ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

খুলনায় রোগ নির্ণয়ে কমিশন বাণিজ্য, দুর্ভোগে রোগীরা

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:২১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:২১ এএম
খুলনায় রোগ নির্ণয়ে কমিশন বাণিজ্য, দুর্ভোগে রোগীরা
খুলনা নগরের ডক্টরস পয়েন্ট নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগী ও তাদের স্বজনরা অপেক্ষা করছেন/ খবরের কাগজ

খুলনায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মধ্যবয়সী সিরাজুল ইসলাম। কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই রাতের খাবারের পর তার গলা দিয়ে রক্ত আসে। ভয় পেয়ে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে নাক, কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসকের কাছে যান। প্রাথমিক পরীক্ষার পর চিকিৎসক তাকে বেসরকারি একটি ক্লিনিক থেকে কয়েকটি টেস্ট করিয়ে আনতে বলেন।

তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে তার কাছে ১১ হাজার ৭০০ টাকা চাওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি বেশি টাকা নিচ্ছে কি না যাচাই করতে তিনি যান নগরের সন্ধানী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে একই পরীক্ষা করার জন্য চাওয়া হয় ৯ হাজার ৫০০ টাকা। সেখান থেকে পরীক্ষা করানোর পর পরিচিত এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, তার রোগ চিহ্নিত করার জন্য এর মধ্যে অর্ধেক পরীক্ষারই প্রয়োজন ছিল না!  

একই পরীক্ষার ফি দুই ক্লিনিকে ভিন্ন হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ক্লিনিক সংশ্লিষ্টরা তাকে জানান, এই টাকার মধ্যে ক্লিনিকের অংশ, চিকিৎসকের কমিশন, সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনার জন্য প্যাথলজি কর্মীদের কমিশনসহ আরও নানা বিষয় থাকে। ফলে প্রকৃত পরীক্ষার ফির থেকেও কয়েকগুণ বেশি গুনতে হয়। 

খুলনায় এভাবে খোলামেলা কমিশন বাণিজ্যের কারণে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, পরামর্শ অনুযায়ী ব্যক্তি মালিকানাধীন প্যাথলজি থেকে টেস্ট না করালে অনেক সময় চিকিৎসকরা রিপোর্টই দেখতে চান না। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের চেম্বারের বাইরে বড় বড় করে লেখা থাকে, ‘এখানে বাইরের রিপোর্ট দেখা হয় না।’

নগরীর নবপল্লী এলাকার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে তাকে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পর রক্ত ও ইউরিনের তিনটি টেস্ট দিয়ে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে পরীক্ষা করানোর সামর্থ্য না থাকায় সরকারি হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করে রিপোর্ট নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকের রুমের ভেতর থেকে রেজা নামে এক কর্মচারী জানান, বাইরে থেকে করানো রিপোর্ট ডাক্তার দেখবেন না। খুলনা সিটি মেডিকেল হাসপাতালে চতুর্থ তলায় বহির্বিভাগে ডা. ফৌজিয়া বেগম ও ডা. মো. ইনামুল কবীরের চেম্বারের বাইরের দেওয়ালে ‘এখানে বাইরের রিপোর্ট দেখা হয় না’ লিখে নোটিশ টানানো হয়েছে।

কমিশনের টাকা চিকিৎসকের পকেটে

খুলনার একটি হাসপাতালে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন স্কুলশিক্ষক জাকিরুল ইসলাম। হাসপাতাল থেকে রোগ নির্ণয়ে আরবিএস, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, এসজিপিটি টেস্ট, এক্স-রে, হোল এভডোমিন, ইসিজি, লিপিড প্রোফাইল, ইউরিন ও ব্লাড গ্রুপিং পরীক্ষা দেওয়া হয়। চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশন নিয়ে তিনি ওই পরীক্ষাগুলো করানোর জন্য নগরীর কেডিএ অ্যাভিনিউতে বেসরকারি ডক্টরস পয়েন্ট ক্লিনিকে গেলে পরীক্ষা বাবদ চাওয়া হয় ৬ হাজার ৬০০ টাকা। একই পরীক্ষা করাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাওয়া হয় ৫ হাজার ৫৫০ টাকা, সন্ধানী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৭ হাজার ২০০ টাকা ও বেস্ট কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৭ হাজার ৫০০ টাকা।

