ময়মনসিংহে সোমবার সকাল থেকেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। যানজট আর যাত্রী বেশি থাকার সুযোগে পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করে যানবাহন মালিকরা।
সোমবার (২৪ জুন) সকাল থেকেই নগরীর চীন মৈত্রী সেতু এলাকার আশপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ধীর গতিতে চলে যানবাহন। ধীরে ধীরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাস পর্যন্ত যেতেই আবারও পড়তে হচ্ছে যানজটের কবলে। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। গতকাল এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও ছিল যানজট।
জিল্লুর রহমান ভালুকার সিডস্টোর এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তিনি ময়মনসিংহের পাটগুদাম বাসস্ট্যান্ড এসেছেন বাসে ওঠার জন্য। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে খবরের কাগজকে বলেন, ‘সারা বছর বাস ভাড়া নেয় ৬০ টাকা। অথচ এখন নিচ্ছে ৩০০ টাকা। তবে দাঁড়িয়ে গেলে ভাড়া নিচ্ছে ১৫০ টাকা। অযৌক্তিক ভাড়া নিলেও বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’
অপর যাত্রী জাহিদুর রহমান বলেন, ‘যানজটের কারণে গাড়ির তেল বেশি লাগছে জানি। তবে এ জন্য ভাড়া কয়েক গুণ বেশি নেবে এটি মেনে নেওয়া যায় না। আমার মতো যাত্রীরা একদিকে যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন, অন্যদিকে বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করে মনঃক্ষুণ্ণ হচ্ছেন।’
ভাড়া বেশি নেওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্টারলাইন পরিবহনের চালক আবদুল হাই বলেন, ‘যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন যাত্রীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। যানজটের কারণে তেল বেশি লাগছে। এতে খরচ বাড়ছে। সব যাত্রীর সিট দেওয়া সম্ভব না। তাই যারা সিট চাচ্ছেন, তাদের কাছ থেকে কিছু টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। তবে পাঁচ গুণ ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না।’
জেলা মালিক সমিতির মহাসচিব মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যানজটের কারণে যাত্রীসহ চালকরাও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে চালকরা কয়েক গুণ টাকা বেশি আদায় করবে এটি ঠিক না। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক পুলিশের সদস্যের চেষ্টার কমতি নেই। তবে সড়কে গাড়ির সংখ্যা বাড়ায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে মোড়গুলোতে গাড়ির জটলা বেশি হচ্ছে। দুই-এক দিনের মধ্যে মহাসড়কে গাড়ির চাপ কমবে বলে ধারণা করছি।’
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি তার জানা নেই। গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়ে এবং মালিক সমিতির নেতাদের জানিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।