ঢাকা ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় বুঁদ যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
আপডেট: ০১ জুন ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় বুঁদ যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা
ছবি : সংগৃহীত

যেকোনো দলের কাছে প্রথম বিশ্বকাপ বিশেষ আবহ বহন করে। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে দলটির ওপর ভর করে রাজ্যের উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ। যেমনটি অনুভব করছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। দুই দল প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে। কানাডা বাছাই পর্ব পেরিয়ে এলেও সহ-আয়োজক হওয়ার সুবাদে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ উত্তেজনায় বুঁদ দল দুটি। আবার এই দুটি দলের মধ্যকার ম্যাচ দিয়েই পর্দা উঠছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। যা দুই দলের জন্য বাড়তি আনন্দের উপলক্ষ। 

বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল সাড়ে ৬টায় ডালাসের গ্রান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা।

আয়োজক হওয়ার সুবাদে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেলেও যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট দল একেবারে নবীন বা কম শক্তিশালী, তা ভাবার অবকাশ নেই। কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করে দেশটি দল গঠন করেছে বিশ্বের নানা প্রান্তের খেলোয়াড়দের দিয়ে। নিউজিল্যান্ডের কোরি অ্যান্ডারসন থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডের লিয়াম প্লাঙ্কেট, সবাই আছেন এই দলে। অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন ভারতে জন্ম নেওয়া মোনাঙ্ক প্যাটেল।

শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপের আগে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনেকটা বদলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটের পথচলা। যেখানে বাংলাদেশের মতো দেশের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো জয় তো বটেই সিরিজও জিতেছে মার্কিন শিবির। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের এটি দ্বিতীয় জয়, প্রথমটি ছিল আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যেভাবে জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র, তাতে করে যেকোনো দলের বিপক্ষে মার্কিনিরা জোর লড়াই করতে পারবে, তা সহজেই অনুমেয়। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে কানাডার বিরুদ্ধে ফেভারিট বলা যায় যুক্তরাষ্ট্রই।

হেড টু হেডে পরিষ্কারভাবে এগিয়ে থাকছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দল এখন পর্যন্ত মোকাবিলা করেছে সাতটি ম্যাচে। এর মধ্যে চারটিই জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র, দুটিতে কানাডা। একটি ম্যাচ টাই। যদিও সেই ম্যাচ নিষ্পত্তি হয়েছিল সুপার ওভারে। সেই দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জয় সব মিলিয়ে পাঁচটি। সবশেষ দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল চলতি বছরেরই এপ্রিলে। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল যুক্তরাষ্ট্র। প্রেইরি ভিউ স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও বাকি দুই ম্যাচে দাপট দেখিয়ে জয় পেয়েছিল স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র।

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নতি এক ধাপ। অবস্থান করছে ১৮তম স্থানে। সেখানে কানাডার অবস্থান ২৩তম। বিশ্বকাপের আগে হেড কোচ নিয়ে অস্বস্তিতে আছে কানাডা। খেলোয়াড়দের সঙ্গে অসন্তোষ থাকায় বরখাস্ত করা হয় লঙ্কান দ্রোনাচার্য পুবুদু দাসানায়েকেকে। যদি ছাঁটাইয়ের দুই দিন পর সিদ্ধান্ত পাল্টায় ক্রিকেট কানাডা। বিশ্বকাপ পর্যন্ত তাকেই পুনরায় বহাল রাখে তারা। বিশ্বকাপের আগে এসব পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে টিম কানাডা।

কানাডার হয়ে নেতৃত্ব দেবেন সাদ বিন জাফর। বাঁ হাতি এই স্পিনিং অলরাউন্ডার পাকিস্তান বংশোদ্ভূত। তিনিসহ স্কোয়াডের অধিকাংশই কানাডার বাইরের জন্ম নেওয়া ক্রিকেটার। অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট দলের মতোই। কানাডার দলে রয়েছে পেসার জেরেমি গর্ডন। গায়ানায় জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটারের বয়স যদিও চলে ৩৭। দলে আছে গায়ানায় জন্ম নেওয়া আরেক ব্যাটার অ্যারন জনসন। বিশ্বকাপের আগে নেপালের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে ৫৩ রানের জয় কানাডাকে আত্মবিশ্বাসকে ত্বরান্বিত করেছে।

এবার বিশ্বকাপের মূল পর্বে প্রতিবেশী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার পণ কানাডার। অধিনায়ক সাদ বিন জাফরের কণ্ঠে তেমনিই আভাস, ‘বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামব আমরা। শুরুটা ভালো করতে আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে আমাদের। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও লড়াকু মানসিকতায় আমরা পরিপূর্ণ।’ 

