ঢাকা ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

কঠিনেরে জয় করা অন্তরা

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৪, ০১:১৫ পিএম
আপডেট: ০১ মে ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
কঠিনেরে জয় করা অন্তরা
ছবি : সংগৃহীত

‘আমি মনে হয় কারাতের জন্যই জন্ম নিয়েছি।’- কণ্ঠে জোরালো আত্মবিশ্বাস ও গর্ব নিয়েই কথাটা বললেন এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী কারাতেকা হোমায়রা আক্তার অন্তরা। একটু বাড়িয়েই বললেন কি? মোটেই না। প্রতিটি ক্ষণ হৃদয়ে যিনি কারাতেকে ধারণ করে চলেন, শতবাধা উপেক্ষা করে খেলাটায় নিজেকে নিয়ে যেতে পারেন শীর্ষস্তরে, তার কণ্ঠেই তো এভাবে বলা মানায়।

হোমায়রা অন্তরার খেলাটাই এক অর্থে যুদ্ধ। ম্যাটে আক্ষরিক অর্থেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ জিততে হয় তাদের। যে যুদ্ধ জিততে জিততেই তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন দক্ষিণ এশিয়ার সেরাদের কাতারে। তবে তারও আগে জীবনযুদ্ধেও জয়ী হতে হয়েছে রাজবাড়ীর মেয়ে অন্তরাকে। কাটা বিছানো পথ মাড়িয়ে যেভাবে তিনি নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছেন, তা শুধুই প্রেরণা জুগানোর মতো।

অনেকের বাঁকা চাহনিকে উপেক্ষা করে কারাতে খেলতে হয়েছে অন্তরাকে। বাবা ছাড়া বড় হয়েছেন। চার বোনের মধ্যে তিনিই বড়। তাই সব সময় বাড়তি দায়িত্ববোধ কাজ করত তার ভেতর। একটা বিষয় সব সময় মনে রাখতেন, ‘আমি যেভাবে যাব, আমার বোনগুলোও সেভাবেই যাবে। আমি যদি ব্যর্থ হই, আমার বোনরা দেখবে আমার লাইফটা, ব্যর্থ লাইফ। আর সফল হলে ওরাও আমাকে অনুসরণ করবে।’ কৈশর থেকেই এই বোধটা মনে জাগ্রত রেখে এগিয়েছেন অন্তরা। শুরুতে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে হয়েছে। কিন্তু ডানপিঠে ও মুক্তমনা অন্তরা চাইতেন স্কুলে পড়তে। সেই চাওয়াটা তার পূরণও হয় পরে। রাজধানীর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে ভর্তি করানো হয় তাকে। মা তাদের চার বোনকে নিয়ে পল্টনে একটি বাসা ভাড়া নেন। মার সঙ্গেই এক দিন পাল্টনের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের জিমনেশিয়ামে ঘুরতে গিয়ে কারাতের প্রেমে পড়ে যান অন্তরা। মার সম্মতিতে শুরুর হয় তার কারাতে যাত্রা।

খুব দ্রুতই কারাতে কোচদের নজর কাড়তে পেরেছিলেন অন্তরা। কিন্তু যখনই কারাতে খেলায় মন-প্রাণ সঁপে দিতে চাইছেন, তখনই দেখতে শুরু করলেন ক্রীড়াঙ্গনের অন্য রূপও। অন্তরার কথায়, ‘মেয়ে বলে কারাতে খেলাটা প্রতিবেশীরা খুব সহজভাবে নিত না। এলাকায় অনেক কথা শুনতে হতো। তবে যেখানে ট্রেনিং করতাম, সেখানেই সমস্যাটা বেশি ছিল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আমরা ট্রেনিং করতাম। ছেলেদের সঙ্গেই ট্রেনিং করতে হতো। অনেকেই আছেন যারা সাধারণ ক্লাব ট্রেনিং করতেন। শুধু ব্ল্যাক বেল্ট বা ব্যায়ামের জন্য কারাতে করতেন। তবে আমাদের লক্ষ্যটা ছিল একটু বড়। তাই আমরা একটু বেশি সময় অনুশীলন করতাম। কিন্তু এটা সেই সময় কেউ পছন্দ করত না। আমাদের লাইট অফ করে দিত, ফেডারেশন ও অভিভাবকদের কাছে বিচার দিত। সবাই বলত তোমরা এভাবে ট্রেনিং করো না। লাইট অফ করে দেওয়ায় আমরা অন্ধকারেও ট্রেনিং করেছি। অনেক সময় মোবাইলে আলো জ্বেলে বা দুপুর বেলা ট্রেনিং করতাম।’ অন্তরা বলে যান, ‘সবার বলা নেতিবাচক কথা তো কানে আসতই। নিজের কাছে তখন খারাপ লাগত। মাঝেমধ্যে মনে হতো, এই যে ট্রেনিং করছি এটা হয়তো ঠিক না। কেন কারাতে করতে আসলাম, এমন ভাবনাও মনে ঘুরত।’

