চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ হাজার ৯৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে নগরের নন্দনকাননে থিয়েটার ইনস্টিটিউটে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী এ বাজেট ঘোষণা করেন।
নতুন অর্থবছরের বাজেটের পাশাপাশি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চসিকের ১ হাজার ৬৬১ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেটও উপস্থাপন করেন মেয়র। ওই অর্থবছরে ১ হাজার ৮৮৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল। চসিকের ইতিহাসে এবার বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে রেকর্ড ৮৮ শতাংশ।
বাজেট ঘোষণাকালে মেয়র চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক এবং স্মার্ট নগর হিসেবে গড়ে তুলতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। বর্তমান ও ভবিষ্যতের আলোকে, নগরবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর প্রত্যাশা করেন তিনি।
সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বাজেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। বাজেট বিবরণী উপস্থাপন করেন অর্থ ও সংস্থাপনবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. ইসমাইল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, আফরোজা কালাম, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চসিকের বিভাগীয় প্রধানসহ অন্য কর্মকর্তারা।
এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, এই শহরের আয়তন অনুসারে জনসংখ্যা বেশি। তাই সিটি করপোরেশনের আয়তন বাড়ানোর পরিকল্পনা তার রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু বাংলাদেশের নয়, এশিয়ার অর্থনৈতিকভাবে প্রতিশ্রুতিশীল দেশগুলোর মধ্যে একটি সম্ভাবনার জনপদ চট্টগ্রাম। ৬০ বর্গ মাইলের এই শহরের বাসিন্দা প্রায় ৭০ লক্ষাধিক।
১০৭৫ কোটি টাকা দেনা নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, গত ৩ বছরে তা কমিয়ে ৪৪০ কোটি টাকায় এনেছি। এ ছাড়া আয়কর ১১৩ কোটি টাকা ও মূল্য সংযোজন কর ১৩৪ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। প্রায় ৩৫ কোটি টাকা আনুতোষিক ও ভবিষ্যৎ তহবিল পরিশোধ করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, পানিপ্রবাহ সচল রাখার লক্ষ্যে নগরের সুন্নিয়া খাল, গুলজার খাল, নাসির, বির্জা, সৈয়দশাহ্, চাক্তাই ডাইভারশন খাল, কৃষি খাল ও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বড় নালা থেকে দুই লক্ষাধিক ঘন ফুট মাটি ও ভাসমান বর্জ্য উত্তোলন করে ডাম্পিং করা হয়েছে। রাস্তা-নালা-ফুটপাত দখলকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চলছে। নিউমার্কেট ও স্টেশন রোড এবং আগ্রাবাদ এলাকায় দীর্ঘদিনের ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদের মাধ্যমে নগরবাসীকে চলাফেরার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মেয়র বলেন, ‘এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক ২৪৯০.৯৬ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে। এয়ারপোর্ট রোড তথা শেখ হাসিনা সড়কের উন্নয়নের পাশাপাশি এয়ারপোর্ট মোড়ে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু ভার্টিক্যাল ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। বহদ্দারহাট বারইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খননে (২য় সংশোধিত) ১৩৬২.৬২ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে। চসিকের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণে ১২৬৮.৮২৭১ কোটি টাকার প্রকল্পটির কাজ শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়া ২৬০ কোটি টাকার সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ‘পরিচ্ছন্নতাকর্মী-নিবাস নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাতটি ১৪তলা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রজেক্টের অর্থায়নে ২৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকার ৮টি মাঠ উন্নয়ন ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফুটপাত উন্নয়ন, বিভিন্ন সড়কের আলোকায়নসহ বেশ কিছু সড়ক উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে।