ঢাকা ২২ আষাঢ় ১৪৩১, শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

সুনীল অর্থনীতি সামুদ্রিক সম্পদের সম্ভাবনার ক্ষেত্র উন্মোচন করেছে : স্পিকার

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম
সুনীল অর্থনীতি সামুদ্রিক সম্পদের সম্ভাবনার ক্ষেত্র উন্মোচন করেছে : স্পিকার
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্লু ইকোনমি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সুনীল অর্থনীতি সামুদ্রিক সম্পদের ব্যবহার বাড়াতে অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্র উন্মোচন করেছে।’

বুধবার (৩ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ওশান প্রসপারিটি: ক্যাটালাইজিং ব্লু ইকোনমি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্পিকার বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমুদ্রসম্পদের গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৭৩ সালে প্রথম সামুদ্রিক গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৭৪ সালে ‘দ্য টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট’ প্রণয়ন করেছিলেন, যা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এ খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। শেখ হাসিনা বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছেন। সুতরাং, সামুদ্রিকসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের পাশাপাশি অতিরিক্ত মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণ, সমুদ্রদূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার মতো চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে।”

এ ধরনের উদ্যোগের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সুনীল অর্থনীতির পরিপূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচনের জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ অপরিহার্য। ব্লু ইকোনমিতে বেসরকারি উদ্যোগ, জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।’

বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের জেনারেল ইকোনমিক্স ডিভিশনের সদস্য (সেক্রেটারি) ড. মো. কাওসার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াং বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার। 

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিং। এই কনফারেন্সে বাংলাদেশ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, জেনারেল ইকোনমিক্স ডিভিশন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমন্ত্রিত অতিথি, সাংবাদিক এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এলিস/সালমান/

কানেক্টিভিটির মর্ম বিএনপি বোঝে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ১২:৪২ এএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০১:২৮ এএম
কানেক্টিভিটির মর্ম বিএনপি বোঝে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ছবি: বাসস

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘যেই বিএনপির নেত্রী বলেছিলেন সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হলে দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট হবে, সেই বিএনপি কানেক্টিভিটির মর্ম বোঝার কথা নয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। 

ভারতের সঙ্গে কানেক্টিভিটি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর নিয়ে বিএনপির সমালোচনাকে অবান্তর উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইউরোপে কোনো সীমান্ত চৌকি নেই। সেখানে কি দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব নষ্ট হয়ে গেছে? ভারতের ওপর দিয়ে আমরা নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করছি, এতে কি ভারতের সার্বভৌমত্ব নষ্ট হয়ে গেছে? আমরা কানেক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন সমঝোতা করেছি। নেপালের সঙ্গেও কানেক্টিভিটি হবে।’ 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আমরা ‘রিজিওনাল কানেক্টিভিটি’ বাড়ানোর মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। এই কানেক্টিভিটির মর্ম বিএনপি বোঝে না, বোঝার কথাও নয়। দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। আমাদের মূল শক্তি হচ্ছে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ও জননেত্রী শেখ হাসিনা।’ 

পরপর চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার কারণে কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে যে আলস্য এসেছে, তা ঝেড়ে ফেলতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পশ্চিম বাংলায় বামফ্রন্ট ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল এবং এর সবচেয়ে বড় কারণ, সংগঠন শক্তিশালী ছিল।’ 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি ও তাদের সঙ্গে যুক্ত আন্তর্জাতিক চক্র উন্মুখ হয়ে বসে ছিল যে সরকার আন্তর্জাতিকভাবে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হয়। এ পর্যন্ত ৮১টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমিশনসহ ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা শেখ হাসিনাকে পরপর চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায়  অভিনন্দন জানিয়েছেন।’

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এমপির সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমি বক্তব্য রাখেন। খবর বাসসের।

 

 

নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমারকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:৫১ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:৫১ পিএম
নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমারকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা স্যার কির স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ৪ জুলাইয়ের নির্বাচনে তার দলের ঐতিহাসিক বিজয়লাভ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য এ অভিনন্দন জানান তিনি। খবর বাসসের 

শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, ‘এই দ্ব্যর্থহীন ম্যান্ডেট আপনার দেশকে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি জোরদার করার জন্য আপনার নেতৃত্বের প্রতি ব্রিটিশ জনগণের আস্থার সুস্পষ্ট প্রতিফলন।’ 

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন এই চিঠিটি যুক্তরাজ্যের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে।

