ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

বিশ্বখ্যাত পাঁচ তরুণ উদ্যোক্তা

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
বিশ্বখ্যাত পাঁচ তরুণ উদ্যোক্তা

কিছু কিছু উদ্যোগের শুরু জমকালোভাবে হয় না। বাড়ির গ্যারেজ, কলেজের ডরমেটরি, এমনকি স্কুলের ক্লাসরুমেও অনেক বড় বড় ব্যবসার গোড়াপত্তন হয়েছে। কিছু তরুণ উদ্যোক্তা জীবনের শুরু থেকেই ব্যবসার ধাঁচটা বুঝে নিয়ে ধীরে ধীরে নিজেদের উন্নত করে পৌঁছে গেছেন সফলতার চূড়ায়। আমরা শুধু মার্ক জুকারবার্গের নামটা বেশি জানি। জুকারবার্গ ছাড়াও অনেকেই তরুণ বয়সে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তাদের অনেকেই এখন শিক্ষাজীবন শেষ করে পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। জেনে নিই পাঁচজন তরুণ সফল উদ্যোক্তার কথা।


সিমোন হুফানা
সিমোন মেয়েটি দারুণ একটা কাজ করেছে। কলেজে পড়া অবস্থাতেই সিমোনের মনে একটা সুন্দর ভাবনা দোল খায়। মেয়েদের জন্য, নারীদের জন্য ও কিছু করতে চাচ্ছিল। ও তৈরি করে কালারিং বুক; যেখানে তরুণী থেকে শুরু করে বয়স্কা নারীদের স্কেচ থাকে, সেই সঙ্গে গল্প। রং-পেনসিল বা তুলি দিয়ে স্কেচটা রঙিন করে নেওয়ার সুযোগ থাকে। ওর ব্র্যান্ডের নাম ‘কালার হারস্টোরি’। ২০১৭ সালে ওর প্রতিষ্ঠানের শুরু। সে বছর ও ‘শপিফাই’ থেকে পুরস্কারও পায় এই দারুণ বিজনেস আইডিয়ার জন্য। ওর দুটো ছোট বোন আছে। ওদের মতো আরও হাজারো মেয়ের উদ্বুদ্ধ করতে, নিজের ভেতরের শক্তিকে চিনে জীবনকে রাঙাতে ওর উদ্যোগ। স্কুল-কলেজে যা হয় না, মিডিয়াতেও যা আসে না, মেয়েদের সে বিষয়গুলো রঙিন করে তুলে আনতে সিমোনের প্রয়াস। 

ইয়েলিস্তা জিন্স চার্লস
দুনিয়ায় বর্ণবাদকে একটা অভিশাপ বললে খুব কম বলা হবে। একজন মানুষকে শুধু তাঁর গায়ের রঙের জন্য নিগ্রহের শিকার হতে হবে এটা খুব বাজে ব্যাপার। নিগ্রো শিশু ইয়েলিস্তা টিভিতে, পত্রিকায়, বিলবোর্ডে সবখানেই দেখত গায়ের ফরসা রং, সোনালি চুল আর নীল চোখের মেয়েদেরই শুধু ‘সুন্দর’ বলা হচ্ছে। এই ধারণাটা ওর ভেতরে বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছিল; নিজেকে সবকিছু থেকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করত সে। কিন্তু রোড আইল্যান্ড স্কুল অব ডিজাইনে পড়ার সময় ওর ধারণা পাল্টে দিল ছোট একটা ক্লাস প্রোজেক্ট। আর্ট ক্লাসের অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে ইয়েলিস্তা বানিয়েছিল খুব সুন্দর একটা মেয়ে পুতুল, নিগ্রো মেয়ে, ওর মতোই দেখতে। এই বিষয়টা হঠাৎ করে ওর মনে গেঁথে যাওয়ায় একটুও দেরি করেনি সে। ২০১৪ সালে শুরু করে নিগ্রো মেয়ে পুতুর বানানোর কোম্পানি ‘হেলদি রুটস ডলস’। দেখতে খুবই মিষ্টি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ওকে। বর্তমানে প্রায় দেড় মিলিয়ন ডলার বাজারমূল্যের কোম্পানি এটি। বিশ্বের নামিদামি বিভিন্ন সুপারশপে দেখা মেলে হেলদি রুটস ডলসের পুতুল।

রায়ান ট্রাহান
মার্কিন তরুণ রায়ান ট্রাহান ২০১৭ সালে টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটিতে পড়া অবস্থায় একজন স্টুডেন্ট অ্যাথলেট হিসেবে ছিল। এর পাশাপাশি সে নিজস্ব একটা পানির বোতলের ব্র্যান্ড বাজারজাতকরণ শুরু করেছিল; সেই সঙ্গে অ্যাথলেটিংয়ের ওপর ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও বানাত আর নিজের পানির বোতলের ব্র্যান্ডটাকে পরিচিত করত। কাজটা চলছিল ভালোই। কিন্তু কিছুদিন পরে ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেট অ্যাসেশিয়েশন থেকে কাজে বাধা দেয়; সাফ জানিয়ে দেয়, হয় ভার্সিটিতে পড় নয়তো পড়ালেখা ছেড়ে পুরোপুরি ইউটিউবার হয়ে যাও। রায়ান দ্বিতীয়টাই বেছে নেয়। নিজের ব্র্যান্ডটাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে। ওর ইউটিউব চ্যানেলের ফলোয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ১১ মিলিয়নে পৌঁছে যায়। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ওকে।

ম্যাটিও গালভেজ  
বর্তমানে কলেজ গ্র্যাজুয়েট; সেই সঙ্গ একজন পেশাদার সফল উদ্যোক্তা। ওর নিজে গড়ে তুলেছে একটা বিখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘লোটা ওয়ার্ল্ডওয়াইড। বিখ্যাত অনলাইন শপিং কোম্পানি শপিফাইয়ের একটা ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জেতার পর ওর ভেতর আরও ভালো কিছু করার উদ্দীপনা তৈরি হয়। সীমিত আয়ে ওর পরিবার কীভাবে দিন কাটাত সেগুলো দেখে নিজের কাজকে প্রতিদিন আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস চালাত ম্যাটিও গালভেজ। বর্তমানে লোটা ওয়ার্ল্ডওয়াইড আমেরিকার তরুণদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড।

