মাত্র এক মাসে প্রায় অর্ধশত চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন চক্রের মূল হোতা ও হোমিওপ্যাথি ওষুধ বিক্রেতা এম এ হক আলম ফরহাদী, মেহেরাব হোসেন, মো. রাসেল হোসাইন ও শাহাদাত হোসেন। তাদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা, প্রতারণায় ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মনিটর, বিপুল পরিমাণ চাকরির আবেদনপত্রসহ মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দীন বলেন, ‘প্রতারক চক্রটি মাত্র এক মাসে চটকদার বিজ্ঞাপনে বিদেশি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে শুধু ইন্টারভিউর নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের টার্গেট ছিল আগামী ছয় মাস চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ইন্টারভিউ ও প্রশিক্ষণের নামে অন্তত ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া। পাশাপাশি ভাটারায় ড্রাগমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলে টাকা আদায়ের চুক্তি করে। এর মাধ্যমেও বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।’
র্যাব-১০ অধিনায়ক বলেন, ‘প্রতারক চক্রের মূল হোতা আলম ফরহাদী সামান্য পড়াশোনা করে ফেনীতে নিজ এলাকায় হোমিওপেথি ওষুধ বিক্রি করতেন। পরবর্তী সময়ে ঢাকায় এসে অল্প সময়ে বেশি টাকা আয় করতে বিভিন্ন প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। প্রতারণা করতে গিয়ে নিজেকে বিসিএস শিক্ষা কর্মকর্তা, দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন।’
তিনি বলেন, ‘এমনকি ভুক্তভোগী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে তার তিন সন্তান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতেন। সম্প্রতি তিনি এএনএ নামের জাপানি এয়ারওয়েজ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে পারেন। পরবর্তী সময়ে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে ফাঁদ পাতেন। মাত্র এক মাসে তার মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছেন শতাধিক চাকরি প্রার্থী। হাতিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।’
ফরিদ উদ্দীন বলেন, ‘গ্রেপ্তার আলম ফরহাদী র্যাবের কাছেও ১৮-১৯ বছর ধরে দুদকের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন বলে পরিচয় দেন। যদিও যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায় তিনি সরকারি কোনো পদেই নেই। ফরহাদীর বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় প্রতারণা ও মানি লন্ডারিংয়ের দুটি মামলা রয়েছে।’