![অনিশ্চয়তা কাটিয়ে প্লে-অফে চট্টগ্রাম](uploads/2024/02/21/1708491727.Ctg-Bpl.jpg)
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের জন্য ম্যাচটা ছিল বাঁচা-মরার। হেরে গেলে প্লে-অফ খেলার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে যেত। অনেক যদি-কিন্তুর ওপর ভর করে থাকতে হতো তখন। এমন পরিস্থিতিতে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচটায় যেন আহত বাঘের রূপ ধারণ করে দলটি। তানজিদ হাসান তামিমের দাপুটে সেঞ্চুরিতে পেয়েছে ৬৫ রানের ব্যবধানে এক জয়। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ৬৫ রানের বড় জয় পায় চট্টগ্রাম। তাদের দেওয়া ১৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে খুলনা ১ বল বাকি থাকতে ১২৭ রানে অলআউট হয়। খুলনার জন্যও এই ম্যাচটা ছিল একই রকম গুরুত্বের। প্লে-অফ খেলার সমীকরণ নিজেদের হাতে রাখতে জিততে হতো তাদেরও। ম্যাচটা তাই এক অর্থে কোয়ার্টার ফাইনালে রূপ নিয়েছিল।
হেরে গেলেও খুলনার আশা এখনো একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। তবে এ জন্য ঢাকায় আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে শুধু জয় নয়, বেশ বড় ব্যবধানে জিততে হবে এবং একই দিন প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফরচুন বরিশালের বাজেভাবে হার প্রার্থনা করতে হবে। ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। হতে পারে অনেক কিছুই। বরিশালকে পেছনে ফেলে রংপুর, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে খুলনা প্লে-অফ পর্বে যোগ দিতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।
ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক বিজয়কে এতটা বিধ্বস্ত লাগল যে, মনে হচ্ছিল প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় ধরেই নিয়েছেন তিনি। প্রথম দিকে তো সেভাবে কথাই বের হচ্ছিল না তার কণ্ঠ থেকে। নিজের পারফরম্যান্স বিচার করতে বললে তাই তার উত্তর ছিল এমন, ‘অধিনায়ক হিসেবে দলে অবদান রাখার বিষয়টিই মাথার মধ্যে বেশি ঘুরতে থাকে। এখনো একটা ম্যাচ আছে। নেভার নো। ক্রিকেটার কথা বলা যায় না। হতেও পারে অন্য রকম কিছু।’
এমনিতে খুলনার প্রতিযোগিতার শুরুটা ছিল দারুণ। টানা চার জয়ে আসর শুরু করে তারা। কিন্তু এরপর টানা পাঁচ হার। সবশেষ ৭ ম্যাচে জয় মাত্র একটি। খুলনা পিছিয়ে যায় এখানেই। দলটাতে সেই অর্থে দেশি-বিদেশি সুপারস্টার নেই। চট্টগ্রামেও তাই। তবে খুলনার মতো চট্টগ্রামও শুরু থেকেই দারুণ খেলছিল। কিন্তু পিছিয়ে পড়ে পরে। তাই তাদেরও প্লে-অফের সমীকরণ হয়ে পড়ে কঠিন। ঘরের মাঠে লিগ পর্বের শেষটা অবশ্য স্বস্তি নিয়েই করতে পারল দলটি।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত হোম। ম্যাচে এরপরের ঘটনা প্রবাহের সবটা তাদের মনের মতোই হয়েছে। যার নেপথ্যে একজনই। তানজিদ হাসান তামিম। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৩২তম ম্যাচে এসে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছেন তিনি। ৩২ বলে ফিফটি পূরণ করেন। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৫৮ বলে।১৯তম ওভারে যখন ফেরেন, তখন নামের পাশে তার ৬৫ বলে ৮টি করে চার ও ছক্কায় ১১৬ রানের ঝলমলে ইনিংস। এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ইনিংস ও তৃতীয় সেঞ্চুরি। দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান টম ব্রুসের। ২৩ বলে অপরাজিত ৩৬ রান করেন তিনি। এই পথে তানজিদের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৬১ বলে ১১০ রান যোগ করেন তারা। এই জুটির ৭৮ রানই অবশ্য তানজিদের।
তানজিদ এমন খেলছিলেন যে খুলনা অধিনায়ক এনামুলের সব পরিকল্পনাই ভেস্তে যাচ্ছিল। প্রায় দুইশ ছোঁয়া দলীয় স্কোরে তো পরে খুলনার হাত থেকে ম্যাচটাও নিয়ে নেন তানজিদ। এত বড় লক্ষ্য তাড়ায় খুলনার মাত্র তিনজন ব্যাটার দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন। বিজয় ২৪ বলে ৩৫, শাই হোপ ২১ বলে ৩১ ও জ্যাসন হোল্ডার ১৭ বলে ১৮ রান করেন।বাকি সবাই ব্যর্থ। অধিনায়ক শুভাগত সর্বাধিক ৩ উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচসেরা অনুমিতভাবেই তানজিদ। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে যিনি দলের পক্ষ থেকে জয়টা ভাষাশহিদদের প্রতি উৎসর্গের ঘোষণা দিয়েছেন।