ঢাকা ৯ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৪

পিতার কাছে পুত্রের বাজেট পেশ

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:১০ পিএম
পিতার কাছে পুত্রের বাজেট পেশ

মাননীয় আব্বা, আপনারে সালাম জানিয়ে আমার বাজেট অধিবেশন শুরু করছি। আজ আমি আগামী অর্থবছরের জন্য আমার ব্যক্তিগত বাজেট পেশ করব। আমি আশা করছি, আপনি খুশি হয়েই অনুমোদন দেবেন।

প্রথমেই শিক্ষা খাত
আব্বা শিক্ষা হইলো জাতির মেরুদণ্ড। Education Is the... ইয়ে মেরুদণ্ডের ইংলিশটা ভুইল্লা গেসি। সে যাক, দুইটা বছর ধরে আমি সাফল্যের সহিত অত্যন্ত চমৎকার ফলাফল করে আসছি। এখন পর্যন্ত আমি মাত্র ১৮টা কোর্স রিটেক করেছি। যা কিনা আমার বন্ধুমহলের মধ্যে সর্বনিম্ন! সে অনুপাতে আগামী বছর আমার কমপক্ষে আরও ৯টা রিটেক লাগবে। তাই আপনি কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখবেন।

এরপর খাদ্য খাত
আব্বা গো, দুঃখের কথা কী বলব! দুইটা বছর ধরে ভার্সিটিতে প্রতিদিন মাত্র একটা বার্গার আর একটা হটডগ খেয়ে কোনোমতে বাইচ্চা আছি। এত কম খেয়ে পড়ালেখায় মন কীভাবে দিব গো আব্বা? তাই বলছি, আগামী বছরের জন্য প্রতিদিন ভার্সিটিতে আমি যাতে দুইটা বার্গার, একটা পিৎজা, একটা চিকেন সমুচা, একটা হটডগ খেতে পারি সেই ব্যবস্থা রাখবেন। এ ছাড়া দশটা টাকা বাড়তি দিয়েন গো আব্বা। খাওয়ার পরে বকশিশ না দিলে প্রেস্টিজ থাকে না। কী জইন্য এইডা আর কইলাম না! আর বিকেলে এক কাপ কফি আর হালকা নাশতা না খেলে আমার পক্ষে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করা কষ্টকর হবে।

এখন আসি স্বাস্থ্য খাতে
আব্বা, ছয়টা মাস ধরে আমার হার্টের বাম পাশে চিকন চিকন বেদনা। লিজারে যখন দেখি, তখন সেই বেদনা আরও বেড়ে যায়। শুধু তাই না, লিজার কথা চিন্তা করলেও এই ঘটনা ঘটে। আব্বা গো, আমার দিলের মধ্যে কী যে সুনামি তা আপনে বুঝবেন না। কবির ভাষায় ‘ওরে হারাই হারাই সদা হয় ভয়, হারাইয়া ফেলি চকিতে।’ এই ভয় থেকে মুক্তি না পেলে আমার অন্তরের বিষ কমবে না। তাই লিজাকে উপযুক্ত গিফটের মাধ্যমে পটাইয়া যাতে আমি এই দুরারোগ্য ব্যাধি হইতে মুক্তি পাই ...সেই ব্যবস্থা করার দায়িত্ব আপনার হাতে।

ক্রীড়া ও বিনোদন খাত
আব্বা, আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে উল্লেখযোগ্য অর্থ বরাদ্দের অভাবে ক্রীড়া ক্ষেত্রে আমি দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। কয়েক বছর আগে যে রাজিব ‘পোকার’ খেলায় আমার ধারে-কাছেই আইতে পারত না, সেই পুলার কাছে গত সপ্তাহে আমি ৫০০ টাকা বাজি হারছি! এভাবে চলতে থাকলে আমার ও আমার পরিবারের মান-ইজ্জত ধুলায় মিশে যাবে। আপনি মহল্লায় মুখ দেখাতে পারবেন না। রাজিবের এই সাফল্যের রহস্য হইলো, সে সপ্তাহের সাত দিনই ক্লাবে গিয়ে খেলে আর আমি টাকার অভাবে সপ্তাহে মাত্র তিন-চার দিন খেলতে পারি। আপনি ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ বরাদ্দের ব্যবস্থা রাখলে আমি প্রতিদিন খেলে ও প্রশিক্ষণ নিয়ে ওই বড়লোকের সন্তানরে হারিয়ে আপনার ও আমার মহল্লার ইজ্জত রক্ষা করতে পারব।

