ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

দেশ বিক্রির চুক্তি আড়াল করতেই কথিত জঙ্গি নাটক: ইসলামী আন্দোলন

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৯ পিএম
দেশ বিক্রির চুক্তি আড়াল করতেই কথিত জঙ্গি নাটক: ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

ভারতের সঙ্গে দেশ বিক্রির চুক্তি আড়াল করতেই কথিত জঙ্গি নাটক সাজানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।

রবিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তেজগাঁও থানা শাখার নবাগত সদস্য তারবিয়াতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে দেশ বিক্রির চুক্তি আড়াল করতেই নিরীহ মাদরাসার ছাত্রদের আটক করে কথিত জঙ্গি নাটক সাজানো হচ্ছে। যা দেশের মানুষ বহু আগ থেকেই জানে ও বুঝে। ঈদুল আজহার ছুটির পর যখন ছাত্ররা বাড়ি থেকে মাদরাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। যাতায়াত পথ থেকে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে তিন-চার দিন পর মিডিয়ার ট্রায়াল দিচ্ছে নাশকতা ও জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে দেশের স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে রাজনীতির মাঠ যখন উত্তপ্ত; পুলিশ, আমলা ও সরকারদলীয় দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারীদের মুখোশ যখন জাতির সামনে উন্মোচিত হচ্ছে, ঠিক তখন গণমাধ্যম ও দেশবাসীর দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্যদিকে ফেরানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে সরকার। অনতিবিলম্বে কথিত জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্তের অজুহাতে গ্রেপ্তারকৃত মাদরাসার নিরীহ ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দিন। অযথা হয়রানি বন্ধ করুন।’

শাখা সভাপতি আলহাজ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে ওই কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন নগর উত্তর সহ-প্রচার ও দাওয়াহবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ নাজমুল হাসান, মাওলানা সাব্বির খান, হাবিবুর রহমান, শাহজাহানসহ ওয়ার্ড ও ইউনিট নেতারা। 

এনাম আবেদীন/সালমান/অমিয়/

দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জাতীয় কৌতুক : রিজভী

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জাতীয় কৌতুক : রিজভী
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী সরকারের অবস্থান জাতীয় কৌতুক ছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

তিনি বলেন, ‘আজকাল সংবাদপত্রে দৃষ্টি দিলেই বেনজীর, মতিউর, আছাদুজ্জামান আরও কত নাম আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই সমস্ত দুর্নীতির মহানায়করা সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বড় বড় সরকারি পদে অধিষ্ঠিত থাকল কীভাবে? এর উত্তর কি প্রধানমন্ত্রী দিতে পারবেন? তাহলে কি কোনো ভাগ-বাটোয়ারার কারণে এই সমস্ত নিষ্ঠুর পুলিশ কর্মকর্তাদের সব গোপন বিষয় ফাঁস করে দেওয়া হচ্ছে? আসলে গায়ে দুর্নীতির কালিমাখা আওয়ামী সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটা জাতীয় কৌতুক ছাড়া আর কিছু নয়।’ 

বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

এ ছাড়া বুধবার খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে জেলাভিত্তিক সমাবেশ চলাকালে নাটোরসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার নিন্দা জানান রিজভী।

দুদকের কোনো শক্ত মেরুদণ্ড নেই মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকারের নির্দেশমতো বিরোধী দলকে নির্যাতন করা আওয়ামী-দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ। তা না হলে বিগত ১৫-১৬ বছরে আওয়ামী লুটপাটের সরকার যে অনিয়ম, অপচয় এবং মহাদুর্নীতিকে দুর্নীতি দমন কমিশন কার্পেটের তলায় ঢেকে রাখে, সেই কমিশনারদের দ্বারা প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ পুলিশ এবং সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সঠিক তদন্ত হবে বলে জনগণ বিশ্বাস করে না।’

তিনি বলেন, “পর্দাকাণ্ড, বালিশকাণ্ড থেকে শুরু করে মতিউর-কাণ্ড পর্যন্ত অসংখ্য কাণ্ড-কারখানা এবং পাচারকৃত লুটের টাকার অনুসন্ধানে উদাসীনতা দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জনগণ দেখে আসছে। অথচ দুদক ‘রিপ ভ্যান উইংক্যাল’-এর মতো ঘুমিয়ে থেকেছে। জনগণের টাকার একচেটিয়া লুণ্ঠন ও আত্মসাৎকারীদের ডামি আওয়ামী সরকার মাফ করে দিয়েছে।”

