![ভোটের মাঠে অনিয়ম তদন্তে ইসির ৩০০ অনুসন্ধান কমিটি](uploads/2023/11/25/1700896745.EC-logo.jpg)
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন স্থানে ঘটা অনিয়ম নিষ্পত্তির জন্য প্রতিটি আসনে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি করে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইতোমধ্যে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে গত বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) আইন মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরে নির্বাচনকালীন কোনো ধরনের অপরাধ আমলে নিয়ে তা তদন্ত করতে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তাদের জন্য নির্দেশনা দিয়ে ইসি থেকে পরিপত্র জারি করা হয়।
পরিপত্রে ইসি জানায়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে প্রতিটি আসনে সেই জেলার সহকারী জজ, সিনিয়র সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজদের দায়িত্ব দিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়।
এই কমিটিকে নির্বাচন-পূর্ব অনিয়মগুলো অনুসন্ধান করে কমিশনের কাছে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব বা সুপারিশসহ অনুসন্ধানের তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অনুসন্ধানের বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনী অপরাধ; সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর লঙ্ঘনজনিত বিষয় বা ঘটনাসমূহ এবং কোনো ব্যক্তি করা কোনো কার্য বা বিচ্যুতির ফলে ভীতি, বাধা, দমন বা মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বা পরিচালনায় বাধাগ্রস্ত বা ব্যাহত করে এমন ঘটনা।
ইসি জানায়, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বা তার কাছে দাখিলকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে বা নিজ উদ্যোগে ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ সংক্রান্ত বিষয়গুলো বা ঘটনাসমূহ অনুসন্ধান করতে পারবেন। এসব অনিয়ম-অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ ও ঘটনা নির্বাচন কমিশন/রিটার্নিং অফিসার/সহকারী রিটার্নিং অফিসার/নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কমিটির কাছ থেকে পেয়ে থাকলে তা অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন কমিশনের কাছে প্রেরণ করবেন।
অনুসন্ধান কমিটি কোনো ব্যক্তিকে এর সম্মুখে হাজির হতে ও শপথপূর্বক সাক্ষ্য প্রদানে এবং কমিটির কাছে প্রয়োজনীয় দলিল বা তথ্য দাখিল করতে কোড অব সিভিল প্রসিডিউর, ১৯০৮ (অ্যাক্ট ভি অব ১৯০৮) এর অধীন দেওয়ানি আদালতের ন্যায় একই ক্ষমতাবান হবেন। এবং কমিটির কার্যক্রম পেনাল কোড, ১৮৬০ এর ১৯৩ ও ২২৮ ধারায় বর্ণিত বিচারিক কার্যক্রম হিসেবে গণ্য হবে।
পরিপত্রে ইসি আরও জানায়, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি দায়িত্ব পালনের সময় নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম সংঘটিত হলে তা অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন এবং সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওই অনুসন্ধান প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর পাঠাবেন এবং অতিসত্বর ওই প্রতিবেদন পিডিএফ ফরমেটে সচিবালয়ের আইন অনুবিভাগের উপসচিব (লিগ্যাল এফেয়ার্স) ও সিনিয়র/সহকারী সচিব (আইন বিষয়ক-১) এর ইন্টারনাল অ্যাকাউন্টে পাঠাবেন।
সংস্থাটি আরও জানায়, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত জ্বালানি ও আপ্যায়ন ব্যয়সহ বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। অনুসন্ধান কার্য পরিচালনার ব্যাপারে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চাহিদা অনুসারে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা/জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিগুলোর কর্মকর্তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ বা ব্রিফিং দেওয়া হবে এবং দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত আইন ও বিধি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা অর্জনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল দেওয়া হবে।
এলিস/অমিয়/