ঢাকা ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ বাংলাদেশ থেকে কাঁচা চামড়া নিতে আগ্রহী মিসর

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
বাংলাদেশ থেকে কাঁচা চামড়া নিতে আগ্রহী মিসর
সচিবালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্তমিশরের রাষ্ট্রদূত ওমর মাহিমএলদিন আহমেদ ফাহিম সৌজন্য সাক্ষৎ করেন। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে কাঁচা চামড়া নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মিসর। একই সঙ্গে মিসরের পাটশিল্প উন্নয়নে এ দেশের পাটশিল্পের অতীত অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে একসঙ্গে কাজ করতে চায়। আফ্রিকায় বাণিজ্য প্রসারে মিসর হতে পারে ‘গেটওয়ে’।

গতকাল রবিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিসরের রাষ্ট্রদূত ওমর মহিম এলদিন আহমেদ ফাহমির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা জানান।

আলাপকালে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা উল্লেখ করে জানান, বিশ্বের ২৬টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। বিনিয়োগ হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আসিয়ান দেশগুলোর বাজার সুবিধা এ দেশ থেকে ব্যবহার করা যাবে। বিনিয়োগে আগ্রহী মিসরের শীর্ষ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এ দেশে এলে বিনিয়োগ সুযোগ আরও বাড়বে।

এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়াধীন দপ্তরগুলোর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এলডিসি উত্তরণে মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। সেবা সহজ করতে ডিজিটাইজেশন বাড়াতে হবে। দপ্তরগুলোর মধ্যে সম্পর্ক আরও সহজ করতে কাজ করতে হবে।’

এ সময় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ মুনিরুস সালেহীন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব নাভিদ শফিউল্লাহ, অতিরিক্ত সচিব নাহিদা আফরোজ, বাংলাদেশ চা-বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়াধীন দপ্তরগুলোর প্রধান এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাজারদর আলু-চালের চড়া দাম

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১১:২১ এএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১১:২১ এএম
আলু-চালের চড়া দাম
চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু-চাল

ঈদের আমেজ শেষ! বাজারে লোকে ভরা। কিন্তু বেচা-কেনা কম। আলুর দাম কমছে না। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বিভিন্ন মোকামে দাম বেশি। আর কমবে না আলুর দাম। 

বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে। পেঁয়াজসহ অন্য জিনিসের দামও বেশি। চালের দামও বাড়তি। ৭০ টাকার মিনিকেট চাল ৭২ টাকা হয়ে গেছে। তবে পোলট্রি মুরগির দাম কমে ১৭৫-১৮০ টাকা কেজিতে নেমেছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া যায়। 

কমবে না আলু ও পেঁয়াজের দাম

ঈদের পর আলুর দাম আরেক দফা কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বিক্রমপুর বাণিজ্যালয়ের পাইকারি ব্যবসায়ী সবুজ খবরের কাগজকে বলেন, যতই দিন যাচ্ছে কোনো সুখবর নেই আলুর বাজারে। ঈদের পর কমবে মনে হলেও বাজারের চিত্র উল্টো। গতকাল মুন্সীগঞ্জের আলু বিক্রি হয় ৫২ টাকা। আর কমার লক্ষণ নেই। কারণ বর্ষাকালে অন্যান্য সবজির সরবরাহ কম হওয়ায় আলুর ওপর চাপ বাড়ে। এ জন্য দামও কিছুটা চড়া। 

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মায়ের দোয়া বাণিজ্যালয়ের পাইকারি ব্যবসায়ী মিরাজও বলেন, আলুর দাম বেশি। ৫৩-৫৫ টাকা কেজি। ঈদের পর আলুতে চাপ বেড়েছে। এই বাজারের খুচরা বিক্রেতা মোবারক বলেন, ঈদের পর লোকে ভরে গেছে বাজার। কিন্তু বাজার চড়া। এ জন্য বিক্রিও কমে গেছে। আগে বেশি বেচাকেনা হতো। দুপুর গড়িয়ে গেলেও ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজও বেশি দামে কেনা। তাই ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যান্য বাজারের বিক্রেতারাও বলেন আলু, পেঁয়াজে আর স্বস্তি নেই। তবে ঈদের পর রসুনের দাম কমে ২২০-২৪০ টাকা কেজি ও আদা ৩০০-৩২০ টাকা কেজি হয়েছে। 

