ঢাকা ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

চট্টগ্রামের ভরসা বিদেশিরা

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০২ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৫০ এএম
চট্টগ্রামের ভরসা বিদেশিরা
ছবি : সংগৃহীত

বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে রানার্সআপ হওয়া এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামের সেরা সাফল্য। পরের আট আসরে চারবার প্লে-অফ খেলা বন্দরনগরীর দলটি গতবার উতরাতে পারেনি লিগপর্বের বাধা। ওই ধাক্কা সামলাতে চট্টগ্রামের টিম ম্যানেজমেন্টে এসেছে পরিবর্তন। দলেও এসেছে বড় পরিবর্তন। শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকতে দলটির এমন পরিবর্তন ইতিবাচক। দলে পরিবর্তন এলেও চট্টগ্রাম শিবিরে নেই দেশীয় কোনো বড় নাম। তাদের ভরসা করতে হচ্ছে বিদেশিদের ওপর। বিদেশিদের পারফরম্যান্সই বলে দিবে শিরোপার দৌড়ে কতটুকু এগিয়ে থাকবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

বিপিএলের প্রথম দুই আসরে চট্টগ্রাম কিংস নামে অংশ নেয় বন্দরনগরীর দলটি। পরের চার আসরে এ ফ্র্যাঞ্চাইজি অংশ নেয় চট্টগ্রাম ভাইকিংস নামে। প্রথম আসরে গ্রুপপর্বের বাধা পেরোতে না পারা চট্টগ্রাম কিংস দ্বিতীয় আসরে খেলে ফাইনালে। পরের চার আসরে দুবার প্লে-অফ খেলেছিল দলটি। শেষ তিন আসরে দুবার প্লে-অফ খেললেও শিরোপার ধারে-কাছে যেতে পারেনি তারা। শেষ তিন আসরে দলটি বিপিএলে অংশ নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স নামে। এবারও একই নামে বিপিএলে খেলবে বন্দরনগরীর দলটি।

দেশীয় বড় কোনো নাম না থাকায় খালি চোখে বিদেশি ক্রিকেটারদের ওপর ভরসা রাখতে হবে দলটিকে। চলতি মৌসুমে দলটির হেড কোচের দায়িত্ব নেওয়া তুষার ইমরান অবশ্য সেটা মানছেন না। তার বিশ্বাস, বিপিএলে চট্টগ্রামের ভাগ্য গড়ে দিবে দেশিদের পারফরম্যান্স। এই নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিদেশি নির্ভর দল, এটা বললে ভুল হবে। সব মিলিয়ে আমরা ভালো সমন্বয় দাঁড় করাতে পেরেছি। এখন সবাই মিলে ভালো খেলতে হবে এবং সেটা দলগতভাবে। একজন-দুজন ভালো খেললে হবে না। দুই-তিনটি দল আমাদের চেয়ে ভালো মনে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে হলে আমাদের স্কোয়াডের সবাইকে ভালো করতে হবে।’

গত আসরে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নেতৃত্ব দেন শুভাগত হোম। দশম আসরে তার নেতৃত্বে ভরসা রাখছে চট্টগ্রামের টিম ম্যানেজমেন্ট। দল নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এ বছর আমাদের যে দল হয়েছে, যে খেলোয়াড় আছে, তাতে সবাই আত্মবিশ্বাসী। আমাদের প্রথম লক্ষ্য প্লে-অফ। আমরা সে লক্ষ্যের দিকেই মনোযোগটা দিচ্ছি। আশা করছি আমরা প্লে-অফ খেলতে পারব।’

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড : শুভাগত হোম, জিয়াউর রহমান, নিহাদউজ্জামান, শহীদুল ইসলাম, তানজিদ হাসান, আল আমিন হোসেন, সৈকত আলী, ইমরানুজ্জামান, শাহাদাত হোসেন, সালাউদ্দিন শাকিল, হুসনা হাবিব, কুশল মেন্ডিস, আভিষ্কা ফার্নান্ডো, মোহাম্মদ হারিস, নজিবউল্লাহ জাদরান, আবদুল্লাহ শফিক, মোহাম্মদ হাসনাইন, স্টিভ এসকিনাজি, কার্টিস ক্যাম্ফার, বিলাল খান।

শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তীকালীন কোচ হলেন জয়সুরিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তীকালীন কোচ হলেন জয়সুরিয়া
ছবি : সংগৃহীত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন শ্রীলঙ্কার হেড কোচ ক্রিস সিলভারউড।  তার জায়গায় অন্তবর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের কিংবদন্তী ক্রিকেটার সনাথ জয়সুরিয়াকে।

ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজেও শ্রীলঙ্কা দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। লঙ্কান সংবাদমাধ্যমগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।  

ঘরের মাঠে আগামী শ্রীলঙ্কা জুলাই ও আগস্টে ভারতের বিপক্ষে সমান ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনটি টেস্ট খেলবে লঙ্কানরা তার অধীনেই।

খেলোয়াড়ি জীবনে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানডেতে ১৩ হাজারের বেশি রান করেছেন তিনি। উইকেট নিয়েছেন তিনশ’র বেশি। টেস্টে তার নামের পাশে রানের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার রান এবং উইকেটসংখ্যা ৯৮। 

সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি
ছবি : সংগৃহীত

ভারত তথা গোটা ক্রিকেটবিশ্বেরই অন্যতম সেরা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্মদিন আজ। ৪৩ বছরে পা দেওয়া ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ভাসছেন সবার শুভেচ্ছা ও শুভকামনায়। তবে মাঝরাতে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে ধোনির সঙ্গে সাক্ষাত করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলিউড তারকা সালমান খান।

মধ্যরাতে কেক কাটার সময় ধোনির স্ত্রী সাক্ষীসহ উপস্থিত ছিলেন বলিউডের এই জনপ্রিয় তারকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় জন্মদিনের কেক কেটে ধোনি প্রথমে তার স্ত্রী সাক্ষীকে এবং পরে সালমান খানকে খাইয়ে দিচ্ছেন কেক।

ইনস্টাগ্রামে ধোনির সঙ্গে ছবি পোষ্ট করে সালমান খান ্লিখেছেন, ‘হ্যাপি বার্থডে কাপ্তান সাহেব!’

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, মুকেশ আম্বানীর ছেলে অনন্ত আম্বানীর বিয়েতে যোগ দিতেই বর্তমানে মুম্বাইয়ে অবস্থান করছেন ধোনি। একই সময়ে সালমান খান ব্যস্ত রয়েছেন তার আসন্ন চলচ্চিত্র ‘সিকান্দার’ এর শুটিংয়ে। দুই তারকাকে একসঙ্গে দেখে আনন্দে ভাসছে ভক্তরাও।

এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা কোথাও সাফল্য ধরা দিচ্ছে না ব্রাজিলের ঝুলিতে। বিশ্বকাপের পর কোপারও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ব্রাজিলকে। দুই আসরেই টাইব্রেকারে হেরে বাদ পড়তে হয়েছে তাদের। উরুগুয়ের কাছে তারা হেরেছে ৪-২ ব্যবধানে।

আরও একবার ব্যর্থ হলেও নিজ দেশের সমর্থকদের আশার বাণীই শুনিয়েছেন ব্রাজিলের সবচেয়ে তরুণ ফুটবলার এনদ্রিক। ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড পরের বিশ্বকাপকে লক্ষ্যে রাখার কথা বলেছেন।

চলমান কোপা আমেরিকার মতোই ২০২৬ বিশ্বকাপও হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। তবে সহ আয়োজক হিসেবে থাকছে কানাডা ও মেক্সিকোও। সেই বিশ্বকাপ নিয়েই ভাবার কথা বলেছেন এনদ্রিক।

কোপা আমেরিকা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর এনদ্রিক বলেছেন, ‘আমরা ব্রাজিলকে শীর্ষে তুলতে চাই। আমরা বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকব।’

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে বিদায় নেওয়ার পর এমনটা তখনও বলেছিলেন ব্রাজিল দলের ফুটবলাররা।