কানাডা এখন পর্যন্ত ৫৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। যার মধ্যে জয় ৩০টি। হার ২৫টি। দুই ম্যাচ টাই, একটি পরিত্যক্ত। চলতি বছরের পারফরম্যান্স কানাডার জন্য খুবই হতাশাজনক। চার ম্যাচ খেললেও জয়ের দেখা পায়নি তারা। টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার হিসাবে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। এই ফরম্যাটে মাত্র ২৮টি ম্যাচ খেলেছে মার্কিনিরা। কিন্তু সেখানে জয় ১৬টি, একটি করে ম্যাচ টাই ও পরিত্যক্ত। চলতি বছরের হিসাব করলে যুক্তরাষ্ট্র দারুণ ফর্মে। সাত ম্যাচের মধ্যে জয় ছয়টিতেই। হার বাকি এক ম্যাচে।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মিশন শুরু হবে ৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। তবে উদ্বোধনী ম্যাচেই থাকছে লাল-সবুজ জার্সির প্রতিনিধিত্ব। আর সেটা আম্পায়ার হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ম্যাচে থাকছেন দুজন আম্পায়ার। একজন বাংলাদেশের শরিফুদ্দৌলা সৈকত। অন্যজন ইংল্যান্ডের রিচার্ড ইলিংওর্থ।

শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তীকালীন কোচ হলেন জয়সুরিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম
শ্রীলঙ্কার অন্তবর্তীকালীন কোচ হলেন জয়সুরিয়া
ছবি : সংগৃহীত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন শ্রীলঙ্কার হেড কোচ ক্রিস সিলভারউড।  তার জায়গায় অন্তবর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের কিংবদন্তী ক্রিকেটার সনাথ জয়সুরিয়াকে।

ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজেও শ্রীলঙ্কা দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। লঙ্কান সংবাদমাধ্যমগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।  

ঘরের মাঠে আগামী শ্রীলঙ্কা জুলাই ও আগস্টে ভারতের বিপক্ষে সমান ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে তিনটি টেস্ট খেলবে লঙ্কানরা তার অধীনেই।

খেলোয়াড়ি জীবনে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানডেতে ১৩ হাজারের বেশি রান করেছেন তিনি। উইকেট নিয়েছেন তিনশ’র বেশি। টেস্টে তার নামের পাশে রানের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার রান এবং উইকেটসংখ্যা ৯৮। 

সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম
সালমান খানকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটলেন ধোনি
ছবি : সংগৃহীত

ভারত তথা গোটা ক্রিকেটবিশ্বেরই অন্যতম সেরা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্মদিন আজ। ৪৩ বছরে পা দেওয়া ভারতের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক ভাসছেন সবার শুভেচ্ছা ও শুভকামনায়। তবে মাঝরাতে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে ধোনির সঙ্গে সাক্ষাত করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলিউড তারকা সালমান খান।

মধ্যরাতে কেক কাটার সময় ধোনির স্ত্রী সাক্ষীসহ উপস্থিত ছিলেন বলিউডের এই জনপ্রিয় তারকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় জন্মদিনের কেক কেটে ধোনি প্রথমে তার স্ত্রী সাক্ষীকে এবং পরে সালমান খানকে খাইয়ে দিচ্ছেন কেক।

ইনস্টাগ্রামে ধোনির সঙ্গে ছবি পোষ্ট করে সালমান খান ্লিখেছেন, ‘হ্যাপি বার্থডে কাপ্তান সাহেব!’

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, মুকেশ আম্বানীর ছেলে অনন্ত আম্বানীর বিয়েতে যোগ দিতেই বর্তমানে মুম্বাইয়ে অবস্থান করছেন ধোনি। একই সময়ে সালমান খান ব্যস্ত রয়েছেন তার আসন্ন চলচ্চিত্র ‘সিকান্দার’ এর শুটিংয়ে। দুই তারকাকে একসঙ্গে দেখে আনন্দে ভাসছে ভক্তরাও।

এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
এনদ্রিকের লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপ
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা কোথাও সাফল্য ধরা দিচ্ছে না ব্রাজিলের ঝুলিতে। বিশ্বকাপের পর কোপারও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ব্রাজিলকে। দুই আসরেই টাইব্রেকারে হেরে বাদ পড়তে হয়েছে তাদের। উরুগুয়ের কাছে তারা হেরেছে ৪-২ ব্যবধানে।