বিভিন্ন ক্লিনিক ঘুরে পরিচিত একজনের মাধ্যমে তিনি আবারও ডক্টরস পয়েন্টে গেলে কোনো চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া তারা প্যাকেজ মূল্যে ওই পরীক্ষাগুলো মাত্র ৩ হাজার ৫০০ টাকায় করে দিতে রাজি হয়। 
  
জাকিরুল ইসলাম জানান, তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন- প্রেসক্রিপশন বা চিরকুট (শর্ট স্লিপ) দেখে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ওই চিকিৎসকের জন্য নির্দিষ্ট কমিশন রোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত নেওয়া হয়। সপ্তাহ শেষে কমিশনের টাকা চিকিৎসকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার চিকিৎসককে কমিশন না দিলে সেখানে আর রোগী পাঠানো হয় না। চিকিৎসকরাও ওই প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট দেখতে চান না। আবার অনেক সময় রোগী পাঠানোর জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পক্ষ থেকে চিকিৎসককে অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া যে ক্লিনিকে বসে চিকিৎসক রোগী দেখেন সেখানেও চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়ার জন্য চুক্তি থাকে; যেন ওই ক্লিনিক লাভবান হতে পারে। 

স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এভাবেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে সাধারণ রোগীরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হুসাইন শাফায়েত বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করানোর জন্য পরামর্শ দেই। কিন্তু শক্ত সিন্ডিকেটের মুখে অনেক সময় অসহায় হতে হয়।’

স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসীনতা

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে কেন্দ্র করে এর আশপাশে গড়ে উঠেছে শতাধিক বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই দালালদের মাধ্যমে রোগীদের প্রলোভন দেখিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে চলছে টেস্ট বাণিজ্য। সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে কমিশন পাচ্ছে দালালচক্র। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন প্যাথলজি বিভাগ, ডিপ্লোমাধারী প্যাথলজিস্ট নেই। ফলে তাদের পরীক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, খুলনা নগরীতে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ২৫০টি। মাঝে মধ্যে দালালচক্রের বিরুদ্ধে হাসপাতাল-ক্লিনিকে অভিযান চালানো হলেও তা বন্ধ হয়নি। 

খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী প্যাথলজি বিভাগ চালু করতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিপ্লোমাধারী প্যাথলজিস্ট ও একজন সুইপার রাখতে হবে। আর মাইক্রোস্কোপ, ফ্রিজ, মেডিকেল যন্ত্রপাতি, অপারেশন থিয়েটার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অথচ অধিকাংশ ক্লিনিকে তা নেই।’

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) খুলনা জেলার সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, ‘সরকারি ভবন, স্থাপনা, যন্ত্রপাতি ও লোকবল ব্যবহার করে বেসরকারি ক্লিনিকগুলো প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কমিশন বাণিজ্য করছে।’ তবে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা জেলার সভাপতি ডা. বাহারুল আলম জানান, যারা কমিশন বাণিজ্যে জড়িত তারা অবশ্যই অন্যায় করছেন। তবে সরকারি হাসপাতালে প্যাথলজি সুযোগ বাড়াতে হবে। সেখানে জনবল, টেকনোলজিস্টের ঘাটতি রয়েছে। সরকারি হাসপাতালের প্যাথলজি সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে অনিয়ম বন্ধ হবে।

দিনাজপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৬

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৯ পিএম
দিনাজপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৬
ছবি : খবরের কাগজ