এখন আসি বিনোদনে
বিনোদনের কথা আর কী কমু। বিনোদনের অভাবে আমার এই জীবন মরুভূমিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে গো আব্বা। সিনেপ্লেক্সে গিয়ে সপ্তাহে একটার বেশি সিনেমা আমি দেখতে পারি না। মাসে ডিভিডি কিনে বড়জোর ১২-১৫টা সিনেমা দেখি। কোনো কোনো মাসে আরও কম। বুঝি আর না বুঝি ইদানীং ইংলিশ ব্যাটাগো মুভি না দেখলে বন্ধুদের কাছে ইজ্জত থাকে না। আমি এই সমস্যার আশু সমাধান কামনা করতেছি।
মাঝে মাঝে আপনার কথা খুব মনে পড়ে। সেই যে ছোটবেলায় আপনি আমাকে পুষ্কুনিতে নামিয়ে গোসল করাতেন। আহ, এইগুলো মনে পড়লে আমার চউক্ষের পানিতেই পুষ্কুনি হয়ে যায়। আমার তখন ইচ্ছা করে পুষ্কুনিতে নেমে গোসল করি। কিন্তু এই ঠাডা পড়া শহরে পুষ্কুনি তো দূরের কথা, বাথরুমের বালতিতেও পানি থাকে না। তাই মাঝে মধ্যে সুইমিং পুলে গিয়ে দুইডা ডুব না দিলে পরাণে শান্তি পাই না গো আব্বা। এ বিষয়েও একটু খেয়াল রাইখবেন।

এরপরে আসি তইথ্য ও পরযুক্তি খাতে
আব্বা দেশ এখন অনেক এগিয়েছে। এখন হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট যুগ। নেট এত স্লো যে, একবার নেটে বসলে, বসতে বসতে কোমরের নিচ অবশ হইয়া যায়। পেজ লোড হইতে হইতে চউক্ষে ঘুম লোড হয়ে যায়। তাই আগামী অর্থবছরে আমার জন্য একটা ৬ এমবিপিএস স্পিডের নেট লাইনের জন্য ৬০০ টেকা বরাদ্দ রাখবেন। না হইলে ফেসবুক পেজ ‘আমরা বড়লোক বাপের গরিব সন্তান’ চালানো কষ্টকর হয়ে পড়বে।

এ ছাড়া ডেস্কটপ কম্পিউটারের কারণে ঘরের বাইরে গেলে আমি বহির্বিশ্বের সঙ্গে এক প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে আমার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আজ হুমকির মুখে। একটা ল্যাপটপ থাকলে আজ আমার এই দশা হতো না। বিষয়টা ভেবে দেখার অনুরোধ রইল।
পরিশেষে, বিগত দিনগুলায় আমি যে দুর্ভোগ-দুর্দশায় ছিলাম, আশা করছি আসছে বছরে এই বাজেট অনুমোদনের মাধ্যমে আমার সেই দুঃখের দিনগুলার অবসান ঘটবে। আপনাকে ধন্যবাদ।

 কলি

চাপাবাজি

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম
চাপাবাজি

অজপাড়াগাঁ থেকে এক ছেলে দিনকয়েকের জন্য কী একটা কাজে লন্ডন এসেছিল। তারপর গ্রামে ফিরে গিয়ে সব কিছুতেই তার শুধু লন্ডনের গল্প আর প্রশংসা। গ্রামের এটার চেয়ে লন্ডনের ওটা ভালো, লন্ডনে এটা-সেটা আছে, এসব বলে বলে বাড়ির সবাইকে এক রকম অতিষ্ঠ করে ফেলেছিল সে। এরই মধ্যে একদিন উঠানে বসে বাবা যখন বললেন, ‘দেখ, আকাশে আজ কী সুন্দর পূর্ণিমার চাঁদ!’