দেশে প্রচুর পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও ঈদুল আজহার আগে দাম বেড়ে যায়। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মোকামেই বেশি দাম। ঈদের পর আর কমেনি। এ জন্য বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও পাবনারটা ১০০ টাকা কেজি। পাইকারি শ্যামবাজারেও পেঁয়াজের দাম বেশি বলে বিক্রেতারা জানান।  

স্বস্তি নেই সবজিতে

ঈদের পরে সবজিতেও স্বস্তি নেই। বর্ষা মৌসুমে ফসলের খেত ডুবে যাওয়ায় অধিকাংশ সবজির দাম বেড়ে গেছে বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান। কাঁচা মরিচের দামও বাড়তি। বর্তমানে ২৫০ গ্রামের দাম ৬০ টাকা বা কেজি ২২০-২৪০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। 

খুচরা বিক্রেতারা জানান, বেগুন ৮০-১০০ টাকা, পটোল, ঝিঙে ও ধুন্দল ৫০-৬০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা, শসা ৮০-১০০ টাকা, লেবুর হালি ২০-৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০-৫০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৪০ টাকা, লাউ ও চালকুমড়ার পিস ৬০-৭০ টাকা। কচুর লতির কেজি ৮০-১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, টমেটোর কেজি ১০০-১২০ টাকা। পুঁইশাকের আঁটি ২৫-৩০ টাকা, লালশাক, পাট ও কচুশাকের আঁটি ১৫-২০ টাকা। 

বাড়তি চালের দাম 

সারা দেশেই বোরো ধান উঠে গেছে। বিভিন্ন রাইসমিল ভরে গেছে ধানে। তার পরও মিনিকেট চালের দাম বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে মিনিকেট ৬৬-৭০ টাকা বিক্রি হলেও গতকাল তা ৭২ টাকায় উঠেছে। খুচরা বিক্রেতারা জানান, সরকার নিষেধ করলেও রশিদসহ বিভিন্ন কোম্পানি মিনিকেট নামেই সরু চাল বিক্রি করছে। 

এর মধ্যে মোজাম্মেল চালের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ২ টাকা বেড়েছে। ৭০ টাকার চাল ৭২ টাকা, আটাশ চাল ৫২-৫৫ টাকা ও মোটা চাল ৫০-৫২ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোলাওয়ের প্যাকেট চাল ১৫০-১৭০ টাকা ও বস্তার চাল ১২০-১৪০ টাকা কেজি। 

কৃষি মার্কেটের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির শওকত ও কারওয়ান বাজারের কুমিল্লা রাইস এজেন্সির ইউসুফ বলেন, অন্যদের চেয়ে মোজাম্মেল-এর চাল বস্তায় ১০০ টাকা বা কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। এ জন্য আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।  

পোলট্রির কেজি ১৭৫ টাকা

ঈদের আগে ১৯০-২০০ টাকা কেজিতে পোলট্রি মুরগি বিক্রি হলেও গতকাল দাম কমে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে। আগের মতোই সোনালী মুরগি ৩১০-৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা কেজি বলে খুচরা বিক্রেতারা জানান। কারওয়ান বাজারের সততা পোলট্রি হাউজের সবুজ বলেন, চাহিদা কম থাকায় পোলট্রির দাম কমেছে। ১৮০ টাকার মধ্যেই বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যান্য খুচরা বিক্রেতারাও জানান, ঈদের পর বাড়েনি কোনো মুরগির দাম।  

ঈদে বেশি করে গরু-ছাগল জবাই হওয়ার কারণে বাজারে মাংসের চাহিদা কম। এ জন্য দামও কিছুটা কমেছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, ৭৫০ টাকা গরুর মাংস ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি। কারওয়ান বাজার, কৃষিমার্কেট, টাউনহল বাজারে ডিমের দাম কিছুটা কম হলেও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। 

কৃষিমার্কেটের পদ্মা ব্রয়লার হাউসের সাহিন জানান, ডিমের ডজন ১৫০ টাকা। কারওয়ান বাজারের জহিরও জানান, ডিমের ডজন ১৫০ টাকা। কিন্তু বিভিন্ন পাড়ার দোকানে ১৫৫-১৬০ টাকায় ডজন বিক্রি করা হচ্ছে বলে ক্রেতারা অভিযোগ করে জানান।

