কম্পিউটার চালু, দুর্ঘটনা এড়াতে স্বয়ংক্রিয় ব্রেক, গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে রিসিভারসহ এমন বেশ কয়েকটি চমৎকার প্রযুক্তি আবিষ্কার করে বেশ আলোচিত সানি জুবায়ের। সম্প্রতি ‘ফায়ার ফাইটিং রোবট’ বানিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

ভালোবাসেন গবেষণাধর্মী কাজ এবং রোবটিক্স। গত ৮ বছর ধরে এসব কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। রোবটিক্সের প্রতি ভালোবাসা ছোটবেলা থেকেই। হাতেখড়ি হয়েছে নিজে নিজেই ছোটবেলায়। খুঁজে বেড়ান যন্ত্রের ভেতরের ভাষাকে। রেজিস্টার, ট্রানজিস্টর আর সার্কিট বোর্ড প্রতিনিয়তই তাকে কৌতূহল-উদ্দীপ্ত করত। নতুন কোনো কিছু করার চিন্তা থেকে টুকিটাকি ছোট ছোট জিনিস বানাতে শুরু করেন। অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন আন্তস্কুল ও কলেজ এবং জাতীয় বিজ্ঞান মেলায়। ধীরে ধীরে বানাতে শুরু করেন অত্যাধুনিক কিছু রোবট।

সানি জুবায়ের বলেন, বেশ কয়েকটি অটোনোমাস রোবট এবং মার্স রোভার বানাতে সক্ষম হই। কাজ করেছি অগ্নিনির্বাপণের জন্য ডিফেন্ডার নামক রোবটের ওপর। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই রোবটকে। অগ্নিনির্বাপণের জন্য এর পূর্বে কাজ করা হয়েছে সিগমা রোবটে, যেটি কি-না ডিফেন্ডার রোবটের প্রাথমিক ভার্সন ছিল এবং সামনেও বেশ কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে। প্রতিনিয়ত সেসব প্রকল্পের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

সানি জুবায়েরের বানানো রোবট

এই তরুণ উদ্ভাবকের বানানো কিছু রোবট-
FR21 (Fighter Robot)- সামরিক কাজে ব্যবহার উপযোগী একটি রোবট।
Brain Bot- সম্পূর্ণ অটোনোমাস-ভিত্তিক দৈনিক কাজে সাহায্যকারী রোবট।
Atla- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন একটি মঙ্গল রোভার।
Farmover -একটি কৃষি রোবট।
Falcon XXIV - একটি রেসিং রোবট।
Sigma 21- একটি অগ্নিনির্বাপক রোবট।
Atlas AUV -একটি অটোনোমাস পরীক্ষামূলক সাবমেরিন।
Waterbot - সাগরের পানি পরিষ্কারকারক একটি রোবট।
Sigma – আগুন নির্বাপণকারী রোবট।

সানি জুবায়ের জানান তার অর্জনের কথা- ১৬টি জাতীয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় পদক অর্জন করি। যার মধ্যে ছিল জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ, ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা, জাতীয় রোবটিক চ্যালেঞ্জ, জাতীয় রোবট অলিম্পিয়াডসহ আরও কয়েকটি প্রতিযোগিতা। আন্তস্কুল এবং কলেজ প্রতিযোগিতায় সর্বমোট ৫৫টি পুরস্কার পাই। এর মধ্যে ছিল- নটর ডেম বিজ্ঞান মেলা, আদমজী বিজ্ঞান মেলা, আইডিয়াল বিজ্ঞান মেলা, বিএন এমপিসি আয়োজিত বিজ্ঞান মেলা, ইম্পেরিয়াল আয়োজিত বিজ্ঞান মেলা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার বিজ্ঞান মেলাসহ আরও বেশ কয়েকটি বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা।