তখন ছেলেটি বলে উঠল, ‘এ আর এমন কী চাঁদ বলো! লন্ডনের চাঁদ এর চেয়ে কত বড় আর সুন্দর!’ 
এবার আর সহ্য হলো না বাবার। তিনি আচ্ছা করে ছেলের কান মলে দিয়ে বললেন, ‘আরে বোকা কোথাকার, এখানকার চাঁদ আর লন্ডনের চাঁদ আলাদা না কি? দুটি তো একই!’

বাবার কানমলা খেয়ে চোখে পানি এসে গেলেও দমবার পাত্র নয় ছেলেটি। সে বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘এ আর এমন কী কানমলা, লন্ডনের কানমলার সে কী জোর!’

 কলি 

কথায় আলুর ব্যবহার

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম
আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩৯ পিএম
কথায় আলুর ব্যবহার

হুমকির ক্ষেত্রে: আজ তোরে মাইরা একদম আলু ভর্তা বানায় দিমু!
ব্যর্থতার ক্ষেত্রে: বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আজ একদম আলু মার্কা খেলা খেলল!
অনুরোধের ক্ষেত্রে: বেশি করে আলু খান, ভাতের ওপর চাপ কমান! 
সতর্কতার ক্ষেত্রে: কীরে তুই তো দিন দিন আলু হয়ে যাচ্ছিস! কম খা বেটা! 
রূপচর্চার ক্ষেত্রে: হায় হায়, তোমার চোখের নিচে তো কালি পড়ে গেছে! আলু বেটে চোখের নিচে লাগাও!
দাম্পত্য কলহের ক্ষেত্রে: তোমার সংসারে এসে আলু ভর্তা খেতে খেতে জীবনটা তামা তামা হয়ে গেল! 
আঘাতের ক্ষেত্রে: ওরে বাপরে, ঠুয়া খাইয়া আমার কপালে আলু গজায়া গেলরে!

 কলি

এটিএম থেকে টাকা উত্তোলনের পার্থক্য

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম
এটিএম থেকে টাকা উত্তোলনের পার্থক্য

ছেলে
১. গাড়ি নিয়ে এটিএম বুথের সামনে আসবেন।
২. গাড়ির জানালার কাচ নামাবেন।
৩. গাড়ির দরজা খুলবেন।
৪. গাড়ি থেকে নামবেন।
৫. এটিএম বুথে ঢুকবেন।
৬. এটিএম মেশিনে কার্ড ঢোকাবেন।
৭. পিন কোড দেবেন।
৮. টাকার অ্যামাউন্ট প্রেস করবেন।
৯. টাকা গ্রহণ করবেন।
১০. এটিএম কার্ড গ্রহণ করবেন।
১১. এটিএম বুথ থেকে বের হবেন।
১২. গাড়ির দরজা খুলবেন।
১৩. গাড়ি চালিয়ে চলে যাবেন।

মেয়ে
১. গাড়ি নিয়ে এটিএম বুথের সামনে আসবেন।
২. গাড়ির জানালার কাচ নামাবেন।
৩. চোখে সানগ্লাস লাগাবেন।
৪. রিয়ার ভিউ মিররে মেকআপ পর্যবেক্ষণ করবেন।
৫. গাড়ির দরজা খুলবেন।
৬. গাড়ি থেকে নামবেন।
৭. এটিএম বুথে ঢুকবেন।
৮. এটিএম বুথ থেকে বের হবেন।
৯. গাড়ির দরজা খুলবেন।
১০. গাড়ি থেকে হ্যান্ডব্যাগ নেবেন। 
১১. গাড়ির দরজা বন্ধ করবেন।
১২. এটিএম বুথে ঢুকবেন।
১৩. এটিএম মেশিনে কার্ড ঢোকাবেন।
১৪. পিন কোড দেবেন।
১৫. ক্যানসেল বাটন প্রেস করবেন।
১৬. পুনরায় পিন কোড দেবেন।
১৭. মেজাজ গরম করে এটিএম মেশিনের দিকে তাকাবেন।
১৮. হ্যান্ডব্যাগ খুলে মিনি ডায়েরি বের করে পিন কোড দেখবেন।
১৯. ক্যানসেল বাটন প্রেস করবেন।
২০. পুনরায় পিন কোড দেবেন।
২১. টাকা ও রসিদ নেবেন।
২২. এটিএম বুথ থেকে বের হবেন।
২৩. গাড়ির দরজা খুলবেন।
২৪. গাড়ি স্টার্ট দেবেন।
২৫. রিয়ার ভিউ মিররে মেকআপ পর্যবেক্ষণ করবেন।
২৬. গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করবেন।
২৭. গাড়ির দরজা খুলবেন।
২৮. এটিএম বুথে ঢুকবেন।
২৯. হ্যান্ডব্যাগ নেবেন।
৩০. এটিএম বুথ থেকে বের হবেন।
৩১. গাড়িতে ঢুকবেন।
৩২. রিয়ার ভিউ মিররে মেকআপ পর্যবেক্ষণ করবেন।
৩৩. গাড়ি স্টার্ট দেবেন।
৩৪. এটিএম বুথ ত্যাগ করবেন।