মাছের দামও চড়া

ঈদের পর প্রায় সব মানুষ ঢাকায় ফিরে আসায় মাছের দামও বেড়ে গেছে। বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতারা জানান, রুই ও কাতল ৩৫০-৭০০ টাকা কেজি, চাষের চিংড়ি ৫৫০-৮০০ টাকা, নদীর চিংড়ি ১২০০-১৬০০ টাকা কেজি। পাবদা ৫০০-৭০০ টাকা, পাঙাশ ও তেলাপিয়া ২০০-২৫০, শিং ও মাগুর ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। চাষের ট্যাংরা ৬০০-৭০০, দেশি ট্যাংরা ১০০০-১২০০ টাকা,  কাচকি ও মলা মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, বাতাসি ৭০০-১২০০ টাকা কেজি। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু সরবরাহ বাড়েনি। বন্যার কারণে নদীর মাছও কমে গেছে। এ জন্য দাম বেশি।

ছোলার কেজি ১২০ টাকা

বিক্রেতারা জানান, রমজান মাসে ব্যাপক চাহিদা বাড়ায় ৯০ টাকার ছোলা ১১০ টাকা ছিল। কিন্তু বাজেটের পর বেড়ে ১২০ টাকা কেজি হয়ে গেছে। আগের মতোই বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৭ টাকা, ৫ লিটার ৭৯০-৮১০ টাকা, ২ কেজি আটা ১০০-১২০ টাকা কেজি, খোলা চিনি ১৩০, প্যাকেট চিনি ১৩৫ টাকা। তবে দেশি প্যাকেট চিনি ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়। ঈদের আগে মসলার দাম বেড়েছিল। ঈদ ফুরিয়ে গেলেও পরে আর কমেনি।

শ্রম খাত সংস্কারে সহায়তা করবে ‘অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
শ্রম খাত সংস্কারে সহায়তা করবে ‘অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প
ছবি : সংগৃহীত

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) লা মেরিডিয়ান হোটেলে ‘অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছে। টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভের আওতায় এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেন।

আগামী চার বছরে ২৪.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম খাত সংস্কার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে প্রকল্পটি। আর এই সংস্কার সুশাসন, মৌলিক নীতি ও কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক অধিকারের সুরক্ষা এবং টেকসই ও প্রতিযোগিতামূলক উদ্যোগ ২০২৬ সালে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উত্তরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সামাজিক ন্যায়বিচার সমর্থন করি। বাংলাদেশে শ্রম সংস্কারকে উৎসাহিত করতে এবং অর্থনীতির সব সেক্টরে পুরুষ ও নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. মাহবুব হোসেন আইএলওর গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকদের কল্যাণ ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করতে এই সংস্কার উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করব।’

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমোপুতিয়ানিন তার বক্তব্যে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণে কার্যকর ত্রিপক্ষীয় অংশীদারত্বের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন, ‘মৌলিক নীতি ও নিরাপদ কর্ম-পরিবেশের অধিকার কেবল শ্রমিক ও নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বচ্ছ ও পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সুরক্ষিত হতে পারে।’

এইচ ই চার্লস হোয়াইটলি বাংলাদেশ সরকারের চলমান উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা শ্রম সংস্কারের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকারকে স্বাগত জানাই এবং আগামী কয়েক বছরে নতুন সাফল্যের গল্প তৈরিতে এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে আগ্রহী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যক্তির উন্নয়ন, শ্রমিক সম্প্রদায়কে শক্তিশালী করা এবং বাংলাদেশে একটি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গল্প রচিত হবে।’

অনুষ্ঠানে কানাডিয়ান হাইকমিশনার এইচ ই লিলি নিকোলস বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনসাপেক্ষে একটি পরিপূরক প্রকল্পের মাধ্যমে অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইনিশিয়েটিভে কানাডা যোগ দেবে বলে ঘোষণা দেন। 

টিম ইউরোপ থেকে উপস্থিত ছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এইচ ই চার্লস হোয়াইটলি, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত এইচ ই আলেকজান্দ্রা বার্গ ভনলিন্ডে, ডেনমার্ক দূতাবাসের হেড অব কো-অপারেশন অ্যান্ডার্স কার্লসেন এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের হেড অব কো-অপারেশন থিজ ওউডস্ট্রা।

সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়াল ৬০০ কোটি টাকা

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:৩১ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:৩১ পিএম
সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়াল ৬০০ কোটি টাকা

