ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

পাহাড়ে পিলারবিহীন মসজিদ

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৪ এএম
আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪, ১১:৫৪ এএম
পাহাড়ে পিলারবিহীন মসজিদ
রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নে পাহাড়ের ঢালে নির্মিত হওয়া পিলারবিহীন মসজিদ/ খবরের কাগজ

চারদিকে ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়-টিলা। যত দূর চোখ যায় কেবল সবুজের সমারোহ। প্রকৃতি এখানে একেবারেই শান্ত স্নিগ্ধ। সবুজে মোড়ানো এই জনপদে অর্ধশতাব্দী আগে গোড়াপত্তন হয় পিলারবিহীন নান্দনিক মসজিদের। যেখান থেকে নিয়ম করে দিনে পাঁচবার মুয়াজ্জিনের সুললিত কণ্ঠে উচ্চারিত হয় মহান আল্লাহর মহিমা আজান।

আনুষ্ঠানিক নাম কর্ণফুলী পেপার মিল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ বা কেপিএম মসজিদ। তবে স্থানীয়দের কাছে এর পরিচিতি ‘বড় মসজিদ’ হিসেবেই। মসজিদটির ভিত্তি স্থাপন হয়েছিল ১৯৬৭ সালের ৮ ডিসেম্বর। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন পাকিস্তানের দাউদ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আহমেদ দাউদ এইচ কে-এর মা হাজীয়ানী হানিফা বাঈ। মূলত ১৯৫৯ সালে দাউদ গ্রুপ দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাগজ কল কেপিএমের দায়িত্ব নেওয়ার পর মসজিদটি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের কেপিএম বারঘনিয়া আবাসিক এলাকায় পাহাড়ের ঢালে নির্মিত হয়েছে মসজিদটি। নজরকাড়া বিশেষ স্থাপত্যশৈলীর এই মসজিদটি কেপিএমের শ্রমিক কর্মচারীদের সুবিধার্থে নির্মিত হয়। শুরু থেকেই এই জনপদে ইসলামের আলো জ্বালিয়ে রেখেছে মসজিদটি। মসজিদটির স্থাপনাশৈলী এখনো বিমোহিত করে চলেছে অগণিত মানুষকে। এটি এখন স্থানীয়দের গর্ব আর মর্যাদার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

মসজিদটির নির্মাণশৈলীতে রয়েছে মুসলিম ঐতিহ্যের বিভিন্ন নিদর্শন। ৮ হাজার ৪০০ বর্গফুট আয়তনের এই মসজিদের দৈর্ঘ্য ১২০ ফুট আর প্রস্থে ৭০ ফুট। একসঙ্গে ১ হাজার ৭০০ মুসল্লি সালাত আদায় করতে পারেন এই মসজিদে। 

তবে মসজিদের মূল আকর্ষণ হচ্ছে চার দেয়াল ছাড়া মাঝে আর কোনো পিলার নেই। বিশাল এই মসজিদের ছাদ ধরে রেখেছে চারপাশের দেয়াল। মাঝে কোথাও পিলার না থাকায় মুসল্লিরা যেখানেই দাঁড়ান না কেন প্রত্যেকেই খতিব কিংবা ইমামকে বাধাহীনভাবে দেখতে পান।

সাধারণত ভবনের ছাদ সমান নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এখানে পূর্ব ও পশ্চিমের দেয়াল থেকে আড়াআড়িভাবে ঢেউটিন আকৃতিতে ৯টি বিম দিয়ে ছাদ নির্মাণ করা হয়েছে। ধারণা করা হয় ছাদের চাপ কমাতেই তখনকার প্রকৌশলীরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। ফলে ছাদের জন্য আর বাড়তি স্তম্ভের প্রয়োজন পড়েনি। 

মসজিদ নির্মাণের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাকিস্তানের করাচি থেকে আনা হয়েছিল মসজিদের নির্মাণসমাগ্রী। আর ভারতের প্রকৌশলীরা এর নির্মাণকাজ করেছেন। নির্মাণকাজ শেষ করতে সময় লেগেছে পুরো এক বছর।

প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন বশির খান বলেন, মসজিদটি দাউদ গ্রুপ তৈরি করেছে। করাচি থেকে জাহাজে করে নির্মাণসামগ্রী আনা হয়। বাংলাদেশের কোনো সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। অবশ্য এখন সংস্কারের প্রয়োজনে বিভিন্ন সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।