এ তো ছিল খেলার মাঠের বাধা। মাঠের বাইরেও তো কম বাধা ডিঙাতে হয়নি অন্তরাকে। তাদের পড়াশোনার খরচ চালাতেন মামা। কিন্তু সেই মামা কখনো চাইতেন না খেলাধুলা করুক অন্তরা। ‘মামা চাইতেন পড়াশোনা ভালোভাবে করি। খেলাধুলা করলে হয়তো পড়াশোনায় প্রভাব পড়বে। ভালো কিছু করতে পারব না। পিছিয়ে যাব। এ কারণে মামা অনেক রাগ করতেন। বলতেন, যদি খেলাধুলা কর তাহলে পড়াশোনা করতে হবে না। পড়াশোনা বন্ধ করে দাও।’- বলেন অন্তরা। তবু নিজেকে কারাতে থেকে সরিয়ে নেননি অন্তরা। এই খেলাটা যে তার ভালোবাসার জায়গা। কিন্তু একটা সময় তাকে পড়াশোনা ও কারাতে, দুটির মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্তও নিতে হয়েছিল। অন্তরার মুখ থেকেই শোনা যাক গল্পটা- ‘২০১৯ সালে যখন সাফ গেমসে যাই, তখন আমি এইচএসসি শেষ করেছি। আমার বন্ধুরা তখন সবাই ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির জন্য কোচিং করছে। আমিও কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর আমার সাফ গেমসের ক্যাম্পের জন্য কল আসে। ওই সময় একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়- আমি কোচিং করব, না সকাল-বিকেল ট্রেনিং করব। এসএ গেমসের সময় সবাইকে কঠোর ট্রেনিংয়ের মধ্যে থাকতে হয়। বাইরে যেতে হলেও অনুমতি নিতে হয়। কেউ আসলে ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি আমাকে পড়ালেখার জন্য কোচিংয়ের অনুমতি দিচ্ছিল না।’ অন্তরা তাই দ্বিধায় পড়ে যান, কী করবেন? কিন্তু যেকোনো একটি পথ তো তাকে বেছে নিতেই হতো। অন্তরা বলেন, ‘এতদূর চেষ্টা করার পর সাফ গেমসের মতো আসরে খেলার সুযোগ সামনে এসেছে। পরে যদি আর সুযোগ না পাই। এটা চিন্তা করে ভাবলাম পড়াশোনাটা আপাতত বন্ধ রাখি, খেলাধুলাটা করি। যদি সফল হই তাহলে তো আর আফসোস থাকবে না।’

অন্তরা বেছে নেন কারাতেকেই। তার এই সিদ্ধান্ত সঠিক প্রতিফলিত হয় এসএ গেমসে সফল হয়ে। কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ প্রথম পদকটি পায় তার হাত ধরেই। একক কাতায় দেশকে উপহার দেন ব্রোঞ্জ। এরপর কুমিতে জয় করেন স্বর্ণপদক। পরে দলগত কুমিতেও রুপা জয় করেন তিনি। আজ অন্তরা তাই গর্ব নিয়ে বলেন, ‘যদি সফল হতে না পারতাম তাহলে অনেক কষ্ট লাগত। কারণ আমার বন্ধুদের বেশির ভাগই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। এই কষ্টটা আমার এখনো আছে। তবে সাফ গেমসের মেডেলের দিকে তাকালে এই কষ্টটা আর থাকে না।’

