ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

প্রতীক বরাদ্দ আজ, ভোটের লড়াইয়ে মাঠে নামবেন ১৮৯৬ প্রার্থী

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ এএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:২৮ এএম
প্রতীক বরাদ্দ আজ, ভোটের লড়াইয়ে মাঠে নামবেন ১৮৯৬ প্রার্থী
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে আজ সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রতীক বরাদ্দ করবে নির্বাচন কমিশন। রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) ছিল যাচাই-বাছাই এবং আপিল নিষ্পত্তির পর বৈধ হওয়া প্রার্থীদের স্বেচ্ছায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। সারা দেশের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রবিবার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ৩৪৭ জন প্রার্থী। স্থগিত আছে ৫ জনের প্রার্থিতা। প্রত্যাহার শেষে প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৯৬টি।

রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানান।

ইসি সচিব বলেন, দেশের ৬৪টি জেলার রিটার্নিং অফিসার এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর আসনগুলোর রিটার্নিং অফিসার থেকে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী মোট মনোনয়নপত্র দাখিলের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭১৬ জন। বাছাইয়ে বাতিল হয়েছিল ৭৩১ জন। ইসিতে আপিল দায়ের করেছিল ৫৬০টি এবং আপিল মঞ্জুর হয় ২৮৬টি। শুনানি শেষে আপিল নামঞ্জুর করা হয় ২৭৪টি। আপিল নিষ্পত্তি শেষে এবারের নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী ছিলেন ২ হাজার ২৬০ জন।

সচিব জানান, নিবন্ধিত ২৭টি রাজনৈতিক দল এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। ২৮টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি দল অর্থাৎ গণতন্ত্রী পার্টি বাদ পড়েছে। 

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেন যারা 

ঢাকা বিভাগীয় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন ঢাকা সিটির ১৫ আসনের ২৬ প্রার্থী। ঢাকা-১৭ আসন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি এবার রংপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচন করছেন। একই আসন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ) আসন থেকে মনোনয়ন বহাল রেখেছেন অ্যাডভো‌কেট সালমা ইসলাম।

ঢাকা-৬ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ। একই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের স্ত্রী ফারহানা সাঈদ। ওই আসন থেকে এবার নির্বাচন করবেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাঈদ খোকন।

ঢাকার অন্য যেসব আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা সরে দাঁড়িয়েছেন- ঢাকা-৫ আসনে মীর আব্দুস সবুর, ঢাকা-৭ আসনের মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ঢাকা-৮ আসনের জুবের আলম খান, ঢাকা-৯ আসনের কাজী আবুল খায়ের, ঢাকা-১০ আসনের হাজী মো. শাহজাহান, ঢাকা-১১ আসনের শামীম আহমেদ, ঢাকা-১২ আসনের খোরশেদ আলম খুশু, ঢাকা-১৩ আসনের জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৪ আসনে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি (জেপি) শেখ শহীদুল ইসলাম, ঢাকা-১৫ আসনের মো. সামসুল হক এবং ঢাকা-১৬ আসরের মো. আমানত হোসেন।

মনোনয়ন প্রত্যাহার করা জাকের পার্টির প্রার্থীরা হলেন- ঢাকা-৪ আসনের মো. রবিউল ইসলাম, ঢাকা-৭ আসনের বিপ্লব চন্দ্র বণিক, ঢাকা-৮ আসনের মো. নুরুল ইসলাম লিটন, ঢাকা-৯ আসনের মোহাম্মদ মফিজ উল্লাহ, ঢাকা-১০ আসনের মো. হুমায়ুন কবীর, ঢাকা-১১ আসনের মো. মাসুদ রানা, ঢাকা-১২ আসনের হুমায়ুন কবীর, ঢাকা-১৪ আসনের জাকির হোসেন, ঢাকা-১৫ আসনের হুমায়ুন কবীর, ঢাকা-১৬ আসনের আমিনুল ইসলাম, ঢাকা-১৭ আসনের কাজী মো. রাশিদুল হাসান এবং ঢাকা-১৮ আসনে মো. শরিফ হোসেন।