এ উপলক্ষে শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় লেবার পার্টি ও দলের আইকনিক নেতা স্যার হ্যারল্ড উইলসন, টমাস উইলিয়ামস সিকে ও লর্ড পিটার শোরের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার দল আওয়ামী লীগের স্থায়ী বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন; যা প্রকৃতপক্ষে দুই দেশের গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল আকাঙ্ক্ষার অভিন্ন মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ককে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর গড়ে তুলেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সরকার দুই কমনওয়েলথ দেশের পারস্পরিক স্বার্থে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, জলবায়ু ও কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আপনার সক্ষম স্টুয়ার্ডশিপের অধীনে লেবার পার্টি সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য উন্মুখ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, একসঙ্গে আমরা আমাদের দুই দেশের কল্যাণে ৭ লাখের বেশি প্রাণবন্ত ও উদ্যোগী বাংলাদেশি ব্রিটিশ প্রবাসীদের অমূল্য অবদানকে কাজে লাগানোর প্রয়াস চালিয়ে যাব।’ 

প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকালে তার সুস্বাস্থ্য, সুখ ও সাফল্য এবং যুক্তরাজ্যের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

বিএফইউজে-ডিইউজের প্রতিবাদ সাইবার ট্রাইব্যুনালে ৪ সাংবাদিকের মামলা প্রত্যাহার দাবি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
সাইবার ট্রাইব্যুনালে ৪ সাংবাদিকের মামলা প্রত্যাহার দাবি
ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ প্রকাশের জেরে পটুয়াখালীর বাউফলের চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বরিশালের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। 

অবিলম্বে এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ।

শুক্রবার (৫ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ প্রতিবাদ জানান। 

নেতৃদ্বয় বলেন, সরকারদলীয় নেতাকর্মীর দ্বারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। যখনই সাংবাদিকরা সত্য কথা লিখে, সমাজের অনিয়ম তুলে ধরে তখনই তারা ক্ষমতাসীনদের হামলা-মামলার স্বীকার হোন। পটুয়াখালীর বাউফলে যুবলীগ নেতা চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা এর ব্যতিক্রম নয়।

তারা বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এসকল মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের ভয় দেখানো যাবে না। সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তিকে মোকাবিলা করবে। একইসঙ্গে এই ন্যক্কারজনক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গত বুধবার (৩ জুলাই) পটুয়াখালীর বাউফলের চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বরিশালের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন বাউফল পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান ওরফে রিয়াদ খান (৪৩)। মামলায় আসামিরা হলেন-দৈনিক কালবেলার বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি জি এম মশিউর রহমান, বাউফল প্রতিদিন ডটকম অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক মো. এনামুল হক, বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার মো. মনির হোসেন ও দৈনিক ভোরের আকাশের বাউফল প্রতিনিধি মো. ফিরোজ। 

আদালত বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোণিত কুমার গায়েনকে মামলা তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এর আগে পরকীয়ার জেরে এক গৃহবধূকে নিয়ে পালানোর অভিযোগে মো. আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী আদালতে মামলা হয়। ২৬ জুন ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এই যুবলীগ নেতা।

শফিক/এমএ/

পদ্মা সেতুর জন্য বাংলাদেশ বিশ্বে সম্মান পেয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৪ পিএম
পদ্মা সেতুর জন্য বাংলাদেশ বিশ্বে সম্মান পেয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী 'পদ্মা সেতু' প্রকল্পের সমাপনী সুধী সমাবেশে অতিথিদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। ছবি: পিএমও

পদ্মা সেতুকে ‘গর্বের প্রতীক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন বাংলাদেশকে যথাযথ মূল্যায়ন করছে। এখন বাংলাদেশ শুনলেই মানুষ সমীহ করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। বাংলাদেশের জনগণ একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।’

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজের সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর বাসসের 

গত দুই বছরে পদ্মা সেতুর টোল প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সবার মতো সন্তুষ্টি ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি টাকার অঙ্ক দিয়ে এটা বিচার করব না। কারণ এই সেতু আমাদের গর্বের সেতু। এটা টাকার অঙ্ক দিয়ে বিচার করার নয়।’ 

বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, এই একটা সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে অন্তত মর্যাদা দিয়েছে। আগে যারা কথায় কথায় আমাদের ওপর খবরদারি করত, ভাবখানা ছিল এরা ছাড়া বাংলাদেশ চলতেই পারে না, সেই মানসিকতাটা বদলে গেছে। মানুষ এখন গর্ব করে আন্তর্জাতিকভাবে বুক ফুলিয়ে চলত পারে। এটাই সব থেকে বড় পাওয়া।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। সেই সঙ্গে আমরা ২০২১-৪১ পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি, পাশাপাশি উন্নত জীবনের জন্য নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে চুক্তি করে ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নও আমরা শুরু করে দিয়েছি।” 

