ভোটারদের কেউ ভোট দিতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া এবং ভোট দিতে কাউকে বাধ্য করা- দুটোই মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘কেউ ভোট না দিলেও সেটা তার ইচ্ছা, ব্যক্তিগত অধিকার। সে ব্যাপারে কাউকেই জোর করা যাবে না। অন্যদিকে কেউ যদি ভোট দিতে চান তাকে বাধা দেওয়াও অন্যায়।’
কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্বের কোনো কোনো দেশ আছে যেখানে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক, যেমন নিউজিল্যান্ড। কিন্তু আমাদের দেশে এ ধরনের নিয়ম নেই, সে কারণে আমি বলব, কেউ যদি ভোট না দিতে যায় তাহলে সেটা তার ইচ্ছা। কিন্তু কেউ যদি দিতে চায় তাকে বাধা দেওয়াও অনুচিত, আইনের বরখেলাপ এবং এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। একই সঙ্গে কাউকে যদি ভোট দিতে বাধ্য করা হয় সেটাও মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
তিনি বলেন,‘এরই মধ্যে আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়েছি এবং আগামী কয়েকদিনেও যাব, জনসংযোগ করব, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করব, যাতে করে মানুষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।’
বৈঠক প্রসঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘কয়েকদিন পরই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সবাই জানি নির্বাচন একটি অধিকার, আমাদের সবার সাংবিধানিকভাবে আন্তর্জাতিক দলিল মোতাবেক নির্বাচন করা এবং নির্বাচিত হওয়া দেশের নাগরিকের অধিকার। সে অধিকারটি যাতে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা যায় এবং দেশের একটি সুন্দর নির্বাচন সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা আজকে নির্বাচন কমিশনে এসেছিলাম।’
ড. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বৈঠকে আমরা বিশেষত নির্বাচনপূর্ব সময়ে আচরণ ও কার্যক্রম, নির্বাচন সময়কার আচরণ এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ের আচরণের বিষয়ে আলোচনা করেছি। এই আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল, আমরা অনেক সময় দেখেছি নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে রাতে কর্মীরা বিভিন্ন রকমের উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং মানুষের আস্থা অর্জনে ব্যাহত হয়। সে ধরনের কিছু যেন না হয়ে থাকে সেজন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন অনেক সময় অনেক ধরনের উত্তেজনার সৃষ্টি করা হয়, বিশেষ করে যারা সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্য অথবা পঙ্গু বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি তাদের ক্ষেত্রে অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেগুলো যেন না হয় এবং প্রত্যেক প্রার্থী যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমরা বলেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন সেক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা পালন করে সেটা আমরা স্মরণ করে দিয়েছি।’
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমরা চাই দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। এজন্য আমাদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে জনসংযোগ করে যাচ্ছি, করব এবং আমরা বিশ্বাস করি এবারের ভোট সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।’
এলিস/সালমান/