পরপর দুই আসরে ব্যর্থ হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেওয়া কঠিন সমর্থকদের মতো দলের সদস্যদেরও। অনেক চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা মিলছে না পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

এমন দুঃসহ অবস্থায় এনদ্রিক একটি অনুরোধও করেছেন দলের সমর্থকদের কাছে, ‘আমরা জানি যে এটা কঠিন মুহূর্ত। কিন্তু আমরা সব ব্রাজিলিয়ানদের কাছ থেকে সমর্থন আশা করছি।’

অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১০ পিএম
অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা
ছবি : সংগৃহীত

১৬ বারের চ্যাম্পিয়ন জন সিনা বিদায় বললেন রেসলিংকে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো তার ২২ বছরের বর্ণাঢ্য রেসলিং ক্যারিয়ারের।

শনিবার (৬ জুলাই) টরন্টোর স্কোটিয়াব্যাঙ্ক অ্যারেনায় ডব্লিউডব্লিউই এর মানি ইন দ্য ব্যাংক পে-পার-ভিউতে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী এই রেসলার।

সেখানে উপস্থিত সবাইকে অবাক করে দিয়ে জন সিনা দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দুই যুগের বেশ সময় ধরে আমি ডাব্লিউডাব্লিউই তে এবং এটাই সময়। যখন কেউ আমার নাম জানতো না, কেউ বন্ধু হতে চাইতো না তখন আমার পাশে ছিল সমর্থকরা। আমি এই সময়ে একটা জিনিস দেখেছি, শীত হোক বা গ্রীষ্ম সমর্থকরা সবসময় থাকেন।’

বিদায় বললেও ২০২৫ সালের রয়্যাল রাম্বল, এলিমিনেশন চেম্বার এবং রেসেলম্যানিয়া ৪১ এ শেষবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামবেন রেসলিং রিংয়ে।

২০০২ সালে রেসলিং ক্যারিয়ার শুরুর পর বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তবে ২০১৮ সাল থেকে নাম লেখান অভিনয় জগতেও। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিকায় কাজ করেছেন বিভিন্ন সিনেমায়। বর্তমানে অভিনয় জগতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা তার।

১৩ বার ডব্লিউডব্লিউ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পাশাপাশি তিনবার জিতেছেন ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ। ডব্লিউডব্লিউয়ের ইতিহাসে রিক ফ্লেয়ার ও জন সিনা সমান ১৬বার চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। এছাড়া ডব্লিউডব্লিউই এর অন্য সব বেল্টও জিতেছেন সিনা।

অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৫১ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া
ছবি : সংগৃহীত

একদিন আগেই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান পল্টনের দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে এসেছিলেন খেলায় অংশ নিতে। ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি, গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সেই জিয়া এলেন নিথর, প্রাণহীন হয়ে। সাদা কাফনে আবৃত জিয়াকে নামানো হলো লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি থেকে। দাবা ও ক্রীড়াঙ্গনের মানুষরা জানালেন শেষ শ্রদ্ধা। জানাজা ও বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা সারতে মিনিট চল্লিশেক সময় লাগল। এরপর জিয়াকে নিয়ে ফের ছুটে চলল লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি। চিরদিনের মতো দাবার প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে গেলেন এক কিংবদন্তি। বাংলাদেশ দাবায় অসীম শূন্যতা তৈরি করে চির আড়াল হলেন তিনি।

পরশু শুক্রবার ৪৮তম জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডে আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের সঙ্গে খেলা ছিল জিয়ার। সন্ধ্যার দিকে খেলতে খেলতেই চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নেওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু জাতীয় দাবার রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নকে আর ফেরানো যায়নি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরান ভবনে দাবা ফেডারেশনের কার্যালয়। সেখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছিল ৪৮তম জাতীয় দাবা। জিয়া খেলতে খেলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মিনিট দশেক সময়ের মধ্যে তাকে শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তার পালস পাননি। দাবাসংশ্লিষ্টদের ধারণা, জিয়ার মৃত্যু হয়েছে দাবার হলরুমেই। যেখানে চলছিল জিয়া-রাজীবসহ বিভিন্ন প্রতিযোগীর খেলা। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দাবার চৌষট্টি খোপে ঘুঁটির চাল নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন জিয়া। আদতে যার জীবনটাই ছিল দাবাময়।