জাকের পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার জানিয়েছেন, তারা নির্বাচনে থাকছেন। এবার প্রার্থী দিয়েছিলেন ২১৮টি আসনে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করতে ১০টির কম আসনে প্রার্থী রেখে বাকি আসন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নিজেদের প্রতীক গোলাপ ফুল নিয়েই তারা নির্বাচন করবেন। 

এ ছাড়া বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ফরিদপুর-১ আসনে (মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা) থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আব্দুর রহমানকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক এবং  ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে নৌকার প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু।

চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। এ প্রসঙ্গে দিলীপ বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, মীরসরাই আসনে আমি জোট থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। মনোনয়ন না পেয়ে নৌকার পক্ষে প্রত্যাহার করেছি। আমার প্রতিনিধি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখন আমি ঢাকায় আছি। দু-একদিনের মধ্যে এলাকায় গিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাইব।

এবারের জাতীয় নির্বাচনে সংসদীয় ৩শ আসনের বিপরীতে ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ে ৭৩১টি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে করা আপিল নিষ্পত্তি হয় ১৫ ডিসেম্বর। 
এদিকে ইসির আদালতে আপিলে বাদপড়া আওয়ামী লীগের ৫ প্রার্থীসহ আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থী উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। তাদের আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টে দুটি বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে। সেই আদালতে শুনানিতে বাদ পড়াদের মধ্যে যারা বৈধতা পাবেন, আইন অনুযায়ী তারাও ভোটে অংশ নিতে পারবেন।

সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি। আজ ১৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করবে নির্বাচন কমিশন। আর প্রতীক পাওয়ার পর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রার্থীরা ভোটের প্রচার চালাতে পারবেন। তবে এবার যে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

এলিস/এমএ/

মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট বসছে আজ

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০১:০৪ এএম
মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট বসছে আজ
ছবি : খবরের কাগজ

মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর সোমবার (১ জুলাই) থেকে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বসছে। মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর বর্তমানে ভ্যাট মওকুফ রয়েছে। যার সময়সীমা রবিবার (৩০ জুন) পর্যন্ত ছিল।

ভ্যাট বসার কারণে মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়বে কি না তা জানতে চাওয়া হলে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক খবরের কাগজকে বলেন, ‘১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের কারণে মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর যেন কোনো প্রভাব না পড়ে, এর জন্য আমরা সড়ক মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছি। সড়ক মন্ত্রণালয় সেই চিঠি এনবিআরকে দিয়েছে। কিন্তু এনবিআর থেকে এখনো কোনো উত্তর পাইনি। তাই মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।    

সূত্র জানায়, মেট্রোরেলের ভাড়ার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ কর হলে দুইভাবে এনবিআরকে ভ্যাট পরিশোধ করার সুযোগ আছে। চলমান ভাড়া থেকে ভাড়া কেটে এনবিআরকে দেওয়া হতে পারে। আবার ভাড়ার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসাব কষে ভাড়ার সঙ্গে যোগ করে আদায় করা যায়। এতে ভাড়ার সঙ্গে যোগ হবে। ফলে ভাড়া বাড়বে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমটিসিএলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন,  ১ জুলাই থেকে ভাড়া বাড়ার বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশ পাইনি। নিয়ম মতো, ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি ডিএমটিসিএলের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিদ্ধান্ত হতে হবে। কিন্তু এর আগে এনবিআর থেকে কীভাবে ভ্যাট আদায় করবে তা স্পষ্ট করতে হবে। যে ভাড়া থেকে কেটে নিবে, না কি ভাড়ার সঙ্গে যোগ করে ভাড়া বাড়িয়ে আদায় করা হবে।

২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ওই সুবিধা দিয়ে আসছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কিন্তু এই জুনের পরে ওই ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা বাতিল করছে প্রতিষ্ঠানটি। এ কারণে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১ জুলাই থেকে মেট্রোরেল সেবার ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট কর্তন ও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে ঢাকা দক্ষিণ এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো চিঠি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

