![আম রপ্তানি করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হয়েছে : শাহরিয়ার আলম](uploads/2024/05/27/Shariar_Alam-1716826035.jpg)
বাংলাদেশের মতো সুস্বাদু আম বিশ্বে কোথাও নেই উল্লেখ করে রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘গত চার থেকে পাঁচ বছরে বিদেশে যে আম রপ্তানি হয়েছে, তা থেকে লাভ হয়নি। তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে গেলে পুরান ঢাকার শ্যামপুরে অবস্থিত সেন্ট্রাল প্যাকিং হাউস থেকে মোড়কজাতকরণ বাধ্যতামূলক। তবে এখান থেকে ফাইটোস্যানিটারি সনদ (পিসি) নিয়ে প্রান্তিক জেলার আম রপ্তানি খুবই কঠিন। তাই আমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য রপ্তানির জন্য অঞ্চলভিত্তিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার গড়ে তুলতে হবে।’
সোমবার (২৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশে আম উৎপাদন সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক জাতীয় আম সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম, ঢাকা (সিজেএফডি) আয়োজিত এ সেমিনারে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো কেমিক্যাল ম্যানুফাকচারাস অ্যাসোসিয়েশন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিজেএফডির সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন। অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ প্রধান অতিথি থাকার কথা থাকলেও বিশেষ কারণে উপস্থিত ছিলেন না।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মু. জিয়াউর রহমান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো কেমিক্যাল ম্যানুফাকচারাস অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো গোলাম রব্বানী। মুখ্য আলোচক ছিলেন আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুখলেসুর রহমান। সংগঠনের সাধারণ সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সবুজের সঞ্চালনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষি ও ব্যবসায়ী মুনজের আলম মানিকসহ অন্য আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
মু. জিয়াউর রহমান এমপি বলেন, ‘আমাদের দেশের এখনো সনাতন পদ্ধতিতে আম চাষ হয়। বিশেষ করে আমগাছ থেকে নামানো ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে চাষিদের তেমন প্রশিক্ষণ নেই। আগামীতে আমের টেকসই উন্নয়নে এসব ক্ষেত্রে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।’
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান, ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, ‘জিএপি (গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসেস) স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে আম চাষের জন্য একটি গাইডলাইন করে দেবে সরকার। এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত আম বিশ্ববাজারে নিরাপদ খাদ্য হিসেবে সহজেই রপ্তানি সম্ভব।’
বাংলাদেশ অ্যাগ্রো কেমিক্যাল ম্যানুফাকচারাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রোগ-বালাই দূর করতে গিয়ে ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থসমৃদ্ধ মানহীন কীটনাশক ব্যবহার আমের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। বাংলাদেশে এখনো অনেক মানহীন ক্ষতিকর কীটনাশক আমদানি ও ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া রয়েছে। এসব কীটনাশক ব্যবহারের ফলে আমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য কতটুকু বিষাক্ত হচ্ছে তাও পরিমাপের কোনো উপায় নেই। তাই আন্তর্জাতিক বিশ্ব আমকে নিরাপদ খাদ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। বিদেশিরা বাংলাদেশের আম পছন্দ করলেও আমদানি করতে ভয় পান। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যেটুকু আম রপ্তানি হয়, তা বাংলাদেশি প্রবাসীরাই খেয়ে থাকেন। তাই এ কীটনাশক ব্যবস্থাপনায় সরকারের আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতি, ঢাকার সভাপতি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশেই প্রক্রিয়াজাত আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ঢাকার অনেক সুপারমলে থাইল্যান্ডের প্রক্রিয়াজাত আমপণ্য পাওয়া যায়, এগুলোর দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই আম উদ্যোক্তাদের সনাতন পদ্ধতি থেকে বের হয়ে বাজারজাত করার ক্ষেত্রে আরও প্রযুক্তি নির্ভর হতে হবে।’