![অনিয়মের ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বরখাস্ত, এলাকায় মিষ্টি বিতরণ](uploads/2024/05/19/Narsingdi-Teacher-Suspend-M-1716088519.jpg)
নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অডিও ভাইরালসহ নানা অনিয়মের ঘটনায় নরসিংদীর পলাশের ইছাখালী ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ ক ম রেজাউল করিমকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ মে) নরসিংদী জেলা প্রশাসনের চিঠির প্রেক্ষিতে মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের মিটিংয়ের সিদ্ধান্তে তাকে বরখাস্ত করা হয়। সেই সঙ্গে বিতর্কিত পরীক্ষায় যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের নিয়োগ স্থগিত করা হয়।
পদমর্যাদার ভিত্তিতে মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল আমজাদ হোসেনকে নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন মাদ্রাসার সভাপতি ও ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র আল-মুজাহিদ হোসেন তুষার। তিনি বলেন, আগের সভাপতি পদত্যাগ করায় এতদিন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসনের চিঠির আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে আজকের সভায় অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের চিঠির আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করায় ইছাখালী ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিসহ সব সদস্যের প্রতি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সচেতন মহল সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। বরখাস্তের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতা এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন।
এর আগে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি অধ্যক্ষ আ ক ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে তৎকালীন সভাপতি সরকার কাউছার আহম্মদকে জেলা প্রশাসন নরসিংদী থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। চিঠিতে অধ্যক্ষ আ ক ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসদাচরণ করার দায়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
তবে সভাপতি সরকার কাউসার আহমেদ পদত্যাগ করায় গত ১২ মে নতুন সভাপতি আল-মুজাহিদ হোসেন তুষারকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন নরসিংদী থেকে আরও একটি চিঠি ইস্যু করা হয়।
উল্লেখ, গত ১৪ ডিসেম্বর তিনটি শূন্য পদের বিপরীতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে ইবতেদায়ী শাখার প্রধান, কম্পিউটার অপারেটর ও ল্যাব সহকারী পদের জন্য আবেদন চাওয়া হয়। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিকেলে কম্পিউটার অপারেটর পদে পলাশ উপজেলার তানভীর আহমেদ ও ল্যাব সহকারী পদে শিবপুর সাধারচর এলাকার ইতি আক্তারকে নির্বাচিত করা হয়।
এরপর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্য আবেদনকারীর সঙ্গে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের প্রশ্ন ফাঁস সংক্রান্ত কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
মাদ্রাসার সাবেক সহকারী শিক্ষক মো. অলিউল্লাহর উদ্যোগে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। মাদ্রাসা সংলগ্ন তালতলি বাজারে এ মিষ্টি বিতরণ করা হয়। অলিউল্লাহ মাওলানা খবরের কাগজকে বলেন বলেন, ‘এই দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের কারণে শিক্ষক সমাজ কুলশিত হয়েছে। আমি এই মাদ্রাসায় ১৯৭৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছি। মাদ্রাসায় চাকরিতে থাকাকালীন এই অধ্যক্ষের অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। আজ সে তার পাপের ফল পেয়েছে। সে বরখাস্ত হওয়ায় আমরা মিষ্টি বিতরণ করেছি।’