ঢাকা দক্ষিণ এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার শওকত আলী সাদীর সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হবে ৩০ জুন। এনবিআর গত ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবার ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করে। পরবর্তী সময়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পুনরায় আলোচনা হলেও মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়ার অপারগতা জ্ঞাপন করে এনবিআর। 

এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মেট্রোরেল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর আদায় করতে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা পরিপালন যেমন ১৫ শতাংশ মূসকসহ টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করে মূসক আদায় এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তুতি সম্পর্কে বিভাগীয় দপ্তরকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।

গত ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর পর্যায়ক্রমে মেট্রোরেল চলাচল মতিঝিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোনো ক্লাস বা শ্রেণিবিন্যাস নেই। সব যাত্রী একই ভাড়ায় নির্ধারিত গন্তব্যে আসা-যাওয়া করতে পারেন। 

এ ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তিন ফুট উচ্চতার শিশুরা বিনা ভাড়ায় এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্টে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে পারেন। কিন্তু সবার জন্য মেট্রোরেল ও মেট্রোরেলের যাত্রীদের কোনো ক্লাস বা শ্রেণিবিন্যাস না থাকায় মেট্রোরেলের সেবার ওপর এই মুহূর্তে কোনো ধরনের মূসক বা ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল না এতদিন।

 

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন জুনে নির্বাচনি সহিংসতার শিকার ৪৯৪ জন

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:২৩ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:২৭ এএম
জুনে নির্বাচনি সহিংসতার শিকার ৪৯৪ জন
প্রতীকী ছবি

জুন মাসে নির্বাচনের আগে ও পরে সহিংসতায় হতাহতের সংখ্যা উদ্বেগজনক। সব মিলিয়ে জুন মাসে নির্বাচনকে ঘিরে ৪৭টি সহিংস ঘটনা ঘটেছে। যে সব ঘটনার শিকার হয়েছেন ৪৯৪ জন মানুষ। এদের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বেসরকারি সংস্থা মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) জুন মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদনে রবিবার (৩০ জুন) এ সব তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি মনে করে, এক পাক্ষিক নির্বাচন সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। পাশাপাশি জনজীবনকে আতঙ্কের মধ্যে রেখে সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করেছে সে বিষয়টি জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড জুন মাসে পরিলক্ষিত না হলেও সরকারদলীয় অভ্যন্তরীণ অন্তর্দ্বন্দের কারণে রাজনৈতিক সহিংসতা উদ্বেগজনক পর্যায়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধরনের কোন্দলের ২০টি ঘটনায় সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১৮৯ জন। এর মধ্যে ৪ জন নিহত  ও ১৮৫ জন আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক বন্দুকযুদ্ধ, হেফাজতে মৃত্যু, পুলিশি নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। স্বাধীন মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও অবিরত হুমকির সম্মুখিন হচ্ছেন। অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক হতাহতের মতো ঘটনা বন্ধ হয়নি, সংখ্যালঘু নির্যাতন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা  বিগত মাসের তুলনায় কিছুটা কমলেও এখনো উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়ে গেছে। অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার ও গণপিটুনির মত ঘটনায় হতাহতের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে যা মানবাধিকারের চরম লংঘন।

এমএসএফ মনে করে, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও আইনি পরিবেশ উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সব ধরনের সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা ও ভীতিকর পরিবেশ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ত্বরিত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। 

এমএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী, বিজিবি ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) কর্তৃক গোলাগুলির ৫টি ঘটনা ঘটেছে। পাঁচটি গোলাগুলির ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ মাসে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ মাসে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১০টি নির্যাতন ও অপতৎপরতার ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। পুলিশের গুলিতে ৩ জন আহত, পুলিশি নির্যাতনে আহত হয়েছেন ৪ জন, হেফাজতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ২ জন ও পুলিশ কর্তৃক শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটেছে একটি।

