![রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় বুঁদ যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা](uploads/2024/06/01/Preview-Canada-vs-Usa-Chanc-1717236046.jpg)
যেকোনো দলের কাছে প্রথম বিশ্বকাপ বিশেষ আবহ বহন করে। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে দলটির ওপর ভর করে রাজ্যের উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ। যেমনটি অনুভব করছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। দুই দল প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে। কানাডা বাছাই পর্ব পেরিয়ে এলেও সহ-আয়োজক হওয়ার সুবাদে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ উত্তেজনায় বুঁদ দল দুটি। আবার এই দুটি দলের মধ্যকার ম্যাচ দিয়েই পর্দা উঠছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। যা দুই দলের জন্য বাড়তি আনন্দের উপলক্ষ।
বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল সাড়ে ৬টায় ডালাসের গ্রান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা।
আয়োজক হওয়ার সুবাদে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেলেও যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট দল একেবারে নবীন বা কম শক্তিশালী, তা ভাবার অবকাশ নেই। কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করে দেশটি দল গঠন করেছে বিশ্বের নানা প্রান্তের খেলোয়াড়দের দিয়ে। নিউজিল্যান্ডের কোরি অ্যান্ডারসন থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডের লিয়াম প্লাঙ্কেট, সবাই আছেন এই দলে। অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন ভারতে জন্ম নেওয়া মোনাঙ্ক প্যাটেল।
শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপের আগে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনেকটা বদলে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটের পথচলা। যেখানে বাংলাদেশের মতো দেশের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো জয় তো বটেই সিরিজও জিতেছে মার্কিন শিবির। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের এটি দ্বিতীয় জয়, প্রথমটি ছিল আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যেভাবে জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র, তাতে করে যেকোনো দলের বিপক্ষে মার্কিনিরা জোর লড়াই করতে পারবে, তা সহজেই অনুমেয়। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে কানাডার বিরুদ্ধে ফেভারিট বলা যায় যুক্তরাষ্ট্রই।
হেড টু হেডে পরিষ্কারভাবে এগিয়ে থাকছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দল এখন পর্যন্ত মোকাবিলা করেছে সাতটি ম্যাচে। এর মধ্যে চারটিই জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র, দুটিতে কানাডা। একটি ম্যাচ টাই। যদিও সেই ম্যাচ নিষ্পত্তি হয়েছিল সুপার ওভারে। সেই দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জয় সব মিলিয়ে পাঁচটি। সবশেষ দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল চলতি বছরেরই এপ্রিলে। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল যুক্তরাষ্ট্র। প্রেইরি ভিউ স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও বাকি দুই ম্যাচে দাপট দেখিয়ে জয় পেয়েছিল স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র।
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নতি এক ধাপ। অবস্থান করছে ১৮তম স্থানে। সেখানে কানাডার অবস্থান ২৩তম। বিশ্বকাপের আগে হেড কোচ নিয়ে অস্বস্তিতে আছে কানাডা। খেলোয়াড়দের সঙ্গে অসন্তোষ থাকায় বরখাস্ত করা হয় লঙ্কান দ্রোনাচার্য পুবুদু দাসানায়েকেকে। যদি ছাঁটাইয়ের দুই দিন পর সিদ্ধান্ত পাল্টায় ক্রিকেট কানাডা। বিশ্বকাপ পর্যন্ত তাকেই পুনরায় বহাল রাখে তারা। বিশ্বকাপের আগে এসব পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে টিম কানাডা।
কানাডার হয়ে নেতৃত্ব দেবেন সাদ বিন জাফর। বাঁ হাতি এই স্পিনিং অলরাউন্ডার পাকিস্তান বংশোদ্ভূত। তিনিসহ স্কোয়াডের অধিকাংশই কানাডার বাইরের জন্ম নেওয়া ক্রিকেটার। অনেকটা যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট দলের মতোই। কানাডার দলে রয়েছে পেসার জেরেমি গর্ডন। গায়ানায় জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটারের বয়স যদিও চলে ৩৭। দলে আছে গায়ানায় জন্ম নেওয়া আরেক ব্যাটার অ্যারন জনসন। বিশ্বকাপের আগে নেপালের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে ৫৩ রানের জয় কানাডাকে আত্মবিশ্বাসকে ত্বরান্বিত করেছে।
এবার বিশ্বকাপের মূল পর্বে প্রতিবেশী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার পণ কানাডার। অধিনায়ক সাদ বিন জাফরের কণ্ঠে তেমনিই আভাস, ‘বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামব আমরা। শুরুটা ভালো করতে আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে আমাদের। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও লড়াকু মানসিকতায় আমরা পরিপূর্ণ।’
কানাডা এখন পর্যন্ত ৫৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। যার মধ্যে জয় ৩০টি। হার ২৫টি। দুই ম্যাচ টাই, একটি পরিত্যক্ত। চলতি বছরের পারফরম্যান্স কানাডার জন্য খুবই হতাশাজনক। চার ম্যাচ খেললেও জয়ের দেখা পায়নি তারা। টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার হিসাবে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। এই ফরম্যাটে মাত্র ২৮টি ম্যাচ খেলেছে মার্কিনিরা। কিন্তু সেখানে জয় ১৬টি, একটি করে ম্যাচ টাই ও পরিত্যক্ত। চলতি বছরের হিসাব করলে যুক্তরাষ্ট্র দারুণ ফর্মে। সাত ম্যাচের মধ্যে জয় ছয়টিতেই। হার বাকি এক ম্যাচে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মিশন শুরু হবে ৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। তবে উদ্বোধনী ম্যাচেই থাকছে লাল-সবুজ জার্সির প্রতিনিধিত্ব। আর সেটা আম্পায়ার হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ম্যাচে থাকছেন দুজন আম্পায়ার। একজন বাংলাদেশের শরিফুদ্দৌলা সৈকত। অন্যজন ইংল্যান্ডের রিচার্ড ইলিংওর্থ।