![নতুন আরোপিত ও বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার দাবি](uploads/2024/06/13/454587kkkk-1718293970.jpg)
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অবাস্তব নয়, তবে এটি বাস্তবায়ন করতে হলে ব্যবসাবান্ধব হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এ কারণে রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্পের বিকাশ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে বাজেটে নতুনভাবে আরোপিত ও বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার করার দাবি জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিজিএপিএমইএর সাবেক সভাপতি রাফেজ আলম, কাদের খান, বর্তমান কমিটির সহসভাপতি মোজাহারুল হক শহিদ, পরিচালক কাজী ফাহাদ, জামিল আহমেদ, মো. জসীম উদ্দিন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং খাতে উৎসে কর আগামী পাঁচ বছরের জন্য দশমিক ৫০ শতাংশ ধার্য করে কর্তিত উৎসে করকে চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে নিষ্পত্তি করার দাবি জানান মো. শাহরিয়ার। বাজেটের কিছু ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বিজিএপিএমইএর সভাপতি বলেন, আমরা প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধব এবং ব্যবসাবান্ধব হিসেবে বলতে পারব কিনা তাতে দ্বিধান্বিত হচ্ছি। কারণ, মূল্যস্ফীতি কম থাকলে কর্মসংস্থান বাড়ে, আয়ের উৎসও বাড়ে, ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রসারের সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এ উদ্দেশ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। তা ছাড়া যেখানে কর প্রদানকারীদের করহার বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। সেখানে অপ্রদর্শিত ও কালোটাকা ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ দেওয়াকে আমরা যৌক্তিক মনে করি না।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় শিল্প সুরক্ষার কথা বলা হলেও শিল্প খাতে আগের দেওয়া অনেক সুবিধা হ্রাস করা হয়েছে। নতুন বন্ড লাইসেন্স ফি ৫০ হাজার টাকার স্থলে এক লাখ টাকা এবং লাইসেন্স নবায়ন ফি বার্ষিক ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। ব্যাংকে গচ্ছিত আমানতের ওপর আবগারি শুল্কহার বৃদ্ধি করা হয়েছে। কাস্টমস আইনে আমদানি করা পণ্যের এইচএস কোডের ভুলজনিত কারণে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানার বিধান করা হয়েছে। শিল্পাঞ্চলের বাইরে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ব্যাংকঋণ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ পদক্ষেপগুলোর কারণে উৎপাদন খরচ বাড়বে। এতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ভয়াবহ সংকটে পড়বে, কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে। তাই আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থে নতুনভাবে আরোপিত এসব সিদ্ধান্ত ও শুল্ক প্রত্যাহার চাচ্ছি।
মো. শাহরিয়ার বলেন, শিল্প-কারখানার জন্য প্রি-ফেব্রিকেটেড কারখানা ভবন নির্মাণে আমদানি উপকরণের শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। জ্বালানি সাশ্রয়ী বাতির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। শিল্পের স্বার্থে আমরা এসব কর প্রত্যাহার চাচ্ছি।
শিল্পের উন্নয়নে সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন বিজিএপিএমইএর এই নেতা। এ সময় মো. শাহরিয়ার বলেন, গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং খাতের সরাসরি রপ্তানির অনুকূলে নগদ প্রণোদনা নিশ্চিত করা; মূলধনী যন্ত্রাংশ, নির্মাণসামগ্রী এবং অগ্নি ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম আমদানিতে রেয়াতি শুল্ক হারের সুবিধা দেওয়া; এক্সপোর্ট রিটেইনিং কোটা অ্যাকাউন্টের ওপর আয়কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ ধার্য করা এবং গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং খাতের পণ্য ও সেবা সম্পূর্ণভাবে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানাচ্ছি।