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে কারা হেফাজতে একজন কয়েদি আত্মহত্যাসহ মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত মাসে এর সংখ্যা ছিল ১০ জন। 

এমএসএফ বলছে, জুন মাসে ১৬টি ঘটনায় ২৩ জন সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আহত ও আক্রমণের শিকার হয়েছেন ৮ জন, হুমকির সম্মুখীন ২ জন, লাঞ্ছিত হয়েছেন ৪ জন এবং সংবাদ প্রকাশের জেরে ৩টি মামলা হয়েছে ৯ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। 

এমএসএফ এর সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, এ মাসে সাইবার নিরাপত্তা আইনে ৯টি মামলায় অভিযুক্ত ২০ জন ব্যক্তির মধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৪ জন হিন্দু ধর্মাম্বলী যুবক যাদেরকে ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া, ১ জন এনজিও কর্মীকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি, ১ জন যুবককে ফেসবুকে অশ্লীল ছবি পোস্ট করার এবং ২ জন যুবককে দিনাজপুরে এসপির নামে ফেসবুক আইডি খুলে প্রতারণা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এমএসএফের সীমান্তে হত্যা ও পরিস্থিতি বিষয়ক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সীমান্তে হত্যা ও নির্যাতন বন্ধ করতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে সীমান্ত হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না বরং বেড়েই চলেছে। অপরদিকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তাদের অভ্যন্তরে ও বাংলাদেশ সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটিয়ে আতংক সৃষ্টি করে ভয়াবহ অবস্থার তৈরি করে চলেছে। এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী জুন ২০২৪ মাসে সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক গুলিতে ২ জন নিহত, বাংলাদেশের অভ্যান্তরে ঢুকে ৩ জনসহ মোট ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন, বিএসএফ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে এক বাংলাদেশি কৃষককে শারীরিক নির্যাতন করে গুরুতর আহত করেছে। এছাড়া ভারতীয় খাসিয়াদের নির্যাতনে এক বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে একজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মিয়ানমার সীমান্তেরক্ষী বাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনা ঘটেই চলেছে ফলে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকেরা উৎকন্ঠা ও আতংকে জীবনযাপন করছে।

এমএসএফ বলছে, এ মাসে বিভিন্ন পর্যায়ে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ৪টি ঘটনা ঘটেছে। এ মাসে ২৯৬টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে যা গত মাসের তুলনায় ৩৩টি কম। এ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ৪১টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১১টি, ধর্ষণ ও হত্যা ৩টি। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬ জন প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী।

তিথি/এমএ/

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আবারও সরব হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০৯ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০৯ এএম
কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আবারও সরব হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
ছবি : খবরের কাগজ

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল না করায় আবারও কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

গত ৫ জুন হাইকোর্ট ‘২০১৮ সালে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে’ অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসগুলো। আন্দোলনকারীরা সিদ্ধান্ত বাতিলে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। 

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তারা চারটি দাবি জানান। সেগুলো হলো ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে)। এ ছাড়া সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

কবির/এমএ/

সাংবাদিকদের নিয়ে লায়লা কানিজের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি ডিইউজের

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:৪৩ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:৪৩ পিএম
সাংবাদিকদের নিয়ে লায়লা কানিজের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি ডিইউজের
ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিকদের নিয়ে ছাগলকাণ্ডে বিতর্কিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা কানিজের উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার এবং হীন বক্তব্যের জন্য তাকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।

রবিবার (৩০ জুন) এক বিবৃতিতে ডিইউজে এ আহ্বান জানায়।

সংগঠনটির সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকী সাংবাদিকদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও হীন উদ্দেশ্যমূলক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বড় বড় সাংবাদিকদের কিনেই তারপর এসেছি। সব থেমে যাবে।’ তার এ হীন বক্তব্য সাংবাদিক সমাজকে মর্মাহত করেছে। এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক হীন বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং একই সঙ্গে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।