কষ্ট থাকবে কেন? অন্তরা তো এখন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে সফল এক ক্রীড়াবিদের নাম। যাকে আইডল মানেন হাজারও মেয়ে। এসএ গেমসে অন্তরার সফলতা দেখে তার আরও দুই বোন কারাতেকে নিয়েছেন খুব সিরিয়াসভাবে। তারাও চান বোনের মতো সোনালি হাসি হাসতে। আর অন্তরার চাওয়া নিজেকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাওয়া। যেখানে যেতে পারেননি কেউ। এশিয়ান গেমসের মঞ্চে পদক জয়ের স্বপ্নও লালন করেন তিনি।

শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তীকালীন কোচ হলেন জয়সুরিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তীকালীন কোচ হলেন জয়সুরিয়া
ছবি : সংগৃহীত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন শ্রীলঙ্কার হেড কোচ ক্রিস সিলভারউড।  তার জায়গায় অন্তবর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের কিংবদন্তী ক্রিকেটার সনাথ জয়সুরিয়াকে।

ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজেও শ্রীলঙ্কা দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। লঙ্কান সংবাদমাধ্যমগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।  

ঘরের মাঠে আগামী শ্রীলঙ্কা জুলাই ও আগস্টে ভারতের বিপক্ষে সমান ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনটি টেস্ট খেলবে লঙ্কানরা তার অধীনেই।

খেলোয়াড়ি জীবনে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানডেতে ১৩ হাজারের বেশি রান করেছেন তিনি। উইকেট নিয়েছেন তিনশ’র বেশি। টেস্টে তার নামের পাশে রানের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার রান এবং উইকেটসংখ্যা ৯৮। 

সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি
ছবি : সংগৃহীত

ভারত তথা গোটা ক্রিকেটবিশ্বেরই অন্যতম সেরা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্মদিন আজ। ৪৩ বছরে পা দেওয়া ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ভাসছেন সবার শুভেচ্ছা ও শুভকামনায়। তবে মাঝরাতে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে ধোনির সঙ্গে সাক্ষাত করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলিউড তারকা সালমান খান।

মধ্যরাতে কেক কাটার সময় ধোনির স্ত্রী সাক্ষীসহ উপস্থিত ছিলেন বলিউডের এই জনপ্রিয় তারকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় জন্মদিনের কেক কেটে ধোনি প্রথমে তার স্ত্রী সাক্ষীকে এবং পরে সালমান খানকে খাইয়ে দিচ্ছেন কেক।

ইনস্টাগ্রামে ধোনির সঙ্গে ছবি পোষ্ট করে সালমান খান ্লিখেছেন, ‘হ্যাপি বার্থডে কাপ্তান সাহেব!’

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, মুকেশ আম্বানীর ছেলে অনন্ত আম্বানীর বিয়েতে যোগ দিতেই বর্তমানে মুম্বাইয়ে অবস্থান করছেন ধোনি। একই সময়ে সালমান খান ব্যস্ত রয়েছেন তার আসন্ন চলচ্চিত্র ‘সিকান্দার’ এর শুটিংয়ে। দুই তারকাকে একসঙ্গে দেখে আনন্দে ভাসছে ভক্তরাও।

এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা কোথাও সাফল্য ধরা দিচ্ছে না ব্রাজিলের ঝুলিতে। বিশ্বকাপের পর কোপারও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ব্রাজিলকে। দুই আসরেই টাইব্রেকারে হেরে বাদ পড়তে হয়েছে তাদের। উরুগুয়ের কাছে তারা হেরেছে ৪-২ ব্যবধানে।

আরও একবার ব্যর্থ হলেও নিজ দেশের সমর্থকদের আশার বাণীই শুনিয়েছেন ব্রাজিলের সবচেয়ে তরুণ ফুটবলার এনদ্রিক। ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড পরের বিশ্বকাপকে লক্ষ্যে রাখার কথা বলেছেন।

চলমান কোপা আমেরিকার মতোই ২০২৬ বিশ্বকাপও হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। তবে সহ আয়োজক হিসেবে থাকছে কানাডা ও মেক্সিকোও। সেই বিশ্বকাপ নিয়েই ভাবার কথা বলেছেন এনদ্রিক।