কেটি কারসন
হাইস্কুলে পড়া অবস্থাতেই কেটি কারসন তার নিজের ব্যবসা শুরু করে। সাবান বানানোর ওপর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর কেটি নিজে সাবান বানিয়ে ওর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন কন্টেন্ট বানাত; খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ওর কমিউনিটিতে সাবানের ব্র্যান্ডটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রথম ভিডিওতে কেটি কারসন অন্য সাবান নির্মাতাদের ওপর ভিডিও বানালেও এরপর থেকে নিজে কীভাবে সাবান বানায় সেগুলো দেখাত। এর ফলে ওর ইউটিউব চ্যানেল অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক বেশি নতুন সদস্য পেতে শুরু করে। জনপ্রিয়তা দেখে কেটি নিজেই অবাক হয়ে যায়; ওর কাজ যে এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে সেটা আশা করেনি। কাজটায় বেশি আনন্দ পায় সে। ওর সাবানের ব্র্যান্ডের নাম ‘রয়েলটি সোপস’।

জাহ্নবী

একঝাঁক তরুণের ব্যতিক্রমী আয়োজন

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম
একঝাঁক তরুণের ব্যতিক্রমী আয়োজন
মাংস বিতরণের আগে

কেউ প্রবাসে কাঙ্ক্ষিত সফলতা না পেয়ে ফিরে এসেছেন দেশে, ব্যবসায় বিফল হয়ে কেউ আছেন আর্থিক সংকটে, কেউ কেউ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অল্প বেতনে কর্মরত, আছেন দিনমজুরসহ সমাজে বসবাস করা নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত অসংখ্য পরিবার; যারা আর্থিক সংকটের কারণে কোরবানি দিতে না পেরে বঞ্চিত হন মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার আনন্দ থেকে। মুখ ফুটে প্রকাশ্যে সাহায্য চাইতে না পারা সমাজের নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত এসব মানুষের সঙ্গে কোরবানির আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার একঝাঁক তরুণ ও পাঁচটি সংগঠন কয়েক বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যতিক্রমী একটি কার্যক্রম। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব তরুণের সম্মিলিত উদ্যোগে পশু কোরবানি দিয়ে মাংস গোপনে পৌঁছে দেওয়া হয় কোরবানি করতে না পারা পরিবারগুলোর কাছে। কার্যক্রমে অর্থের জোগান দেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, বিশেষ করে প্রবাসীরা।

অসহায়ে চক্ষু মেলো পরিবার একটি সংগঠনের নাম। এবার ঈদুল আজহায় চতুর্থবারের মতো ৮৫টি পরিবারের মাঝে গোপনে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনের সভাপতি শরীফ আল হাসান বলেন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশেষ করে প্রবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া অনুদানের অর্থে কোরবানির জন্য পশু কেনা হয়। সন্দ্বীপের প্রতিটি ইউনিয়নে সংগঠনের সদস্যদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত লোকজন আছেন। মূলত তাদের মাধ্যমে আর্থিক সংকটের কারণে কোরবানি দিতে পারেননি এমন পরিবারগুলোর খোঁজ পাওয়ার পর একটি তালিকা তৈরি করে মাংস পৌঁছে দেওয়া হয়। মাংস পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কাকে কাকে মাংস দেওয়া হয়েছে সেটা সংগঠনের সদস্যরা ছাড়া অন্য কেউ জানতে পারে না। যে যেভাবে মাংস নিতে চায়, সেভাবেই পৌঁছে দেওয়া হয়। কেউ বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলেন, কেউ নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা দিলে, সদস্যরা শপিং ব্যাগে গোপনীয়তা রক্ষা করে মাংস পৌঁছে দেন।

রক্তদাতাদের সংগঠন সন্দ্বীপ ব্লাড ডোনার ফোরাম ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে পঞ্চমবারের মতো এ বছর ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায় কেনা গরু কোরবানি দিয়ে মাংস পৌঁছে দিয়েছে ১০১টি দুস্থ, অসহায় ও কোরবানি করতে না পারা নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে। সংগঠনের সভাপতি টিপু সুলতান বলেন, অনেক পরিবার আছে বিভিন্ন সমস্যার কারণে কোরবানি করতে পারেন না। সামাজিক অবস্থানগত কারণে এসব পরিবারের পক্ষে প্রকাশ্যে সাহায্য চাওয়াও সম্ভব নয়। পরিবারের বড়রা পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিলেও, ছোট সদস্যরা ঈদুল আজহায় কোরবানির মাংস খাওয়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। এরকম পরিবারগুলো খুঁজে বের করে গোপনে মাংস পৌঁছে দেওয়া হয়। আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে যারা অবগত আছেন, ঈদুল আজহার আগে তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ও ফেসবুকের মাধ্যমে ফান্ড কালেকশন করা হয়।
আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন এক যুগ ধরে নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করছে। এ বছর ১২০টি পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে তিনটি গরুর মাংস। প্রতিটি পরিবার পেয়েছে চার কেজি করে মাংস। গরু কেনা থেকে শুরু মাংস পৌঁছে দেওয়ার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন পারভেজ আলম রুস্তম, ফাহাদ চৌধুরী, মিলাদ আব্বাস, ফায়েল খান ও ওসামাসহ একঝাঁক তরুণ। কার্যক্রমের সমন্বয়কারী পারভেজ আলম রুস্তম বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন সব মানুষকে খুঁজে বের করা যারা কোরবানি দিতে পারেননি, কিন্তু প্রকাশ্যে মাংসের চাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করে এমন পরিবারগুলো খুঁজে বের করে, গোপনে তাদের কাছে মাংস পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গরিব অসহায়দের মাঝেও মাংস বিতরণ করা হয়েছে।

