![শিশু নয়, বয়স্কদের ডায়াপার তৈরি করবে জাপানের ওজি](uploads/2024/03/28/1711615104.japan.jpg)
জাপানের একটি প্রতিষ্ঠান ঘোষণা করেছে যে, তারা দেশে শিশুদের জন্য ডায়াপার তৈরি বন্ধ করে দেবে। এর পরিবর্তে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ডায়াপার তৈরিতে মনোযোগ দেবে কোম্পানিটি। খবর বিবিসির।
এমন পরিবর্তন আনতে যাওয়া কোম্পানিটি হলো ওজি হোল্ডিংস। এর কারণ, দেশটিতে জন্মহার রেকর্ড পরিমাণ কম। অন্যদিকে বৃদ্ধ লোকের সংখ্যা বাড়ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, জাপানে প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়াপার বিক্রি, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শিশুদের ডায়াপার বিক্রির চেয়েও বেশি।
পরিসংখ্যান বলছে ২০২৩ সালে জাপানে জন্মগ্রহণকারী শিশুর সংখ্যা ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬৩১, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ১০ শতাংশ কম। এটি ছিল ১৯ শতকের পর জাপানে রেকর্ড সর্বনিম্ন জন্মহার। ১৯৭০-এর দশকে এই সংখ্যা দাঁড়ায় দুই মিলিয়নেরও (২০ লাখ) বেশি।
একটি বিবৃতিতে ওজি হোল্ডিংস বলেছে, তাদের সহযোগী সংস্থা ওজি নেপিয়া বর্তমানে বছরে শিশুদের জন্য ৪০ কোটি ডায়াপার তৈরি করে। ২০০১ সালের পর থেকে তাদের উৎপাদন কমে যাচ্ছে, যখন কোম্পানিটি তাদের সর্বোচ্চ ৭০ কোটি ডায়াপার উৎপাদনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল।
২০১১ সালে জাপানের সবচেয়ে বড় ডায়াপার নির্মাতা ইউনিচার্ম বলেছিল, তাদের প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়াপারের বিক্রি শিশুদের জন্য তৈরি ডায়াপার বিক্রিকে ছাড়িয়ে গেছে।
ইতোমধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়াপারের বাজার বাড়ছে এবং অনুমান করা হচ্ছে যে, এটির বাজারমূল্য ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলার (১৬০ কোটি ইউরো) ছাড়িয়ে যাবে।
জাপান এখন বিশ্বের অন্যতম বয়স্ক জনসংখ্যার দেশ। তাদের প্রায় ৩০ শতাংশ নাগরিকের বয়স ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি। গত বছর ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের অনুপাত প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ অতিক্রম করেছে।
ওজি হোল্ডিংস আরও বলেছে, তারা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় শিশুর ডায়াপার তৈরি করতে থাকবে, যেখানে তারা চাহিদা বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছে।
শিশুসম্পর্কিত কর্মসূচিতে বর্ধিত ব্যয় এবং অল্পবয়সী দম্পতি বা পিতা-মাতাদের জন্য ভর্তুকি জন্মের হার বাড়াচ্ছে বলে মনে হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারণগুলো জটিল। এর মধ্যে রয়েছে নিম্ন বিবাহের হার এবং আরও বেশি নারী কর্মক্ষেত্রে যোগদান থেকে শুরু করে সন্তান লালন-পালনের বর্ধিত খরচ।
তবে জাপান একা নয়। হংকং, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান এবং দক্ষিণ কোরিয়াতেও সন্তান ধারণের হার কমেছে। এর মধ্যে সর্বশেষ বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহার রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়।
চীনও ২০২৩ সালে টানা দ্বিতীয় বছরের জন্য তার জনসংখ্যা হ্রাস দেখেছে এবং জাপানের মতো জন্মহার বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা চালু করেছে। কিন্তু জনসংখ্যার মধ্যে বার্ধক্যের হার এবং ২০১৫ সালে শেষ হওয়া এক দশকের দীর্ঘ এক সন্তান নীতির প্রভাব চীনেও জনসংখ্যাগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।