কোপা আমেরিকা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর এনদ্রিক বলেছেন, ‘আমরা ব্রাজিলকে শীর্ষে তুলতে চাই। আমরা বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকব।’

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে বিদায় নেওয়ার পর এমনটা তখনও বলেছিলেন ব্রাজিল দলের ফুটবলাররা।

পরপর দুই আসরে ব্যর্থ হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেওয়া কঠিন সমর্থকদের মতো দলের সদস্যদেরও। অনেক চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা মিলছে না পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

এমন দুঃসহ অবস্থায় এনদ্রিক একটি অনুরোধও করেছেন দলের সমর্থকদের কাছে, ‘আমরা জানি যে এটা কঠিন মুহূর্ত। কিন্তু আমরা সব ব্রাজিলিয়ানদের কাছ থেকে সমর্থন আশা করছি।’

অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১০ পিএম
অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা
ছবি : সংগৃহীত

১৬ বারের চ্যাম্পিয়ন জন সিনা বিদায় বললেন রেসলিংকে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো তার ২২ বছরের বর্ণাঢ্য রেসলিং ক্যারিয়ারের।

শনিবার (৬ জুলাই) টরন্টোর স্কোটিয়াব্যাঙ্ক অ্যারেনায় ডব্লিউডব্লিউই এর মানি ইন দ্য ব্যাংক পে-পার-ভিউতে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী এই রেসলার।

সেখানে উপস্থিত সবাইকে অবাক করে দিয়ে জন সিনা দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দুই যুগের বেশ সময় ধরে আমি ডাব্লিউডাব্লিউই তে এবং এটাই সময়। যখন কেউ আমার নাম জানতো না, কেউ বন্ধু হতে চাইতো না তখন আমার পাশে ছিল সমর্থকরা। আমি এই সময়ে একটা জিনিস দেখেছি, শীত হোক বা গ্রীষ্ম সমর্থকরা সবসময় থাকেন।’

বিদায় বললেও ২০২৫ সালের রয়্যাল রাম্বল, এলিমিনেশন চেম্বার এবং রেসেলম্যানিয়া ৪১ এ শেষবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামবেন রেসলিং রিংয়ে।

২০০২ সালে রেসলিং ক্যারিয়ার শুরুর পর বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তবে ২০১৮ সাল থেকে নাম লেখান অভিনয় জগতেও। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিকায় কাজ করেছেন বিভিন্ন সিনেমায়। বর্তমানে অভিনয় জগতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা তার।

১৩ বার ডব্লিউডব্লিউ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পাশাপাশি তিনবার জিতেছেন ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ। ডব্লিউডব্লিউয়ের ইতিহাসে রিক ফ্লেয়ার ও জন সিনা সমান ১৬বার চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। এছাড়া ডব্লিউডব্লিউই এর অন্য সব বেল্টও জিতেছেন সিনা।

অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৫১ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া
ছবি : সংগৃহীত

একদিন আগেই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান পল্টনের দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে এসেছিলেন খেলায় অংশ নিতে। ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি, গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সেই জিয়া এলেন নিথর, প্রাণহীন হয়ে। সাদা কাফনে আবৃত জিয়াকে নামানো হলো লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি থেকে। দাবা ও ক্রীড়াঙ্গনের মানুষরা জানালেন শেষ শ্রদ্ধা। জানাজা ও বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা সারতে মিনিট চল্লিশেক সময় লাগল। এরপর জিয়াকে নিয়ে ফের ছুটে চলল লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি। চিরদিনের মতো দাবার প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে গেলেন এক কিংবদন্তি। বাংলাদেশ দাবায় অসীম শূন্যতা তৈরি করে চির আড়াল হলেন তিনি।

পরশু শুক্রবার ৪৮তম জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডে আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের সঙ্গে খেলা ছিল জিয়ার। সন্ধ্যার দিকে খেলতে খেলতেই চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নেওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু জাতীয় দাবার রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নকে আর ফেরানো যায়নি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরান ভবনে দাবা ফেডারেশনের কার্যালয়। সেখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছিল ৪৮তম জাতীয় দাবা। জিয়া খেলতে খেলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মিনিট দশেক সময়ের মধ্যে তাকে শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তার পালস পাননি। দাবাসংশ্লিষ্টদের ধারণা, জিয়ার মৃত্যু হয়েছে দাবার হলরুমেই। যেখানে চলছিল জিয়া-রাজীবসহ বিভিন্ন প্রতিযোগীর খেলা। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দাবার চৌষট্টি খোপে ঘুঁটির চাল নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন জিয়া। আদতে যার জীবনটাই ছিল দাবাময়।