নিজস্ব উদ্যোগে মাংস বিতরণের পাশাপাশি ইয়ুথ ক্লাব অব চিটাগং, সন্দ্বীপ নামের একটি সংগঠনকেও দুস্থ ও অসহায়ের জন্য গরু কোরবানির কার্যক্রমে ১ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন। ইয়ুথ ক্লবাব অব চিটাগং, সন্দ্বীপ অন্যান্য সামাজিক কাজের পাশাপাশি কোরবানির মাংস বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে দীর্ঘ আট বছর। ইয়ুথ ক্লাব অব চিটাগাং, সন্দ্বীপের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান বলেন, প্রতি বছর আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এবং আমাদের কিছু ডোনার অর্থায়ন করে থাকেন। এবার ৫০ জনকে আড়াই থেকে তিন কেজি করে মাংস বিতরণ করা হয়েছে। মাংস বিতরণের ক্ষেত্রে প্রতি বছরের মতো এবারও কোরবানি করতে না পারা মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো খুঁজে নেওয়া হয়েছে।

কোরবানির আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে মানুষ মানুষের জন্য নামের একটি সংগঠন তৃতীয়বারের মতো এবার ঈদুল আজহায় মাংস বিতরণ করছে ৮৯টি পরিবারের মাঝে এবং ইরামন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে গরু ও ছাগল কোরবানি। মানুষ মানুষের জন্য সংগঠনের কোরবানি কার্যক্রমের অন্যতম উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, তৃতীয়বারের মতো আমরা এবার ৮৯টি পরিবারকে দিতে সক্ষম হয়েছি। গত কোরবানিতে ছিল ৪৭ পরিবার। আমাদের নির্দিষ্ট কিছু প্রতিনিধি গোপনীয়তার সঙ্গে উপহার পৌঁছে দিয়েছে যেন আমাদের উপহার পেয়ে কোনো পরিবারকে লজ্জিত হতে না হয়। গোপনীয়তাকে শতভাগ নিশ্চয়তার প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

সাংগঠিনক উদ্যোগের পাশাপাশি তরুণদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাস্তবায়িত হয়েছে নিম্নআয়ের সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে মাংস বিতরণের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। তৃতীয়বারের মতো এবার ঈদুল আজহায় বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া অনুদান থেকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় কেনা ৪টি গরু কোরবানি দিয়ে সুবিধাবঞ্চিতদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে একঝাঁক তরুণ, যাদের মধ্যে জাহিদ হাসান শাকিল, মিজানুর রহমান মাহি, নজরুল মাহমুদ, আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ হামিদ, মিলাদ আব্বাস, মহব্বত আলম, মোহাম্মদ মিকাত, মোহাম্মদ মেহরাজ, মোহাম্মদ মাসুদ রানা, জাহিদুর ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম সবুজ অন্যতম।

নিম্নআয়ের সুবিধাবঞ্চিতদের মাংস বিতরণ কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা জাহিদ হাসান শাকিল বলেন, তৃতীয়বারের মতো এবারও আমরা নিম্নআয়ের সুবিধাবঞ্চিতদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিয়েছি। দুদিন সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ২৬০টিরও বেশি পরিবারকে আমাদের টিমের সদস্যরা মাংস পৌঁছে দিয়েছে। আমাদের প্রথম শর্ত মাংসের প্যাকেটগুলো কাকে দিয়েছি কেউ জানবে না, সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

ফান্ড কালেকশন ও নিম্নআয়ের মানুষ নির্বাচনের পদ্ধতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই কার্যক্রম সম্পর্কে মানুষের মনে একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি হওয়ায় ঈদুল আজহার আগে অনেকে খোঁজখবর নেন। মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে ফান্ড কালেকশন করা হয়। নিম্নআয়ের মানুষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের টিমের সদস্যরা সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে তালিকা তৈরি করেন। পাশাপাশি ফেসবুকের মাধ্যমে সাহায্যপ্রার্থীদের টিমের সদস্যদের ইনবক্সে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

জাহ্নবী

বরফ ঢাকা এস্কিমো টিনএজার

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০১:৩২ পিএম
বরফ ঢাকা এস্কিমো টিনএজার
এস্কিমো তরুণী। এস্কিমো টিনএজারদের খেলা

উত্তর মেরুতে বসবাসরত একদল মানুষের নাম এস্কিমো। এ দের বেশ কয়েকটি গোত্র আছে। এরা সাধারণত যাযাবর ধরনের জীবন ধারণ করে। শীত এবং গ্রীষ্মে আলাদা আলাদা জায়গায় এবং আলাদা রকমের ঘরে জীবনযাপন করে। আলাস্কার বরফাচ্ছাদিত অঞ্চল, নরওয়ের গ্রিনল্যান্ড, কানাডা ও রাশিয়ার অঞ্চলের উত্তর মেরুতে এস্কিমোরা বাস করে।