কলি

পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি ইলিশ-পাঙাশের প্রেম

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২৯ পিএম
পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি ইলিশ-পাঙাশের প্রেম

নদীর মাছেরা যদি সিনেমা বানাত তাহলে গল্প কিন্তু এমনই হতো। লিখেছেন রুহুল আমিন ভুইয়া

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিন ক্যাম্পাসে নায়ক পাঙাশ আর নায়িকা ইলিশের সামনা-সামনি ধাক্কা। ইলিশের হাত থেকে পড়ে গেল বই।

ইলিশ: এই যে মিস্টার, দেখে চলতে পারেন না?

পাঙাশ: (ইলিশের বই তুলে দিতে দিতে) সরি ম্যাডাম, নদীর পানি এত ময়লা যে খালি চোখে কিছুই দেখতে পাই না। আচ্ছা আপনার নাম জানতে পারি?

ইলিশ: হাউ ডেয়ার ইউ? ধাক্কা দিয়ে আবার নাম জানতে চান? যত্ত সব কম পানির মাছ এসে পড়েছে বেশি পানিতে... 
মুখ ঝামটি দিয়ে চলে গেল নায়িকা ইলিশ আর অপমানিত মুখে দাঁড়িয়ে রইল নায়ক পাঙাশ। কয়েক দিন পর বিপদে পড়ল নায়িকা ইলিশ। বান্ধবীদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সময় আটকা পড়ল এক জেলের জালে।

ইলিশ: ছেড়ে দে, ছেড়ে দে শয়তান। তোর ঘরে কি আর ইলিশ মাছ নেই?

জেলে: চুপ...একটা কথা বলবি না।

ইলিশ: শয়তান, তুই আমার দেহ পাবি; কিন্তু মন পাবি না।

জেলে: তোর দেহটাই দরকার সুন্দরী, কেজিতে হাজার টাকা...হু হু হা হা।

ইলিশ: (সর্বশক্তি দিয়ে চিৎকার) বাঁচাও, বাঁচাও, কে আছো বাঁচাও...গুন্ডারা আমাকে তুলে নিয়ে গেল।
অনেক দূরে নায়ক পাঙাশ তখন ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশগ্রহণ করছিল। ইলিশের চিৎকারে মাইক্রো সেকেন্ডের ব্যবধানে সে হাজির হলো ঘটনাস্থলে। দাঁত দিয়ে কেটে দিল জাল, মুক্ত করল নায়িকা ইলিশকে।

ইলিশ: কী বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ জানাব! আপনি না থাকলে যে আজ কী হতো। (আগের ধাক্কা খাওয়ার ঘটনায় একটু ইতস্তত বোধ করে) ইয়ে...আসলে মাছ চিনতে আমার ভুল হয়ে গিয়েছিল। আমাকে ক্ষমা করুন প্লিজ। আমি ইলিশ, আপনি?

পাঙাশ: আমি পাঙাশ।

ইলিশ: দেশি, না আফ্রিকান... 
এভাবেই পরিচয়...পরিণয়...অতঃপর গান...‘ইলিশ লো...তোর রুপালি রুপালি আঁশ...বাজারেতে কিনতে গেলে খাওয়া লাগে বাঁশ...ইলিশ লো...’ 
নেচে-গেয়ে চলতে থাকল ইলিশ আর পাঙাশের প্রেম। এদিকে সময়ের পরিক্রমায় বের হলো পাঙাশের রেজাল্ট।

পাঙাশ: (দৌড়ে ঘরে ঢুকে চিৎকার দিয়ে) মা মা, আমি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছি।

মা পাঙাশ: আজ যদি তোর বাবা বেঁচে থাকত...(চোখে পানি)।

পাঙাশ: বাবার কী হয়েছিল মা?