এ ছাড়াও তিনি জানান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিজ্ঞান প্রতিযোগিতায় ১৫টি পদক অর্জন করি। এর মধ্যে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ফ্যাব ফেস্ট চ্যাম্পিয়ন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত সিএসই ফেস্ট চ্যাম্পিয়ন। আইইউবি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত টেক ফেস্ট চ্যাম্পিয়ন। খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত টেকভ্যাল চ্যাম্পিয়ন। ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি আয়োজিত ম্যাক্কেলারেশন চ্যাম্পিয়ন। এনএসইউ আয়োজিত ন্যাশনাল রোবটিক কম্পিটিশন চ্যাম্পিয়ন ইত্যাদি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমি এবং আমার দল বাংলাদেশকে সম্মানের সঙ্গে উপস্থাপন করি। বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ১৮ জন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় প্রতিযোগিতায় আমার দলসহ অংশগ্রহণ করি। আমাদের দলটির মূল উদ্দেশ্য হলো বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের কৃতিত্বকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গৌরবের সাথে উপস্থাপন করা। পাশাপাশি দেশের গুরুতর কিছু সমস্যাকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাধান করা।

জাহ্নবী

তারুণ্যের বিকাশে অনুষ্ঠিত হল ‘শান্তি ও সম্প্রীতি সংলাপ’

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
তারুণ্যের বিকাশে অনুষ্ঠিত হল ‘শান্তি ও সম্প্রীতি সংলাপ’

রাজধানীর গুলশানের ইএমকে সেন্টারে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘শান্তি ও সম্প্রীতি সংলাপ’। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ইয়ুথ এংগেজমেন্ট ইন ডেমোক্রেসি প্রকল্পের আওতায় ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই সংলাপে তরুণ ও অভিজ্ঞদের মিলনমেলা ঘটে।

সংলাপের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও ইয়ুথ এংগেজমেন্ট ইন ডেমোক্রেসি প্রকল্প সম্পর্কে কথা বলেন ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারভেজ সিদ্দিকী। 
দুটি সেশনে আয়োজিত সংলাপে উঠে আসে উদ্যোক্তা হওয়ার পথে তরুণদের চ্যালেঞ্জগুলো। পাশাপাশি আমন্ত্রিত অতিথিরা সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বেশকিছু পরামর্শ ও সুপারিশ দেন । ‘সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামের প্রথম সেশনে  ড.মাকসুদা সুলতানার সঞ্চালনায় শিল্পী টিপু মুনশি, নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত, অধ্যাপক আফসানা ফেরদৌসি,বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সাবেক প্রধান নির্বাহী জাবেদ আহমেদ তরুণদের সাথে কথা বলেন। 

‘সাফল্যের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন’ শিরোনামে দ্বিতীয় পর্বে ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক নন্দিত অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন কেয়ার গিভিং বিশেষজ্ঞ শিল্পী আক্তার, সাকিব রায়হান, ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ফুড অ্যান্ড বেভারেজ বিভাগের প্রধান জাহিদা বেগম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের প্রকল্প বিশেষজ্ঞ মানিক মাহমুদ ও সুপরিচিত বক্তা ও কর্পোরেট ব্যাক্তিত্ব সোলায়মান সুখন। 

অতিথিদের সাথে আলোচনা ও আলাপচারিতায় অভিজ্ঞদের পরামর্শে সম্মৃদ্ধ হয় তরুণরা ।  

সংলাপের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের বিভিন্ন খাতের উদীয়মান তরুণ এবং অভিজ্ঞরা যাতে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন এবং নতুন আইডিয়া ও সমাধান খুঁজে পান। তরুণদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হলে কিভাবে তাদের শিক্ষায়, কর্মসংস্থানে এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নে সহায়তা করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। 

এছাড়া বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা এবং কর্মসংস্থানের মধ্যে সমন্বয় করে জীবনমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর ওপর জোর দেয়া হয়।

তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশের জন্য জাতীয় সংসদসহ সবক্ষেত্রে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়। সংলাপে বক্তারা তরুণদেরকে সফল উদ্যোক্তা হতে আগে দক্ষতা উন্নয়নের পরামর্শ দেন। 

সংলাপে তরুণদের প্রতিভা, উদ্ভাবনী দক্ষতা এবং সৃজনশীলতাকে উন্নত করার উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা স্বপ্ন পূরণের পথে এবং বাংলাদেশের আর্থিক-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পান। 

আয়োজনের শেষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন ও তরুণ উদ্যোক্তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের বনশ্রী মিত্রা নিয়োগী।