পদ্মা সেতু নির্মাণ বন্ধে দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক বাধা অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের জনগণের টাকায় সেতুটি নির্মাণ করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন সবাই না করেছে, আমি তখন বলেছি, আমি করব। সে সময় দেশের জনগণ আমার সঙ্গে ছিল। আর আজকে সেই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করতে পেরেছি, যা আমার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন করেছে। আল্লাহর কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। আর কৃতজ্ঞ আমার দেশবাসীর কাছে।’  

তিনি বলেন, ‘এই পদ্মা সেতুটি একটি জটিল স্ট্রাকচার। কারণ আমাজনের পরে সব থেকে খরস্রোতা হচ্ছে এই পদ্মা নদী। এই জটিল পরিস্থিতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কখনো নদীর পাড় ভেঙেছে, নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে, একে একে সবকিছু অতিক্রম করে আমরা এই সেতুটি নির্মাণ করেছি। পদ্মা নদীকে দুই কূলে বেঁধে দেওয়া আর এই সেতু নির্মাণ করা, এই জটিল কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, সেই সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নিবেদিত কর্মচারী, দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞরা, নিরাপত্তার তদারকিতে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি সংস্থা এবং নির্মাণশ্রমিকরা তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতেই আজ আমি এখানে এসেছি।’ 

প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে দুর্যোগে মৃত্যুবরণকারী এবং সেতুর কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং প্রয়াত, তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আবুল হোসেন এবং প্রকৌশলী, গবেষক ও বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। 

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুর ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ৪ জুলাই মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ শেষে ২০২২ সালের ২৫ জুন এই স্থানে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের দিন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এর আগে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়ায় বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর অ্যাপ্রোচ সড়ক ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৪৮ কিলোমিটার (সড়ক) এবং ৫৩২ মিটার (রেল)। গত দুই বছরে পদ্মা সেতু দিয়ে ১ কোটি ২৭ লাখ যানবাহন চলাচল করেছে। চলতি বছরের ২৯ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে যান চলাচল করেছে প্রায় ১৯ হাজার। প্রতিদিন গড়ে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি: সকালে অবনতি বিকালে উন্নতি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫২ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি: সকালে অবনতি বিকালে উন্নতি
গত এক মাসে তিনবার তলিয়েছে খোদেজা বেগমের ঘর। প্রতিবন্ধি স্বামী-শিশু নিয়ে মানবেতর দিন। ছবিটি বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশার আমতৈল গ্রাম থেকে তোলা।-মামুন হোসেন

আকাশে মেঘ আর সূর্যের মত লুকোচুরি খেলছে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি। একদিন নদীর পানি কমে আবার আরেকদিন নদীর পানি বাড়ে। নদীর পানি বাড়া কমার এই দোলাচলে সকালে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে বিকালে হয় উন্নতি। সারা বর্ষাকাল সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির এমন দোলাচলে থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিলেট আবহাওয়া অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি না হলে বা কম হলে সিলেটের সীমান্তবর্তী নদ নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢলের পরিমাণ কিছুটা কমে। আবার চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢলের পরিমাণ বেড়ে দ্রুত নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়।

সিলেটে ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) সিলেটের নদনদীর পানি দুয়েক সেন্টিমিটার কমেছে। তবে সুরমা কুশিয়ারা নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি ৫ স্থানে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

সড়ক ডুবে যাওয়ায় পানির মধ্যেই বাড়ি ফিরছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। ছবিটি বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশার আমতৈল গ্রাম থেকে তোলা।-মামুন হোসেন

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৫.৬ মিলিমিটার। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪.৩ মিলিমিটার।

ভারতের হাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের মঙ্গলবারের তথ্য মতে, শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকাল ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশিদ পয়েন্ট বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১০১ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস খবরের কাগজকে বলেন, আমাদের নদনদীর পানি বৃদ্ধি নির্ভর করে ভারতের চেরাপুঞ্জির বৃষ্টিপাতের উপর। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত হলেই পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পায়। আবার এই বর্ষাকালে দুদিন বৃষ্টি হলে দুদিন রোদ উঠে। তাই একদিন সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আরেকদিন অবনতি হয়। এই বর্ষাকালে এমন পরিস্থিতি চলমান থাকবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তখন প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ বন্যা আক্রান্ত হন। এরপর গত ১৭ জুন ঈদুল আজহার দিন থেকে আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তখন সিলেটর ১৩টি উপজেলার ১০ লাখের উপরে মানুষ বন্যা আক্রান্ত হন। এই রেশ কাটতে না কাটতেই গত ১ জুলাই থেকে আবারও সিলেট ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে চলমান বৃষ্টিপাতের কারণে সব নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিলেটে তৃতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ১ জুলাই রাতে সিলেট নগরী ও জেলার প্রায় ৬টি উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। অতি বৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢল বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষজন গত সোমবার বিকাল থেকেই বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেন।

শাকিলা ববি/এমএ/