মা পাঙাশ: তুই যখন পোনা ছিলি, তখন মানুষেরা তোর বাবাকে ধরে নিয়ে খেয়ে ফেলেছে।

পাঙাশ: (চোখ মুছতে মুছতে) মাছ হয়ে ভালো রেজাল্ট করে লাভ নেই মা, শেষমেশ মানুষের পেটে যেতে হয়...
এদিকে ইলিশ তার বাবার সঙ্গে পাঙাশের পরিচয় করিয়ে দিতে নিয়ে এল ঘরে। কিন্তু মেয়ের প্রেমিকের প্রজাতি দেখে মনঃক্ষুণ্ন হলেন বাবা।

ইলিশের বাবা: সামান্য দেশি পাঙাশ হয়ে কোন সাহসে তুমি আমার মেয়ের দিকে পাখনা বাড়িয়েছ?

পাঙাশ: ভালোবাসা কখনো মাছের প্রজাতি দেখে না। ইলিশকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।

ইলিশের বাবা: তুমি জানো, আমার মেয়ের লেজের দাম দিয়ে তোমার মতো কয়েক ডজন পাঙাশকে বাজার থেকে কিনে নেওয়া যাবে।

পাঙাশ: ইলিশ সাহেব, টাকা দিয়ে মাছ কেনা যায়, কিন্তু মাছের ভালোবাসা কেনা যায় না। আমরা গরিব মাছ হতে পারি, কিন্তু ছোট মাছ নই।

ইলিশের বাবা: আমার মেয়েকে বিয়ে করতে হলে তোমাকে ইলিশের মতো চলাফেরা করতে হবে। শরীরে ইলিশের ঘ্রাণ থাকতে হবে। নইলে এ বাড়ির দরজা তোমার জন্য বন্ধ।

শুনে নায়ক পাঙাশের তৎক্ষণাৎ প্রস্থান। বাবা ইলিশ ঘরে বন্দি করলেন তার মেয়েকে।

ইলিশের বাবা: আজ থেকে তোমার বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ। আমার বন্ধুর ছেলে রুইয়ের সঙ্গে শিগগিরই তোমার বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

ইলিশ: না বাবা, না! পাঙাশকে আমি ভালোবাসি। পাঙাশকে ছাড়া আমি বাঁচব না। ওই ফরমালিন দেওয়া পচা রুইকে আমি মেনে নিতে পারব না।

ইলিশের বাবা: (লেজ দিয়ে মেয়ের গালে চটাশ করে চড় মেরে) আমার মুখের ওপর আর একটা কথা না। তোমার এত অধপতন হবে জানলে জাটকা থাকতেই গলা টিপে মেরে ফেলতাম।

ওদিকে নায়ক পাঙাশ এত সহজে হাল ছাড়ল না। অনেক পরিশ্রম করে বেশ কিছু টাকা জোগাড় করে ফেলল। এরপর সেই টাকা দিয়ে বাজার থেকে ইলিশের গন্ধওয়ালা দামি ব্র্যান্ডের বডি স্প্রে কিনে আনল। শরীরে স্প্রে করা মাত্র পাঙাশের শরীর থেকে ভুরভুর করে ইলিশের গন্ধ বের হলো। শুধু তা-ই না, আশপাশ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মেয়ে মাছ পাগলের মতো তার দিকে ছুটে আসা শুরু করল! 

পাঙাশের এই বুদ্ধি কাজে দিল। ইলিশের বাবা পাঙাশের সঙ্গে ইলিশের বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হলো গুন্ডা রুই মাছ। সে তার দলবল নিয়ে অপহরণ করে নিয়ে এল নায়িকা ইলিশ আর তার বাবাকে। দড়ি দিয়ে বেঁধে দিল দুজনের শরীর। গুন্ডাদের আস্তানায়।

রুই: সোজা বড়শিতে মাছ না উঠলে তাতে কেঁচো দিতে হয়, ইলিশ সাহেব। আজ থেকে ইলিশ আমার, ইলিশের সব সম্পত্তিও আমার...মু হু হু হু হা হা হা।

ইলিশের বাবা: তোর জিব আমি টেনে ছিঁড়ে ফেলব বদমাশ। ইলিশ দেখেছিস, ইলিশের কাঁটা দেখিসনি।

রুই: মু হু হু হু হা হা হা...সে সুযোগ তুই পাবি না। তোকে খুন করে তোর লাশ দিয়ে সরষে ইলিশ রান্না করা হবে। মু হু হু হু হা হা হা। তোর মেয়ে ইলিশ এখন আমার সামনে নাচবে...এই কে আছিস, ইলিশের বাঁধন খুলে দে...