দিনাজপুরে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৬ জন। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) ভোর ৬টায় সদরের ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পাঁচবাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁওগামী নাবিল পরিবহনের একটি বাস পাঁচবাড়ী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রাকের চালক ও বাসের সহকারী নিহত হন।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে এক শিশুসহ আরও চারজন মারা যান। 

এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক জিল্লুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের মধ্যে ঘটনাস্থলে দুইজন এবং হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে চারজন মারা যান। আর আহতদের মধ্যে দুইজন আইসিইউতে এবং তিনজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিন্না আল মামুন খবরের কাগজকে জানান, বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। 

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ জানান, তিনি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল এবং আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন। নিহত ও আহতদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

এএসএম আলমগীর/জোবাইদা/

গাইবান্ধায় ২৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি, বিশুদ্ধ পানির সংকট

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম
গাইবান্ধায় ২৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি, বিশুদ্ধ পানির সংকট
ছবি : খবরের কাগজ

গাইবান্ধায় করতোয়া, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়েই চলেছে। দুইদিন ধরে ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ওপরে। অবিরাম বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অবনতি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতির। ২৮ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তারা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন। বিশেষ করে দুর্গম চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী এলাকার পরিস্থিতি আরও বেশি করুণ।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, জেলার চার উপজেলায় ২৭টি ইউনিয়নে বন্যার্ত পরিবারের সংখ্যা ২৮ হাজারেও বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিতরণের জন্য ৪০০ মেট্রিক টন (জিআর) চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা মজুত রয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার ৫০টি শুকনো খাবারের প্যাকেট ও ১৬৫ মেট্রিক টন চাল চার উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে। 

অন্যদিকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ফুলছড়ি উপজলোর গুপ্তমনি চর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তার ঘরের ভেতর তিন থেকে চার ফুট পানি। নলকূপ ও শৌচাগার ডুবে গেছে । পানিতে ভেসে গেছে হাঁস-মুরগি। গরু-ছাগল নিয়ে মহাবিপদের মধ্যে আছেন। বুধবার সকাল থেকে বৃস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তারা শুকনো খাবার খেয়ে আছেন। বৃষ্টির মধ্যেই নৌকা নিয়ে বালাসিঘাট এলাকায় বাজারে শুকনো খাবার ও পানি কিনতে এসেছেন।

একই গ্রামের সাজু মিয়া জানান, শুধু তারা নয়, তাদের মতো অনেক পরিবার পানিবন্দি। তারা সামান্য খাবার খেয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারছেন না বাড়ি-ঘরে আসবাবপত্র রেখে। এ মুহূর্তে তাদের শুকনো খাবার ও পানি খুবই দরকার।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, নদ-নদীর পানি বাড়লেও আপাতত বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ার কারণ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল। এ পানি ঘাঘট নদীতে প্রবেশ করেছে। একই কারণে করতোয়ার পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে বৃষ্টির কারণে বাঁধের বিভিন্ন এলাকায় রেইনকাট হয়েছে। সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল জানান, ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌকা, স্পিডবোট প্রস্তুত রয়েছে। জেলা ও উপজেলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। ইউনিয়নভিত্তিক বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম, কৃষি টিম, স্বেচ্ছাসেবক টিম এবং লাইভস্টোক টিম গঠন করা হয়েছে।

