ঢাকা ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

আবুল মিয়া এবং দৈত্য চিনি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম
আবুল মিয়া এবং দৈত্য চিনি

আবুল মিয়া যখন বাজার থেকে রওনা হলেন, তখন রাত ১১টা বেজে গেছে। বাজারে তার মিষ্টির দোকান আছে। প্রতিদিন ১০টার মধ্যে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরেন, কিন্তু আজ কাস্টমারের চাপ বেশি থাকায় দেরি হয়ে গেছে।

অন্য দিনের মতো আজও রাস্তার বাতিগুলো বন্ধ। টর্চ লাইটটা না থাকলে ভারি বিপদে পড়তে হতো। তবু ধীরে ধীরে একসময় বাড়ির কাছাকাছি চলে এলেন। হঠাৎ আবুল মিয়া খেয়াল করে দেখেন, রাস্তার পাশে একটা বোতল পড়ে আছে। কী মনে করে সেটিতে লাথি মারতেই এক আজব ঘটনা ঘটল। সেটির মধ্য থেকে শোঁ শোঁ শব্দে ধোঁয়া বের হতে লাগল। তা দেখে আবুল মিয়া দিলেন দৌড়। পাশের বড় আমগাছের গোড়ায় মুহূর্তেই লুকিয়ে পড়লেন। দেখতে লাগলেন কী হয়। একসময় সেই ধোঁয়া বিরাট এক দৈত্যে রূপ নিল। তারপর সেই দৈত্য কয়েকবার এদিক-ওদিক তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলল, ‘কে আমাকে বোতলের মধ্য থেকে বের করল রে?’

আবুল মিয়া এতক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধের মতো সব দেখছিলেন। হঠাৎ তার মনে হলো, এটা প্রদীপের দৈত্য ছাড়া কেউ না। সে পৃথিবীর বহু মানুষের ইচ্ছা পূরণ করেছে। তার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকার কিছু নেই। তার সামনে গেলে সে-ও আমার ইচ্ছা পূরণ করবে।

অগত্যা গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে আবুল মিয়া এক দৌড়ে দৈত্যের কাছে এসে বললেন, ‘ভাই সাহেব, আপনার নাম মনে হয় জিনি? আমি আপনার কথা অনেক শুনেছি। আপনি নাকি সবার ইচ্ছা পূরণ করে থাকেন? আমারও ইচ্ছা পূরণ করেন না!’

আবুল মিয়ার আবদার শুনে দৈত্য কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ‘দেখুন মহোদয়, আমার নাম জিনি না। আপনি যার কথা বলছেন, তিনি আমার নানা। আজ থেকে আড়াই শ বছর আগে এক ভদ্রলোকের আবদার পালন করতে গিয়ে খনি দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।’

আবুল মিয়া অবাক। তিনি বললেন, ‘আমি আপনার কথা বুঝলাম না।’

দৈত্য বলল, ‘এক ভদ্রলোক জিনি নানার কাছে দুই শ মণ সোনা চেয়ে বসলেন। নানা তার জন্য সোনা আনতে চীনের এক সোনার খনিতে ঢুকতেই দুর্ঘটনা। সেই দুর্ঘটনায় মাটিচাপা পড়ে আমার নানা নিহত হন।’

দৈত্যের মুখ থেকে জিনির কথা শুনে আবুল মিয়ার মনটাই ভেঙে গেল। তিনি বললেন, ‘তাহলে আপনি কে?’ 
দৈত্য বলল, ‘বললাম তো, আমি জিনি দৈত্যের ছেলের ঘরের নাতি। আমার নাম চিনি।’

আবুল মিয়া বললেন, ‘তাহলে আপনি অন্তত একটা ইচ্ছা পূরণ করেন। আপনার নানা পারলে আপনি পারবেন না কেন? আমার ইচ্ছা, গুলশানে ছয় কাঠা জমির ওপর একটা ডুপ্লেক্স বাড়ি।’