একটা সময় ছিল সব এস্কিমো বরফ দিয়ে বানানো ঘরে বাস করত। কিন্তু এখন তা নয়। আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় তাদের জীবনও পাল্টে যেতে শুরু করেছে। ঘরগুলোকে বলা হয়, ইগলু। ইগলু শব্দের অর্থ বরফের বাড়ি। এস্কিমোরা তাদের জীবনধারণের জন্য প্রধানত পশুর ওপর নির্ভর করে থাকে। স্লেজ নামক এক ধরনের কুকুরে টানা গাড়িতে এস্কিমোরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায়। পশু শিকার এবং মাছ শিকার তাদের প্রধান পেশা। একটা সময়ে এস্কিমো শিশু, টিনএজারদের শিক্ষার মূল বিষয়ই ছিল পশু শিকার, মাছ ধরা, নিজেদের পালন করার মতো এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনের জন্য হাতে বানানো বিভিন্ন তৈজসপত্র তৈরি। একটা ছেলের প্রথম চিন্তা ছিল কীভাবে সে দক্ষ মাছ শিকারি হয়ে উঠবে, মাছ ধরে নিয়ে আসবে পরিবারের জন্য। ছেলেদের বিয়ের প্রথম যোগ্যতাই ছিল, তাকে প্রমাণ করতে হতো, সে মাছ শিকার করে, বরফের ঘর বানিয়ে এবং পশু শিকার করে তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ করতে পারবে! এরপর ছেলেটা ১৭ বা ১৮ বছর হলে সে মেয়ের বাড়ি চলে যেত। এটাকে বলা হতো বিবাহপূর্ব প্রস্তুতি। এরপর হবু শ্বশুরের সঙ্গে গৃহস্থালী কাজকর্ম করত। এভাবে তিন চার বছর অতিক্রম হলে যখন মনে করা হতো যে এবার ছেলেটি একা একা ঘর বাঁধতে পারবে তখন তাদের ভিন্ন পরিবার গড়ার অনুমতি মিলত। মেয়েটির বয়স তখন হয়তো ১৫ কী ১৬ বছর। আর মেয়েরা পরিবার কীভাবে সামলাতে হবে সেটায় দক্ষ হওয়ার চেষ্টা করত। অর্থাৎ ছেলে এবং মেয়ের চিন্তাই ছিল শুধু পরিবারকে ঘিরে। আর কোনো কিছুর চিন্তা করার অবসর বা উপায় কোনোটাই ছিল না। বাবা-মায়ের প্রভাব থেকে বের হওয়ার রাস্তা ছিল একেবারে বন্ধ। বিয়ে করতে গেলেও বাবা-মায়ের কথাই ছিল শেষ কথা। তখন বাল্যবিয়েই দিত। বাবা অনেক সময় মেয়ে ছোট থাকতেই অন্য কোনো পরিবারের ছেলের জন্য বিয়ে ঠিক করে রাখত। এমনকি সন্তান জন্মানোর আগেই বাবা-মা আরেক পরিবারকে কথা দিয়ে রাখত তার সন্তানকে তাদের সন্তানের সঙ্গে বিয়ে দেবে ভবিষ্যতে। কিন্তু এখন অবস্থা একেবারে উল্টো। এখন ছেলেমেয়েরা অনেক স্বাধীনতা ভোগ করে। যখন তাদের পড়াশোনা থাকে না তারা জুটি বেঁধে সময় কাটায় বা কোনো কাজকর্মে যুক্ত হয়। কে কখন কাকে বিয়ে করবে সেটা তার একান্ত নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়। কদাচিৎ হয়তো তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে আলাপ করে। 

এস্কিমোরা একটা সময় এমন পরিবেশে বাস করত যেখানে সাধারণ মানুষ বাস করার চিন্তাও করতে পারত না। ১৯৭০ সালেও এস্কিমোদের বসবাসের অঞ্চলে কোনো হিটিং সিস্টেম ছিল না, দোকান ছিল না, রাস্তাঘাট ছিল না। অথচ শীতকালে ওইসব অঞ্চলে প্রায়ই মাইনাস ৪০-৫০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নেমে যায়। এমনকি কখনো মাইনাস ৭০ ডিগ্রি নামে। যেখানে এ অবস্থা সেখানে পরিবারের টিনএজাদের জন্য জন্য শিক্ষার আশা করা যায় না। তারা বড়দের দেওয়া শিক্ষা দিয়েই জীবন পার করত। এভাবেই হাজার হাজার বছর ধরে এস্কিমোরা তাদের জীবন পার করে দিয়েছে।

কিন্তু অবস্থা এখন পাল্টেছে। মাত্র ২০ থেকে ৩০ বছর আগে থেকে এই পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। এখন বিভিন্ন আধুনিক শিক্ষায় ঢোকার ফলে টিনএজাররা শিক্ষিত হয়ে তাদের সমাজ-সংসারে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এনে দিচ্ছে। টিনএজারদের জীবনেও আসছে পরিবর্তন। তারা তাদের পুরাতন সংস্কার ঝেড়ে ফেলে দিচ্ছে। এখন ওইসব অঞ্চলের সরকারগুলো এস্কিমোদের আদি জীবন থেকে শহুরে জীবনে এনে আধুনিক জীবনব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে। এখন অনেক এস্কিমো পরিবার শহরে এসে বাস করে। শিশু ও টিনএজাররা দেশের মূল শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শুরু করেছে। কিন্তু এখনো অনেক টিনএজার তাদের পড়াশোনা শেষ করে ঠাণ্ডার রাজ্যে ফিরে যেতে চায়। তারা শহরে নিজেদের আগন্তক মনে করে। শহুরে জীবন তাদের পছন্দ নয়। নিজেদের জায়গা ছেড়ে না যেতে চাওয়াটা টিনএজারদের জীবনে নানা ধরনের বিপত্তি ডেকে আনে। যেমন, যেখানে তারা থাকে সেসব দুর্গম অঞ্চলে পড়ালেখা করে চাকরির সুযোগ অনেক কম। চাকরি যেখানে বেশি সেখানে তারা থাকতে চায় না। এ ছাড়া পড়াশোনা করার অনিচ্ছার কারণে তাদের মধ্যে চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় ডিগ্রি থাকে না। এজন্য তাদের চাকরিতে ঢোকাও একটা সমস্যা হয়ে থাকে। ফলে বেকারত্ব অনেক সময় তাদের হতাশার দিকে নিয়ে যায়। অ্যালকোহল ও অন্য নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে তারা। আত্মহত্যার প্রবণতাও বেশি দেখা যায় উত্তরাঞ্চলীয় বরফাচ্ছাদিত টিনএজারদের মধ্যে। আবার ধরাবাধা স্কুল জীবন, হোস্টেলে থাকা এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন জীবন টিনএজারদের মধ্যে হতাশা এবং অসহায়ত্বের জন্ম দেয়। এতে দেখা যায় তাদের পড়ালেখার মানও হ্রাস পায়। হয়তো নাইনথ গ্রেডের ছাত্র বা ছাত্রী সত্যিকার অর্থে তার লেখাপড়ার অর্জন সিক্সথ বা সেভেনেথ গ্রেডের সমান। শহরে পড়তে আসা এসব ব্যাপার টিনএজারদের মাঝে কিন্তু অহরহ দেখা যায়। অনেকে স্কুলই ছেড়ে দেয় কয়েক মাস পড়ালেখা করেই।