সমজিদের মুসল্লি মোসলেহ উদ্দিন বলেন, মসজিদে টিনের মতো করে ঢেউ করে এই ছাদটা তৈরি করা হয়েছে। মাঝখানে কোনো পিলার নেই। এটাই একটা সৌন্দর্য। অনেক লোক দূর-দূরান্ত থেকে এই মসজিদ দেখতে আসেন। বিশেষ করে তাবলিগের লোকেরা আসলে তারা ফিরে গিয়ে প্রচার করেন। এতে আরও লোক বেড়ে যায়। আরেক মুসল্লি মো. খলিলুর রহমান বলেন, খতিব বা ইমাম সাহেব যে দোয়া কালাম বলেন, তা আমরা মসজিদের যেকোনো প্রান্ত থেকেই শুনতে পাই। 

মূল মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে ৮টি দরজা। কাঠের তৈরি এসব দরজায় এখনো ঝুলছে কাঠের হাতল। মোজাইক করা মেঝে, বিশেষ নকশা করা দেয়াল, একটি গম্বুজ, মিম্বর ও ইমামের জন্য কাঠের চেয়ার রয়েছে ভেতরে। উত্তর দক্ষিণে সাতটি করে ও পশ্চিমে রয়েছে আটটি গম্বুজ আকৃতির দৃষ্টিনন্দন জানালা। এতে পর্যাপ্ত আলো ও প্রাকৃতিক বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকায় ভেতরটা থাকে বেশ শীতল ও আলোময়। 

মসজিদের উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব দিক দিয়ে রয়েছে বর্গাকৃতির তিনটি ভিন্ন প্রবেশপথ। এসব প্রবেশ পথের প্রতিটির ওপরে ছাদে রয়েছে চারটি করে অনুচ্চ মিনার। যেখানে স্থাপন করা হয়েছে মাইক। এদের মাঝে রয়েছে মাঝারি ও ছোট আকৃতির বেশ কয়েকটি মিনারও। এ ছাড়া ছাদের তিন দিকেই গম্বুজ আকৃতির ফলক মসজিদের বাহ্যিক সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণ।

স্বাধীনতার পর কেপিএম কর্তৃপক্ষ মসজিদটির পরিচালনার দায়িত্ব পায়। দীর্ঘ সময় স্বাভাবিকভাবে চললেও কালের বিবর্তনে এখন জৌলুস হারাতে বসেছে খ্যাতি আর গর্বের এই মসজিদ। বর্তমানে ঋণগ্রস্ত কেপিএমের প্রভাব পড়েছে মসজিদেও। এখন কেপিএম ও স্থানীয়দের দানেই নির্বাহ করা হচ্ছে মসজিদটির ব্যয়ভার। মসজিদটির স্বাতন্ত্র অক্ষুণ্ন রেখে সংস্কার ও মসজিদটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

মসজিদের পেশ ইমাম ও খতীব, এ টি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আর্থিক সংগতি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মসজিদটির সংস্কার হয়নি। রং ওঠে গিয়ে দেয়ালে শ্যাওলা জমেছে। অনেক স্থানেই দেয়ালে ফাটল ও ভাঙন ধরেছে। বর্ষায় ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে মেঝেতে। বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে ঝরে পড়ে সিলিং। মেঝেতে পানি জমায় সালাত আদায়ে ভোগান্তিতে পড়েন মুসল্লিরা। খসে পড়া সিলিং আর মেঝের পানিতে পিছলে আহত হয়েছেন অনেক মুসল্লি।’

নরসিংদীতে পোশাকশ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
নরসিংদীতে পোশাকশ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
ছবি : খবরের কাগজ

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় তিন মাসের ওভারটাইম ও বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাকশ্রমিকরা। ওই সময় তারা কাঠের আসবাবপত্র দিয়ে সড়কের ওপর অগ্নিসংযোগ করেন। 

রবিবার (৩০ জুন) ৩ ঘণ্টাব্যাপী কারারদী এলাকায় আদুরী গার্মেন্টসের শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ করেন। এদিকে অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই প্রান্তে সাত কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

শ্রমিকরা জানান, তিন মাস ধরে ওভারটাইমের বকেয়া পরিশোধ করছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঈদের আগে থেকে দিচ্ছি দিচ্ছি করছে কর্তৃপক্ষ। তবে তা এখনো পরিশোধ করেনি। বকেয়া পরিশোধের দাবি করলে নানা অজুহাতে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়। এসবের প্রতিবাদে রবিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির সামনের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। 

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা করছি।’

পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে ২ ব্যবসায়ী আহত

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে ২ ব্যবসায়ী আহত
ইয়াকুব আলী (বাঁয়ে) ও নুরুল আবসার। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে পঙ্গু হতে বসেছেন ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী। একই ঘটনায় আহত হন নুরুল আবসার (৪৩) নামের আরেক দোকানি। 

