![ঈদযাত্রায় যানজট নিরসনে থাকছে ড্রোন নজরদারি](uploads/2024/03/31/1711863865.drone.jpg)
ঈদযাত্রায় বিভিন্ন সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ দেড় শতাধিক স্পটে যানজট বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে হাইওয়ে পুলিশ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক বিভাগ। এসব স্থানে যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে নজরদারি করবে ড্রোন। এ ছাড়া বাতিল করা হয়েছে হাইওয়ে পুলিশ সদস্যদের ছুটি।
শনিবার (৩০ মার্চ) হাইওয়ে পুলিশ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, রাস্তায় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। যানজট নজরদারিতে থাকবে ড্রোন। এটি প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে দফায় দফায় সভা-সেমিনার হচ্ছে।
এসব বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন বলেছেন, এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে দফায় দফায় সভা-সেমিনার হচ্ছে। এরই মধ্যে হাইওয়ে পুলিশের সব সদস্যের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ছুটি নিতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ বলছে, ঈদযাত্রায় কোনোভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ কোনো যানবাহন সড়কে চলতে দেওয়া হবে না। যানজট কমাতে এবার প্রথমবারের মতো ড্রোন ব্যবহার করা হবে। ড্রোনে লাইভ ভিডিও দেখে সংশ্লিষ্ট স্থানে নির্দেশনা পাঠানো হবে। মো. শাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘যানজট ও দুর্ঘটনার বড় কারণ ফিটনেসবিহীন গাড়ি। উচ্চ আদালত নছিমন, করিমন, ভটভটি মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ করেছেন। তবে অনেক চেষ্টায়ও আমরা মহাসড়ক থেকে এসব গাড়ি প্রত্যাশিত মাত্রায় কমাতে পারিনি। এর মধ্যে যদি ঈদযাত্রায় এসব যানবাহন মহাসড়কে নামে তবে তা হবে ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপার ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দায়িত্ব নিতে হবে।’
ঈদের ছুটির মধ্যে যদি বৃষ্টি হয় তবে যাত্রী-ভোগান্তি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে যতটা সম্ভব যানজট নিরসনে বাড়তি ব্যবস্থা ও ভিন্ন কৌশল নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এ কৌশলগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে দুর্ভোগের ঈদযাত্রা হয়ে উঠতে পারে অনেকটাই আরামদায়ক ও আনন্দঘন। এরই অংশ হিসেবে এবারের ঈদযাত্রায় দূরপাল্লার সড়কগুলোতে যানজট সহনীয় রাখতে ড্রোনের সহায়তা নেবে হাইওয়ে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, পাঁচটি মহাসড়কে দেড় শতাধিক যানজটপ্রবণ স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার অন্তত ৮ থেকে ১০টি পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা। অবশ্য এবারের ঈদে সরকারি চাকরিজীবীদের মাঝে এক দিন বাদে টানা ১০ দিন ছুটি মিলতে পারে। ফলে ধাপে ধাপে যাত্রীরা গন্তব্যে যাবেন, এতে স্বস্তি মিলতে পারে ঈদযাত্রায়। তবে ভয় জাগাচ্ছে সেতুর টোলপ্লাজার জটগুলো।
এসব বিষয় নিয়ে রাজধানীর বনানীতে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সদর কার্যালয়ে ঈদ-প্রস্তুতি সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে এ সেক্টরের মন্ত্রী। প্রতিবছর ঈদযাত্রার সভা হয়। তবে সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা ঠিকভাবে পালন হচ্ছে কি না, তা আর পরে মূল্যায়ন হয় না। ঈদে কিছুটা যানজট হবে। একদম যানজটমুক্ত দাবি করা সমীচীন নয়। এ জন্য হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়াতে না পারলে কোনো ভালো সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না। উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ এবং গাজীপুর ঠিক থাকলে ঈদযাত্রার সব ঠিক থাকবে। হানিফ ফ্লাইওভার থেকে ঢাকায় নির্বিঘ্নে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে।’
হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি (অপারেশন) শ্যামল কুমার মুখার্জি বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ ৮ থেকে ১০টি মহাসড়কে যানজট নিরসনে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে নিরাপদ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। যানজট কমাতে হাইওয়ে পুলিশের একাধিম টিম মহাসড়কে ঈদের আগে থেকে কাজ শুরু করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঈদযাত্রায় যাতে সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। এবার যারনজট নিরসনে ড্রোন আমাদের সহযোগিতা করবে। এটি ব্যবহার করে দুর্ভোগে কমাতে হাইওয়ে পুলিশ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করবে।’
খাজা/