এস্কিমো পিতা-মাতাদের আদর পৃথিবী বিখ্যাত। তারা কখনো তাদের সন্তানদের মারধর করে না। এস্কিমো পরিবারের মূল বিষয়ই হলো যারা টিনএজার তরুণ তাদের জীবন চলার পথে সব রকমের সাহায্য-সহযোগিতা করা, শিকার করা, মাছ ধরা, ঘর তৈরি করা শেখানো। গল্প বলার মাধ্যমে ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং পারিবারিক মূল্যবোধ শেখানো। পরিবেশ, আধ্যাত্মিকতা ও সামাজিক কর্তব্য শেখানো হয়। পারিবারিক শিক্ষার পাশাপাশি চলে সাধারণ শিক্ষা। এ সাধারণ শিক্ষা চলে অঞ্চল অনুযায়ী। কানাডা অঞ্চলের এস্কিমো ছেলেমেয়েরা তাদের নিজস্ব ভাষা এবং কানাডার ভাষা ইংরেজি বা ফরাসি ভাষায় এবং রাশিয়া অঞ্চলের এস্কিমোরা এস্কিমো ভাষা এবং রাশিয়ান ভাষায় পড়ালেখা করে। কিন্তু সমস্যা হলো যারা শহর থেকে বহু দূরে থাকে সেসব অঞ্চলে স্কুলে মানসম্পন্ন শিক্ষক পাওয়া অনেক কঠিন। কারণ উচ্চশিক্ষিত শিক্ষকরা শহরে ভালো কাজ পেলে কেন ঠাণ্ডার মধ্যে কষ্ট করতে যাবে? ভাষাও একটা সমস্যা। স্থানীয় ভাষায় শিক্ষক পাওয়া কঠিন। এসব বিষয় এস্কিমো টিনএজারদের শিক্ষার ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। খাবারের রুচিতেও তাদের ঐতিহ্যগত খাবার কাঁচা মাছ, মাংস ছাড়াও তারাও এখন ফাস্টফুড খেতে পছন্দ করছে।

এস্কিমো টিনএজাররা সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানো ছাড়াও তাদের মধ্যে বরফ ছোড়াছুড়ি, নিজেদের শক্তি পরীক্ষা যেমন পাঞ্জা লড়াই, লাথি মারা এবং নানা ধরনের কুস্তি বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া যারা স্কুল-কলেজে পড়ে সেসব টিনএজার আধুনিক অন্যান্য টিনএজারদের মতোই ফুটবল, সকার, হকি খেলে। তবে এস্কিমো সমাজে যৌন আচরণের ক্ষেত্রে তাদের বিধিনিষেধ বেশ ঢিলেঢালা। সময় হলে একজন আরেকজনের সঙ্গে ঘর করবে ব্যস! কোনো আনুষ্ঠানিক বিয়ের অনুষ্ঠানেরও দরকার হয় না।    

জাহ্নবী

 

মানবিক জাকির

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
আপডেট: ২১ জুন ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
মানবিক জাকির
দুঃস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন জাকির ও তার দল

লক্ষ্মীপুর জেলার মো. জাকির হোসেন। এলাকায় পরিচয় মানবিক জাকির নামে। সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জেই তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকেই আশপাশের মানুষের জীবন সংগ্রাম আর দুঃখ-দুর্দশার সঙ্গে তার নিবিড় পরিচয়। ফেসবুকে ‘মানবিক শওকত’-এর কার্যক্রমগুলো তার মনে দারুণভাবে দাগ কাটে। ভাবতে থাকেন কীভাবে অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো যায়। সময়টা ছিল ২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। জাকির তখন একাদশ শ্রেণির ছাত্র। আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মানবসেবা ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করেন। পাশে ছিল রাফসান জানী শুভ, শাকিল মাহমুদ, আরমান হোসেন, তারেক হোসেন ও ফজলে রাব্বি।

সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার রায় তিন মাস পর ২০২২ সালের মে মাসে সিলেটে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। সেই বন্যাদুর্গতদের জন্য ৩৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদানের মধ্য দিয়ে জাতীয় কোনো দুর্যোগে তাদের অবদানের সূচনা। অসহায়দের মাঝে খাদ্যসামগ্রী, শীতবস্ত্র ও কম্বল বিতরণ, ঈদ ও ইফতারসামগ্রী বিতরণ, শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, সবজি ডোনেট বক্সের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের মাঝে সবজি পৌঁছে দেওয়া, রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, স্যালাইন পানি বিতরণসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