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘ট্রানজিট ও এশিয়ান হাইওয়ের নামে শেখ হাসিনা মূলত ভারতকে করিডোর দিচ্ছেন। এটি চিরদিনের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে ভারতের ক্রীতদাস বানানোর গভীর অভিসন্ধি। রেলওয়ে করিডোর স্থাপনের চুক্তি তারই প্রতিফলন। বিএনপির শাসনামলে কোনো ট্রানজিট আদায় করা ভারতের পক্ষে সম্ভব হয়নি। ভারতের নীতি নির্ধারকরা বাংলাদেশ এবং জনগণকে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখে। অভিন্ন নদীর পানি, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্যিক ভারসাম্যসহ নানা সমস্যা সমাধানে আগ্রহী নয় তারা।’ 

রিজভী বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশের বুকচিরে রেললাইন স্থাপন দেশের স্বাধীনতা ও জনগণের স্বাধীনতাকে অবজ্ঞা করার শামিল।’ 

তিনি বলেন, ‘গত সোমবার থেকে দেশের সব মহানগর ও বুধবার দেশের সব জেলা শহরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সমাবেশ হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী সরকার। ব্যর্থ আওয়ামী সরকার পুনরায় গুমের মতো নৃশংসপন্থা অবলম্বন করে আবারও জনমনে ভীতি তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নাটোরে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হামলায় বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, নাটোর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু, জেলা শ্রমিকদলের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, পৌর বিএনপি আহ্বায়ক চপল, পৌর বিএনপি নেতা হিপলু, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মিজান, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং কলাপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন সিকদার, মুশফিকুর রহমান লিটু বিশ্বাস, সুমন গাজী, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিকুল ইসলাম দীপু, রাঙ্গাবালী স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাকিল মিয়াসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে মারধর করে গুরুতর আহত করে। এ ছাড়া বাগেরহাগ জেলা বিএনপির সমাবেশে হামলা হয়েছে।’

রিজভী আরও বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর শিশু হাসপাতাল থেকে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মারজুক আহমেদ, আল-আমিনকে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। এখনো তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবিলম্বে তাদের জনসম্মুখে হাজির করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

নাটোরে বিএনপির সমাবেশে হামলা, আহত ৭

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম
নাটোরে বিএনপির সমাবেশে হামলা, আহত ৭
ছবি : খবরের কাগজ

নাটোরে বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং রাসিকের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ সাতজন আহত হয়েছেন।

বুধবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে শহরের আলাইপুর এলাকায় নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই ঘটনায় জেলা যুবলীগকর্মী কোয়েলসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগকে দায়ী করছে বিএনপির নেতারা। 

তবে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

হামলায় আহত অন্যরা হলেন- শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক চপল, জেলা শ্রমিক দলের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, পৌর বিএনপির ৪নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হিটলু, সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব মিজানুর রহমান, দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও অন্য একজন।

বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, ঘটনার সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ ছাড়াও ৮-১০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে।

আহতদের মধ্যে কুপিয়ে জখম করা শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। অপরদিকে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের হাতে ককটেল লেগে তিনি আহত হন।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বুধবার সকালে শহরের আলাইপুর এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সমাবেশ ছিল। সমাবেশে যোগ দিতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু আসছিলেন। এ সময় নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে  সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

অন্যদিকে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং অন্য পাঁচজন শহরের হাফরাস্তা এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন। এই হামলায় যুবলীগকর্মী কোয়েলসহ অন্য সন্ত্রাসীরা নেতৃত্ব দেন বলে জানান ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ জানান, আহতদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। অপরদিকে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের হাত ভেঙেছে কি-না তা পরীক্ষার পর জানা যাবে।

মোসাদ্দেক হেসেন বুলবুল জানান, সরকারের উচ্ছৃঙ্খল তল্পিবাহকরা এই হামলা চালিয়েছে। তারা গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায়। 

তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনকে নেলসল ম্যান্ডেলার পরেই গণতন্ত্রের প্রতি অনুগত দাবি করে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একইসঙ্গে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এবিষয়ে জানতে চাাইলে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব জানান, এই ঘটনায় যুবলীগ বা আওয়ামী লীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে কোনো ককটেল ফোটানো বা গুলির ঘটনা তার জানা নেই। হামলার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কামাল মৃধা/অমিয়/

ক্ষমতায় রাখার প্রতিদান হিসেবে ভারতকে রেল ট্রানজিট: চরমোনাই পীর

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
ক্ষমতায় রাখার প্রতিদান হিসেবে ভারতকে রেল ট্রানজিট: চরমোনাই পীর
ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার পেছনে ভারতের অবদানের প্রতিদান হিসেবে তাদের রেল ট্রানজিট দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম চরমোনাই পীর।

বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত জাতীয় সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপে সূচনা বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ট্রানজিট দেওয়ার বিনিময়ে বাংলাদেশ কোনো কিছু আদায় করতে পারেনি; বরং বিনাশর্তে এমনকি প্রায় বিনা মাশুলে ট্রানজিট দিয়েছে। ট্রানজিট প্রদান আমাদের ভাবিয়ে তোলে। নিজেদের সার্বভৌমত্বের ওপরে থাকা অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।’

ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আতাউর রহমান গাজীর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবদিন, এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ-অধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, গণফোরামের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

চরমোনাই পীর বলেন, “বাংলাদেশ বরাবরই বিশ্ব মোড়লদের জিও পলিটিক্সের বাইরে নিরাপদ অবস্থান নিয়ে এসেছে। ইন্দো-প্যাসিফিক ইনিশিয়েটিভে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ দেশকে বিপজ্জনক ‘জিওপলিটিক্যাল’ রাজনীতিতে ফেলে দিতে পারে।”

তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের সৃষ্ট নানাবিধ সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ভারত সফর সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। যে চুক্তিগুলো করা হয়েছে, তাতে আওয়ামী লীগের ও বাংলাদেশের স্বার্থ দেখাতে পারছে না। কানেক্টিভিটির নামে যা করা হয়েছে, তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায় পরিষ্কার হয়েছে; ‘বাজার-টাজার করতে যাওয়া ও ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া’ এর মূল লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী যখন সীমানাবিহীন ইউরোপের দৃষ্টান্ত দেখান তখন সীমানা ও স্বাধীনতা নিয়ে আমরা শঙ্কিত না হয়ে পারি না।’’

রেজাউল করিম বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের পরিকল্পনাহীনতা, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও খামখেয়ালিপনার সর্বশেষ দেখা গেল নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনার চুক্তি থেকে। ভারতের গ্রিড ব্যবহার, ভারতকে দুই ধরনের মাশুল দিয়ে আনায় বিদ্যুৎ খাতকে অনিরাপদ ও ভারত নির্ভর করবে। কম দামের যুক্তি দিয়ে বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে, অথচ সবার আপত্তি উপেক্ষা করে দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নামে যে যুক্তিতে, যেভাবে ও যে পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় তাকে মগের মুল্লুক ছাড়া আর কিছু বলার নেই।’

শফিকুল ইসলাম/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

‘কোরবানির শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একযোগে কাজ করতে হবে’

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০১:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০২:২৮ পিএম
‘কোরবানির শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একযোগে কাজ করতে হবে’
ছবি: খবরের কাগজ

কোরবানির প্রকৃত শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।

বুধবার (৩ জুলাই) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের পল্লবী মধ্য থানা আয়োজিত এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সরকারের অগণতান্ত্রিক মনোভাবে, অপশাসন-দুঃশাসন ও লাগামহীন মূল্যস্ফীতির কারণেই এবারের ঈদ সবার জন্য আনন্দঘন হয়ে ওঠেনি। তাই আগামী দিনের ঈদকে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করতে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।’

দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র ও অপশাসনমুক্ত করতে সব পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

থানা আমির আবুল কালাম পাঠানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জুবায়ের হোসাইন রাজনের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও গুলশান জোন পরিচালক মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত, পল্লবী দক্ষিণের আমির আশরাফুল আলম ও পল্লবী উত্তরের আমির সাইফুল কাদের প্রমুখ।

তা ছাড়া, মিরপুর পশ্চিম থানা জামায়াতের উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন থানা আমির এম আব্দুল্লাহ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরার সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, থানা নায়েবে আমির আ. রহমান, সেক্রেটারি আশিকুর রহমানসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