আবুল মিয়ার কথা শুনে চিনি দৈত্য বলল, ‘আমার যদি বাড়ি দেওয়ার ক্ষমতা থাকত, তাহলে আমি কি এই বোতলে বাস করি? আমি নিজেই তো একটা বাড়িতে থাকতাম। সত্যি কথা কী, আমার নানা লোকজনকে এত কিছু দিয়েছে যে নিজের নাতিদের জন্য কিছুই রাখেনি। সে কারণে আমার আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। তিন দিন ধরে এই বোতলের মধ্যে না খেয়ে বসে আছি। আপনি যদি দয়া করে আমাকে এক বেলা নাশতা করান, তাহলে খুব উপকার হয়।’

চিনির কথা শুনে আবুল মিয়া থ। বাড়ি পাবে কী, উল্টো দৈত্যকে ফ্রি খানা খাওয়াতে হচ্ছে। তিনি চিনিকে বললেন, ‘আচ্ছা আচ্ছা, আর বলতে হবে না। আপনার নানা এত ভালো দৈত্য ছিলেন। এত মানুষের উপকার করেছেন। তার নাতিকে এক বেলা খাওয়াতে পারাটা আমার সৌভাগ্য। চলেন আমার বাসায়। কাঁচকলা দিয়ে শিং মাছের তরকারি আছে। একসঙ্গে খাব।’

অগত্যা চিনি দৈত্য তার বোতলের মধ্যে ঢুকে পড়ল। সেই বোতল হাতে নিয়ে আবুল মিয়া বাড়ির দিকে রওনা হলেন।

বাড়ি পৌঁছে বউকে সব খুলে বলার পর তিনি প্রথমে ভয় পেলেও পরে চিনির সঙ্গে মানিয়ে নিলেন। ভরপেট খানা খেয়ে আবুল মিয়া যখন ঘুমাতে যাবেন, তখন চিনি দৈত্য এসে বলল, ‘আবুল ভাই, বলছিলাম কী, আমি আরও একটা সমস্যায় পড়েছি। আপনি যদি সমস্যাটা একটু শুনতেন!’

আবুল মিয়া বিরক্ত হয়ে বিছানা থেকে নেমে বললেন, ‘আবার কী হলো?’

চিনি বলল, ‘হয়েছে কী, আমার গার্লফ্রেন্ড মিডলইস্টে থাকে, মানে দুবাই আর কি। আমি সেখানে যাব যাব করছিলাম, কিন্তু ভিসা-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে যেতে পারছি না। এদিকে ওর সঙ্গে সাত মাস ধরে কথাবার্তাও হচ্ছে না।’

আবুল মিয়া বললেন, ‘কথা হবে না কেন? একটা মোবাইল কিনে নিলেই পারেন।’

চিনি দৈত্য বলল, ‘সেটাই তো সমস্যা। মোবাইল কেনার মতো পর্যাপ্ত টাকা আমার হাতে নেই। তার ওপর বায়োমেট্রিক নিবন্ধন না থাকলে মোবাইলের সিম কেনা যায় না। আমার তো তা-ও নেই।’

আবুল মিয়া বললেন, ‘দেখেন চিনি ভাই, আপনাকে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত টাকা আমার হাতে নেই। আমি গরিব মানুষ। বাজারে হোটেল চালাই। আমার কাছে কি মোবাইল কিনে দেওয়ার মতো টাকা থাকে, বলেন?’

চিনি দৈত্য বলল, ‘আবুল ভাই, আপনাকে টাকা দিতে হবে না। আপনি যদি আপনার দোকানে আমাকে একটা কাজ দেন, তাহলে এক মাসের বেতন দিয়ে আমি একটা মোবাইল কিনে ফেলতে পারব।’

আবুল মিয়া বললেন, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে। এমনিতে আমার দোকানে একজন লোকের দরকার। আপনি থাকলে লোকজন আপনাকে দেখার জন্য হলেও আমার দোকানে আসবে। চা-মিষ্টি খাবে। ঠিক আছে, কাল থেকে আমার দোকানে লেগে যান। হাজার হোক, জিনি দৈত্যের নাতির উপকার করতে পারার মধ্যেও শান্তি আছে।’

কলি

ব্যাংকে একদিন

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:৩০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:৩০ পিএম
ব্যাংকে একদিন

পরান বাবু একটা চেক নিয়ে ব্যাংকে গেলেন জমা করার জন্য। 
পরান বাবু: স্যার, আমার এই চেকটা ক্লিয়ারেন্স হতে কতদিন লাগবে?

ব্যাংক ম্যানেজার: দুই দিনের মতো লাগবে।

পরান বাবু: স্যার, ব্যাংক দুটো তো খুব কাছাকাছি। রাস্তার এপার আর ওপার। তাহলে এত সময় লাগবে কেন?

ব্যাংক ম্যানেজার: কিছু প্রসেস থাকে, সেই জন্য একটু সময় লাগে।

পরান বাবু: ঠিক বুঝলাম না, এত কাছাকাছি ব্যাংক হওয়া সত্ত্বেও...

ব্যাংক ম্যানেজার: বুঝলেন না? তাহলে শোনেন, ধরেন মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্টে আপনি শ্মশানের কাছে মারা গেলেন। তাহলে কি লোকজন আপনাকে সঙ্গে সঙ্গে জ্বালিয়ে দেবে? নাকি প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে যাবে, মারা গেছেন কি না তা পরীক্ষা করে দেখবে, পুলিশ রিপোর্ট হবে, পোস্টমর্টেম হবে, আপনার বডি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে, কান্নাকাটি হবে তারপর শ্মশানে আনা হবে, তাই না?

পরান বাবু: স্যার, যে ভয়ানক উদাহরণ দিয়েছেন, আমি সাত দিনেও টাকা নিতে আসমু না। ধীরে-সুস্থে প্রসেস সারেন। কালেকশন হলে একটা কল দিয়েন, তারপর পারলে টাকা নিয়া যামু। খাইছে! এত ভয়ানক উদাহরণ জীবনেও শুনি নাই।

 কলি 

হতাশা কাটানোর উপায়

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:২৬ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:২৬ পিএম
হতাশা কাটানোর উপায়

ঢাকা শহরের মানুষ এশিয়ায় সবচেয়ে হতাশাগ্রস্ত। এই হতাশা কাটাবার মোক্ষম উপায় জানাচ্ছেন নিশু ইসলাম

ঢাকার নাম পাল্টে সিঙ্গাপুর কিংবা দুবাই রাখতে হবে। ঢাকাবাসী যখন বুঝতে পারবে তারা এখন ঢাকা নয়, সিঙ্গাপুর বা দুবাইয়ের বাসিন্দা 
তখন অটোমেটিক তাদের হতাশা কেটে যাবে।

হতাশার ওপর ট্যাক্স আরোপ করা যেতে পারে। যে হতাশ হবে তাকে এক হাজার টাকা করে ট্যাক্স দিতে হবে- এমন ঘোষণা দিলে হতাশ হওয়ার আগে ঢাকাবাসী একবার হলেও চিন্তা করবে।

যে প্রতিষ্ঠান জরিপ করে ঢাকাবাসীকে সবচেয়ে হতাশ বলেছে, তাদের ঘুষ দিয়ে জরিপের ফলাফল ঘুরিয়ে দিতে হবে। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করলে ঢাকাবাসীকে কেউ আর ‘সবচেয়ে হতাশ’ বলতে পারবে না।

‘হতাশা’কে বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যেতে পারে। যাদের মধ্যে হতাশা নেই, তাদের কাছে হতাশা রপ্তানি করার মাধ্যমে ঢাকাবাসী টাকা ইনকাম করলে অচিরেই তাদের হতাশা কেটে যাবে।

 কলি

 

এক রাতে আমি ও রবীন্দ্রনাথ

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ পিএম
এক রাতে আমি ও রবীন্দ্রনাথ

রাত ১টা। কুষ্টিয়া শহর। মীর মোশাররফ হোসেন রোড ধরে জনসেবা মোড়ের দিকে এগোচ্ছি। ল্যাম্পপোস্টের আলোয় চিরচেনা রাস্তাটাও কেমন রহস্যময় মনে হচ্ছে। জনমানব নেই বললেই চলে। শুধু দু-একটি বেওয়ারিশ কুকুর রাস্তায় এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করছে।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের গেটের সামনে আসতেই আবছা আলোতে দেখতে পেলাম হাতে জলন্ত সিগারেট নিয়ে কে যেন দাঁড়িয়ে আছে। ভাবলাম হলের কোনো ছেলেটেলে হবে হয়তো। সামনের দিকে খানিকটা এগোতেই পেছন থেকে গম্ভীর ভরাট কণ্ঠের ডাক শুনতে পেলাম, কে যায়? রাকীব নাকি রে?