২০০২ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দাবাড়ু হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব জিতেন জিয়া। এরপর আরও তিনজন মিলিয়ে বাংলাদেশে গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যাটা মাত্র ৫। গত ১৬ বছর ধরে সংখ্যাটা এই পাঁচে আটকে আছে। একই রকমভাবে ঠিক একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে আছে বাংলাদেশের সামগ্রিক দাবাও। কেন এই জায়গা থেকে দাবা আর এগোতে পারছে না, এই হাহাকারের মাঝেই সবাইকে কাঁদিয়ে জিয়ার চির প্রস্থান। জাতীয় দাবায় সর্বোচ্চবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি যিনি দাবা অলিম্পিয়াডেও বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সবচেয়ে বেশিবার।

সাদাসিধে একজন মানুষ ছিলেন জিয়া। কোনো অহম ছিল না। সব সময় ভেবেছেন কীভাবে দেশের দাবাকে এগিয়ে নেওয়া যায়। দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম জানাজায় এসে বলেন, ‘দাবা পরিবারের জন্যই একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন গ্র্যান্ডমাস্টার কমে যাওয়ায় আমাদের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতেও এখন অনেক বেগ পেতে হবে। তার অভাব পূরণ হওয়ার নয়।’ জিয়ার অবদান তুলে ধরে শাহাবুদ্দিন শামীম আরও বলেন, ‘গ্র্যান্ডমাস্টার হলেও জিয়া কখনো বেছে বেছে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত না। অনেকে আছে প্রাইজমানি কম হলে খেলত না। কিন্তু সে কখনো এভাবে চিন্তা করত না। যে প্রাইজমানিই হোক, সে খেলত। বলত, আমি খেললে অন্যরা খেলার জন্য আসবে।’

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, ‘জিয়ার অকালমৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। তার যে পবিত্র স্থান, যে স্থানকে সে ভালোবাসত, সেখান থেকেই সে চলে গেল। দাবা খেলা অবস্থাতেই মারা গেল। ভালো একজন খেলোয়াড়কে হারিয়েছি আমরা।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘তার এই চলে যাওয়া জাতীয়ভাবে অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ দাবার গ্র্যান্ডমাস্টাররাই কিন্তু লাল-সবুজের পতাকা সর্বপ্রথম বিশ্বমানচিত্রে তুলে ধরেছিল।’

জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টা দাবার বোর্ডে জিয়া যার সঙ্গে কাটিয়েছেন, সেই রাজীবও উপস্থিত ছিলেন জানাজায়। রাজীবের গাড়িতে করেই হাসপাতালে নেওয়া হয় জিয়াকে। সারাক্ষণ থমথমে লাগছিল তাকে। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল। রাজীবের চোখে জিয়াই বাংলাদেশের সেরা দাবাড়ু, ‘আমি মনে করি সে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সেরা খেলোয়াড়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আমি মনে করি তার পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভালো। বাংলাদেশের দাবা যতদিন থাকবে, সব সময়ই তাকে মনে করবে সবাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা জিয়া নিজেকে অন্য কোনো পেশায় জড়াননি। নিজে দাবা খেলা এবং কোচিং করিয়ে গেছেন। স্বামীর দাবা ক্যারিয়ারের কথা ভেবেই তার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য বিসিএস ক্যাডারে যোগদান করেননি। জিয়ার চিরবিদায়ের দিনে তার স্ত্রী-সন্তানদের আর্থিক দিকের কথা বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে। বিওএ মহাসচিব শাহেদ রেজা বলেছেন, ‘উনার পরিবারের অর্থনৈতিক যে সমস্যা আছে, এই সমস্যার পাশে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থাকবে।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীমও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহায়তার কথা জানিয়েছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে বাবার কবরে শায়িত করা হয়েছে জিয়াকে। এখন তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।