![বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ](uploads/2024/03/16/1710611559.father of nation kk.jpg)
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন আজ। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় তার জন্ম। অজপাড়া গাঁয়ে জন্ম নেওয়া এ মানুষটিই পরবর্তীতে বাঙালির হাজার বছরের শৃঙ্খল মুক্তির নায়ক হয়ে ওঠেন।
বাবা শেখ লুৎফর রহমান এবং মা সায়েরা খাতুনের চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়। ছোটবেলায় তিনি খোকা নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি টুঙ্গিপাড়ার চিরায়ত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আবেগ-অনুভূতি শিশুকাল থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেন। কিশোর বয়সেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
বাঙালিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধারাবাহিক সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে ধারাবাহিক নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধু উপাধি পান। তিনি ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪- এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২- এর শিক্ষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৬৬- এর ছয়-দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমান। তার নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকরা আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। এমন পরিস্থিতিতে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা করলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ সেই ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপরে হামলা শুরু করে। সেদিন হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন দেশ প্রতিষ্ঠা হয়। বঙ্গবন্ধু জাতিকে যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন তা ব্যর্থ করতে সদ্য স্বাধীন দেশেই ষড়যন্ত্রকারীরা নানা তৎপরতা শুরু করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল বিপথগামী সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।
নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন করবে। জাতির জনকের জন্মদিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হবে।
দিবসটিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আজ সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আ.লীগের কর্মসূচি
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। আজ সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারাদেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন হবে। সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় নেতারা টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। একইসঙ্গে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং শিশু সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন তারা।
এদিকে জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে আগামীকাল সোমবার সকালে তেজগাঁওস্থ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভবনে দলের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।