রফিক খন্দকার/জোবাইদা/

মাদারীপুরে ৭২ লাখ চারা রোপণ ও বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:২৬ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
মাদারীপুরে ৭২ লাখ চারা রোপণ ও বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন
ছবি: খবরের কাগজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশে ৩০ কোটি গাছ রোপণ করার উদ্দেশ্যে মাদারীপুরে ৭২ লাখ বনজ ও ফলদ গাছের চারা রোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে গ্রামীণ ব্যাংক মাদারীপুর জোনের উদ্যোগে মস্তফাপুর গ্রামীণ ব্যাংকের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন তিন জেলার (মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ) জোনাল প্রধান। 
এ সময় মাদারীপুর জোনাল ম্যানেজার আ. মান্নান বলেন, ‘আমরা এক একজনকে ৫-৬টি করে গাছের চারা বিতরণ করেছি। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭২ লাখ চারা বিতরণসহ রোপণ করব। গাছ হলো পরম বন্ধু। আশা করছি আমাদের গ্রামীণ ব্যাংকের যে লক্ষ্যমাত্রা, আমরা তা পূরণ করতে পারব।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এরিয়া ম্যানেজার আ. রহিম, শাখা ব্যবস্থাপক দীপক কুমারসহ শাখার কর্মকর্তারা। 

রফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/

মেঘনায় নৌকাডুবি : ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার, বোন এখনো নিখোঁজ

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
মেঘনায় নৌকাডুবি : ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার, বোন এখনো নিখোঁজ
ছবি: খবরের কাগজ

নরসিংদীর মাধবদীতে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সময় মেঘনা নদীতে নৌকা ডুবে দুই ভাই-বোন নিখোঁজ হয়। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। তবে বোন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে পাইকারচর ইউনিয়নের ভাটিরচর গ্রামের বেড়িবাঁধের পাশ থেকে মো. আব্দুল্লাহর (১২) মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে জান্নাতুল ফেরদৌস (১৪) এখনো নিখোঁজ রয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, দুই-তিনদিন ধরে বৈরী আবহাওয়ায় মেঘনা নদী উত্তাল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর একটি ইঞ্জিনচালিত ছোট নৌকা ডুবে যায়। পরে নৌ-পুলিশসহ স্থানীয়রা চারজনকে উদ্ধার করেন। 

আব্দুল্লাহ ও জান্নাতুল নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলাগাছিয়া গ্রামের এমতাজ উদ্দিনের সন্তান। তারা নরসিংদীর মাধবদী পৌর শহরের টাটাপাড়া মহল্লায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য মেঘনা ঘাট থেকে নৌকায় ওঠেন তারা। তবে নৌকা ছাড়ার আগে তেমন বাতাস ছিল না। ঘাট থেকে একটু দূরে গেলেই বাতাস আর ঢেউয়ের কবলে পরে নৌকা ডুবে যায়। সঙ্গে সঙ্গে নৌ-পুলিশ ও স্থানীয়রা এমতাজ উদ্দিন, তার স্ত্রী দিলারা বেগম, আব্দুল মতিন ও রুহুলকে উদ্ধার করেন। তবে আব্দুল্লাহ ও জান্নাতুল নিখোঁজ হয়ে যায়।

মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভঙ্গারচর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক অনিমেশ হলধর। 

শাওন খন্দকার/ইসরাত চৈতী/ 

সাতক্ষীরায় কৃষকলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:১১ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:১১ পিএম
সাতক্ষীরায় কৃষকলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
নিহত আবুল কাশেম। ছবি: খবরের কাগজ

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মাছের ঘের নিয়ে বিরোধের জেরে আবুল কাশেম নামে এক কৃষকলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) ভোরে উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের খোলপেটুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কাশেম ওই এলাকার মৃত নেছার কাগুজির ছেলে। তিনি গাবুরা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি ছিলেন।

নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, ৩০ বিঘা মাছের ঘের নিয়ে আবুল কাশেম ও লোকমান গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার রাতে কাশেম তার স্ত্রীকে নিয়ে মাছের ঘেরে ছিলেন। এ সময় লোকমান বাহিনীর সদস্য শরিফুলসহ ৭-৮ জন অতর্কিত হামলা চালিয়ে কাশেম আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে।

শ্যামনগর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘আবুল কাশেম দলের নিবেদিত নেতা ও তার প্রতিবেশী ছিলেন।’ এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘেরসংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি।’ 

এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

নাজমুল শাহাদাৎ/সাদিয়া নাহার/