গত ২৪ জুন বেলা ২টার দিকে হাটহাজারীর মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হন তারা। এরই মধ্যে ইয়াকুব আলীর পায়ে গুরুতর জখম হয়। অন্যদিকে নুরুল আবসার হাতে আঘাত পান। 

মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে টেণ্ডলেরঘাটা বাজারে ইয়াকুব আলীর একটি কুলিং কর্নার রয়েছে। অন্যদিকে নুরুল আবসার করতেন মুরগির ব্যবসা। 

গুলিতে আহত হওয়ার পর দুই দিন চিকিৎসা শেষে গত ২৬ জুন দুজনই হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন। ইয়াকুব আলীর বাড়ি বুড়িশ্চর ইউনিয়নের তালুকদারপাড়ায়। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলের বয়স ১৫ বছর। পুরো পরিবার চলে ইয়াকুব আলীর আয়ে। 

বাড়িফেরার পর ইয়াকুব আলী বলেন, ‘যখন আমার পায়ে গুলি লাগে, আমি ব্যথায় চিৎকার করতে থাকি। চিৎকার শুনে বাজারের লোকজন এগিয়ে আসেন। তারাই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ডাক্তার আমাকে কমপক্ষে ছয় মাস বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। আমি এখন পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে আছি। অথচ আমি ছাড়া সংসারে আয়ের কোনো লোক নেই। আমার বড় ছেলেরও ব্যবসা সামলানোর মতো বয়স বা সামর্থ্য নেই। সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে আমি চরম দুশ্চিন্তায় সময় পার করছি।’ 

এদিকে ইয়াকুব আলীর পাশেই আহত আরেক ব্যবসায়ী নুরুল আবসারের বাড়ি। তার তিন সন্তান। বড় ছেলের বয়স আট বছর।

নুরুল আবসার বলেন, ‘আমার ডান হাতে দুটি গুলি লেগেছে। বেশ ক্ষত হয়েছে। চিকিৎসা নিয়েছি। পুরোপুরি সুস্থ হতে ছয় মাস লাগতে পারে। আমি মুরগি বিক্রি করে সংসার চালাতাম। এখন দোকান বন্ধ। পরিবার কীভাবে চালাব সেটা ভাবলেই বুক কেঁপে উঠছে।’ 

গত ২৪ জুন বেলা ২টার দিকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শটগান পুলিশ ফাঁড়িতে এনে গুলি ছোড়ার কাজ পরীক্ষা করছিলেন এক কনস্টেবল ও ব্যাংকের এক নিরাপত্তা কর্মী। তাদের আকাশের দিকে ছোড়া গুলিতে আহত হন ওই দুই ব্যবসায়ী। এদিকে ঘটনাটি তদন্তে গত ২৬ জুন কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ। গুলিবিদ্ধ দুই দোকানির চিকিৎসার ব্যয় পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।
 
মদুনাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মহিউদ্দিন সুমন জানান, প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আহত দুই ব্যক্তিকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

চোরকে বাড়িতে ডেকে হত্যার শিকার গৃহবধু!

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
চোরকে বাড়িতে ডেকে হত্যার শিকার গৃহবধু!
ছবি: খবরের কাগজ

নাটোরের লালপুর উপজেলার কামারহাটি তেনাচুরা গ্রামের দুবাই প্রবাসী সোহানুর রহমান শুভ'র স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের শিকার শিউলি খাতুন (২৩) নিজেই তার হত্যাকারীকে বাড়ির ঠিকানা দেয় বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম। আসামি আগে থেকেই চোর। তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা রয়েছে। হত্যাকারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয় ঢাকার গাজীপুর কোনাবাড়িতে।

এসপির দাবি, কোনাবাড়িতে শিউলীর বোন ভাড়া বাসায় থেকে গার্মেন্টসে কাজ করেন। পাশের রুমেই ভাড়া থেকে এক হোটেলে কাজ করতেন আসামি। বেনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা। শিউলী মেবাইল ফোনে ওই হত্যাকারীকে বাড়ির ঠিকানা দেয়। ট্রেনে লালপুরের আব্দুলপুর স্টেশনে নেমে অটোরিক্সাযোগে শিউলীর বাড়িতে পৌঁছে আসামি।

রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি তরিকুল ইসলাম আরও জানান, ভিকটিম আনুমানিক একমাস আগে তার বোন সোনালী খাতুন এর ভাড়া বাসা গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ী বেড়াতে গেলে সেখানে আসামির সঙ্গে পরিচয় এবং পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৬ জুন  আসামি জাকির হোসেন পরকীয়া প্রেমের সূত্রে গাজীপুর থেকে ট্রেনে ভিকটিমের বাড়িতে মামা পরিচয় দিয়ে বেড়াতে আসে। ভিকটিমের সঙ্গে টাকা পয়সা এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ২৯ জুন ভোর ৫টার দিকে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য হলে আসামি ভিকটিমের গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ও বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মো. রফিকুল ইসলাম (৩৪) লালপুর থানায় এজাহার দায়ের করলে মামলা হয়।

গতরাতে বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা ইউনিয়নের মাড়িয়া এলাকায় স্থানীয়দের সহায়তায়,আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় আসামির কাছ থেকে ভিকটিমের মোবাইল ফোন, ২ জোড়া রূপার নুপুর, ১টি স্বর্ণের চেইন, ১টি স্বর্ণের নাকফুল, ২টি রূপার আংটি ও ১ জোড়া কানের দুল উদ্ধার করাহয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

আসামি জাকির হোসেন (৩৫) সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার গচিয়া গ্রামের বিলাল মিয়ার ছেলে। সে বিবাহিত। এর আগে আসামির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে চট্রগ্রামে একটি মামলা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে এসপি জানান, ভুক্তভোগীর বাবার বাড়ি দিনাজপুর, স্বামীর বাড়ি নাটোর। আর আসামির বাড়ি সুনামগঞ্জ। প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগীর সঙ্গে আসামির আত্মীয়তার সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে কী কারণে শিউলী তাকে মামা পরিচয় দিয়েছে তা তদন্তের পরই জানা যাবে।

লালপুর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ এবং আইও হিমাদ্রি হালদার জানান আসামিকে কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে।

কামাল মৃধা/এমএ/

কবরস্থানে মিলল ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম
কবরস্থানে মিলল ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি
জব্দকৃত ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি। ছবি : খবরের কাগজ

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের রূপনগর গ্রামের কবরস্থান থেকে ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়েছে। 

রবিবার (৩০ জুন) বিকেলে বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের সাকিন বেরবেরী হাওরের কবরস্থান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এই চিনি জব্দ করা হয়।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সাকিন বেরবেরী হাওরের পাশের একটি কবরস্থানে অভিযান চালানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কবরস্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ১০০ বস্তা চিনি পাওয়া যায়। তবে অভিযানের সময় কাউকে পাওয়া যায়নি।

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন চিনি জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল
পায়ের আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল। ছবি : খবরের কাগজ

শারীরিকভাবে সক্ষম দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর বাবা-মা যেখানে সন্তানকে পড়ালেখায় মনোযোগী করতে ব্যর্থ হয়ে হতাশায় ভুগছেন, তাদের অনুপ্রেরণা হতে পারে নাটোরের সিংড়া উপজেলার প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা। সে সিংড়া পৌর শহরের শোলাকুড়া মহল্লার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে ও শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে এ বছর আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে। 

রবিবার (৩০ জুন) দেশব্যাপী শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সে আলিম পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছে নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড় এলাকায় আল মাদ্রাসাতুল জমহুরিয়া কেন্দ্রে।

সরেজমিনে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের শিক্ষার্থীরা হাতে কলম নিয়ে প্রশ্নের উত্তর লিখতে ব্যস্ত। পাশেই সিটবেঞ্চে বসে বাঁ পায়ের আঙুলে কলম ধরে উত্তর লিখছে রাসেল মৃধা। দেখা যায়, রাসেলের দুই হাত নেই। নেই ডান পা-ও। বাঁ পা থাকলেও তা স্বাভাবিক আকারের চেয়ে ছোট।

২০২২ সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩.৮৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় রাসেল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভাব-অনটনের মধ্যেও প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধার লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে খুশি তার বাবা। তাইতো শত অভাব অনটনের মধ্যেও তারা রাসেলকে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সহায়তা করে যাচ্ছেন।

রাসেল মৃধার বাবা আব্দুর রহিম মৃধা বলেন, দিনমজুরি করে রাসেলকে পড়াশোনা করাচ্ছি। লেখাপড়া শিখে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে এমন আশা রয়েছে। শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোতাররফ হোসেন বলেন, বিগত পরীক্ষাগুলোতেও সে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেছে। রাসেল এবারও ভালো ফল অর্জন করবে বলে আমরা আশাবাদী।