ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

রাঙামাটিতে ফের চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়া!

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০২ এএম
আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০২ এএম
রাঙামাটিতে ফের চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়া!

এক সময় ম্যালেরিয়াকে চিহ্নিত করা হতো মহামারি হিসেবে। ম্যালেরিয়াপ্রবণ দেশের পার্বত্য অঞ্চলকে মনে করা হতো ‘মৃত্যুকূপ’। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাণহানি শূন্যে নেমে আসায় সেই ধারণা বদলেছে। বিশেষ করে ২০১৬ সালের পর থেকে ম্যালেরিয়ায় কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি রাঙামাটি জেলায়। ম্যালেরিয়া নির্মূলে সরকারি ও বেসরকারি তরফ থেকে দ্রুত শনাক্ত ও চিকিৎসা দেওয়া আর কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণের কারণে এমন সফলতা এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

সর্বশেষ গত তিন বছরের পরিসংখ্যান বলছে, জেলায় নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়া। প্রাণহানি না থাকলেও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। এর মধ্যে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত জেলায় ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪৩৭ জন। বিশেষ করে জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই সময়টায় কয়েক গুণ বেড়ে যায় আক্রান্তের সংখ্যা। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত সন্ধ্যার পর কামড়ায় ম্যালেরিয়াবাহী মশা। তবে পাহাড়ি এলাকার চেয়ে সমতল এলাকার বাসিন্দারাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন ম্যালেরিয়ায়। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বিশেষত সমতলে পানি জমার সুযোগ বেশি হওয়ায় মশার উৎপাদনও হয় বেশি। এ কারণেই ম্যালেরিয়ায় বেশি আক্রান্ত হন বাঙালিরা। আবার বাইরে বিচরণ কম থাকায় পুরুষদের চেয়ে এ রোগে আক্রান্ত কম হন নারীরা। অন্যদিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষদের ভালো শারীরিক গঠন, খাদ্যাভ্যাস ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় তারা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন কম। পাহাড়ের ওপর পানি জমে থাকার সুযোগ কম থাকায় মশার বংশবিস্তারও কম হয়। 

রাঙামাটি জেলায় গত দুই দশকে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল ২০০২ সালে। ওই বছর ম্যালেরিয়ায় মারা যান ১৪৩ রোগী। তবে মৃত্যুর এই সংখ্যা এর ১০ বছর পর ২০১২ সালে নেমে আসে একজনে। ২০১৩ সালে দুজন মারা যান। কিন্তু ২০১৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত জেলায় ম্যালেরিয়ায় কারও মৃত্যু হয়নি। 

রাঙামাটি জেলায় ম্যালেরিয়া নির্মূলে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক যৌথভাবে কাজ করছে। এর মধ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্তদের দ্রুত শনাক্ত ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারকে কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। ২০২২ সালে জেলায় ৭২ হাজার ৭৯০টি এবং ২০২৩ সালে ৫ লাখ ৬৪ হাজার ১২০টি কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ করা হয়েছে।

২০২২ সালে জেলায় জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৪৬৩ জনের। ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২২০ জন। এদের মধ্যে মাইক্রোস্কপিক টেস্ট (হাসপাতালে পরীক্ষা) করিয়েছেন ৩৭ হাজার ৮৪৬ জন। ম্যালেরিয়া কিট দিয়ে পরীক্ষা করিয়েছেন ১ লাখ ২১ হাজার ৬১৭ জন। 

গত বছর ২০২৩ সালে ২ লাখ ১৮ হাজার ৬১১ জনের ম্যালেরিয়া পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৭১৪ জন। এদের মধ্যে মাইক্রোস্কপিক টেস্ট (হাসপাতালে পরীক্ষা) করিয়েছেন ২৫ হাজার ৫২৩ জন। ম্যালেরিয়া কিট দিয়ে পরীক্ষা করিয়েছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮ জন।
 
সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৭৯০ জনের। এদের মধ্যে মাইক্রোস্কপিক টেস্ট করিয়েছেন ৪ হাজার ৪৪০ জন। ম্যালেরিয়া কিট দিয়ে পরীক্ষা করিয়েছেন ৩২ হাজার ৩৫০ জন। ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৫০৩ জন। এদের মধ্যে জানুয়ারিতে ৩০৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১২৫ এবং মার্চে ৭০ জন আক্রান্ত হন।

প্রতিষ্ঠানটির রাঙামাটি জেলা কো-অর্ডিনেটর মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জেলার ১০ উপজেলায় ব্র্যাকের প্রশিক্ষিত ১ হাজার ৬০০ জন স্বাস্থ্যসেবিকা ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। তারা প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি পাড়ায় কাজ করছেন। রাঙামাটিতে ব্র্যাক ম্যালেরিয়া নির্মূলে দুই ভাগে কাজ করছে। কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ করা হচ্ছে আর ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত ও আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ ‘ম্যালেরিয়া নির্মূলে মশারি একটা প্রধান উপাদান। এখনকার ম্যালেরিয়া চিকিৎসার ওষুধে সহনশীল মাত্রা থাকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। আক্রান্তের এক সপ্তাহের মধ্যে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠছেন’- যোগ করেন এই কর্মকর্তা।

রাঙামাটির ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. এন্ড্রু বিশ্বাস বলেন, ‘সবচেয়ে ম্যালেরিয়াপ্রবণ জেলা রাঙামাটিতে ২০১৬ সালের পর থেকে ম্যালেরিয়ায় কোনো মৃত্যু নেই। সিভিয়ার ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের হারও খুবই কম। এ বছর কোনো সিভিআর ম্যালেরিয়ার কেস আমাদের নেই। তবে ২০২১ থেকে ২০২৩ এই তিন বছর জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের হার বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে।

জেলায় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির অধীনে ম্যালেরিয়া রোগীদের দ্রুত শনাক্ত ও চিকিৎসসেবা দেওয়া এবং কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। আমরা এর সুফলও পাচ্ছি।’

নরসিংদীতে পোশাকশ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
নরসিংদীতে পোশাকশ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
ছবি : খবরের কাগজ

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় তিন মাসের ওভারটাইম ও বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাকশ্রমিকরা। ওই সময় তারা কাঠের আসবাবপত্র দিয়ে সড়কের ওপর অগ্নিসংযোগ করেন। 

রবিবার (৩০ জুন) ৩ ঘণ্টাব্যাপী কারারদী এলাকায় আদুরী গার্মেন্টসের শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ করেন। এদিকে অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই প্রান্তে সাত কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

শ্রমিকরা জানান, তিন মাস ধরে ওভারটাইমের বকেয়া পরিশোধ করছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঈদের আগে থেকে দিচ্ছি দিচ্ছি করছে কর্তৃপক্ষ। তবে তা এখনো পরিশোধ করেনি। বকেয়া পরিশোধের দাবি করলে নানা অজুহাতে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়। এসবের প্রতিবাদে রবিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির সামনের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। 

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা করছি।’

পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে ২ ব্যবসায়ী আহত

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে ২ ব্যবসায়ী আহত
ইয়াকুব আলী (বাঁয়ে) ও নুরুল আবসার। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ‘ভুলবশত’ ছোড়া গুলিতে পঙ্গু হতে বসেছেন ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী। একই ঘটনায় আহত হন নুরুল আবসার (৪৩) নামের আরেক দোকানি। 

গত ২৪ জুন বেলা ২টার দিকে হাটহাজারীর মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হন তারা। এরই মধ্যে ইয়াকুব আলীর পায়ে গুরুতর জখম হয়। অন্যদিকে নুরুল আবসার হাতে আঘাত পান। 

মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে টেণ্ডলেরঘাটা বাজারে ইয়াকুব আলীর একটি কুলিং কর্নার রয়েছে। অন্যদিকে নুরুল আবসার করতেন মুরগির ব্যবসা। 

গুলিতে আহত হওয়ার পর দুই দিন চিকিৎসা শেষে গত ২৬ জুন দুজনই হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন। ইয়াকুব আলীর বাড়ি বুড়িশ্চর ইউনিয়নের তালুকদারপাড়ায়। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলের বয়স ১৫ বছর। পুরো পরিবার চলে ইয়াকুব আলীর আয়ে। 