খুলে দেওয়া হলো ইলিশের বাঁধন। ইলিশ আবার আধুনিক মেয়ে, মুক্ত হয়েই সে তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিল Gundara amake tule niyese, monta onek kharap। লোকেশনে লিখে দিল ‘Rui er astana’। তারপর গান গেয়ে গেয়ে নাচা শুরু করল।

এদিকে স্ট্যাটাস দেখা মাত্র পাঙাশ ছুটে এল রুইয়ের আস্তানায়। দেয়াল ভেঙে ঝাঁপ দিয়ে পড়ল গুন্ডা রুইয়ের ওপর।

পাঙাশ: শয়তান, আজ আমি তোকে মেরেই ফেলব।

গুন্ডারা গুলি করা শুরু করল ঢিশা...ঢিশা...ঢিশা... (৭০ রাউন্ড গুলি, নিহত শূন্য)। নায়ক পাঙাশও গুলি করা শুরু করল ঢিশা... ঢিশা (২ রাউন্ড গুলি, নিহত ৭০)। সব গুন্ডাকে মারার পর বাকি রইল শুধু রুই। অন্য গুন্ডাদের হাতের নিশানা খারাপ হলেও রুইয়ের হাতের নিশানা ভালো। নায়কের দিকে তাক করে গুলি করল সে। ঢিশুয়া...কিন্তু, ইলিশের বাবা দৌড়ে এসে বুক পেতে দিলেন পাঙাশের সামনে। গুলি এসে লাগল তার পেটিতে। এমন সময় পুলিশ মাছের আগমন। ‘আইন নিজের পাখনাতে তুলে নেবেন না’ বলে গ্রেপ্তার করা হলো গুন্ডা রুইকে। 

বাবা ইলিশ (রক্তমাখা পেটিতে ধরে): বাবা পাঙাশ, আমার মেয়েকে তুমি দেখে রেখ, বাবা। ওকে তোমার পাখনাতে দিয়ে গেলাম। আ আ আহ্।
ইলিশ: না বাবা, তুমি এভাবে চলে যেতে পারো না, আ আ না আ আ।

অতঃপর পাঙাশ আর ইলিশ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে লাগল। কিছুদিন পর পাঙাশ+ইলিশ থেকে ‘পালিশ’ নামক নতুন মৎস্য প্রজাতি পেল বাংলাদেশ।

কলি

দেশি এজেন্ট

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০২:৩১ পিএম
আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০২:৩২ পিএম
দেশি এজেন্ট

সিআইএ এজেন্ট-১: গুপ্তচর ধরা পড়েছে।
সিআইএ এজেন্ট-২: হুম।

সিআইএ এজেন্ট-১: ইন্টারোগেট শুরু করব?

সিআইএ এজেন্ট-২: ইয়াপ। ইশটার্ট।
এক ঘণ্টা পর...

সিআইএ এজেন্ট-১: গুপ্তচর খুবই টাফ।

সিআইএ এজেন্ট-২: কেন?

সিআইএ এজেন্ট-১: এক ঘণ্টা গরম রুমের ভেতরে আটকায় রাখছি।

সিআইএ এজেন্ট-২: আউটপুট?

সিআইএ এজেন্ট-১: নাই। মিচকা হাসি দিতাছে।

সিআইএ এজেন্ট-২: নেক্সট লেভেলে যাও।

আধা ঘণ্টা পর...

সিআইএ এজেন্ট-১: কাহিনি খারাপ।

সিআইএ এজেন্ট-২: কেন?

সিআইএ এজেন্ট-১: দুই ঘণ্টা কেমিক্যাল মেশানো পানিতে চুবাইছি

সিআইএ এজেন্ট-২: আউটপুট?

