![সিলেটে রান তাড়ায় জয়ের রেকর্ড নেই!](uploads/2024/03/24/1711267360.Sylhet-International-cvrick.jpg)
সিলেট টেস্টে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো শুরু করার পরও তা ধরে রাখতে না পারাতে এখন পড়েছে চাপে। এই চাপে পড়ে তাদের সামনে যে দৃশ্য ভেসে উঠছে, তাতে করে ম্যাচে ফিরে আসার লড়াই করছে। আপাতত জয় নয়, হারের শঙ্কা মাথার ওপর। দ্বিতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ২১১ রানে এগিয়ে। উইকেটে আছেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ২৩ ও নাইটওয়াচম্যান বিশ্ব ফার্নান্দো ২ রানে। ডেসিংরুমে বসে ব্যাটে শান দিচ্ছেন প্রথম ইনিংসের আরেক সেঞ্চুরিয়ান কামিন্দু মেন্ডিস। বোঝাই যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা তাদের লিড আরও বাড়িয়ে নিবে। যা অনেকটাই বাংলাদেশের নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে ধরে নেওয়া যায়। এর কারণও আছে। সিলেট ভেন্যুও পরিসংখ্যান বলে রান তাড়া করে জয়ের নজির নেই।
সিলেটে এর আগে যে দুটি টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে একবার জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশকে ৩২০ রান তাড়া করতে দিয়েছিল। বাংলাদেশ করতে পেরেছিল মাত্র ১৮১ রান। হেরেছিল ১৫১ রানে। পরের টেস্ট আবার বাংলাদেশ জিতেছিল ১৫০ রানে। প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের সামনে টার্গেট দিয়েছিল ৩৩১ তাড়া করার। নিউজিল্যান্ড করতে পেরেছিল ১৮১ রান। শ্রীলঙ্কা এমনিতেই ২১১ রানে এগিয়ে। সেখানে আরও রান যোগ হবে। তাদের টার্গেট ৩০০ ছাড়িয়ে যাওয়া। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে সে রকমটি জানিয়েছেন দলের বোলিং কোচ দর্শনা গামাগে। তিনি বলেন, ‘আমরা তিনশোর্ধ রানের লিড নিতে চাই। এটি করতে পারলে আমরা ডিফেন্ড করতে পারব।’ কিন্তু বাংলাদেশের টার্গেট আড়াই শ রানের লিড দেওয়া। তাহলে সেটা অতিক্রম করা যাবে বলে মনে করেন দলের ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প। তিনি বলেন, ‘আমরা কাল (আজ তৃতীয় দিন) সকালে যদি তাদের দ্রুত উইকেট নিয়ে আড়াই শ রানের লিড দিতে পারি, আমরা সে লক্ষ্যে এগুব।’
বাংলাদেশ এ রকম পরিস্থিতিতে পড়েছে মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে। শ্রীলঙ্কার ২৮০ রান খুব বেশি সংগ্রহ নয়। কিন্তু ১৮৮ রানে অলআউট হয়ে সেই সংগ্রহ বাংলাদেশের সামনে পাহাড় সমান হয়ে উঠেছে! ডেভিড হেম্প সেই কথাটিই বলেন সংবাদ সম্মেলনে, ‘আমরা মাত্র ৫১ ওভারের বেশি ব্যাটিং করতে পারিনি। এটি খুবই হতাশজনক। কিন্তু যা হওয়ার হয়ে গেছে। আমরা তাদের কয়েকটি উইকেট নিতে পেরেছি। আরও কয়েকটি উইকেট নিতে পারলে ভালো হতো।’ তাইজুলের ব্যাটিংয়ের উচ্ছ্বাসিত প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘একটি খেলায় এক থেকে এগার নাম্বার পর্যন্ত সবাইকে ব্যাট করতে হয়। তাদের অবদান রাখতে হয়, বিশেষ করে লম্বা সংস্করণে। আমরা লোয়ারের অর্ডার কথা বলি। সে ৮০ বল (হবে ৮২ বল) খেলেছে। এটি ছিল তার একটি দুর্দান্ত প্রচেষ্টা। সে আমাদের গর্বিত করেছে।’
সিলেটে আগের দুই টেস্টে স্পিনারদের দাপট ছিল। এই টেস্ট পেসারদের। ধারণা করা হয়েছিল সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উইকেটের পরিবর্তন আসতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয় দিন শেষেও উইকেটে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। হেম্প বলেন, ‘সকল ব্যাটারই বলছে উইকেট ভালো। ভালো শট খেলতে পারলে রান আসবে। শেষ বিকেলে কিছু বল নিচু হয়ে এসেছিল। সেগুলো ছিল ওয়াইড বল। কিন্তু আপনি যদি ভালো বল করতে না পারেন, তাহলে আপনাকে সেই বলের সাজা পেতেই হবে। আমার মনে হয় না কালও (আজ) খুব বেশি পরিবর্তন হবে।’
টেস্ট ম্যাচ খেলার আগে বাংলাদেশের ব্যাটার বিপিএল খেলেছে, ডিপিএল খেলেছে। এমনকি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে খেলেছে। এটি টেস্ট ম্যাচে প্রভাব পড়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে ডেভিড হেম্প বলেন, ‘এটি নিয়ে তর্ক হতে পারে। তবে এটি মানসিকতার ব্যাপার। আমি এটিকে কোনো সমস্যা মনে করি না। সাদা বল, লাল বল শুধুই একটি রঙ।’
এদিকে গতকাল রাতে সিলেটে প্রচণ্ড বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টিও হয়েছে। আজ সকালে ঘণ্টায় ৩৬ কিলোমিটার বেগে দমকা বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টিরও সম্ভাবনা আছে।