আরও একবার ব্যর্থ হলেও নিজ দেশের সমর্থকদের আশার বাণীই শুনিয়েছেন ব্রাজিলের সবচেয়ে তরুণ ফুটবলার এনদ্রিক। ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড পরের বিশ্বকাপকে লক্ষ্যে রাখার কথা বলেছেন।

চলমান কোপা আমেরিকার মতোই ২০২৬ বিশ্বকাপও হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। তবে সহ আয়োজক হিসেবে থাকছে কানাডা ও মেক্সিকোও। সেই বিশ্বকাপ নিয়েই ভাবার কথা বলেছেন এনদ্রিক।

কোপা আমেরিকা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর এনদ্রিক বলেছেন, ‘আমরা ব্রাজিলকে শীর্ষে তুলতে চাই। আমরা বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকব।’

২০২২ কাতার বিশ্বকাপে বিদায় নেওয়ার পর এমনটা তখনও বলেছিলেন ব্রাজিল দলের ফুটবলাররা।

পরপর দুই আসরে ব্যর্থ হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেওয়া কঠিন সমর্থকদের মতো দলের সদস্যদেরও। অনেক চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা মিলছে না পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

এমন দুঃসহ অবস্থায় এনদ্রিক একটি অনুরোধও করেছেন দলের সমর্থকদের কাছে, ‘আমরা জানি যে এটা কঠিন মুহূর্ত। কিন্তু আমরা সব ব্রাজিলিয়ানদের কাছ থেকে সমর্থন আশা করছি।’

অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১০ পিএম
অবসরের ঘোষণা দিলেন জন সিনা
ছবি : সংগৃহীত

১৬ বারের চ্যাম্পিয়ন জন সিনা বিদায় বললেন রেসলিংকে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো তার ২২ বছরের বর্ণাঢ্য রেসলিং ক্যারিয়ারের।

শনিবার (৬ জুলাই) টরন্টোর স্কোটিয়াব্যাঙ্ক অ্যারেনায় ডব্লিউডব্লিউই এর মানি ইন দ্য ব্যাংক পে-পার-ভিউতে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী এই রেসলার।

সেখানে উপস্থিত সবাইকে অবাক করে দিয়ে জন সিনা দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দুই যুগের বেশ সময় ধরে আমি ডাব্লিউডাব্লিউই তে এবং এটাই সময়। যখন কেউ আমার নাম জানতো না, কেউ বন্ধু হতে চাইতো না তখন আমার পাশে ছিল সমর্থকরা। আমি এই সময়ে একটা জিনিস দেখেছি, শীত হোক বা গ্রীষ্ম সমর্থকরা সবসময় থাকেন।’

বিদায় বললেও ২০২৫ সালের রয়্যাল রাম্বল, এলিমিনেশন চেম্বার এবং রেসেলম্যানিয়া ৪১ এ শেষবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামবেন রেসলিং রিংয়ে।

২০০২ সালে রেসলিং ক্যারিয়ার শুরুর পর বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তবে ২০১৮ সাল থেকে নাম লেখান অভিনয় জগতেও। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিকায় কাজ করেছেন বিভিন্ন সিনেমায়। বর্তমানে অভিনয় জগতেই সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা তার।

১৩ বার ডব্লিউডব্লিউ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পাশাপাশি তিনবার জিতেছেন ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ। ডব্লিউডব্লিউয়ের ইতিহাসে রিক ফ্লেয়ার ও জন সিনা সমান ১৬বার চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। এছাড়া ডব্লিউডব্লিউই এর অন্য সব বেল্টও জিতেছেন সিনা।

অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৫১ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
অসীম শূন্যতা রেখে চির আড়ালে জিয়া
ছবি : সংগৃহীত

একদিন আগেই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান পল্টনের দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে এসেছিলেন খেলায় অংশ নিতে। ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি, গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সেই জিয়া এলেন নিথর, প্রাণহীন হয়ে। সাদা কাফনে আবৃত জিয়াকে নামানো হলো লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি থেকে। দাবা ও ক্রীড়াঙ্গনের মানুষরা জানালেন শেষ শ্রদ্ধা। জানাজা ও বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা সারতে মিনিট চল্লিশেক সময় লাগল। এরপর জিয়াকে নিয়ে ফের ছুটে চলল লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি। চিরদিনের মতো দাবার প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে গেলেন এক কিংবদন্তি। বাংলাদেশ দাবায় অসীম শূন্যতা তৈরি করে চির আড়াল হলেন তিনি।