শফিকুল ইসলাম/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

চট্টগ্রাম থেকে নতুনভাবে আন্দোলনের সূত্রপাত হবে: আমীর খসরু

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫৭ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:২৭ এএম
চট্টগ্রাম থেকে নতুনভাবে আন্দোলনের সূত্রপাত হবে: আমীর খসরু
ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রামে আগামী শনিবার (৬ জুলাই) অনুষ্ঠিতব্য জনসভা থেকে মানুষের অধিকার আদায় ও ‘গণতন্ত্রের মা’র মুক্তির আন্দোলনের সূত্রপাত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে বিভাগীয় শ্রমিক দলের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করলেই বাংলাদেশের সব সমস্যার সমাধান হবে না। জীবনযাত্রার মান উন্নত করে সাধারণ মানুষের দাবিগুলো পূরণ করতে হবে। দেশের মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্রের মা’র মুক্তি একই সূত্রে গাথা।’

তিনি বলেন, ‘শ্রমিক, মালিক ও সরকারের সম্পর্ক যে নিম্নপর্যায়ে চলে গেছে তার একমাত্র কারণ হচ্ছে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। জনগণের নির্বাচিত সরকার সংসদে না থাকার কারণে আজ শ্রমিকদের সে বিষয়গুলো প্রাধান্য পাচ্ছে না। শ্রমিকের অবস্থান বাংলাদেশে আজ কোথায়? শ্রমিক সংগঠনগুলো বর্তমান প্রেক্ষাপটে আইন অনুযায়ী তাদের কাজ ঠিকভাবে করতে পারছে না। যেসব শ্রমিকনেতা গার্মেন্টস সেক্টরে দাবি নিয়ে সত্যিকার অর্থে কাজ করেছিল তাদের অনেককে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। তাদের অনেকের বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা কিন্তু বলেছিলাম ২৫ হাজার টাকা গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য। শ্রমিকদের পক্ষ থেকেও এ টাকার দাবি দেওয়া হয়েছিল বলে মনে হয়। কিন্তু তাদের বেতন সাড়ে ১২ হাজার। প্রায়ই অর্ধেক। শ্রমিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য গার্মেন্টস সেক্টরে সত্যিকার অর্থে এ দাবি আদায় করতে কোনো নেতা পাচ্ছে না।’

আমীর খসরু বলেন, ‘বর্তমান অবস্থা থেকে আমাদের মুক্ত হতে হলে আমরা যে আন্দোলনে নেমেছি তার সঙ্গে শ্রমিকের স্বার্থ জড়িত। শুধু শ্রমিকের দাবি নয়, বাংলাদেশের সব মানুষের রাজনৈতিক, সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য ৩১ দফায় সব বলা হয়েছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে শ্রমিক সমাজ আজ অবহেলিত। শ্রমিকদের দুবেলা খাওয়ার সুযোগ নেই। আজকে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও বাসস্থান নেই। শ্রমিকদের বিষয়ে সরকারের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। অথচ শ্রমিকদের কারণে বাংলাদেশ টিকে আছে।’

খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, ‘বর্তমানে শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার ভোটাধিকার হরণ করে দেশের মালিকানা যেমন কেড়ে নিয়েছে, তেমনি শ্রমিক, কৃষকের পেটে লাথি মেরেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে শ্রমজীবী মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে শ্রমিকদের সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করতে হবে।’

কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন ১৫ বছরের অপশাসনের বিরুদ্ধে। দেশের জনগণ ও জাতীয়তাবাদের পক্ষের শক্তির অংশগ্রহণে এক বিশাল আন্দোলনের সূচনা হয়েছে বাংলাদেশে। এ আন্দোলন অব্যাহত আছে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে।’

মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন জনগণের ভোট কেড়ে নেওয়া আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে। জনগণ সবসময় বিএনপির পক্ষে রায় দিয়েছে। জনগণ এখনো তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অপেক্ষায় আছে। বাংলাদেশের মানুষের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন চলমান আছে।’

বিভাগীয় শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির নবনির্বাচিত সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-শ্রম সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও মামুন মোল্লা প্রমুখ।

ইফতেখার/সাদিয়া নাহার/অমিয়/