মানবসেবার শুরুটা নিজেদের পকেট খরচের স্বল্প টাকায় শুরু করলেও বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের অনুদান পাচ্ছেন তারা। সে কারণে তাদের সেবা কার্যক্রম হয়েছে আরও বেগবান। সম্প্রতি তাদের মানবসেবা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি অসহায় পরিবারকে ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে; যা পর্যায়ক্রমে আরও বিস্তৃত হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মো. জাকির হোসেন। জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের বয়সী কেউ কেউ অসৎ সাহচর্যে গিয়ে মদ, গাঁজা, ইয়াবা সেবনসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। আমরা এই ভেবে গর্বিত যে, আমরা তাদের মতো নই। তাদের মতো অসামাজিক কাজে সম্পৃক্ত না থেকে বরং সামাজিক ও মানবিক কাজে নিজেদের যুক্ত রাখতে পেরেছি। 
মানবসেবা ফাউন্ডেশনের বয়স মাত্র দুই বছর। কাজের সময়টা খুব বেশি নয়। তবু তারা কাজ করেন পরিকল্পনা মাফিক। তাদের কার্যক্রমগুলো অনেকটাই সাজানো-গোছানো। প্রায় ৩০ জন সক্রিয় সদস্যের মাধ্যমে মানবিক সেবা যথাসাধ্য পৌঁছে দিচ্ছেন দুস্থ অসহায়দের দোরগোড়ায়। জাকিরের ইচ্ছে, সব গৃহহীনের মাঝে ঘর, হতদরিদ্র অসহায়দের মাঝে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো সব মৌলিক সুবিধা যেন পৌঁছায়। নিজ এলাকার গণ্ডি পেরিয়ে আশপাশের অঞ্চলেও যেন এমন সেবা পৌঁছানো যায় সে বিষয়টা নিয়েও তারা ভাবছেন। হয়তো খুব বেশি দূরে নয়, এভাবে মানবসেবা কার্যক্রম চালিয়ে গেলে অচিরেই পুরো দেশ তাদের সেবার আওতায় চলে আসবে। জাকির হোসেন ও তার দলবল সেটাই আশা করেন।

জাহ্নবী

বিশ্বজয়ী পাঁচ বিজ্ঞানী যখন তরুণ ছিলেন

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ০১:০১ পিএম
আপডেট: ২১ জুন ২০২৪, ০১:০১ পিএম
বিশ্বজয়ী পাঁচ বিজ্ঞানী যখন তরুণ ছিলেন

পৃথিবীর বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের সবাই পড়াশোনা শেষ করার পর কাজে মনোনিবেশ করেছেন তা নয়, স্কুলে পড়া অবস্থায়, বা স্কুল থেকে কলেজে ওঠার পরপরই অনেকে ইতহাস সৃষ্টিকারী দারুণ সব জিনিস আবিষ্কার করে ফেলেন। বয়স কম বলে যদি তাদের অবজ্ঞা করা হতো তাহলে আজ আমরা বিজ্ঞানের অনেক আবিষ্কার ও অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতাম। একাগ্র চেষ্টা আর জ্ঞানের প্রতি সুতীব্র তৃষ্ণার কারণে বিশ্ববাসী তাদের আবিষ্কার দিয়ে নিজেদের এগিয়ে নিয়েছে অনেক দূর। এমন পাঁচজন বিজ্ঞানী আছেন যারা তরুণ বয়সেই আগামীর পৃথিবীকে আরও সুন্দর পথ বিনির্মাণ শুরু করেছিলেন। এই পাঁচ বিজ্ঞানীর তরুণ বয়সের গল্প শোনাচ্ছেন হাসিবুল হোসেন শান্ত

আইজ্যাক নিউটন 
পড়ালেখার প্রতি একাগ্রতা আর বিভিন্ন বিষয়ে ভালো ফলাফলের কারণে স্কুলের সবাই নিউটনকে দেখে মুগ্ধ হতো। ওই বয়সে সবাই টুকটাক কিছু যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করে বটে, কিন্তু নিউটনের মেধা ছিল অন্য পর্যায়ে। যদিও নিউটনের মা চেয়েছিলেন ছেলে কৃষিকাজে মনোযোগ দিক। এজন্য স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিলেন ছেলেকে। শিক্ষকরা নিউটনের ভালো ফলাফলের বিষয়টা মাকে বোঝালেন; বললেন ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনার কথা। নিউটনের মা ছেলের ইচ্ছার মূল্য দিলেন। ১৬৬১ সালে স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে পা রাখলেন ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে। নানা রকম বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন নিউটন। আলোকবিদ্যা আর রং বিন্যাস বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন নিউটন।

অ্যালবার্ট আইনস্টাইন
তরুণ বয়সেই গণিত এবং বিজ্ঞানের প্রতি আইনস্টাইনের প্রবল আগ্রহ তাকে অন্য ছাত্রদের তুলনায় স্বতন্ত্র করে তোলে। জুরিখের সুইস ফেডারেল পলিটেকনিকের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বটে, তবে আশানুরূপ ভালো ফলাফল করতে পারেননি। তবে গণিত আর পদার্থবিদ্যায় তাক লাগানো রেজাল্ট ছিল তার। আইনস্টাইন ভর্তি হন সুইজারল্যান্ডের আরাউ অঞ্চলে অবস্থিত আরউ ক্যান্টনাল স্কুলে, যেখানে পদার্থবিদ্যা আর গণিত বিষয়ে বরাবরই সর্বোচ্চ নম্বর পেতেন। আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটির কথা কে না জানে? আমরা বর্তমানে কোথাও যাওয়ার জন্য গুগল ম্যাপের আশ্রয় নিই। আইনস্টাইন যদি জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি তত্ত্ব না দিতেন, তাহলে পৃথিবীর অরবিটের সঙ্গে “জিপিএস” বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের সিনক্রোনাইজেশন করতে পারতাম না আমরা, গুগল ম্যাপও পেতাম না। 

অ্যারিস্টটল
তরুণ বয়সেই অ্যারিস্টটল জ্ঞানের প্রায় সব শাখাতেই বিচরণ শুরু করেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে প্লেটোর একাডেমিতে পড়াতে শুরু করেন অ্যারিস্টটল। সেখানে প্রায় ২০ বছর অধ্যায়ন করেন তিনি। পদার্থবিদ্যা, গণিত, জীববিজ্ঞান, দর্শনসহ বিভিন্ন বিষয়ে অ্যারিস্টটলের অবদান আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ করেছে। মজার বিষয় হলো, মুরগির ডিম থেকে কীভাবে বাচ্চার জন্ম হয়, তার ক্রমধারা বিজ্ঞানের ভাষায় প্রথম ব্যাখ্যা করেছিলেন অ্যারিস্টটল। 

