দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাবদাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে রাঙামাটির পর্যটনেও। পর্যটকের উপস্থিতি কমে গেছে চোখে পড়ার মতো। এ কারণে সাময়িকভাবে কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়েছে স্থানীয় অর্থনীতিও। মূলত হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ (খাবারের দোকান), টেক্সটাইল (পাহাড়িদের তৈরি কাপড়), নৌযান এবং বিনোদন কেন্দ্রকে (ঝুলন্ত সেতুসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান) ঘিরেই রাঙামাটির পর্যটন খাত। এসব খাত থেকে স্বাভাবিক সময়ে দিনে কোটি টাকার বাণিজ্য হয়।
প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক যান্ত্রিক শহুরে ক্লান্তি দূর করতে ছুটে আসেন রাঙামাটি। বিনোদনের খোঁজে পাহাড়ে আসা পর্যটকদের আনন্দ আর উচ্ছ্বলতা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেয় জীবনের নানা জটিলতা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের ভিড় থাকে। ঈদসহ টানা ছুটিতে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় কয়েকগুণ। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে গরমের তীব্রতা বাড়ায় ভাটা পড়েছে পর্যটকের আগমনে।
বছরে কয়েক লাখ দেশি ও বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে আসেন রাঙামাটি। তবে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। রয়েছে ৭২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম সাধু পানির কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই লেকের নীল জলরাশি। এর সঙ্গে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ পাহাড়, রয়েছে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে উচ্ছ্বল ঝরনাধারা। এ ছাড়া শহরে পুলিশের পলওয়েল পার্ক, সেনাবাহিনীর আরণ্যক, ডিস বাংলো, আসাম বস্তি সড়ক, সুভলং ঝরনা, সুখী নীলগঞ্জ ও রাজবন বিহার এলাকায় ভিড় জমান বেড়াতে আসা পর্যটকরা। এসময়ের ভ্রমণপিপাসুদের সাজেক আর কাপ্তাইয়েও মুখর থাকে পর্যটকদের পদচারণায়।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু এলাকায় পর্যটকের উপস্থিতি খুবই কম। ঝুলন্ত সেতুর টিকিট কাউন্টারে কর্মরত মো. সোহেল বলেন, ‘কয়েক দিনের প্রচণ্ড গরমে পর্যটকরা আসছেন না। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে যে পরিমাণ পর্যটকের উপস্থিতি হয়, এখন তার অর্ধেকেরও কম হচ্ছে।
শহরের আবাসিক হোটেল ইফশার ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের আমেজ এখনো শেষ হয়নি। অনেকেই নিরিবিলি এই সময়টাতে ভ্রমণে আসেন। কিন্তু এখন তীব্র গরমের কারণে পর্যটকরা বের হচ্ছেন না। একেবারেই কমে গেছে পর্যটকদের উপস্থিতি। ব্যবসায়ও মন্দা চলছে।’