নেতারা বলেন, এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারবেন না’ লায়লা কানিজ। মতিউর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সেগুলো সাংবাদিকরা প্রকাশ করবেনই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাজে মন্তব্য করে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ থেকে সাংবাদিকদের বিরত রাখা যাবে না।

বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে প্রকাশ্যে ও ঢালাওভাবে এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য সাংবাদিকদের নীতি-নৈতিকতার ওপর চরম আঘাত করেছে ও সমাজের কাছে সাংবাদিকদের হেয় প্রতিপন্ন করেছে। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এ ধরনের ঔদ্ধত্যমূলক বক্তব্য দিয়ে তিনি যে অন্যায় করেছেন তা ক্ষমাহীন। 

নেতারা বলেন, একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিকের কাজ অপরাধের শেকড় খুঁজে বের করা। তার প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্য ও সত্যে গরমিল থাকলে যে কেউ প্রমাণ সাপেক্ষে সেটি নিয়ে অভিযোগ তুলতে পারেন। তবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থেকে সাংবাদিকদের সম্পর্কে উদ্দেশ্যমূলক হীন বক্তব্য দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

ছাঁটাই প্রস্তাবে আলোচনা শিক্ষাব্যবস্থায় অনিয়ম-দুর্নীতি, এমপিদের কড়া সমালোচনা

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:১৮ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:১৮ পিএম
শিক্ষাব্যবস্থায় অনিয়ম-দুর্নীতি, এমপিদের কড়া সমালোচনা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। তারা বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থায় বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্য লেগেই আছে। শিক্ষার দুর্নীতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। টাকা ছাড়া কিছুই হয় না। এমপিওভুক্তির জন্য টেবিলে টেবিলে টাকা দিতে হয়।’ তবে এমপিদের দুর্নীতির অভিযোগের কোনো সদুত্তর দেননি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

রবিবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মঞ্জুরি দাবির বিরুদ্ধে ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় তারা এসব অভিযোগ করেন। 

বরিশাল-৪ আসনের এমপি পংকজ নাথ বলেন, ‘এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রশংসনীয়। তবে কুড়িগ্রামের চিলমারীর কেউ যদি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে নিয়োগ পান, তাহলে তিনি যোগদান করেন না। পার্বত্য এলাকায় তো আরও সমস্যা। এ কারণে শিক্ষক নিয়োগের পরেও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এই নিয়োগটি অঞ্চলভিত্তিক করার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। শিক্ষক ও শিক্ষা অফিসারদের শূন্য পদগুলোতে দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে।’

নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম বলেন, ‘সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি। এটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। টাকা ছাড়া কোনো শিক্ষক অবসর ভাতা পাচ্ছেন না। আমার শ্যালক শিক্ষক ছিল, মারা গেছে। আমি নিজে তিন বছর তদবির করলেও অবসর ভাতা পাইনি। টাকা ছাড়া কিছুই হয় না। এটা সর্বগ্রাসী দুর্নীতি। এই দুর্নীতির কারণে গোটা জাতি গ্রাস হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষিত বেকার যুবকরা আত্মহত্যা করছে।’

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু শিক্ষার মানের পরিবর্তন হয়নি। আমার নির্বাচনি এলাকায় একটি সরকারি বিদ্যালয়ে ৪৩টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। পাঠদান হয়নি পাঁচটিতে। সেখানকার ৪৩টি রুমের মধ্যে ১৫ থেকে ২০টি ব্যবহার হয়। বিষয়টা এমন- আমার পাকা বাড়ি, পাকা পায়খানা কিন্তু খাবার নেই। এই হচ্ছে আজকের শিক্ষার অবস্থা।’

সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘দূরবর্তী জায়গায় অনেকে যোগদান করে না, এটা ঠিক। তারপরও বিগত ছয় মাসে ৯৯ হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। আমরা আইন সংশোধনের মাধ্যমে তা নিরসনের চেষ্টা করছি।’ 

এলিস/এমএ/