বাড়িফেরার পর ইয়াকুব আলী বলেন, ‘যখন আমার পায়ে গুলি লাগে, আমি ব্যথায় চিৎকার করতে থাকি। চিৎকার শুনে বাজারের লোকজন এগিয়ে আসেন। তারাই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ডাক্তার আমাকে কমপক্ষে ছয় মাস বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। আমি এখন পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে আছি। অথচ আমি ছাড়া সংসারে আয়ের কোনো লোক নেই। আমার বড় ছেলেরও ব্যবসা সামলানোর মতো বয়স বা সামর্থ্য নেই। সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে আমি চরম দুশ্চিন্তায় সময় পার করছি।’ 

এদিকে ইয়াকুব আলীর পাশেই আহত আরেক ব্যবসায়ী নুরুল আবসারের বাড়ি। তার তিন সন্তান। বড় ছেলের বয়স আট বছর।

নুরুল আবসার বলেন, ‘আমার ডান হাতে দুটি গুলি লেগেছে। বেশ ক্ষত হয়েছে। চিকিৎসা নিয়েছি। পুরোপুরি সুস্থ হতে ছয় মাস লাগতে পারে। আমি মুরগি বিক্রি করে সংসার চালাতাম। এখন দোকান বন্ধ। পরিবার কীভাবে চালাব সেটা ভাবলেই বুক কেঁপে উঠছে।’ 

গত ২৪ জুন বেলা ২টার দিকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শটগান পুলিশ ফাঁড়িতে এনে গুলি ছোড়ার কাজ পরীক্ষা করছিলেন এক কনস্টেবল ও ব্যাংকের এক নিরাপত্তা কর্মী। তাদের আকাশের দিকে ছোড়া গুলিতে আহত হন ওই দুই ব্যবসায়ী। এদিকে ঘটনাটি তদন্তে গত ২৬ জুন কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ। গুলিবিদ্ধ দুই দোকানির চিকিৎসার ব্যয় পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের।
 
মদুনাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মহিউদ্দিন সুমন জানান, প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আহত দুই ব্যক্তিকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

চোরকে বাড়িতে ডেকে হত্যার শিকার গৃহবধু!

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
চোরকে বাড়িতে ডেকে হত্যার শিকার গৃহবধু!
ছবি: খবরের কাগজ

নাটোরের লালপুর উপজেলার কামারহাটি তেনাচুরা গ্রামের দুবাই প্রবাসী সোহানুর রহমান শুভ'র স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের শিকার শিউলি খাতুন (২৩) নিজেই তার হত্যাকারীকে বাড়ির ঠিকানা দেয় বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম। আসামি আগে থেকেই চোর। তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা রয়েছে। হত্যাকারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয় ঢাকার গাজীপুর কোনাবাড়িতে।

এসপির দাবি, কোনাবাড়িতে শিউলীর বোন ভাড়া বাসায় থেকে গার্মেন্টসে কাজ করেন। পাশের রুমেই ভাড়া থেকে এক হোটেলে কাজ করতেন আসামি। বেনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা। শিউলী মেবাইল ফোনে ওই হত্যাকারীকে বাড়ির ঠিকানা দেয়। ট্রেনে লালপুরের আব্দুলপুর স্টেশনে নেমে অটোরিক্সাযোগে শিউলীর বাড়িতে পৌঁছে আসামি।

রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি তরিকুল ইসলাম আরও জানান, ভিকটিম আনুমানিক একমাস আগে তার বোন সোনালী খাতুন এর ভাড়া বাসা গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ী বেড়াতে গেলে সেখানে আসামির সঙ্গে পরিচয় এবং পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৬ জুন  আসামি জাকির হোসেন পরকীয়া প্রেমের সূত্রে গাজীপুর থেকে ট্রেনে ভিকটিমের বাড়িতে মামা পরিচয় দিয়ে বেড়াতে আসে। ভিকটিমের সঙ্গে টাকা পয়সা এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ২৯ জুন ভোর ৫টার দিকে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য হলে আসামি ভিকটিমের গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ও বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মো. রফিকুল ইসলাম (৩৪) লালপুর থানায় এজাহার দায়ের করলে মামলা হয়।