অপরিচিত কণ্ঠস্বর। কৌতূহলবশত গেটের সামনে এগিয়ে এসেই আমার আক্কেলগুড়ুম। বিস্ময়ে চোখ কোটর হতে বেড়িয়ে আসার জোগাড়। এ আমি কাকে দেখছি! স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। পলিটেকনিকের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। সেই লম্বা চুল, লম্বা দাড়ি। শুধু পরনে ধুতির পরিবর্তে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট, হাতে চুরুটের পরিবর্তে বেনসন অ্যান্ড হেজেস সিগারেটের প্যাকেট, আর গায়ে আলোয়ানের পরিবর্তে স্টাইলিশ টি-শার্ট। টি-শার্টের ওপর লেখা, ‘I am cool’।

আমি বিস্ময়ে খাবি খেতে খেতে কোনোমতো বললাম, গুরুজি আপনার এই অবস্থা কেন?

-কী অবস্থা?

-একেবারে ভোল পাল্টে বসে আছেন।

-হুমম, ওইসব পুরনো পোশাক পরতে আর ভালো লাগে না। তাছাড়া এখন তো আর আগের দিন নেই। ওইসব পরে রাস্তায় বেরোলে লোকে পাগলটাগল ভেবে বসতে পারে।

-তাও ঠিক। তবে আপনার মুখের ভাষা তো চেঞ্জও হয়ে গেছে।

-ওহ সরি, আসলে মেজাজ এত খারাপ যে কিছুই কন্ট্রোল করতে পারছি না।

-যাই হোক, তো আপনি এখানে কেন?

গুরুজি গম্ভীর মুখটা আরও গম্ভীর করে বললেন, একজনকে ছ্যাঁচা দিতে এসেছিলাম।

-কাকে ছ্যাঁচা দেবেন?

-বিশ্বকে

-কোন বিশ্ব?

-কী আশ্চর্য! তুই বিশ্বকে চিনলি না! বিশ্বজিৎ দেবনাথ। তোদের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের।

-ও আচ্ছা, উনি কী করেছেন?

গুরুজি আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললেন, এতসব কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলল ফাজিলটা, আর তুই তো দেখি কিছুই জানিস না। ব্যাটা আমার

গান নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছে। বলে কিনা, ভেঙে মোর ঘরের চাবি না হয়ে ভেঙে মোর ঘরের তালা হবে। কত্তবড় ফাজিল!
আমি চোখ বড় বড় করে বললাম, বলেন কী!

গুরুজি বললেন, দুই পাতা লেখাপড়া শিখে নিজেকে বিরাট বড় পণ্ডিত মনে করে। ব্যাটা তুমি মেকানিক্স, হাইড্রোলিক্স, থার্মোডাইনামিক্স ভালো বুঝতে পার। তুমি গানের কী বোঝো হে!

-ঠিকই তো।

-আজ ধরতে পারলে পণ্ডিতগিরি ছুটিয়ে দিতাম।

-ধরতে পারেননি?

-নাহ, ব্যাটা আমাকে দেখেই রুমের বারান্দা দিয়ে বাথরুমের পাইপ বেয়ে পালিয়েছে। আমার আবার বাতের ব্যথা। দৌড়াতে  পারি না। তাই বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। কোথায় যে গেল, বুঝতেই পারলাম না।

আমি সবগুলো দাঁত বের করে বললাম, হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা সূত্র।

-কী বললি?

-হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা সূত্র। কোনো বস্তুর গতি এবং অবস্থান একসঙ্গে জানা সম্ভব না। বিশ্বজিৎ স্যার, ঝেরে দৌড় দিয়েছেন, তার মানে উনি

এখন গতিশীল বস্তু, উনার অবস্থান এখন জানতে পারবেন না।

-হাইজেনবার্গ কে? জাকারবার্গের নাম শুনেছি, হাইজেনবার্গের নাম তো শুনিনি?

-বলেন কী! বিখ্যাত ফিজিসিস্ট। বিরাট জ্ঞানী ব্যক্তি।

গুরুজি বিরক্ত মুখে বললেন, জ্ঞানী না ছাই, বিরাট গাধা।

-গাধা?

-গাধা না তো কী? গাধা না হলে কেউ এরকম থিওরি দেয়? মহাগাধা। এই যে আমি হাঁটতেছি, তার মানে আমি গতিশীল। আর আমার অবস্থান এখন কুষ্টিয়া পলিটেকনিকের সামনে।

আমি আর তর্ক করার সাহস পেলাম না। হাঠাৎ গুরুজির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বললেন, চল।

-কোথায়?

-হাইজেনবার্গ গাধাটাকে একটা ছ্যাঁচা দিয়ে আসি।

-উনি তো নেই। ইহধামের মায়া ত্যাগ করেছেন।

গুরুজি মনে হয় একটু আশাহত হলেন। হতাশ গলায় বললেন, গাধাটা বেঁচে গেল। নইলে সেপাই পাঠিয়ে ধরে এনে এমন ধোলাই দিতাম। পিঠের ছাল চামড়া তুলে নিতাম। তবে বিশ্বজিৎকে আমি ছাড়ছি না। আমি আবার আসব, তবে এবার আসার সময় তোকেও সঙ্গে আনব। তুই পাইপের নিচে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকবি। পাইপ বেয়ে পালাতে গেলেই হুড়মুড় করে জাপটে ধরবি। কী, পারবি না?

-পারব না কেন, অবশ্যই পারব। চলুন। 

আকাশে পূর্ণচন্দ্র। আমরা দুজনে মনের আনন্দে হেঁটে চলেছি। আজ রাতে একজনকে ছ্যাঁচা দেওয়া হবে।

 কলি 

কেমন লাগে

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:১২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:১২ পিএম
কেমন লাগে

মিসেস জরিনা সকালের নাশতা বানানোর জন্য ফ্রিজ থেকে ডিম নিয়ে রান্না ঘরে ঢুকলেন। একটু পরে কড়াইতে ডিম ছেড়ে যেই না রান্নাঘর থেকে বের হতে যাবেন, তখনই হুড়মুড় করে তার স্বামী রান্নাঘরে ঢুকে পড়লেন। মিসেস জরিনা অবাক। এমনিতে সে কখনো এখানে আসে না। তিনি ভাবলেন কোনো সমস্যা হয়েছে বোধ হয়। সে কারণে জিজ্ঞেস করলেন, কী ব্যাপার, এখানে?

স্বামী বললেন, সাবধান! ডিমভাজা এত সহজ না। সবসময় সতর্ক চোখ রাখতে হয়। চোখ একটু এদিক সেদিক হয়েছে তো ডিম পুড়ে ছারখার। কড়াইতে আরেকটু তেল দাও।

মিসেস জরিনা কিছু একটা বলতে চাইলেন কিন্তু সেটাও পারলেন না। তার আগেই স্বামী প্রবর আবার চেঁচাতে শুরু করলেন, খাইছে আমারে! পেঁয়জ কই? পেঁয়াজ এত কম দিয়েছ কেন? সাবধান, জলদি আরেকটু পেঁয়াজ কেটে ডিমের মধ্যে ছড়িয়ে দাও। আরে বাবা একি অবস্থা! জলদি আরেকটু তেল আনো। সব তেল তো টেনে গেল। এক্ষুনি ডিম পুড়ে কয়লা হলো বলে।