২০০২ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দাবাড়ু হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব জিতেন জিয়া। এরপর আরও তিনজন মিলিয়ে বাংলাদেশে গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যাটা মাত্র ৫। গত ১৬ বছর ধরে সংখ্যাটা এই পাঁচে আটকে আছে। একই রকমভাবে ঠিক একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে আছে বাংলাদেশের সামগ্রিক দাবাও। কেন এই জায়গা থেকে দাবা আর এগোতে পারছে না, এই হাহাকারের মাঝেই সবাইকে কাঁদিয়ে জিয়ার চির প্রস্থান। জাতীয় দাবায় সর্বোচ্চবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি যিনি দাবা অলিম্পিয়াডেও বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সবচেয়ে বেশিবার।

সাদাসিধে একজন মানুষ ছিলেন জিয়া। কোনো অহম ছিল না। সব সময় ভেবেছেন কীভাবে দেশের দাবাকে এগিয়ে নেওয়া যায়। দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম জানাজায় এসে বলেন, ‘দাবা পরিবারের জন্যই একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন গ্র্যান্ডমাস্টার কমে যাওয়ায় আমাদের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতেও এখন অনেক বেগ পেতে হবে। তার অভাব পূরণ হওয়ার নয়।’ জিয়ার অবদান তুলে ধরে শাহাবুদ্দিন শামীম আরও বলেন, ‘গ্র্যান্ডমাস্টার হলেও জিয়া কখনো বেছে বেছে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত না। অনেকে আছে প্রাইজমানি কম হলে খেলত না। কিন্তু সে কখনো এভাবে চিন্তা করত না। যে প্রাইজমানিই হোক, সে খেলত। বলত, আমি খেললে অন্যরা খেলার জন্য আসবে।’

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, ‘জিয়ার অকালমৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। তার যে পবিত্র স্থান, যে স্থানকে সে ভালোবাসত, সেখান থেকেই সে চলে গেল। দাবা খেলা অবস্থাতেই মারা গেল। ভালো একজন খেলোয়াড়কে হারিয়েছি আমরা।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘তার এই চলে যাওয়া জাতীয়ভাবে অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ দাবার গ্র্যান্ডমাস্টাররাই কিন্তু লাল-সবুজের পতাকা সর্বপ্রথম বিশ্বমানচিত্রে তুলে ধরেছিল।’

জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টা দাবার বোর্ডে জিয়া যার সঙ্গে কাটিয়েছেন, সেই রাজীবও উপস্থিত ছিলেন জানাজায়। রাজীবের গাড়িতে করেই হাসপাতালে নেওয়া হয় জিয়াকে। সারাক্ষণ থমথমে লাগছিল তাকে। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল। রাজীবের চোখে জিয়াই বাংলাদেশের সেরা দাবাড়ু, ‘আমি মনে করি সে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সেরা খেলোয়াড়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আমি মনে করি তার পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভালো। বাংলাদেশের দাবা যতদিন থাকবে, সব সময়ই তাকে মনে করবে সবাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা জিয়া নিজেকে অন্য কোনো পেশায় জড়াননি। নিজে দাবা খেলা এবং কোচিং করিয়ে গেছেন। স্বামীর দাবা ক্যারিয়ারের কথা ভেবেই তার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য বিসিএস ক্যাডারে যোগদান করেননি। জিয়ার চিরবিদায়ের দিনে তার স্ত্রী-সন্তানদের আর্থিক দিকের কথা বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে। বিওএ মহাসচিব শাহেদ রেজা বলেছেন, ‘উনার পরিবারের অর্থনৈতিক যে সমস্যা আছে, এই সমস্যার পাশে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থাকবে।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীমও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহায়তার কথা জানিয়েছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে বাবার কবরে শায়িত করা হয়েছে জিয়াকে। এখন তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।