গতরাতে বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা ইউনিয়নের মাড়িয়া এলাকায় স্থানীয়দের সহায়তায়,আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় আসামির কাছ থেকে ভিকটিমের মোবাইল ফোন, ২ জোড়া রূপার নুপুর, ১টি স্বর্ণের চেইন, ১টি স্বর্ণের নাকফুল, ২টি রূপার আংটি ও ১ জোড়া কানের দুল উদ্ধার করাহয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

আসামি জাকির হোসেন (৩৫) সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার গচিয়া গ্রামের বিলাল মিয়ার ছেলে। সে বিবাহিত। এর আগে আসামির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে চট্রগ্রামে একটি মামলা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে এসপি জানান, ভুক্তভোগীর বাবার বাড়ি দিনাজপুর, স্বামীর বাড়ি নাটোর। আর আসামির বাড়ি সুনামগঞ্জ। প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগীর সঙ্গে আসামির আত্মীয়তার সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে কী কারণে শিউলী তাকে মামা পরিচয় দিয়েছে তা তদন্তের পরই জানা যাবে।

লালপুর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ এবং আইও হিমাদ্রি হালদার জানান আসামিকে কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে।

কামাল মৃধা/এমএ/

কবরস্থানে মিলল ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম
কবরস্থানে মিলল ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি
জব্দকৃত ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি। ছবি : খবরের কাগজ

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের রূপনগর গ্রামের কবরস্থান থেকে ১০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়েছে। 

রবিবার (৩০ জুন) বিকেলে বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের সাকিন বেরবেরী হাওরের কবরস্থান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এই চিনি জব্দ করা হয়।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সাকিন বেরবেরী হাওরের পাশের একটি কবরস্থানে অভিযান চালানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কবরস্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ১০০ বস্তা চিনি পাওয়া যায়। তবে অভিযানের সময় কাউকে পাওয়া যায়নি।

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন চিনি জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:০০ পিএম
পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল
পায়ের আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল। ছবি : খবরের কাগজ

শারীরিকভাবে সক্ষম দেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর বাবা-মা যেখানে সন্তানকে পড়ালেখায় মনোযোগী করতে ব্যর্থ হয়ে হতাশায় ভুগছেন, তাদের অনুপ্রেরণা হতে পারে নাটোরের সিংড়া উপজেলার প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা। সে সিংড়া পৌর শহরের শোলাকুড়া মহল্লার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে ও শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে এ বছর আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে। 

রবিবার (৩০ জুন) দেশব্যাপী শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সে আলিম পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছে নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড় এলাকায় আল মাদ্রাসাতুল জমহুরিয়া কেন্দ্রে।

সরেজমিনে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের শিক্ষার্থীরা হাতে কলম নিয়ে প্রশ্নের উত্তর লিখতে ব্যস্ত। পাশেই সিটবেঞ্চে বসে বাঁ পায়ের আঙুলে কলম ধরে উত্তর লিখছে রাসেল মৃধা। দেখা যায়, রাসেলের দুই হাত নেই। নেই ডান পা-ও। বাঁ পা থাকলেও তা স্বাভাবিক আকারের চেয়ে ছোট।

২০২২ সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩.৮৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় রাসেল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভাব-অনটনের মধ্যেও প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধার লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে খুশি তার বাবা। তাইতো শত অভাব অনটনের মধ্যেও তারা রাসেলকে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সহায়তা করে যাচ্ছেন।

রাসেল মৃধার বাবা আব্দুর রহিম মৃধা বলেন, দিনমজুরি করে রাসেলকে পড়াশোনা করাচ্ছি। লেখাপড়া শিখে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে এমন আশা রয়েছে। শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোতাররফ হোসেন বলেন, বিগত পরীক্ষাগুলোতেও সে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেছে। রাসেল এবারও ভালো ফল অর্জন করবে বলে আমরা আশাবাদী।