গ্যালিলিও গ্যালিলি
বাতাসের ঝাপটায় শুধু ঝাড়বাতি কেন, অনেককিছুই এদিক ওদিক দুলতে পারে, তাই না? এত অবাক হওয়ার কী আছে? কিন্তু এই সাধারণ বিষয়টিই ভাবিয়ে তুলেছিল ডাক্তারি পড়তে থাকা এক তরুণকে। বিখ্যাত বিজ্ঞানী গ্যালিলিও ডাক্তারি পড়ছিলেন ইতালির ইউনিভার্সিটি অব পিসাতে। তখন তার বয়স মাত্র ১৭ বছর। বাতাসে ঝাড়বাতির নাড়াচাড়া দেখেই তিনি আবিষ্কার করে ফেললেন পদার্থ বিদ্যার এক দারুণ অবদান- সরল দোলক বা সিম্পল পেন্ডুলাম। এরপর ডাক্তারি ছেড়ে গণিতবিদ্যায় মনোনিবেশ করেন। তার সফলতার ফল তো আজ দুনিয়ার মানুষের কাজে লাগছে।

ব্লেইজ প্যাসকেল
এখনকার কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপে এমন একটি টুলস্ আছে, যা আবিষ্কৃত হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে, ভাবা যায়? আমরা প্রতিদিনের কাজে যে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করি সেটার আবিষ্কারক এক ফরাসি পদার্থবিদ, গণিতবিদ ব্লেইজ প্যাসকেল; মাত্র ১৬ বছর বয়সে ক্যালকুলেটরের প্রোটোটাইপ বানিয়ে মেকানিকেল ক্যালুকুলেটর তৈরির দরজা উন্মুক্ত করেন। ১৬৪২ সালে তিনি আবিষ্কার করেন অ্যারিথমেটিক মেশিন বা ‘প্যাসকেলাইন’। ফ্রান্সের রুয়েন শহরের ট্যাক্স কালেক্টর ছিলেন ব্লেইজ প্যাসকেলের বাবা এতিয়েন প্যাসকেল। ট্যাক্স হিসাব-নিকাশে বাবার সুবিধা করে দেওয়ার জন্যই এই মহতী কাজে হাত লাগান তরুণ প্যাসকেল। ক্যালকুলেটর ছাড়া বর্তমানে কি চলে?

জাহ্নবী

নেপালের টিনএজার

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম
আপডেট: ২১ জুন ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম
নেপালের টিনএজার

নেপাল অর্থনৈতিকভাবে একটি দুর্বল দেশ। নেপালের মূল আয় পর্যটন। বিশেষ করে হিমালয়কে ঘিরে সবকিছুর আয়োজন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের টিনএজারদের জীবন এবং শহর অঞ্চলের টিনএজারদের জীবনযাপনের ধরন স্বাভাবিকভাবেই এক নয়। যেমন গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ ছেলে টিনএজারদের একটা স্বপ্ন থাকে বড় হয়ে সে শেরপা হবে। শেরপা হলো যারা হিমালয় জয় করতে যায়, সেই সব অভিযাত্রীর সঙ্গী হয়ে একটা নির্দিষ্ট উচ্চতা অবধি এগিয়ে দিয়ে আসে। বিশেষ করে শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে অনেক ছেলের স্বপ্ন থাকে দেশের সৈনিক হওয়া বা ব্রিটিশ সেনাদলে নাম লেখানো। ব্রিটেনে এখনো গোর্খা ব্রিগেড আছে, যারা মূলতঃ নেপাল থেকে যায়। বিশেষ করে ছেত্রী, গুরং, মাগার, রাই ও লিম্বু সম্প্রদায়ের যুবকরা ব্রিটিশ গোর্খা রেজিমেন্টে যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। যদিও সৈনিক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার অতীব কঠিন পথ পার হয়ে যেতে হয়। গোর্খা সৈন্যদলে যোগ দেওয়ার মূল কারণ, এটা পারিবারিক ও সামাজিকভাবে খুব সম্মানের সঙ্গে নেওয়া হয়। বিদেশে অ্যাডভেঞ্চার, সঙ্গে উচ্চ বেতন- এসবই নেপালি যুবকদের একাজে যাওয়ার জন্য উৎসাহ জোগায়। আবার শহর অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা স্বপ্ন দেখে ডাক্তার, প্রকৌশলী বা অন্য পেশাজীবী হওয়ার।

নেপালে প্রাথমিক শিক্ষায় প্রবেশের বয়স পাঁচ। শুরু হয় বেসিক এডুকেশন পর্যায়। এই ধাপটি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত। এরপর মাধ্যমিক স্তর হলো নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি। কিন্তু নেপালেও উপমহাদেশের অন্যান্য দেশের মতো মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং খাবারের ক্ষেত্রেও বৈষম্যের শিকার হতে হয়। শহর অঞ্চলেও ছেলেদের উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠানো হয় আর মেয়েদের ক্ষেত্রে চিন্তা করা হয় বিয়ের কথা। গ্রাম অঞ্চলে এই বৈষম্য চরম।