স্বামীর তাড়াহুড়া দেখে মিসেস জরিনা ভড়কে গেলেন। কিচেন কেবিনেট থেকে তেলের বোতল এনে যেই না কড়াইতে ঢালতে যাবেন তখন স্বামী আবার হায় হায় করে উঠলেন, খুব সাবধান। আরে একি, ডিম ভাজার সময় মন কই থাকে? লবণ দেওয়ার কোনো লক্ষণই তো তোমার মধ্যে দেখতে পাচ্ছি না। লবণ না থাকলে ডিমে কোনো স্বাদ হয়। জলদি লবণ দাও। তবে খুব সাবধান। একটুও যেন বেশি না পড়ে। আরে তোমার ধ্যান কোথায়, ডান পাশে দাও, ডান পাশে। সাইডে...আরে সাইডে চাপাও না। সামান্য ডিম ভাজতে জানো না? অবাক কাণ্ড। তোমার হাতে আমাদের সবার সকালের নাশতা নির্ভর করছে সেটা কি মনে আছে?

মিসেস জরিনা এবার আর মুখ বন্ধ রাখতে পারলেন না। তিনি বললেন, রান্নাঘরে এসে এভাবে চিৎকার করছ কেন? তোমার কি ধারণা, আমি সামান্য ডিমটাও ভাজতে জানি না?

এবার স্বামী বাবু একটু নরম হলেন। তিনি বললেন, আমি আসলে বোঝাতে চাইছিলাম যে, তোমাকে নিয়ে গাড়ি চালাতে বসলে আমার আসলে কেমন লাগে।

কলি 

প্রসঙ্গ শেয়ারবাজার

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম
প্রসঙ্গ শেয়ারবাজার

তন্বী: তুই তোর বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে ফেললি কেন?
ফারাহ: কারণ সে একজন শেয়ার ব্যবসায়ী। একদিন আমরা কত সুখী হব- এসব কল্পনা করা ছাড়া সে আর কিছুই করতে পারে না।

দুই বান্ধবী রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল। হঠাৎ রাস্তার ধারে একটি ব্যাঙ বলে উঠল, তোমাদের মধ্যে কেউ একজন কি দয়া করে আমাকে একটা চুমু খাবে? আমি একজন শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ। এক ডাইনির অভিশাপে আমি ব্যাঙ হয়ে গেছি। তোমাদের মধ্যে কেউ আমাকে চুমু খেলে আমি আবার আমার আগের রূপ ফিরে পাব।

কথা শুনে এক বান্ধবী ব্যাঙটা ব্যাগে ভরে নিল।

অন্য বান্ধবী: কী ব্যাপার? শুনলে না, ও কী বলল?

প্রথম বান্ধবী: শুনেছি। এ যুগে একজন শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞের চেয়ে একটা কথা বলা ব্যাঙের দাম অনেক বেশি!

ভদ্রমহিলা: খোকা, তোমার বাবা কী করেন?
শিশু: আমার বাবা একজন মৎস্যশিকারি।
ভদ্রমহিলা: কিন্তু আমি তো শুনেছি, তোমার বাবা একজন শেয়ার ব্রোকার।
শিশু: না, না! আমি যতবার বাবার অফিসে গেছি, দেখেছি, বাবা কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন আর বিগলিত হাসি হেসে বলছেন, স্যার, আরেকটা বড় মাছ ধরেছি!

 প্রথম শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ: বলো তো, কেন পৃথিবীতে শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞের একটি পেশা তৈরি হলো?
দ্বিতীয় শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ: যাতে আবহাওয়াবিদ পেশাটি টিকে থাকে।
প্রথম শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ: কীভাবে?
দ্বিতীয় শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ: আমরা আছি বলেই আবহাওয়াবিদদের ভবিষ্যদ্বাণী তুলনামূলক ভালো হয় বলে লোকজন মনে করে।

অফিসের বড় সাহেব বলছেন কর্মচারীকে, করিম সাহেব, আপনি নাকি অফিসে এসে সারা দিন ইন্টারনেটে শেয়ারবাজারের ওয়েবসাইটে বসে থাকেন?
করিম সাহেব: দুঃখিত স্যার, আমাকে ক্ষমা করুন।
বড় সাহেব: না না। আমি আপনার ওপর খুবই সন্তুষ্ট।
করিম সাহেব: কেন স্যার?
বড় সাহেব : আপনার অন্তত অফিসে এসে ঘুমিয়ে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই!

কলি