দেশের পুঁজিবাজারে আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবারও ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ৬০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

এর মাধ্যমে ২৫ কার্যদিবস বা এক মাসের বেশি সময় পর ডিএসইতে ৬০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তির অনুমোদন মেলায় পুঁজিবাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ২০২২ সালের জুলাই মাসে আইএমএফের কাছে ঋণ চায় বাংলাদেশ। আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার আসে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর ডিসেম্বরে আসে দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার। তবে তৃতীয় কিস্তির ঋণ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এ নিয়ে ছড়ায় নানা গুঞ্জন। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুঁজিবাজারেও। 

এমন পরিস্থিতিতেই আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার সব শঙ্কা কেটে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের সভায় তৃতীয় কিস্তির প্রায় ১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। 

আইএমএফ ঋণ অনুমোদনের খবরে গত মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে  ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। বুধবার এসে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও বেড়েছে। 

এদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের শেষদিকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে সূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৫১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩০২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬০৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫২৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৮০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬২ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্যাপটিভ গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ২১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, লাভেলো আইসক্রিম, ওরিয়ন ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক এবং রবি।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৪৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

ডিএসই পরিচালকের শেয়ার কারসাজি তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
ডিএসই পরিচালকের শেয়ার কারসাজি তদন্তের নির্দেশ
ডিএসই স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে শেয়ার লেনদেন ও কারসাজিতে সহায়তার যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) আলাদাভাবে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে তদন্তকালীন সময়ে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে ডিএসইর পরিচালকের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানকে তদন্তসংক্রান্ত এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে শেয়ার কারসাজিতে জড়িত সাম্প্রতিক সময় গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশ হয়। এমন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিধি লঙ্ঘন করে কারসাজির মাধ্যমে ৩টি বিও অ্যাকাউন্টে ১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছেন।

আর এ কাজের মাধ্যমে তিনি তিনটি অপরাধ করেছেন মর্মে বলা হয়েছে। প্রথমত, তিনি স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদে থেকে বেআইনি ও অনৈতিকভাবে শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন, দ্বিতীয়, কারসাজির কারণে যেসব কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এর অধিকাংশের শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন এবং তৃতীয়ত, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তায় পর্ষদ ভেঙে যেসব কোম্পানি দখল করা হয়েছে, এর সবকটি থেকেই তিনি আগাম তথ্য জেনে শেয়ার লেনদেন করে লাভবান হয়েছেন।

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ডিএসইর পরিচালক পদে থাকার কারণে কোম্পানির গোপন সংবাদের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট তৈরি করেছেন এবং এর ফলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

চিঠিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ২১ ধারামতে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড এডমিনিস্ট্রেশন) রেজুলেশন ২০২৩ এর ধারা ৮ (২) (এ), ৮(২) (বি), ৮(২) (ডি), ৮(৩)(১)-সহ বিএসইসি এবং ডিএসইএ কর্তৃক অনুসৃত অন্যান্য আইন, বিধি, প্রবিধি অথবা নির্দেশনা পরিপন্থী কোনো কার্য করছেন কি না তা তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তদন্ত প্রতিবেদন মোতাবেক অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে অবহিত করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক। গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন তাকেসহ চারজনকে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ডিএসইর পাঠানো একটি তালিকা থেকে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বিএসইসির শীর্ষ ব্যক্তির পছন্দের আলোকে তার পরামর্শেই ওই তালিকায় আব্দুল্লাহ আল মাহমুদসহ কয়েকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে ডিএসই। আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এবং ডিএসইর চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতিতে একই গ্রুপে অবস্থান করেন, বিএসইসির ওই কর্মকর্তা গ্রুপটির অন্যতম পুরোধা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনেরও (পিকেএসএফ) গভর্নিং বডির সদস্য। বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. মাহমুদ সেখানে গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে যোগ দেন।

সৌদি আরবের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
সৌদি আরবের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ
জেদ্দায় লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত সৌদি আরবের বন্দর জেদ্দা ইসলামিক পোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সৌদি আরবের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। এই সময়ে দেশটির উদ্বৃত্তের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৪০ কোটি (৪১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন) সৌদি রিয়াল বা ১১ দশমিক ০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। সে হিসাবে আগের মাসের তুলনায় বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানানো হয়েছে। খবর আরব নিউজের। 

