![মিরাজের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ](uploads/2024/02/03/1706936680.Dev-Whatmore.jpg)
২০০৩ থেকে ২০০৭; দীর্ঘ ৪ বছর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ডেভ হোয়াটমোর। তার সময়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয় সাকিব আল হাসান, মুশফিকুব রহিম, তামিম ইকবালদের। মাশরাফি বিন মুর্তজাও ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে কোচ হিসেবে পেয়েছেন হোয়াটমোরকে। দেশের ক্রিকেটের বড় তারকাদের বেড়ে উঠতে দেখেছেন এই অভিজ্ঞ কোচ। বড় হতে দেখেছেন বিশ্ব ক্রিকেটের আরেক বড় তারকা বিরাট কোহলিকেও। বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটাদের গুরু বাংলাদেশে এসেছেন বিপিএলের দল ফরচুন বরিশালের টিম ডিরেক্টর হয়ে। দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশে আসা হোয়াটমোর দৈনিক খবরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেছেন নানা বিষয়ে। সিলেটে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পার্থ রায়।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের অতীত-বর্তমানের পার্থক্য নিয়ে যদি কিছু বলতেন?
বাংলাদেশে এসে এই কথাটা আমাকে অনেক বেশি শুনতে হচ্ছে। তখন ভালো-কিছুর বিষয় ছিল না। কারণ সবকিছুর শুরু ছিল তখন। এখন অনেক কিছু বদলেছে। অনেক ভালো বিষয় উঠে আসছে। ক্রিকেটারদের ভিত্তি ঠিক হচ্ছে। ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামগুলো ভালো চলছে। যেটা ‘এ’ দলকে সাহায্য করছে। ফলে জাতীয় দলও ভালো সমর্থন পাচ্ছে।
উন্নতির কোন বিষয়গুলো আপনার বেশি নজর কেড়েছে?
ম্যাচ, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে বেশি ম্যাচ খেলা। এ ছাড়া যুব দল বিশ্বকাপ-এশিয়া কাপ জিতেছে। এসব বিষয় আমার অনেক বেশি নজরে পড়েছে। সাধারণত এই বিষয়গুলো নিয়মিত হলে একটা দেশের ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়ে যায়। এটাই ঘটেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে।
সাকিব, তামিম, মুশফিকের উত্থান দেখেছেন। তারা অনেক দিন জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়েছে। এখনকার তরুণদের মধ্যে ওই রকম সুযোগ দেখেন কি না?
সবাইকে তো আসলে একইভাবে শুরু করতে হয়। সবাই চায় দেশের হয়ে সেরা ক্রিকেটটা খেলতে। আর যখন কেউ জাতীয় দলের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলে সে চায় দীর্ঘদিন সার্ভিস দিতে। সাকিব, তামিম, মুশফিকরা সেটা ভালোভাবে করতে পেরেছে। তারা ভালোভাবে ১২-১৫ বছরের ক্যারিয়ার গড়েছে। অন্য আরও অনেকে করছে। বাংলাদেশে এখন ওদের মতো অনেক তরুণ তারকা আছে। আমার মনে হয় তারাও দীর্ঘদিন জাতীয় দলকে সার্ভিস দিতে পারে।
তরুণ কোনো ক্রিকেটারকে ভালো লেগেছে?
মেহেদি হাসান মিরাজ। তার সামনে দারুণ একটা ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। তাকে সবাই পছন্দ করে। তার মধ্যে প্রতিভা আছে। উন্নতি করতে হবে এমন ক্ষুধাও কাজ করে তার মধ্যে। তার সামনে লম্বা ক্যারিয়ার আছে এবং বাংলাদেশ দলকে দীর্ঘ সময় সার্ভিস দেওয়ার সক্ষমতা রাখে সে।
প্রতিভার কথা বললে বিরাট কোহলির কথা আসে। আপনি তার বয়সভিত্তিক দলের কোচ। তাকে কেমন দেখেছিলেন?
বিরাট কোহলি ভিন্ন মানুষ। যুব দলে খেলার সময় বিরাট প্রতিভাবান ছিল। সবাই যে রকম ব্যতিক্রমী ধাচের প্রতিভাবান ভাবে, সে রকম ছিল না। তবে সে প্রচণ্ড পরিশ্রমী। পরিশ্রম করতে তার কোনো ক্লান্তি নেই। খেলার প্রয়োজনে যুব দলে খেলার সময় ওজন কমিয়েছে। তার চলাফেরা নিয়মমাফিক। সেই কারণে সে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিতে পেরেছে।
শুধু কী পরিশ্রমই বিরাটকে এত দূর নিয়ে এসেছে?
খেলার প্রতি ভালোবাসাও থাকতে হয়। শুধু প্রতিভা বা পরিশ্রম করলেই হবে না। তার মধ্যে প্রতিভা-পরিশ্রমের পাশাপাশি খেলার প্রতি ভালোবাসা ছিল। এ ছাড়া বিরাট সব সময় লক্ষ্য স্থির করে খেলতে ভালোবাসে। সেটাও তার সাফল্য পাওয়ার অন্যতম কারণ। তার সবকিছুর সমন্বয় আমরা এখন দেখতে পারছি।
একটু বিপিএলে ফিরি। কেমন উপভোগ করছেন? দল নিয়ে প্রত্যাশা কী?
বিপিএল অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে। সবাই আসলে এখানে জিততে এসেছে। সব দলেই বিশ্বমানের অনেক ক্রিকেটার আছে। সেটাই আসলে বিপিএলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়িয়ে তুলেছে। সবাই জিততে চায়, আমরা ব্যতিক্রম নই। তবে দিন শেষে মাঠে ক্রিকেটারদের পারফর্ম করতে হবে। পারফর্ম করতে পারলে ফল আসবে। এখন ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স কেমন হয় সেই দিকেই আসলে তাকিয়ে থাকতে হবে।
বাংলাদেশে আবার কাজ করার সুযোগ পেলে ফিরবেন কী?
বিপিএলের সুবাদে দুইবার এলাম। ভবিষ্যতে আসব কি না, জানি না। সময় ও পরিস্থিতি সেটা বলে দিবে।