![এলজিইডির প্রকৌশলীর স্ত্রীর ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ](uploads/2024/05/21/ACC-1716276100.jpg)
অবৈধ উপায়ে অন্তত ৬ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পিআরএল ভোগরত) মো. মজিবুর রহমান সিকদারের স্ত্রী কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়েছে।
সোমবার (২০ মে) দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন দুদক উপপরিচালক জেসমিন আক্তার।
এজাহারে বলা হয়, কামরুন নাহার একজন গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও স্থাবর-অস্থাবরসহ মোট ৬ কোটি ৯ লাখ ২৮ হাজার ২৭৫ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব সম্পদের বৈধতা দেখানোর জন্য তিনি মাছের ঘের লিজ নিয়ে ব্যবসা করার মিথ্যা তথ্য-উপাত্ত দুদকে দাখিল করেছেন। এ ক্ষেত্রে লিজসংক্রান্ত চুক্তির কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে। কামরুন নাহার তার আয়কর বিবরণীতে ২০০১-০২ করবর্ষ থেকে ২০২০-২১ করবর্ষ পর্যন্ত মোট আয় দেখিয়েছেন ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৮ হাজার ৮১৪ টাকা।
এর মধ্যে বৈধ উৎস ছাড়াই আয় দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ২৭৫ টাকা এবং রাখি-মালের ব্যবসা (স্টক বিজনেস) বাবদ আয় দেখানো হয়েছে ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এটি ভিত্তিহীন বলে প্রতীয়মান হয়েছে। অর্থাৎ কামরুন নাহারের ৬ কোটি ৯ লাখ ২৮ হাজার ২৭৫ টাকার সম্পদ অর্জনের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। এদিকে দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৫ কোটি ১৫ লাখ ৪ হাজার ৪৫৩ টাকার সম্পদের মালিকানা দেখিয়েছেন। ফলে তিনি ৯৪ লাখ ২৩ হাজার ৮২২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
এদিকে ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কামরুন নাহারের স্বামী মজিবুর রহমান সিকদারের বিরুদ্ধে গত ১৪ মে আরেকটি মামলা করেন দুদক উপপরিচালক জেসমিন আক্তার। ওই এজাহারে বলা হয়, মজিবুর রহমান সিকদার তার সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ১০ কোটি ৭৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৩৬ টাকার সম্পদের মালিকানা উল্লেখ করেন। যাচাইকালে তার নামে মোট ১২ কোটি ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩৬ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ বাকি ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন। অনুসন্ধানে তার পারিবারিক মোট ব্যয়সহ ৮ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়। ফলে বাকি ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৮ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে প্রমাণিত হয়েছে।
মজিবুর রহমান সিকদার তার অবৈধ সম্পদকে বৈধতা দেখানোর অপকৌশলের অংশ হিসেবে চা বিক্রেতা, পান বিক্রেতা, মুদি দোকানদার, কাঠমিস্ত্রি, কৃষক এবং প্রবাসী শ্রমিকের কাছ থেকে দানের মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের ২০৩ দশমিক ৫ শতাংশ জমির মালিকানা উল্লেখ করেছেন। অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট দানের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। দানকারীদের কারও সঙ্গে মজিবুর রহমান সিকদারের কোনো রকম আত্মীয়তারও সম্পর্ক নেই।