পরশু শুক্রবার ৪৮তম জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডে আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের সঙ্গে খেলা ছিল জিয়ার। সন্ধ্যার দিকে খেলতে খেলতেই চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নেওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু জাতীয় দাবার রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নকে আর ফেরানো যায়নি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরান ভবনে দাবা ফেডারেশনের কার্যালয়। সেখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছিল ৪৮তম জাতীয় দাবা। জিয়া খেলতে খেলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মিনিট দশেক সময়ের মধ্যে তাকে শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তার পালস পাননি। দাবাসংশ্লিষ্টদের ধারণা, জিয়ার মৃত্যু হয়েছে দাবার হলরুমেই। যেখানে চলছিল জিয়া-রাজীবসহ বিভিন্ন প্রতিযোগীর খেলা। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দাবার চৌষট্টি খোপে ঘুঁটির চাল নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন জিয়া। আদতে যার জীবনটাই ছিল দাবাময়।

২০০২ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দাবাড়ু হিসেবে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব জিতেন জিয়া। এরপর আরও তিনজন মিলিয়ে বাংলাদেশে গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যাটা মাত্র ৫। গত ১৬ বছর ধরে সংখ্যাটা এই পাঁচে আটকে আছে। একই রকমভাবে ঠিক একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে আছে বাংলাদেশের সামগ্রিক দাবাও। কেন এই জায়গা থেকে দাবা আর এগোতে পারছে না, এই হাহাকারের মাঝেই সবাইকে কাঁদিয়ে জিয়ার চির প্রস্থান। জাতীয় দাবায় সর্বোচ্চবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি যিনি দাবা অলিম্পিয়াডেও বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সবচেয়ে বেশিবার।

সাদাসিধে একজন মানুষ ছিলেন জিয়া। কোনো অহম ছিল না। সব সময় ভেবেছেন কীভাবে দেশের দাবাকে এগিয়ে নেওয়া যায়। দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম জানাজায় এসে বলেন, ‘দাবা পরিবারের জন্যই একটা অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন গ্র্যান্ডমাস্টার কমে যাওয়ায় আমাদের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতেও এখন অনেক বেগ পেতে হবে। তার অভাব পূরণ হওয়ার নয়।’ জিয়ার অবদান তুলে ধরে শাহাবুদ্দিন শামীম আরও বলেন, ‘গ্র্যান্ডমাস্টার হলেও জিয়া কখনো বেছে বেছে প্রতিযোগিতায় অংশ নিত না। অনেকে আছে প্রাইজমানি কম হলে খেলত না। কিন্তু সে কখনো এভাবে চিন্তা করত না। যে প্রাইজমানিই হোক, সে খেলত। বলত, আমি খেললে অন্যরা খেলার জন্য আসবে।’

বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, ‘জিয়ার অকালমৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। তার যে পবিত্র স্থান, যে স্থানকে সে ভালোবাসত, সেখান থেকেই সে চলে গেল। দাবা খেলা অবস্থাতেই মারা গেল। ভালো একজন খেলোয়াড়কে হারিয়েছি আমরা।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘তার এই চলে যাওয়া জাতীয়ভাবে অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ দাবার গ্র্যান্ডমাস্টাররাই কিন্তু লাল-সবুজের পতাকা সর্বপ্রথম বিশ্বমানচিত্রে তুলে ধরেছিল।’

জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টা দাবার বোর্ডে জিয়া যার সঙ্গে কাটিয়েছেন, সেই রাজীবও উপস্থিত ছিলেন জানাজায়। রাজীবের গাড়িতে করেই হাসপাতালে নেওয়া হয় জিয়াকে। সারাক্ষণ থমথমে লাগছিল তাকে। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছিল। রাজীবের চোখে জিয়াই বাংলাদেশের সেরা দাবাড়ু, ‘আমি মনে করি সে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত সেরা খেলোয়াড়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আমি মনে করি তার পারফরম্যান্স সবচেয়ে ভালো। বাংলাদেশের দাবা যতদিন থাকবে, সব সময়ই তাকে মনে করবে সবাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা জিয়া নিজেকে অন্য কোনো পেশায় জড়াননি। নিজে দাবা খেলা এবং কোচিং করিয়ে গেছেন। স্বামীর দাবা ক্যারিয়ারের কথা ভেবেই তার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য বিসিএস ক্যাডারে যোগদান করেননি। জিয়ার চিরবিদায়ের দিনে তার স্ত্রী-সন্তানদের আর্থিক দিকের কথা বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে। বিওএ মহাসচিব শাহেদ রেজা বলেছেন, ‘উনার পরিবারের অর্থনৈতিক যে সমস্যা আছে, এই সমস্যার পাশে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থাকবে।’ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীমও ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহায়তার কথা জানিয়েছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে বাবার কবরে শায়িত করা হয়েছে জিয়াকে। এখন তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।