সিআইএ এজেন্ট-১: পানি থেকে উঠানোর পর এক গ্লাস ওই পানি খাইতে চাইছে

সিআইএ এজেন্ট-২: নেক্সট লেভেল।

দুই ঘণ্টা পর...

সিআইএ এজেন্ট-১: টাফেস্ট এজেন্ট এভার সিন... অমানুষিক ধৈর্য।

সিআইএ এজেন্ট-২: কেন!

সিআইএ এজেন্ট-১: মাথার কাছে একই প্রশ্ন কয়েক হাজারবার করলাম।

সিআইএ এজেন্ট-২: তারপর?

সিআইএ এজেন্ট-১: পিটাইলাম। পায়ে চাপ দিলাম বুট দিয়ে। আঙুলে চাপ দিলাম। সারা রাত বাইরে জঙ্গলে মসকিটোর ভেতরে ফেলে রাখছি। নো স্লিপ, নো বাথ। নো আউটপুট।

সিআইএ এজেন্ট-২: তাকে আমার কাছে নিয়ে আসো।

সিআইএ এজেন্ট-১: ওকে।

এজেন্ট ও গুপ্তচর

সিআইএ এজেন্ট: তুমি কীভাবে নিজেকে এভাবে ট্রেইন করেছ।

গুপ্তচর: লোল। আইএম ফ্রম বাংলাদেশ।

সিআইএ এজেন্ট: তো কী হইছে?

গুপ্তচর: এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে থাকা পানিভাত, আমরা এককালে এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিংয়ে থাকতাম ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায়। আমরা ছোটবেলা থেকেই ফরমালিনে অভ্যস্ত। আমরা হেন কোনো জিনিস নাই যাতে কেমিক্যাল মিশাই না। চুন, ইটের গুঁড়া সব খেয়ে অভ্যস্ত। দুধ থেকে দই, সবকিছুতে আমরা ভেজাল মিশাই। আমার মনে হয় ফরমালিনেও ভেজাল মেশাব কিছুদিন পর।
আর ধৈর্য ব্রেক করার জন্য একই প্রশ্ন করা? আমরা উত্তরা থেকে ধানমন্ডি পৌঁছাই সাড়ে তিন ঘণ্টার জ্যামে। তোমরা এক গিগা মুভি নামাও চার-পাঁচ মিনিটে। আমরা নামাই পুরা রাইতে, তাও আটকায়। সো আমাদের ধৈর্য নিয়া প্রশ্ন করার অবকাশ নাই।
আর বাই দ্য ওয়ে, আমি তুরাগ এবং ছয় নম্বর বাসের নিয়মিত যাত্রী। বুটের গুঁতা কিংবা কনুইয়ের গুঁতা ইভেন বাসের হাতল ধরতে গিয়া উষ্টা খাইয়া রাস্তায় প্রায় অন্য গাড়ির চাক্কার নিচে পড়া অহরহ ব্যাপার। দুই-তিন ঘণ্টা জ্যামে বাসে দাঁড়ায় থাকা ওয়ান টুর মামলা।
ফাইনালি মশার ভেতরে ফেলে রেখে আমাকে আবেগতাড়িত করে ফেলেছ। আমার তখন দেশের কথা মনে পড়েছে।
তোমাদের এক এজেন্ট বারবার নৃশংসতার হুমকি দিতেছিল। আমাদের বাসে আগুন দিলে কয়েকজন মরে যায় চোখের সামনে, আমরা রাতে ভাত খেয়ে পরের দিন অফিসে যাই। ককটেল গ্রেনেড ফাটে, টিয়ার শেলের ধোঁয়া চারদিক, বিকেলে আমরা সিনেপ্লেক্স মুভি দেখি।

সিআইএ এজেন্ট: হু আর ইউ রিয়েলি।

গুপ্তচর: সাধারণ বাংলাদেশি। যাকে তোমরা গুপ্তচর ভেবে ভুল করেছ।

সিআইএ এজেন্ট: ফিল আপ দিস ফর্ম।

গুপ্তচর: কীসের ফর্ম?

সিআইএ এজেন্ট: তোমারে আজ থিকা সিআইএর ট্রেইনার হিসেবে নিয়োগ দিলাম।

কলি