![‘দেশকে যেন পেছনে ঠেলে দিতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে’](uploads/2024/02/17/1708153811.Sheikh_Hasina.jpg)
কেউ যেন দেশকে আবার স্বাধীনতা বিরোধীদের দেশে পরিণত করতে এবং পেছনের দিকে ঠেলে দিতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে বিশেষ করে প্রবাসীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে জার্মানির মিউনিখের হোটেল বার্গারহাউস গার্চিংয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় দেশবাসীকে নিয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্র থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অবশ্যই এ অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে। দেশকে কেউ যেন পেছনের দিকে ঠেলে দিতে ও রাজাকারের দেশে পরিণত করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।’
বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানে প্রতিটি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আমরা জাতির পিতার বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট সোনার বাংলাদেশে রূপান্তরিত করব।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, মুক্তিযুদ্ধের ফল সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় বৃথা যেতে দেবেন না। তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই ভাবি না আমার কী দরকার, বরং আমি ভাবি যে আমি দেশ ও জনগণের উন্নতির জন্য কী করতে পারি।’
আওয়ামী লীগকে গণমুখী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের মানুষ মাতৃভাষা বাংলা ও দেশের স্বাধীনতাসহ সবকিছু পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের দল ক্ষমতায় থাকায় আমরা কোভিড-১৯ মহামারির মতো বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পেরেছি। যখনই সুযোগ পাই জনগণের কল্যাণে কাজ করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে কারণ তারা প্রয়োজনে সব সময় দলকে পাশে পায়।’
দেশের সার্বিক উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের ব্যাপক আর্থসামাজিক উন্নয়ন করেছি। আমাদের লক্ষ্য শুধু মেগা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা নয়, তৃণমূলেও অগ্রগতি করা।’
বিএনপিকে লুটেরাদের দল আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই দল জনগণের কল্যাণে কিছুই করে না, বরং নিজেদের ভাগ্য গড়ে তোলে। তারা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মানুষকে পুড়িয়ে মারার কারণে পরাজয়ের ভয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি কারণ তারা জানে, জনগণ তাদের ভোট দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘একজন সামরিক স্বৈরশাসকের দ্বারা গঠিত দলটি সব সময় এজেন্সিতে বিশ্বাস করে এবং তাদের সাহায্য ছাড়া কিছুই করতে পারে না।’
বিএনপিকে হ্যাঁ/না ভোট এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনি প্রক্রিয়া ধ্বংসের জন্য দায়ী করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে।’ তবে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে ভোটের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য। গত সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ বিশেষ করে নারীরা অবাধে ভোট দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় না বসালে ২০০৯ সাল থেকে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ শাসনামলে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তা নষ্ট হয়ে যেত। লুটেরা (বিএনপি) সব লুট করে নিত।’
শেখ হাসিনা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তার সরকার সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে উল্লেখ করে তিনি প্রবাসীদের বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের নিজেদের যোগ্য হিসেবে প্রস্তুত করতে বলেন, যাতে তারা নিজেদের, দেশ ও মানুষের সেবা করতে পারে। সরকার বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি এবং যার জন্য আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরি করছি।’ সরকার দেশকে ডিজিটাল করেছে এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করবে বলে জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং মিউনিখের স্থানীয় মেয়র অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। বাসস
সালমান/