সৌদি আরবভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা, তেলবহির্ভূত (পণ্য ও সেবা) রপ্তানি বাড়ায় দেশটির সামগ্রিক বাণিজ্য উদ্বৃত্তের দেখা পেয়েছে তারা। সৌদি আরবের জেনারেল অথোরিটি অব স্ট্যাটিস্টিকসের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সৌদি আরবের তেলবহির্ভূত রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এই বাণিজ্য উদ্বৃত্তের সংবাদটি এমন সময়ে এসেছে, যখন দেশটি জ্বালানি খাতের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে তেলবহির্ভূত রপ্তানি বাড়ানোর জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। 

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অন্যান্য খাতকে শক্তিশালী করতে এবং আরও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক কাঠামো অর্জনে সৌদি আরবের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরেছে।

খবরে বলা হয়, জাতীয় তেলবহির্ভূত রপ্তানিতে ২০২৩ সালের এপ্রিলের তুলনায় এই বছরের এপ্রিলে ১ দশমিক ৬০ শতাংশের মাঝারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যেখানে পুনরায় রপ্তানি করা পণ্য একই সময়ের তুলনায় ৫৬ দশমিক ৪০ শতাংশের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।

তবে রপ্তানির বিপরীতে সামগ্রিক বহির্গামী পণ্য সরবরাহ ১ শতাংশ কমেছে। প্রাথমিকভাবে জ্বালানি তেল রপ্তানিতে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ হ্রাসের কারণে সামগ্রিক রপ্তানি কমেছে। ফলস্বরূপ, মোট বহির্গামী সরবরাহে জ্বালানি তেলের অনুপাত ২০২৩ সালের এপ্রিলে যেখানে ছিল ৮০ দশমিক ৬০ শতাংশ, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেটি ৭৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

এই সময়ে দেশটির আমদানি ১ দশমিক ৩০ শতাংশের মতো হ্রাস পেয়েছে এবং মার্চেন্ডাইজ ট্রেড ব্যালেন্স সারপ্লাস আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে। প্রসঙ্গত, মার্চেন্ডাইজ ট্রেড ব্যালেন্স সারপ্লাস হলো, একটি দেশের রপ্তানি থেকে আসা আয়ের পরিমাণ যখন আমদানিতে করা ব্যয়ের চেয়ে বেশি হয়।

খবরে বলা হয়, গত মাসের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে সৌদি আরবের পণ্য রপ্তানির মূল্য ১ দশমিক ৭০ শতাংশ, তেলবহির্ভূত রপ্তানি ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং আমদানি ১৭ দশমিক ৪০ শতাংশ কমেছে। তবে এসব সত্ত্বেও দেশটির বাণিজ্য ভারসাম্য যথেষ্ট বেড়েছে।

আমদানির বিপরীতের তেলবহির্ভূত পণ্য রপ্তানির অনুপাত উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৩ সালের এপ্রিলের ৩২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই হার ৩৭ দশমিক ১০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এই উন্নতির পেছনে তেলবহির্ভূত রপ্তানি বৃদ্ধি এবং আমদানি হ্রাসের ভূমিকা ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরব নিউজ জানায়, সৌদি আরবের তেলবহির্ভূত রপ্তানির মধ্যে শীর্ষ স্থানে ছিল প্লাস্টিক, রাবার এবং এই দুটি থেকে তৈরি করা পণ্য। মোট রপ্তানিতে এর অবদান ২৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং এপ্রিল ২০২৩ সালের তুলনায় এই ক্যাটাগরির পণ্য রপ্তানি ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

রাসায়নিক পণ্যগুলোও দেশটির রপ্তানিতে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে, যার অবদান ছিল তেলবহির্ভূত রপ্তানির ২৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। তবে রাসায়নিক পণ্য রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ কমেছে।

অন্যদিকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে শীর্ষস্থানে ছিল যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ, যার পরিমাণ ছিল মোট আমদানির ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। এটি ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের তুলনায় ৩২ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া পরিবহন সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ আমদানির পরিমাণ ছিল মোট আমদানির ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ। এটি আগের বছরের তুলনায় ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ কম।

খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার চীন। চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটির মোট রপ্তানির ১৬ দশমিক ৬০ শতাংশই ছিল চীনে। এ ছাড়া জাপান ও ভারতে যথাক্রমে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ ও ৮ দশমিক ১০ শতাংশ পণ্য ও সেবা রপ্তানি হয়েছে।