নেপালি টিনএজারদের খুব বেশি পড়ালেখার চাপ নিতে হয়। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের বিষয়ে বাবা-মা ও সমাজের একটা বড় ধরনের চাপ থাকে। অন্যের এই চাওয়া-পাওয়াটা অনেক ছেলেমেয়েকে বিষণ্নতার দিকে ঠেলে দেয়। নেপালে দারিদ্র্য একটা বড় সমস্যা। দারিদ্রতার কারণে স্বল্প আয়ের পরিবার থেকে আসা টিনএজাররা যথাযথ শিক্ষা নিয়ে বড় হয়ে ওঠার সুযোগটা কমই পায়। আর এর ফলে তাদের জীবনও বিকশিত হতে পারে না। আইনগত বিধিনিষেধ থাকলেও বিষণ্নতা বা যথাযথ মানসিক ও আর্থিক সমর্থন না পাওয়ার কারণে অনেক ছেলেমেয়ে জীবনসংগ্রামে টিকতে না পেরে হাল ছেড়ে দেয়। এরপর তারা অ্যালকোহল, তামাকজাত বস্তু ও ড্রাগের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। ভূমিকম্প, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের দরুন ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগও নেপালি টিনএজারদের জীবন ওলটপালট করে দেয়। যেমন ২০১৫ সালের ভয়ংকর ভূমিকম্পে ৯ হাজার স্কুল পুরোপুরি বা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এতে করে ১০ লাখ ছেলেমেয়ের লেখাপড়ায় বিপর্যয় নেমে আসে। প্রাকৃতিক কারণে অভিভাবকদের মৃত্যুও টিনএজারদের জীবনে অবর্ণনীয় দুঃখকষ্ট বয়ে আনে। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও টিনএজারদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করে।  

নেপালের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের গ্রামগুলোতে একটি কুপ্রথা পালন করা হয়, এর নাম ‘চৌপদী’। মেয়েদের পিরিয়ডের সময় তাদের মূল বসবাসের ঘরের বাইরে একটি কুঁড়েঘরে বা গরুর ঘরে রাখা হয়। এসব হতভাগা মেয়ের অভিভাবক মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, এ সময় মেয়েরা হয়ে যায় অপবিত্র এবং মূল ঘরে রাখলে পরিবারের অমঙ্গল হবে! এ কুপ্রথার দরুণ অল্পবয়সী মেয়েরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে ঠাণ্ডাজনিত রোগে কাবু করে ফেলে। নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে এমন ঘটনাও আছে।

নেপালে ‘টানি বিবাহ’ নামে একটি প্রথা আছে, যেখানে একবার একটা মেয়েকে অপহরণ করে ঘরে তুলতে পারলেই হলো, তাতে সেই পুরুষের বিয়ে করার অধিকার জন্মে যায়, মেয়েটির ইচ্ছা থাকুক আর না থাকুক। নেপালে ‘ছোট্টি বাসনে’ নামে আরেকটি বিবাহ প্রথা বহু বছর ধরে প্রচলিত আছে। ‘ছোট্টি বাসনে’ প্রথায় কোনো একজন ছেলে আসবে মেয়েটির গ্রামে। ছেলেটি মেয়েটির বাড়ি আসবে বা কোনো খোলা জায়গায় মেয়েটিকে দেখে গান গাইবে, নাচবে মেয়েটির ভালোবাসা পাওয়ার জন্য। তখন মেয়েটির মা-বাবা সঙ্গে থাকতে পারে। ছেলেটি মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেবে। মেয়েটি যদি রাজি হয় তাহলে বিয়ে সেখানেই ফাইনাল। সবই ঠিক আছে। কিন্তু আসলে মেয়েটির মতামতকে পাত্তা দেওয়া হয় না। তার এ বিয়েতে সম্মতি আছে কি না? কিন্তু এভাবে কোনো ছেলে প্রস্তাব দিলে ছেলেটির মেয়েটিকে বিয়ে করতেই হয়। এসব প্রথাকে গ্রামবাসী মেনে চলে। গ্রামের জনপ্রতিনিধিরাও পুলিশকে এসব কু-প্রথার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দেয় না। মেয়েরাই এসব কুপ্রথার একমাত্র শিকার। মেয়েদের বিরুদ্ধে যায় এমন অনেক কু-প্রথা বিরাজমান আছে নেপালে।

বিষয়গুলো এতই বৈষম্যমূলক যে, এসব কুসংস্কারকে বাধা দেওয়ার জন্য আইন পাস করা হয়েছে। কিন্তু তাতে এসব কু-প্রথা পালন বন্ধ করা যায়নি। এসব রয়েই গেছে। যেহেতু দরিদ্র পরিবারে অভাবের কারণে অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার জন্য বাবা-মাই অস্থির হয়ে পড়েন, সে ক্ষেত্রে দেখা যায় মেয়েরা অনেক সময় তাদের কোনো পছন্দের পাত্রের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। সেখানেও তারা বেশির ভাগ সময় আরও প্রতিকূল অবস্থার শিকার হয়। অল্প বয়স্ক স্বামীর যথাযথ উপার্জন এবং দায়িত্ব নেওয়ার মতো মানসিক পরিপক্বতা না থাকায় নাবালিকা মেয়েটি শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর খুঁজে পায় না। নেপালিদের মধ্যে বিবাহপূর্ব যৌনতাকে সমর্থন করা হয় না। তার পরও ১৮-১৯ বছরের মধ্যে ছেলেমেয়েদের অনেকেরই যৌনতার অভিজ্ঞতা হয়ে যায়।

নেপালে পারিবারিক মূল্যবোধকে মূল্যায়ন করা হয়। মেয়েরা বাড়ির কাজে মাকে সাহায্য করবে, ছেলেরা বাবাকে। পরিবারের বড়দের সম্মান করাও নেপালি টিনএজারদের অবশ্য কর্তব্য। ছেলেমেয়েরা বিয়ে বা চাকরি পাওয়া পর্যন্ত বাবা-মায়ের পরিবারেই থাকে। মেয়েরা তো অবশ্যই বিয়ে পর্যন্ত বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকে।

নেপালে আছে বহুবিধ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব। এসব উৎসবে টিনএজাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। এসব উৎসব তাদের নিজ সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্যের প্রতি পরিচয় করিয়ে দেয়। সর্বোপরি নেপালের টিনএজাররা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি ও আধুনিক সমাজের রীতিনীতি দ্বারা প্রভাবিত। তবে আস্তে আস্তে হলেও নেপালি সমাজে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে, যা টিনএজারদের হাত ধরেই আসছে।

জাহ্নবী